ইফিষীয়দের প্রতি চিঠি
২ আর ঈশ্বর তোমাদের জীবিত করেছেন, যদিও তোমরা তোমাদের অপরাধের ও পাপের কারণে মৃত ছিলে। ২ একসময় তোমরা এই বিষয়গুলোই করতে, এই জগতের বিধিব্যবস্থা* অনুসারে এবং এই জগতের শাসকের ইচ্ছা অনুযায়ী চলতে। সে এই জগতের মনোভাবের উপর কর্তৃত্ব করে, যে-মনোভাব বাতাসের মতো চারদিকে ছড়িয়ে রয়েছে আর এই মনোভাব সেই লোকদের মধ্যে কাজ করে, যারা ঈশ্বরের বাধ্য নয়। ৩ হ্যাঁ, সেই লোকদের মতো আমরাও সকলে একসময় মাংসিক আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আচরণ করতাম, মাংসিক ইচ্ছা এবং নিজেদের চিন্তাভাবনা অনুযায়ী কাজ করতাম আর আমরা জন্ম থেকেই সেই লোকদের মতো ছিলাম, যাদের উপর ঈশ্বরের ক্রোধ রয়েছে।* ৪ কিন্তু, ঈশ্বরের করুণা অসীম আর আমাদের প্রতি তাঁর মহৎ প্রেম রয়েছে বলে ৫ তিনি আমাদের জীবিত করেছেন এবং খ্রিস্টের সঙ্গে এক করেছেন, যখন কিনা আমরা আমাদের অপরাধের কারণে মৃত ছিলাম। আর তাঁর মহাদয়ার কারণেই তোমরা রক্ষা পেয়েছ। ৬ এ ছাড়া, খ্রিস্ট যিশুর শিষ্য হিসেবে ঈশ্বর আমাদের খ্রিস্টের সঙ্গে জীবিত করেছেন এবং তাঁর সঙ্গে স্বর্গীয় স্থানে বসিয়েছেন, ৭ যেন আসন্ন বিধিব্যবস্থাগুলোতে* তিনি তাঁর অসীম মহাদয়া প্রকাশ করতে পারেন। আমরা যারা খ্রিস্টের শিষ্য, আমাদের প্রতি সদয় মনোভাব* দেখিয়ে তিনি এই অসীম মহাদয়া প্রকাশ করবেন।
৮ এই মহাদয়ার কারণেই তোমরা তোমাদের বিশ্বাসের মাধ্যমে রক্ষা পেয়েছ আর এটা তোমাদের নিজেদের প্রচেষ্টার জন্য হয়নি; বরং এটা হল ঈশ্বরের দান। ৯ না, এটা তোমাদের নিজেদের কাজের ফল নয় আর তাই কেউই যেন গর্ব না করে। ১০ আমরা ঈশ্বরের সৃষ্টি; আমরা যেহেতু খ্রিস্ট যিশুর শিষ্য, তাই সেই ভালো কাজগুলো করে চলার জন্য আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে, যেগুলো ঈশ্বর আগেই ঠিক করে রেখেছেন।
১১ অতএব, মনে করে দেখ, একসময় তোমরা জন্মগতভাবে ন-যিহুদি লোক ছিলে; যাদের ত্বকচ্ছেদ* মানুষের মাধ্যমে হয়েছিল, সেই ছিন্নত্বক* লোকেরা তোমাদের অচ্ছিন্নত্বক* লোক বলে ডাকত। ১২ সেই সময় তোমরা খ্রিস্টকে জানতে না, তোমরা ইজরায়েল জাতির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলে, তোমরা প্রতিজ্ঞার সঙ্গে যুক্ত চুক্তিগুলোর অন্তর্ভুক্ত ছিলে না; এই জগতে তোমাদের কোনো প্রত্যাশা ছিল না এবং তোমরা ঈশ্বরকে জানতে না। ১৩ কিন্তু, এখন যেহেতু তোমরা খ্রিস্ট যিশুর শিষ্য হয়েছ, তাই তোমরা যারা একসময় ঈশ্বরের কাছ থেকে অনেক দূরে ছিলে, খ্রিস্টের রক্তের মাধ্যমে তোমাদের ঈশ্বরের কাছে আনা হয়েছে। ১৪ খ্রিস্টই আমাদের জন্য শান্তি নিয়ে এসেছেন। তিনি দু-টো দলকে একটা দল করেছেন এবং সেই দু-দলের মাঝখানে যে-প্রাচীর ছিল, তা ভেঙে ফেলেছেন। ১৫ তাঁর দেহ উৎসর্গ করার মাধ্যমে তিনি শত্রুতা দূর করে দিয়েছেন, ব্যবস্থায়* উল্লেখিত আইন ও আজ্ঞাগুলো অকার্যকর করে দিয়েছেন, যেন সেই দু-টো দলকে, যারা কিনা তাঁর শিষ্য, একটা দল, এক নতুন মানুষ করতে পারেন এবং শান্তি নিয়ে আসতে পারেন ১৬ আর যাতনাদণ্ডের* মাধ্যমে সেই দু-টো দলকে এক দেহে ঈশ্বরের সঙ্গে পুনরায় পুরোপুরিভাবে সম্মিলিত করতে পারেন, কারণ তিনি তাঁর মৃত্যুর মাধ্যমে শত্রুতাকে দূর করে দিয়েছেন। ১৭ আর তিনি এসে তোমাদের কাছে অর্থাৎ তোমরা যারা ঈশ্বরের কাছ থেকে দূরে ছিলে এবং যারা তাঁর কাছে ছিলে, উভয়ের কাছে শান্তির সুসমাচার ঘোষণা করেছেন, ১৮ কারণ তাঁর মাধ্যমে আমরা, উভয় দলের লোকেরা, একই পবিত্র শক্তির মাধ্যমে পিতার কাছে আসতে সমর্থ হয়েছি।
১৯ তাই, তোমরা আর অপরিচিত ব্যক্তি ও বিদেশি নও, বরং তোমরা পবিত্র ব্যক্তিদের সহনাগরিক এবং ঈশ্বরের পরিবারের সদস্য ২০ আর প্রেরিতেরা ও ভাববাদীরা হলেন ভিত্তি এবং সেই ভিত্তির কোণের অতি গুরুত্বপূর্ণ পাথর হলেন খ্রিস্ট যিশু। সেই ভিত্তির উপরই তোমাদের গেঁথে তোলা হয়েছে। ২১ খ্রিস্টের সঙ্গে এক হওয়ায় পুরো দালানের প্রতিটা অংশ পরস্পর দৃঢ়ভাবে সংযুক্ত হয়ে যিহোবার* জন্য এক পবিত্র মন্দির হয়ে উঠছে। ২২ খ্রিস্টের সঙ্গে এক হওয়ায় তোমাদেরও একত্রে গেঁথে তোলা হচ্ছে, যেন তোমরা এমন এক স্থান হয়ে উঠতে পার, যেখানে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে বাস করেন।