গীতসংহিতা
ইষ্রাহীয় এথনের দ্বারা রচিত। মস্কীল।*
৮৯ যিহোবা যে-অটল প্রেম দেখিয়েছেন, আমি চিরকাল সেই বিষয়ে গান গাইব।
আমি সমস্ত প্রজন্মকে তোমার বিশ্বস্ততার বিষয়ে জানাব।
২ কারণ আমি বলেছি: “অটল প্রেম চিরস্থায়ী হবে
আর তুমি স্বর্গে তোমার বিশ্বস্ততা দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছ।”
৩ তুমি বলেছ: “আমি আমার মনোনীত ব্যক্তির সঙ্গে একটা চুক্তি করেছি,
আমি আমার দাস দায়ূদের কাছে দিব্য করে বলেছি:
৪ ‘আমি তোমার বংশকে* চিরকালের জন্য দৃঢ়ভাবে স্থাপন করব
আর তোমার সিংহাসনকে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে টিকিয়ে রাখব।’” (সেলা)
৫ হে যিহোবা, স্বর্গ তোমার অপূর্ব কাজগুলোর প্রশংসা করে,
হ্যাঁ, পবিত্র লোকদের মণ্ডলী তোমার বিশ্বস্ততার প্রশংসা করে।
৬ কারণ আকাশে এমন কে রয়েছে, যার সঙ্গে যিহোবার তুলনা করা যায়?
ঈশ্বরের পুত্রদের মধ্যে এমন কে রয়েছে, যে যিহোবার মতো?
৭ পবিত্র লোকদের সভায়* ঈশ্বরের প্রতি ভয় ও সম্মান দেখানো হয়,
যারা তাঁর চারপাশে রয়েছে, তাদের সবার জন্য তিনি মহৎ ও বিস্ময়কর ঈশ্বর।
৮ হে স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা,
হে যাঃ, তোমার মতো শক্তিশালী আর কে রয়েছে?
তুমি পুরোপুরিভাবে বিশ্বস্ত।
৯ তুমি গর্জনকারী সমুদ্রের উপর কর্তৃত্ব কর,
যখন সেটার ঢেউ ওঠে, তখন তুমি তা শান্ত করে দাও।
১০ তুমি রাহবকে* নিহত ব্যক্তির মতো পিষে দিয়েছ।
তোমার শক্তিশালী হাত দিয়ে তোমার শত্রুদের ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছ।
১১ আকাশ তোমার, পৃথিবীও তোমার,
এই উর্বর জমি এবং এতে যা-কিছু রয়েছে, সেই সমস্ত কিছু তুমিই তৈরি করেছ।
১২ উত্তর দিক এবং দক্ষিণ দিককে তুমিই সৃষ্টি করেছ,
তাবোর ও হর্মোণ পর্বত আনন্দের সঙ্গে তোমার নামের প্রশংসা করে।
১৩ তোমার হাত শক্তিশালী,
তোমার হাত দৃঢ়,
তোমার ডান হাত উচ্চীকৃত হয়েছে।
১৪ ধার্মিকতা ও ন্যায়বিচার তোমার সিংহাসনের ভিত্তি।
অটল প্রেম এবং বিশ্বস্ততা তোমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকে।
১৫ সুখী সেই লোকেরা, যারা আনন্দের সঙ্গে তোমার প্রশংসা করে।
হে যিহোবা, তারা তোমার মুখের আলোতে চলে।
১৬ তারা তোমার নামের কারণে সারাদিন ধরে আনন্দ করে
আর তোমার ন্যায়বিচারের কারণে তারা উচ্চীকৃত হয়।
১৭ কারণ তুমি তাদের মহিমা ও শক্তি
আর তোমার অনুমোদনের কারণেই আমাদের শক্তি বৃদ্ধি পায়।*
১৮ কারণ আমাদের ঢাল যিহোবার কাছ থেকে এসেছেন,
আমাদের রাজা ইজরায়েলের পবিত্র ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন।
১৯ সেই সময়ে তুমি এক দর্শনে তোমার অনুগত লোকদের বলেছিলে:
“আমি একজন বীরযোদ্ধাকে শক্তি দিয়েছি,
আমি আমার মনোনীত লোকদের মধ্য থেকে একজনকে উচ্চীকৃত করেছি।
২০ আমি আমার দাস দায়ূদকে পেয়েছি,
আমি আমার পবিত্র তেল দিয়ে তাকে অভিষিক্ত করেছি।
২১ আমার হাত তাকে ধরে রাখবে,
আমার হাত তাকে শক্তিশালী করবে।
২২ কোনো শত্রু তার কাছ থেকে কর আদায় করবে না,
কোনো মন্দ ব্যক্তি তার উপর অত্যাচার করবে না।
২৩ আমি তার সামনে তার শত্রুদের পিষে ফেলব
আর যারা তাকে ঘৃণা করে, তাদের মেরে ফেলব।
২৪ আমার বিশ্বস্ততা এবং অটল প্রেম তার সঙ্গে রয়েছে,
আমার নামের কারণে তার শক্তি বৃদ্ধি পাবে।*
২৫ আমি সমুদ্রকে তার হাতের* নীচে রাখব,
নদীকে তার ডান হাতের নীচে রাখব।
২৬ সে আমাকে ডেকে বলবে: ‘তুমি আমার পিতা,
আমার ঈশ্বর এবং আমার পরিত্রাণের শৈল।’
২৭ আমি তাকে আমার প্রথমজাত করব,
তাকে পৃথিবীর সমস্ত রাজার চেয়ে মহান করব।
২৮ আমি চিরকাল তার প্রতি অটল প্রেম দেখাব
আর তার সঙ্গে আমার যে-চুক্তি রয়েছে, তা কখনো ভাঙবে না।
৩০ তার ছেলেরা যদি আমার আইন পালন করা ছেড়ে দেয়
এবং আমার আদেশ* অনুসারে না চলে,
৩১ তারা যদি আমার নিয়মের বিরুদ্ধে যায়
এবং আমার আজ্ঞাগুলো পালন না করে,
৩২ তা হলে আমি তাদের অবাধ্যতার* কারণে তাদের লাঠি দিয়ে মারব
এবং তাদের ভুলের কারণে তাদের চাবুক মারব।
৩৩ কিন্তু, আমি কখনো তার প্রতি অটল প্রেম দেখানো বন্ধ করব না
কিংবা আমার প্রতিজ্ঞা ভেঙে অবিশ্বস্ত হব না।
৩৪ আমি কখনো আমার চুক্তি ভাঙব না
কিংবা আমি যা বলেছি, সেটা পরিবর্তন করব না।
৩৫ আমি এক বার আমার পবিত্রতার দিব্য করে দায়ূদকে বলে দিয়েছি,
তাই আমি দায়ূদকে মিথ্যা কথা বলব না।
৩৬ তার বংশ চিরকাল ধরে টিকে থাকবে,
তার সিংহাসন আমার সামনে সূর্যের মতো টিকে থাকবে।
৩৭ তার সিংহাসন চাঁদের মতোই চিরকাল প্রতিষ্ঠিত থাকবে,
যেটা আকাশে এক বিশ্বস্ত সাক্ষির মতো।” (সেলা)
৩৮ কিন্তু, তুমি নিজে তোমার অভিষিক্ত ব্যক্তিকে দূর করে দিয়েছ
এবং তাকে প্রত্যাখ্যান করেছ, তুমি তার উপর প্রচণ্ড রেগে গিয়েছ।
৩৯ তুমি তোমার দাসের সঙ্গে করা চুক্তিকে তুচ্ছ করেছ,
তুমি তার মুকুট মাটিতে ছুড়ে ফেলে সেটাকে কলুষিত করেছ।
৪০ তুমি তার সমস্ত পাথরের প্রাচীর* ভেঙে দিয়েছ,
তুমি তার দুর্গগুলোকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছ।
৪১ যারা তার পাশ দিয়ে যায়, তারা সবাই তাকে লুট করে নিয়েছে,
তার প্রতিবেশীরা তার বদনাম করে।
৪২ তুমি তার বিরোধীদের জয়ী করেছ,*
তুমি তার সমস্ত শত্রুকে আনন্দ করার সুযোগ দিয়েছ।
৪৩ তুমি তার তলোয়ার অকেজো করে দিয়েছ
আর তুমি যুদ্ধে তাকে টিকে থাকতে দাওনি।
৪৪ তুমি তার মহিমা শেষ করে দিয়েছ
এবং তার সিংহাসন মাটিতে ছুড়ে ফেলেছ।
৪৫ তুমি তার যৌবনকালের দিনগুলো কমিয়ে দিয়েছ,
তুমি তাকে লজ্জা দিয়ে ঢেকে দিয়েছ। (সেলা)
৪৬ হে যিহোবা, তুমি কতদিন ধরে তোমার মুখ ঘুরিয়ে রাখবে? চিরকাল ধরে?
তোমার ক্রোধের আগুন কি এভাবেই জ্বলতে থাকবে?
৪৭ স্মরণ করো যে, আমার জীবন কতটা সংক্ষিপ্ত!
তুমি কি কোনো উদ্দেশ্য ছাড়াই সমস্ত মানুষকে সৃষ্টি করেছিলে?
৪৮ কোনো মানুষ কি মারা না গিয়ে সবসময় বেঁচে থাকতে পারে?
সে কি কবরের* হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে? (সেলা)
৪৯ হে যিহোবা, অতীতে তুমি অটল প্রেম দেখিয়ে যে-সমস্ত কাজ করেছিলে, সেগুলো কোথায়,
যেগুলোর বিষয়ে তুমি নিজের বিশ্বস্ততার কারণে দায়ূদের কাছে দিব্য করেছিলে?
৫০ হে যিহোবা, তোমার দাসদের যে-টিটকারি দেওয়া হয়, সেগুলো স্মরণ করো,
কীভাবে আমাকে সমস্ত লোকের টিটকারি সহ্য* করতে হয়, তা স্মরণ করো।
৫১ হে যিহোবা লক্ষ করো, কীভাবে তোমার শত্রুরা তোমার অভিষিক্ত ব্যক্তির নিন্দা করে,
কীভাবে তারা তার প্রতিটা পদচিহ্নের নিন্দা করে।
৫২ চিরকাল যিহোবার প্রশংসা হোক। আমেন, আমেন।