ইফিষীয়দের প্রতি চিঠি
৫ অতএব, প্রিয় সন্তান হিসেবে তোমরা ঈশ্বরের অনুকারী হও ২ এবং প্রেম দেখিয়ে চলো, যেমনটা খ্রিস্টও আমাদের* প্রতি দেখিয়েছিলেন। তিনি আমাদের প্রেম করেছিলেন এবং আমাদের* জন্য নিজের জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশে এক সুগন্ধি বলি হিসেবে দান করেছিলেন।
৩ যৌন অনৈতিকতা* এবং কোনো ধরনের অশুচিতা বা লোভের বিষয় নিয়ে তোমাদের মধ্যে যেন কথাও না হয়, কারণ ঈশ্বরের দাসদের* পক্ষে তা উপযুক্ত নয়; ৪ কিংবা লজ্জাজনক আচরণ, আজেবাজে কথাবার্তা এবং নোংরা রসিকতা যেন তোমাদের মধ্যে না হয়, কারণ এগুলো অনুপযুক্ত বিষয়। বরং তোমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দাও। ৫ কারণ তোমরা জান এবং পুরোপুরিভাবে বুঝতেও পার, যারা যৌন অনৈতিকতায়* রত আছে, যারা অশুচি কাজ করে এবং যারা লোভী অর্থাৎ যাদের এক ধরনের প্রতিমাপূজক বলা যায়, তারা খ্রিস্ট ও ঈশ্বরের রাজ্য লাভ করে* না।
৬ কেউ যেন অনর্থক কথাবার্তার দ্বারা তোমাদের প্রতারিত না করে, কারণ এই ধরনের বিষয় সেই লোকদের উপর ঈশ্বরের ক্রোধ নিয়ে আসে, যারা তাঁর বাধ্য নয়। ৭ অতএব, তোমরা তাদের মতো কাজ কোরো* না; ৮ কারণ একসময় তোমরা অন্ধকারে ছিলে, কিন্তু এখন তোমরা প্রভুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আলোতে আছ। তাই, আলোর সন্তান হিসেবে চলো, ৯ কারণ আলোতে চলার অর্থ হল সমস্ত বিষয়ে সদয় হওয়া, ধার্মিক হওয়া এবং সত্যের সঙ্গে মিল রেখে জীবনযাপন করা। ১০ প্রভুর প্রীতিজনক কী, সেই বিষয়ে সবসময় নিশ্চিত হও; ১১ অন্ধকারের নিষ্ফল কাজগুলোতে অংশ নিয়ো না;* বরং সেগুলো প্রকাশ করে দাও। ১২ কারণ তারা যে-বিষয়গুলো গোপনে করে থাকে, সেগুলো এমনকী বলাও লজ্জার বিষয়। ১৩ যে-বিষয়গুলো প্রকাশ করে দেওয়া* হচ্ছে, সেগুলো আলোর দ্বারা প্রকাশ করা হচ্ছে আর এভাবে যে-বিষয়গুলো সঠিক নয়, সেগুলো প্রকাশ করে দেওয়া হচ্ছে। ১৪ তাই, পবিত্র শাস্ত্রে বলা আছে: “হে ঘুমন্ত ব্যক্তিরা, জাগো এবং মৃত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে ওঠো, এতে খ্রিস্ট তোমাদের উপর আলো বর্ষণ করবেন।”
১৫ অতএব, তোমরা কীভাবে চলছ, তা ভালোভাবে লক্ষ করো। মূর্খ ব্যক্তির মতো না চলে বরং বিজ্ঞ ব্যক্তির মতো চলো, ১৬ তোমাদের সময়কে সর্বোত্তম উপায়ে ব্যবহার করো,* কারণ আমরা মন্দ সময়ে বাস করছি। ১৭ তাই, নির্বোধ হোয়ো না,* বরং যিহোবার* ইচ্ছা কী, তা সবসময় বোঝার চেষ্টা করো। ১৮ দ্রাক্ষারস* খেয়ে মাতাল হোয়ো না, কারণ তা উচ্ছৃঙ্খলতার* দিকে পরিচালিত করে, বরং সবসময় পবিত্র শক্তিতে পরিপূর্ণ হও। ১৯ গান করার মাধ্যমে পরস্পরকে* শক্তিশালী করো, ঈশ্বরের প্রশংসা করো, উপাসনার উদ্দেশে গান করো এবং হৃদয়ের গভীর থেকে যিহোবার* উদ্দেশে প্রশংসাগান করো, ২০ সবসময় সমস্ত কিছুর জন্য আমাদের ঈশ্বর ও পিতাকে আমাদের প্রভু যিশু খ্রিস্টের নামে ধন্যবাদ দাও।
২১ খ্রিস্টের প্রতি গভীর সম্মানের কারণে তোমরা পরস্পরের বশীভূত থাকো। ২২ স্ত্রীরা যেমন প্রভুর বশীভূত, তেমনই তারা তাদের স্বামীদের বশীভূত থাকুক, ২৩ কারণ স্বামী তার স্ত্রীর মস্তক, ঠিক যেমন খ্রিস্টও মণ্ডলীর অর্থাৎ দেহের মস্তক। তিনিই সেই দেহের ত্রাণকর্তা। ২৪ আর মণ্ডলী যেমন খ্রিস্টের বশীভূত, তেমনই স্ত্রীদেরও সমস্ত বিষয়ে তাদের স্বামীদের বশীভূত হওয়া উচিত। ২৫ স্বামীরা, তোমরা সবসময় তোমাদের স্ত্রীদের ভালোবেসো, ঠিক যেমন খ্রিস্টও মণ্ডলীকে ভালোবেসেছেন এবং মণ্ডলীর জন্য নিজের জীবন দান করেছেন, ২৬ যেন তিনি মণ্ডলীকে ঈশ্বরের বাক্যের জল দ্বারা ধুয়ে শুচি করেন আর এভাবে পবিত্র করতে পারেন, ২৭ যেন মণ্ডলী তাঁর দৃষ্টিতে সুন্দর হয়ে উঠতে পারে, এটাতে কোনো দাগ বা খুঁত কিংবা এই ধরনের কোনো কিছু না থাকে, বরং এটা যেন পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক হয়।
২৮ একইভাবে, স্বামীদেরও তাদের স্ত্রীদের নিজেদের দেহের মতো ভালোবাসা উচিত। যে নিজের স্ত্রীকে ভালোবাসে, সে নিজেকেই ভালোবাসে। ২৯ কেউ তো কখনো নিজের দেহকে ঘৃণা করে না, বরং সে নিজের দেহের জন্য পুষ্টি জোগায় এবং দেহকে মূল্যবান বলে গণ্য করে, ঠিক যেমন খ্রিস্টও মণ্ডলীর প্রতি করে থাকেন। ৩০ কারণ আমরা তাঁর দেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। ৩১ “এই কারণে একজন পুরুষ তার বাবা ও মাকে ত্যাগ করে তার স্ত্রীর প্রতি আসক্ত হবে* আর তারা দু-জন একাঙ্গ হবে।” ৩২ এই পবিত্র রহস্য মহৎ বিষয়। আমি খ্রিস্ট ও মণ্ডলীর বিষয়ে বলছি। ৩৩ যাই হোক, তোমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ স্ত্রীকে নিজের মতো ভালোবেসো; আর স্ত্রীর উচিত, যেন সে তার স্বামীকে গভীর সম্মান করে।