বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ
তুমি . . . ধূলিতে প্রতিগমন করিবে।—আদি. ৩:১৯.
আমরা যদি আদম ও হবার মতো ভুল করতে না চাই, তা হলে যিহোবার প্রতি আমাদের ভালোবাসা বাড়ানো খুবই জরুরি। এমনটা আমরা তখনই করতে পারব, যখন আমরা যিহোবা সম্বন্ধে জানব, তাঁর গুণগুলোর বিষয়ে শিখব আর এটা বোঝার চেষ্টা করব, তিনি কীভাবে চিন্তা করেন। অব্রাহামও ঠিক এমনটাই করেছিলেন। তিনি যিহোবাকে খুব ভালোবাসতেন। অনেকসময় যিহোবা যে-সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন, সেগুলোর পিছনে থাকা কারণ তিনি বুঝতে পারেননি। কিন্তু, তখনও তিনি যিহোবার নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তের উপর আঙুল তোলেননি বরং এটা বোঝার চেষ্টা করেছিলেন, কেন যিহোবা এই সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন। যেমন, যখন যিহোবা তাকে বলেছিলেন, তিনি সদোম ও ঘমোরা ধ্বংস করবেন, তখন অব্রাহাম ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন। তার মনে হয়েছিল, “সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা” দুষ্ট লোকদের সঙ্গে ধার্মিক লোকদেরও ধ্বংস করে দেবেন না তো? অব্রাহাম চিন্তা করেছিলেন, ‘যিহোবা কীভাবে এমনটা করতে পারেন?’ তাই, তিনি যিহোবাকে কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছিলেন এবং যিহোবা তাঁর সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন। এভাবে, অব্রাহাম যিহোবাকে আরও ভালোভাবে জানতে পেরেছিলেন এবং তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, যিহোবা লোকদের মন দেখেন। তিনি কখনো কোনো নির্দোষ ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে পারেন না।—আদি. ১৮:২০-৩২. প্রহরীদুর্গ ২২.০৮ ২৮ অনু. ৯-১০
শুক্রবার, ২৯ মার্চ
যে আত্মায় বিশ্বস্ত, সে কথা গোপন করে।—হিতো. ১১:১৩.
খ্রিস্টপূর্ব ৪৫৫ সালে যখন জেরুসালেম নগরের প্রাচীর পুনর্নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছিল, তখন রাজ্যপাল নহিমিয় এমন লোকদের খুঁজতে শুরু করেছিলেন, যারা নগরকে ভালো করে দেখাশোনা করতে পারে। এই কাজের জন্য তিনি যাদের বাছাই করেছিলেন, তাদের মধ্যে দুর্গের অধ্যক্ষ হনানিয়ও ছিলেন। বাইবেলে তার বিষয়ে লেখা আছে: “তিনি অন্যদের চেয়ে সত্য ঈশ্বরকে আরও বেশি ভয় করতেন আর তিনি একজন বিশ্বস্ত” বা নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। (নহি. ৭:২, NW) তিনি যিহোবাকে খুব ভালোবাসতেন আর এমন কোনো কাজ করতে চাইতেন না, যেটা যিহোবা পছন্দ করেন না। তাই, তাকে যেকোনো কাজ দেওয়া হত, তিনি তা মনপ্রাণ দিয়ে করতেন। আমরাও যদি যিহোবাকে ভালোবাসি এবং তাঁকে ভয় করি, তা হলে আমাদের যেকোনো দায়িত্ব দেওয়া হোক না কেন, আমরা সেটা ভালো করে পালন করতে পারব। এর ফলে, ভাই-বোনেরা আমাদের উপর আস্থা রাখতে পারবে। আমরা তুখিকের কাছ থেকেও অনেক কিছু শিখতে পারি। তিনি পৌলের একজন নির্ভরযোগ্য বন্ধু ছিলেন। তুখিক পৌলকে অনেক সাহায্য করেছিলেন তাই, পৌল তাকে একজন “বিশ্বস্ত সেবক” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। (ইফি. ৬:২১, ২২) তুখিককে ইফিষীয় ও কলসীয় মণ্ডলীর ভাই-বোনদের কাছে চিঠি পৌঁছানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, পৌল তুখিককে আরেকটা দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনি তাকে সেখানকার ভাই-বোনদের উৎসাহিত করতে এবং তাদের সান্ত্বনা দিতে বলেছিলেন। পৌলের পুরো আস্থা ছিল যে, তুখিক এই দায়িত্ব ভালোভাবে পালন করবেন। তুখিকের মতো আজও এমন অনেক নির্ভরযোগ্য ভাই আছেন, যারা যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে শক্তিশালী রাখার জন্য অনেক পরিশ্রম করেন।—কল. ৪:৭-৯. প্রহরীদুর্গ ২২.০৯ ৯-১০ অনু. ৫-৬
শনিবার, ৩০ মার্চ
ভালোবাসা অসংখ্য পাপ ঢেকে দেয়।—১ পিতর ৪:৮.
বছর ধরে, যোষেফের জীবনে একটার পর একটা সমস্যা এসেছিল। সেই সময় যোষেফের মনে হয়তো এইরকম চিন্তা এসেছিল, ‘যিহোবা কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসেন?’ তিনি হয়তো এও চিন্তা করেছিলেন, ‘যিহোবা আমাকে একা ছেড়ে দেননি তো? আমার এখনই তো তাঁর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।’ কিন্তু, যোষেফ তিক্ত মনোভাব গড়ে তোলেননি। তিনি সচেতন ছিলেন এবং শান্ত ছিলেন। কেন আমরা তা বলতে পারি? কারণ একবার যখন তার দাদাদের উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ এসেছিল, তখন তিনি প্রতিশোধ নেননি। যোষেফ তার দাদাদের খুব ভালোবাসতেন, তাই তিনি তাদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন এবং তাদের সঙ্গে খুব ভালোভাবে আচরণ করেছিলেন। (আদি. ৪৫:৪, ৫) যোষেফ ভেবে-চিন্তে কাজ করতে পেরেছিলেন কারণ তিনি শুধু নিজের সমস্যার বিষয়ে চিন্তা করেননি। এর পরিবর্তে, তিনি এই বিষয়ে চিন্তা করেছিলেন যে, যিহোবার ইচ্ছা কী। (আদি. ৫০:১৯-২১) আমরা যোষেফের কাছ থেকে কী শিখতে পারি? কেউ যদি আপনার প্রতি খারাপ আচরণ করে, তা হলে যিহোবার উপর রেগে থাকবেন না আর এইরকম চিন্তা করবেন না, তিনি আপনাকে একা ছেড়ে দিয়েছেন। এর পরিবর্তে চিন্তা করুন, কীভাবে তিনি সেই সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য আপনাকে সাহায্য করছেন। তাই, কেউ যদি আপনার প্রতি খারাপ আচরণ করে, তা হলে তাকে ক্ষমা করে দিন। মনে রাখবেন, “ভালোবাসা অসংখ্য পাপ ঢেকে দেয়।” প্রহরীদুর্গ ২২.১১ ২১ অনু. ৪