দ্বিতীয় বিবরণ
১৯ “তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে সেই দেশ দেবেন, যেখানে অন্য জাতিগুলো বাস করে। যিহোবা সেই জাতিগুলোকে বিনষ্ট করে দেবেন আর তুমি তাদের নগরে ও বাড়িতে বাস করবে। ২ যখন তোমার ঈশ্বর যিহোবা সেই দেশ তোমাকে দখল করার জন্য দিয়ে দেবেন, তখন তুমি সেই দেশে তিনটে নগর আলাদা করে রাখবে। ৩ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দখল করার জন্য দেবেন, সেখানকার এলাকাকে তুমি তিন ভাগে ভাগ করবে আর সেই নগরগুলোতে পৌঁছানোর জন্য রাস্তা প্রস্তুত করবে, যাতে কোনো খুনি সেই নগরগুলোর মধ্যে কোনো একটাতে পালিয়ে যেতে পারে।
৪ “কিন্তু, সেই নগরগুলোতে যেন কেবল এমন খুনিকেই থাকতে দেওয়া হয়, যে ঘৃণার কারণে নয় কিন্তু অনিচ্ছাকৃতভাবে কাউকে খুন করেছে। ৫ ধরো, একজন ব্যক্তি অন্য একজনের সঙ্গে বনে কাঠ কাটতে গিয়েছে আর যখন সে গাছ কাটার জন্য তার কুড়ুল উপরের দিকে উঠাল, তখন কুড়ুলের ফলাটা বাঁট থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে সেই অন্য ব্যক্তিটিকে আঘাত করল আর সে মারা গেল। তখন সেই খুনিকে সেই নগরগুলোর মধ্যে কোনো একটাতে পালিয়ে যেতে হবে আর সেখানেই থাকতে হবে। ৬ যদি সেই নগর অনেক দূরে অবস্থিত হয়, তা হলে রক্তের প্রতিশোধদাতা যখন ভীষণ রেগে গিয়ে সেই খুনিকে তাড়া করবে, তখন রাস্তাতেই তাকে ধরে ফেলবে এবং তাকে হত্যা করবে। কিন্তু, তাকে হত্যা করা উচিত হবে না কারণ সেই ব্যক্তি যাকে খুন করেছে, তাকে সে ঘৃণা করত না। ৭ এইজন্য আমি তোমাকে এই আজ্ঞা দিচ্ছি: ‘তুমি তিনটে নগর আলাদা করে রাখবে।’
৮ “তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার এলাকা বৃদ্ধি করবেন আর তোমাকে দেশের সমস্ত এলাকা দিয়ে দেবেন, ঠিক যেমনটা তিনি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে দিব্য করে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। ৯ এটা একমাত্র তখনই হবে, যখন তোমার ঈশ্বর যিহোবাকে ভালোবাসার এবং সবসময় তাঁর পথে চলার বিষয়ে আজ আমি তোমাকে যে-আজ্ঞা দিচ্ছি, সেটা তুমি পালন করে চলবে। ঈশ্বর যখন তোমার এলাকা বৃদ্ধি করবেন, তখন তুমি এই তিনটে নগর ছাড়া আরও তিনটে নগর আলাদা করে রাখবে। ১০ এভাবে তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ উত্তরাধিকার হিসেবে দিতে চলেছেন, সেখানে কোনো নির্দোষ ব্যক্তির রক্তপাত হবে না আর তুমি রক্তপাতের দোষে দোষী হবে না।
১১ “কিন্তু, যদি এমন হয় যে, কোনো ব্যক্তি অন্য একজনকে ঘৃণা করত আর সে ওত পেতে তাকে আক্রমণ করে এবং মারাত্মকভাবে আহত করে, যেটার ফলে সেই ব্যক্তিটি মারা যায় আর তারপর সেই খুনি এই নগরগুলোর মধ্যে কোনো একটাতে পালিয়ে যায়, ১২ তা হলে সেই খুনি যে-নগরের বাসিন্দা, সেখানকার প্রাচীনেরা যেন তাকে ফিরিয়ে আনে এবং তাকে রক্তের প্রতিশোধদাতার হাতে তুলে দেয়। সেই খুনিকে যেন মেরে ফেলা হয়। ১৩ তুমি তার প্রতি একটুও দয়া দেখাবে না* আর তুমি ইজরায়েল থেকে নির্দোষ ব্যক্তির রক্তপাতের দোষ মুছে ফেলবে। এর ফলে, তোমার মঙ্গল হবে।
১৪ “তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দখল করার জন্য দিতে চলেছেন, সেখানে তোমরা সবাই যখন উত্তরাধিকার হিসেবে জমি পাবে, তখন তুমি তোমার প্রতিবেশীর জমির সীমাচিহ্ন সরাবে না, যে-চিহ্ন পূর্বপুরুষেরা লাগিয়েছে।
১৫ “যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয় যে, সে কোনো অপরাধ কিংবা পাপ করেছে, তা হলে কেবল এক জন সাক্ষির সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না।* দু-জন বা তিন জন সাক্ষির সাক্ষ্যে সেই বিষয়ের মীমাংসা করতে হবে। ১৬ যদি কোনো ব্যক্তি অন্য একজন ব্যক্তির ক্ষতি করার জন্য তার বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় এবং তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, সে কোনো অপরাধ করেছে, ১৭ তা হলে সেই দু-জন ব্যক্তিকে যিহোবার সামনে এবং যাজকদের ও সেইসঙ্গে তাদের দিনের বিচারকদের সামনে উপস্থিত হতে হবে। ১৮ বিচারকেরা বিষয়টা ভালোভাবে তদন্ত করে দেখবে আর যদি এটা প্রমাণিত হয়, যে-ব্যক্তি সাক্ষ্য দিয়েছে, সে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে আর সে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছে, ১৯ তা হলে সেই মিথ্যা সাক্ষি তার ভাইকে যে-শাস্তি দেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল, তোমরা তাকে সেই একই শাস্তি দেবে। এভাবে তুমি তোমার মধ্য থেকে যা মন্দ, তা দূর করে দেবে। ২০ এতে অন্য লোকেরা এই বিষয়ে শুনে ভয় পেয়ে যাবে আর পরে কখনো তোমার মধ্যে কেউ এইরকম মন্দ কাজ করবে না। ২১ যারা এইরকম মন্দ কাজ করে, তাদের প্রতি তুমি একটুও দয়া দেখাবে না।* তুমি একেবারে উপযুক্ত প্রতিশোধ নেবে, প্রাণের পরিবর্তে প্রাণ, চোখের পরিবর্তে চোখ, দাঁতের পরিবর্তে দাঁত, হাতের পরিবর্তে হাত আর পায়ের পরিবর্তে পা।