গালাতীয়দের প্রতি চিঠি
৫ এই স্বাধীনতার জন্যই খ্রিস্ট আমাদের মুক্ত করেছেন। অতএব, তোমরা দৃঢ় থাকো এবং আবার দাসত্বের জোয়ালে নিজেদের আবদ্ধ কোরো না।
২ দেখো! আমি পৌল, তোমাদের বলছি, তোমরা যদি ত্বকচ্ছেদ* করাও, তা হলে খ্রিস্ট তোমাদের জন্য যা করেছেন, তা বৃথা। ৩ আমি আবার প্রত্যেক পুরুষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি, যে-কেউ ত্বকচ্ছেদ করায়, সে পুরো ব্যবস্থা পালন করতে বাধ্য। ৪ তোমরা যারা আইনের মাধ্যমে ধার্মিক বলে গণ্য হওয়ার চেষ্টা করছ, তোমরা খ্রিস্টের কাছ থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছ; তোমরা তাঁর মহাদয়া থেকে সরে গিয়েছ। ৫ কিন্তু, আমরা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে এমন উপায়ে ধার্মিক বলে গণ্য হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, যা কেবল পবিত্র শক্তি এবং আমাদের বিশ্বাসের মাধ্যমে সম্ভব। ৬ কারণ খ্রিস্ট যিশুর একজন শিষ্যের কাছে ত্বকচ্ছেদ করানোর কিংবা না করানোর কোনো মূল্যই নেই, বরং যে-বিশ্বাস ভালোবাসার মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়, সেটার মূল্য রয়েছে।
৭ তোমরা তো সত্যের পথে ভালোভাবেই চলছিলে।* তাহলে, সত্যের বাধ্য হয়ে চলার ক্ষেত্রে কে তোমাদের বাধা দিল? ৮ এই ধরনের প্ররোচনা তো সেই ঈশ্বরের কাছ থেকে আসেনি, যিনি তোমাদের আহ্বান করেন। ৯ একটুখানি খামির* ময়দার পুরো তালকে ফাঁপিয়ে তোলে। ১০ তোমরা যারা প্রভুর শিষ্য, তোমাদের বিষয়ে আমি নিশ্চিত যে, আমার মতো তোমাদেরও একই মতামত থাকবে; কিন্তু যে তোমাদের বিপথে নিয়ে যেতে চায়, সে যে-ই হোক না কেন, সে তার উপযুক্ত শাস্তি ভোগ করবেই। ১১ হে ভাইয়েরা, আমি যদি ত্বকচ্ছেদ সম্বন্ধে এখনও প্রচার করতাম, তা হলে তারা আমাকে তাড়না করত না আর যাতনাদণ্ডে* যিশু যে মারা গিয়েছেন, সেই বিষয়ে আমার শিক্ষা লোকদের বিশ্বাসের পক্ষে বাধাস্বরূপ* হতো না। ১২ যারা ত্বকচ্ছেদ করানোর নামে তোমাদের বিভ্রান্ত করার তোলার চেষ্টা করছে, তারা নিজেদেরই অঙ্গচ্ছেদ করুক।*
১৩ হে ভাইয়েরা, তোমাদের স্বাধীন হওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে; কেবল দেখো, তোমরা যেন এই স্বাধীনতাকে মাংসিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ করার এক সুযোগ হিসেবে ব্যবহার না কর, বরং তোমরা যেন প্রেমের দ্বারা একে অন্যের সেবা কর। ১৪ কারণ পুরো ব্যবস্থা এই একটা আজ্ঞার মাধ্যমে সারাংশ করা হয়েছে: “তুমি তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মতো ভালোবাসবে।” ১৫ কিন্তু, তোমরা যদি একে অন্যকে আঘাত ও আক্রমণ করতে থাক, তা হলে তোমরা একে অন্যকে ধ্বংস করে ফেলার ঝুঁকির মুখে রয়েছ।
১৬ তবে, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা পবিত্র শক্তির পরিচালনা অনুযায়ী চলো, তা হলে তোমরা কখনো কোনো মাংসিক আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করবে না। ১৭ কারণ মাংসিক আকাঙ্ক্ষা পবিত্র শক্তির বিরোধিতা করে এবং পবিত্র শক্তি মাংসিক আকাঙ্ক্ষার বিরোধিতা করে; এগুলো একে অন্যের বিরোধিতা করে আর এই কারণে তোমরা যে-কাজগুলো করতে চাও, সেগুলো কর না। ১৮ কিন্তু, তোমরা যদি পবিত্র শক্তির দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাক, তা হলে তোমরা আইনের অধীনে নও।
১৯ পাপপূর্ণ স্বভাবের কাজগুলো স্পষ্টভাবে দেখা যায় আর সেগুলো হল, যৌন অনৈতিকতা,* অশুচিতা, নির্লজ্জভাবে করা পাপ কাজ,* ২০ প্রতিমাপূজা, প্রেতচর্চা,* শত্রুতা, বিবাদ, ঈর্ষা, প্রচণ্ড রাগ, মতভেদ, বিভেদ, দলাদলি, ২১ হিংসা, মাতলামি, উচ্ছৃঙ্খলতাপূর্ণ আনন্দোৎসব এবং এইরকম অন্যান্য বিষয়। আমি আগে থেকেই এই বিষয়গুলোর ব্যাপারে তোমাদের সাবধান করে দিচ্ছি, যেমনটা এর আগেও করেছি যে, যারা এই ধরনের কাজগুলো করে চলে, তারা ঈশ্বরের রাজ্য লাভ করবে* না।
২২ অন্যদিকে, পবিত্র শক্তির ফল হল প্রেম, আনন্দ, শান্তি, ধৈর্য, দয়া, মঙ্গলভাব,* বিশ্বাস, ২৩ মৃদুতা, আত্মসংযম। এই বিষয়গুলোর বিরুদ্ধে কোনো আইন নেই। ২৪ আর যারা খ্রিস্ট যিশুর শিষ্য, তারা পাপপূর্ণ স্বভাবকে এর সমস্ত কামনা ও আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে দণ্ডে বিদ্ধ করেছে।
২৫ আমরা যদি পবিত্র শক্তির পরিচালনা অনুযায়ী জীবনযাপন করে থাকি, তা হলে এসো, আমরা পবিত্র শক্তির পরিচালনা অনুযায়ী সঠিক উপায়ে চলি। ২৬ এসো, আমরা আত্মকেন্দ্রিক না হই, একে অন্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতা না করি, একে অন্যকে হিংসা না করি।