যোহনের প্রথম চিঠি
২ হে আমার প্রিয় সন্তানেরা, আমি তোমাদের এইসমস্ত কথা লিখছি, যেন তোমরা কোনো পাপ না কর। আর কেউ যদি পাপ করেও ফেলে, তা হলে পিতার সঙ্গে আমাদের একজন সাহায্যকারী* আছেন। তিনি সেই যিশু খ্রিস্ট, যিনি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করেন। ২ তিনি আমাদের পাপের জন্য এমন এক বলি, যা ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের পুনরায় সম্মিলিত করে,* তবে শুধু আমাদের পাপের জন্যই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে পুরো জগতের পাপের জন্যও। ৩ যদি আমরা তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করে চলি, তবেই আমরা বুঝতে পারব যে, আমরা যিশুকে* জানি। ৪ যে বলে, “আমি যিশুকে* জানি” অথচ তাঁর আজ্ঞাগুলো পালন করে না, সে একজন মিথ্যাবাদী আর সত্য তার মধ্যে নেই। ৫ কিন্তু, যে-কেউ তাঁর বাক্য পালন করে, ঈশ্বরের প্রতি তার ভালোবাসা সত্যিই পূর্ণতা লাভ করে। এটার মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, আমরা তাঁর সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছি। ৬ কেউ যদি বলে, সে তাঁর সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছে, তা হলে তাকে অবশ্যই সেভাবে জীবনযাপন করতে হবে, যেভাবে যিশু করেছিলেন।
৭ প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমি তোমাদের কোনো নতুন আজ্ঞা দিচ্ছি না, বরং এক পুরোনো আজ্ঞা দিচ্ছি, যা প্রথম থেকেই তোমাদের কাছে ছিল। তোমরা যে-বাক্য শুনেছিলে, সেটাই এই পুরোনো আজ্ঞা। ৮ তা সত্ত্বেও, আমি এই আজ্ঞাকেই এক নতুন আজ্ঞা হিসেবে দিচ্ছি, যেটা যিশু পালন করেছিলেন এবং তোমরাও পালন করছ, কারণ অন্ধকার কেটে যাচ্ছে আর প্রকৃত আলো ইতিমধ্যে জ্যোতি ছড়াচ্ছে।
৯ যে বলে, সে আলোতে রয়েছে অথচ নিজের ভাইকে ঘৃণা করে, সে এখনও অন্ধকারে রয়েছে। ১০ যে নিজের ভাইকে ভালোবাসে, সে আলোতে থাকে আর কোনো কিছুই তাকে ভুল করতে পরিচালিত করবে না।* ১১ কিন্তু, যে নিজের ভাইকে ঘৃণা করে, সে অন্ধকারে রয়েছে এবং অন্ধকারে চলছে আর সে জানে না, সে কোথায় যাচ্ছে, কারণ অন্ধকার তার চোখকে অন্ধ করে দিয়েছে।
১২ হে আমার প্রিয় সন্তানেরা, আমি তোমাদের লিখছি, কারণ তাঁর নামের জন্য তোমাদের পাপ ক্ষমা করা হয়েছে। ১৩ বাবারা, আমি তোমাদের লিখছি, কারণ যিনি শুরু থেকেই আছেন, তাঁকে তোমরা জান। যুবকেরা, আমি তোমাদের লিখছি, কারণ তোমরা শয়তানকে* পরাজিত করেছ। সন্তানেরা, আমি তোমাদের লিখছি, কারণ তোমরা পিতাকে জান। ১৪ বাবারা, আমি তোমাদের লিখছি, কারণ যিনি শুরু থেকেই আছেন, তাঁকে তোমরা জান। যুবকেরা, আমি তোমাদের লিখছি, কারণ তোমরা বলবান এবং ঈশ্বরের বাক্য তোমাদের মধ্যে রয়েছে আর তোমরা শয়তানকে* পরাজিত করেছ।
১৫ জগৎকে কিংবা জগতের বিষয়গুলোকে ভালোবেসো না। কেউ যদি জগৎকে ভালোবাসে, তা হলে পিতার প্রতি তার ভালোবাসা নেই; ১৬ কারণ জগতে যা-কিছু রয়েছে অর্থাৎ মাংসিক আকাঙ্ক্ষা, চোখের আকাঙ্ক্ষা এবং নিজের জীবনোপায় জাহির* করার মনোভাব, এগুলো পিতার কাছ থেকে আসে না, বরং জগৎ থেকে আসে। ১৭ এ ছাড়া, এই জগৎ এবং জগতের আকাঙ্ক্ষা* শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু যে-ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করে, সে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
১৮ প্রিয় সন্তানেরা, আমরা শেষ সময়ে রয়েছি আর তোমরা যেমন শুনেছ, খ্রিস্টের বিরোধী* আসছে, এমনকী এখনই খ্রিস্টের অনেক বিরোধী* এসে গিয়েছে আর এটা থেকে আমরা জানতে পারি, আমরা শেষ সময়ে রয়েছি। ১৯ তারা আমাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে গিয়েছে, কিন্তু তারা আমাদের মতো* ছিল না; তারা যদি আমাদের মতো হতো, তা হলে তারা আমাদের সঙ্গে থাকত। কিন্তু, তারা আমাদের মধ্য থেকে বেরিয়ে গিয়েছে, যাতে এটা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, সকলে আমাদের মতো নয়। ২০ পবিত্র ঈশ্বর তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে তোমাদের অভিষিক্ত করেছেন আর তাই তোমাদের সকলের জ্ঞান রয়েছে। ২১ তোমরা সত্য জান না বলে যে আমি তোমাদের লিখছি, তা নয়, বরং তোমরা সত্য জান বলেই লিখছি এবং এই কারণেও লিখছি যে, সত্য থেকে কোনো মিথ্যা আসে না।
২২ যিশুই যে খ্রিস্ট, এই বিষয়টা যে অস্বীকার করে, সে ছাড়া আর কেই-বা মিথ্যাবাদী? সে-ই তো খ্রিস্টের বিরোধী,* যে কিনা পিতাকে ও পুত্রকে অস্বীকার করে। ২৩ যে-কেউ পুত্রকে অস্বীকার করে, তার উপর পিতার অনুমোদন নেই। কিন্তু, যে-কেউ পুত্রকে স্বীকার করে, তার উপর পিতার অনুমোদন রয়েছে। ২৪ তোমরা প্রথম থেকে যা শুনে এসেছ, তা তোমাদের পালন করে চলা উচিত। তোমরা প্রথম থেকে যা শুনে এসেছ, তা যদি পালন করে চল, তা হলে তোমরাও পুত্রের সঙ্গে এবং পিতার সঙ্গে একতাবদ্ধ থাকবে। ২৫ আর ঈশ্বর* নিজে যে-বিষয়ে আমাদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেটা হল অনন্তজীবন।
২৬ আমি তোমাদের এইসমস্ত কথা লিখছি কারণ কেউ কেউ তোমাদের ভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ২৭ ঈশ্বর তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে তোমাদের অভিষিক্ত করেছেন আর সেই পবিত্র শক্তি তোমাদের মধ্যে রয়েছে বলে কারো কাছ থেকে তোমাদের শিক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন নেই; কিন্তু ঈশ্বরই অভিষিক্ত করার মাধ্যমে তোমাদের সমস্ত বিষয়ে শিক্ষা দিচ্ছেন। তোমাদের অভিষেক সত্য, এটা মিথ্যা নয়। তাই, পবিত্র শক্তির কাছ থেকে তোমরা যেমন শিক্ষা লাভ করেছ, তেমনই তোমরা তাঁর সঙ্গে একতাবদ্ধ থাকো। ২৮ অতএব প্রিয় সন্তানেরা, তোমরা তাঁর সঙ্গে একতাবদ্ধ থাকো, যাতে তিনি যখন প্রকাশিত হবেন, তখন আমরা নির্দ্বিধায় কথা বলতে পারি এবং তাঁর উপস্থিতির সময় লজ্জায় তাঁর কাছ থেকে লুকিয়ে না পড়ি। ২৯ তোমরা যদি জান যে, যিশু* ধার্মিক, তা হলে তোমরা এটাও জেনে রাখ, যে-কেউ ধার্মিক, সে ঈশ্বরের সন্তান।