দ্বিতীয় বিবরণ
২০ “তুমি যখন তোমার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাবে এবং দেখবে যে, তাদের কাছে তোমাদের চেয়ে অনেক বেশি ঘোড়া, রথ ও সৈন্য রয়েছে, তখন তোমরা ভয় পাবে না কারণ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার সঙ্গে রয়েছেন, যিনি তোমাকে মিশর থেকে বের করে এনেছেন। ২ তোমরা যখন যুদ্ধে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, তখন যাজক সৈন্যদের সামনে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলবে। ৩ সে সৈন্যদের এই কথা বলবে, ‘হে ইজরায়েল শোনো, তোমরা তোমাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছ। তোমরা তোমাদের হৃদয়কে দুর্বল হতে দেবে না। তোমরা তোমাদের শত্রুদের একটুও ভয় পাবে না, তাদের কারণে আতঙ্কিত হবে না কিংবা ভয়ে থরথর করে কাঁপবে না। ৪ কারণ তোমাদের ঈশ্বর যিহোবা তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছেন আর তিনি তোমাদের হয়ে শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন এবং তোমাদের রক্ষা করবেন।’
৫ “আর সেনা আধিকারিকেরাও* সৈন্যদের এই কথা বলবে, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি রয়েছে, যে নতুন বাড়ি তৈরি করেছে কিন্তু এখনও সেখানে থাকতে শুরু করেনি? যদি থাকে, তা হলে সে যেন নিজের বাড়ি ফিরে যায়। নাহলে, সে যদি যুদ্ধে মারা যায়, তা হলে অন্য কেউ তার বাড়িতে গিয়ে থাকতে শুরু করবে। ৬ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি রয়েছে, যে খেতে আঙুর গাছ লাগিয়েছে কিন্তু এখনও সেটার ফল খায়নি? যদি থাকে, তা হলে সে যেন নিজের বাড়ি ফিরে যায়। নাহলে, সে যদি যুদ্ধে মারা যায়, তা হলে অন্য কেউ তার খেতের ফল খাবে। ৭ তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি রয়েছে, যার বাগ্দান হয়েছে কিন্তু এখনও বিয়ে হয়নি? যদি থাকে, তা হলে সে যেন নিজের বাড়ি ফিরে যায়। নাহলে, সে যদি যুদ্ধে মারা যায়, তা হলে অন্য কেউ তার বাগ্দত্তাকে বিয়ে করবে।’ ৮ সেনা আধিকারিকেরা* সৈন্যদের এই প্রশ্নও জিজ্ঞেস করবে, ‘তোমাদের মধ্যে এমন কেউ কি রয়েছে, যে খুব ভীতু এবং দুর্বল মনের? যদি থাকে, তা হলে সে যেন নিজের বাড়ি ফিরে যায়। নাহলে, সে তার ভাইদেরও মনোবল ভেঙে দেবে।’ ৯ এই সমস্ত কিছু বলার পর, সেনা আধিকারিকেরা* সৈন্যদের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সেনাপতিদের নিযুক্ত করবে।
১০ “যখন তুমি কোনো নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সেটার কাছে যাবে, তখন তুমি প্রথমে তাদের সামনে শান্তির প্রস্তাব রাখবে আর তাদের জানাবে যে, শান্তি স্থাপন করার জন্য তোমার কোন কোন শর্ত রয়েছে। ১১ যদি সেই নগর তোমার শর্ত মেনে তোমার সঙ্গে শান্তি স্থাপন করতে রাজি হয় এবং তোমার জন্য নগরের দরজা খুলে দেয়, তা হলে সেই নগরের সমস্ত লোক তোমার দাস হয়ে যাবে এবং তারা তোমার সেবা করবে। ১২ কিন্তু, সেই নগর যদি তোমার সঙ্গে শান্তি স্থাপন করতে প্রত্যাখ্যান করে এবং তোমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসে, তা হলে তুমি সেই নগর অবরোধ করবে। ১৩ তোমার ঈশ্বর যিহোবা অবশ্যই সেই নগরকে তোমার হাতে সমর্পণ করবেন আর তুমি সেখানকার প্রত্যেক পুরুষকে তলোয়ার দিয়ে মেরে ফেলবে। ১৪ কিন্তু, তুমি মহিলাদের, বাচ্চাদের এবং সেখানকার পশুপাল আর সেইসঙ্গে নগরের সমস্ত কিছু লুট করা জিনিসের মতো নিয়ে নেবে। তুমি তোমার শত্রুদের কাছ থেকে লুট করা জিনিস নিজের জন্য নিয়ে নেবে কারণ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে সেগুলো দিয়েছেন।
১৫ “তুমি সেই সমস্ত নগরের প্রতি এমনটা করবে, যেগুলো তোমার চেয়ে অনেক দূরে অবস্থিত এবং যে-নগরগুলো তোমার আশেপাশের জাতির নয়। ১৬ কিন্তু, তোমার আশেপাশের জাতির যে-নগরগুলো রয়েছে, যেগুলো তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে উত্তরাধিকার হিসেবে দিচ্ছেন, সেখানে তুমি কাউকে জীবিত রাখবে না। ১৭ তুমি সেখানে বসবাসরত হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে দেবে, ঠিক যেমনটা তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে আজ্ঞা দিয়েছেন, ১৮ যাতে ওই জাতিগুলো তাদের দেবতাদের জন্য যে-জঘন্য কাজগুলো করে থাকে, সেই জঘন্য কাজগুলো তোমাদের না শেখায় এবং তোমাদের ঈশ্বর যিহোবার বিরুদ্ধে তোমাদের পাপ করতে পরিচালিত না করে।
১৯ “তুমি যখন কোনো নগর অবরোধ কর এবং অনেক দিন ধরে সেটার বিরুদ্ধে যুদ্ধ কর, তখন তুমি যেন সেখানকার গাছপালা কুড়ুল দিয়ে কেটে ধ্বংস না কর। তুমি সেই গাছগুলোর ফল খেতে পার কিন্তু তুমি গাছগুলো কেটে ফেলবে না। মাঠের সেই গাছগুলো কি মানুষ যে, তুমি সেগুলো আক্রমণ করে ধ্বংস করবে? ২০ তুমি কেবল সেই গাছগুলোই কাটতে পার, যেগুলোর বিষয়ে তুমি জান যে, সেগুলো ফল দেয় না। আর যতদিন না তুমি সেই নগর দখল করে নিচ্ছ, ততদিন পর্যন্ত তুমি সেই গাছগুলো কেটে নগর অবরোধ করার জন্য ব্যবহার করতে পার।