দ্বিতীয় বিবরণ
১০ “সেইসময় যিহোবা আমাকে বললেন, ‘তুমি নিজের জন্য পাথর কেটে আগের ফলকগুলোর মতোই দুটো ফলক তৈরি করো আর একটা কাঠের সিন্দুকও* তৈরি করো। তারপর, তুমি পর্বতে আমার কাছে এসো। ২ এই ফলকগুলোতে আমি সেই কথাগুলো লিখব, যেগুলো আমি আগের ফলকগুলোতে লিখেছিলাম, যেগুলোকে তুমি ভেঙে টুকরো টুকরো করে দিয়েছ। তারপর, তুমি সেই ফলকগুলোকে সিন্দুকে রাখবে।’ ৩ তখন আমি বাবলা কাঠের একটা সিন্দুক তৈরি করলাম আর পাথর কেটে আগের ফলকগুলোর মতোই দুটো ফলক তৈরি করলাম আর সেই ফলক দুটো হাতে নিয়ে পর্বতে উঠলাম। ৪ তখন যিহোবা সেই ফলকগুলোতে দশ আজ্ঞা* লিখলেন, যেগুলো তিনি আগের ফলকগুলোতে লিখেছিলেন এবং সেগুলো আমাকে দিলেন। এগুলো হল সেই আজ্ঞা, যেগুলো যিহোবা পর্বতে আগুনের মধ্য থেকে কথা বলার সময় তোমাদের পুরো মণ্ডলীকে দিয়েছিলেন। ৫ তারপর, আমি পর্বত থেকে নীচে নেমে এলাম আর যিহোবার আজ্ঞা অনুযায়ী আমি ফলকগুলো সেই সিন্দুকে রেখে দিলাম। আর ফলকগুলো সেই সিন্দুকের মধ্যেই রইল।
৬ “এরপর, ইজরায়েলীয়েরা বেরোৎ-বেনেয়াকন থেকে রওনা হয়ে মোষেরোয় পৌঁছাল। সেখানে হারোণ মারা গেলেন আর তাকে কবর দেওয়া হল। তার জায়গায় তার ছেলে ইলিয়াসর যাজক হিসেবে সেবা করতে শুরু করলেন। ৭ এরপর, ইজরায়েলীয়েরা মোষেরো থেকে রওনা হয়ে গুধগোদায় এল আর গুধগোদা থেকে যট্বাথায় গেল, যেখানে অনেক নদী ছিল।
৮ “সেইসময় যিহোবা লেবির বংশকে আলাদা করলেন, যাতে তারা যিহোবার চুক্তির সিন্দুক বহন করে, যিহোবার সামনে উপস্থিত থেকে তাঁর সেবা করে এবং তাঁর নামে লোকদের আশীর্বাদ করে, যেমনটা তারা আজও করছে। ৯ এইজন্য তাদের অন্য ইজরায়েলীয় ভাইদের যেমন জমির অংশ বা উত্তরাধিকার দেওয়া হয়েছিল, লেবীয়দের তেমনটা দেওয়া হল না। যিহোবাই তাদের উত্তরাধিকার, ঠিক যেমনটা তোমার ঈশ্বর যিহোবা তাদের বলেছেন। ১০ আমি আবারও পর্বতে উঠলাম আর আগের মতোই ৪০ দিন এবং ৪০ রাত সেখানেই থাকলাম আর যিহোবা এ-বারও আমার কথা শুনলেন। এইজন্য যিহোবা তোমাকে বিনষ্ট না করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ১১ তারপর যিহোবা আমাকে বললেন, ‘এবার তুমি লোকদের নেতৃত্ব দাও আর রওনা হওয়ার জন্য তাদের প্রস্তুত করো, যাতে তারা গিয়ে সেই দেশ দখল করে নেয়, যেটা দেওয়ার বিষয়ে আমি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে দিব্য করেছিলাম।’
১২ “এখন হে ইজরায়েল, তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার কাছ থেকে কী চান? শুধু এই যে, তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবাকে ভয় কর, সমস্ত বিষয়ে তাঁর দেখানো পথে চল, তাঁকে ভালোবাস, সমস্ত হৃদয় এবং সমস্ত প্রাণ দিয়ে তোমার ঈশ্বর যিহোবার সেবা কর ১৩ এবং যিহোবার সেই আজ্ঞা ও নিয়মগুলো পালন করে চল, যেগুলো আজ আমি তোমাকে দিচ্ছি। এমনটা করলে তোমারই মঙ্গল হবে। ১৪ দেখো, তোমার ঈশ্বর যিহোবাই আকাশের প্রভু। সবচেয়ে উচ্চ আকাশ ও সেইসঙ্গে পৃথিবী এবং সেটার মধ্যে যা-কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। ১৫ কিন্তু, যিহোবা শুধুমাত্র তোমার পূর্বপুরুষদের নিকটবর্তী হলেন এবং তাদের ভালোবাসলেন আর তাদের সন্তানদের, হ্যাঁ, সমস্ত জাতির মধ্য থেকে তোমাদের বেছে নিলেন, যেমনটা আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি। ১৬ এখন তোমরা তোমাদের হৃদয় শুচি করো* আর একগুঁয়েমি ছেড়ে দাও। ১৭ কারণ তোমাদের ঈশ্বর যিহোবা সমস্ত ঈশ্বরের চেয়ে মহান ঈশ্বর আর সমস্ত প্রভুর চেয়ে মহান প্রভু। তিনি মহান, শক্তিশালী ও বিস্ময়কর ঈশ্বর, যিনি কারো সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করেন না কিংবা ঘুস নেন না। ১৮ তিনি লক্ষ রাখেন যেন অনাথ* ও বিধবাদের প্রতি ন্যায়বিচার করা হয়। তিনি তোমাদের মাঝে বসবাসরত বিদেশিদের ভালোবাসেন এবং তাদের খাবারদাবার ও পোশাক-আশাক জুগিয়ে দেন। ১৯ তোমরাও বিদেশিদের ভালোবেসো কারণ একসময় তোমরাও মিশরে বিদেশি ছিলে।
২০ “তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবাকেই ভয় করবে, তাঁরই সেবা করবে, তাঁকেই আঁকড়ে ধরে রাখবে এবং তাঁর নামেই দিব্য করবে। ২১ তুমি একমাত্র তাঁরই প্রশংসা করবে। তিনি তোমার ঈশ্বর, যিনি তোমার জন্য মহৎ ও বিস্ময়কর কাজ করেছেন, যেমনটা তুমি নিজের চোখে দেখেছ। ২২ তোমার পূর্বপুরুষেরা যখন মিশরে গিয়েছিল, তখন তারা মাত্র ৭০ জন ছিল কিন্তু এখন দেখো, তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার জনসংখ্যা এতটা বৃদ্ধি করেছেন যে, আজ তুমি আকাশের তারাদের মতো অসংখ্য হয়ে গিয়েছ।