যোহনের কাছে প্রকাশিত বাক্য
২ “ইফিষের মণ্ডলীর বার্তাবাহকের* প্রতি লেখো: যিনি তাঁর ডান হাতে সাতটা তারা ধরে আছেন এবং যিনি সাতটা সোনার দীপবৃক্ষের মাঝখানে চলাফেরা করেন, তিনি এই কথা বলেন: ২ ‘আমি তোমার কাজ এবং তোমার পরিশ্রম ও ধৈর্য সম্বন্ধে জানি; আর আমি এও জানি, তুমি মন্দ লোকদের সহ্য করতে পার না এবং যারা প্রেরিত নয়, অথচ প্রেরিত হওয়ার দাবি করে, তাদের তুমি পরীক্ষা করেছ এবং তারা যে মিথ্যাবাদী, তা জানতে পেরেছ। ৩ আর তুমি ধৈর্যও দেখাচ্ছ এবং তুমি আমার নামের জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করেছ, ক্লান্ত হয়ে পড়নি। ৪ তা সত্ত্বেও, তোমার বিরুদ্ধে আমার কথা রয়েছে। প্রথমে তোমার যে-প্রেম ছিল, তা তুমি পরিত্যাগ করেছ।
৫ “‘অতএব, স্মরণ করে দেখ, তুমি কোন অবস্থা থেকে কোথায় পতিত হয়েছ; তুমি অনুতপ্ত হও এবং তুমি প্রথমে যে-কাজগুলো করতে, সেগুলো আবারও করো। তুমি যদি অনুতপ্ত না হও, তা হলে আমি তোমার কাছে আসব এবং তোমার দীপবৃক্ষ যেখানে রয়েছে, সেই স্থান থেকে সেটা সরিয়ে ফেলব। ৬ তবে, তোমার মধ্যে এই ভালো বিষয় রয়েছে: তুমি নীকলায়তীয়দের* কাজগুলোকে ঘৃণা কর, যেগুলোকে আমিও ঘৃণা করি। ৭ যার কান আছে, সে শুনুক, পবিত্র শক্তি মণ্ডলীগুলোকে কী বলছে: যে জয় করে, তাকে আমি জীবনবৃক্ষের ফল খেতে দেব, যে-বৃক্ষ ঈশ্বরের পরমদেশে রয়েছে।’
৮ “আর স্মুর্ণার মণ্ডলীর বার্তাবাহকের* প্রতি লেখো: যিনি ‘প্রথম ও শেষ,’ যিনি মারা গিয়েছিলেন এবং আবারও জীবিত হয়েছেন, তিনি এই কথা বলেন: ৯ ‘আমি তোমার ক্লেশ ও দরিদ্রতা সম্বন্ধে জানি। কিন্তু তবুও, তুমি ধনী। আর আমি এও জানি, যারা নিজেদের যিহুদি বলে দাবি করে, অথচ যিহুদি নয়, বরং শয়তানের দলের লোক,* তারা তোমার নিন্দা করে। ১০ তুমি খুব শীঘ্রই যা যা ভোগ করবে, সেগুলোর জন্য ভয় পেয়ো না। দেখো! দিয়াবল তোমাদের মধ্যে কাউকে কাউকে কারাগারে বন্দি করতে থাকবে। তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষা করা হবে এবং দশ দিন ধরে তোমাদের ক্লেশ ভোগ করতে হবে। তুমি মৃত্যু পর্যন্ত বিশ্বস্ত থেকো, তা হলে আমি তোমাকে জীবনমুকুট দেব। ১১ যার কান আছে, সে শুনুক, পবিত্র শক্তি মণ্ডলীগুলোকে কী বলছে: যে জয় করে, সে কখনো দ্বিতীয় মৃত্যু ভোগ করবে না।’
১২ “পর্গামের মণ্ডলীর বার্তাবাহকের* প্রতি লেখো: যাঁর কাছে তীক্ষ্ণ ও লম্বা এবং দু-দিকেই ধার রয়েছে এমন একটা খড়্গ আছে, তিনি এই কথা বলেন: ১৩ ‘তুমি কোথায় বাস করছ, তা আমি জানি; সেখানে তো শয়তানের সিংহাসন রয়েছে। কিন্তু তবুও, তুমি আমার প্রতি অনুগত রয়েছ* আর তুমি আমার প্রতি তোমার বিশ্বাস অস্বীকার করনি, এমনকী সেই সময়ও, যখন আমার বিশ্বস্ত সাক্ষি আন্তিপাকে তোমাদের সেই নগরে হত্যা করা হয়েছিল, যেখানে শয়তানের বাসস্থান রয়েছে।
১৪ “‘তা সত্ত্বেও, তোমার বিরুদ্ধে আমার কিছু কথা রয়েছে। তুমি তোমার ওখানে এমন লোকদের থাকতে দিয়েছ, যারা বিলিয়মের শিক্ষা অনুসারে চলে। সে তো বালাককে শিখিয়ে দিয়েছিল, যেন বালাক প্রতিমার প্রসাদ খাওয়ার এবং যৌন অনৈতিক কাজ* করার জন্য ইজরায়েলীয়দের প্রলুব্ধ করে।* ১৫ একইভাবে, তুমি সেই লোকদেরও থাকতে দিয়েছ, যারা নীকলায়তীয়দের* শিক্ষা অনুসারে চলে। ১৬ অতএব, অনুতপ্ত হও। যদি না হও, তা হলে আমি শীঘ্রই তোমার কাছে আসব আর আমার মুখ থেকে যে-লম্বা খড়্গ বের হয়ে আসছে, সেটা দিয়ে আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব।
১৭ “‘যার কান আছে, সে শুনুক, পবিত্র শক্তি মণ্ডলীগুলোকে কী বলছে: যে জয় করে, তাকে আমি গুপ্ত মান্না থেকে কিছুটা মান্না দেব এবং তাকে একটা সাদা নুড়িপাথরও দেব। সেই নুড়িপাথরের উপর একটা নতুন নাম লেখা আছে, যে-নাম অন্য কেউ জানে না, কেবল সে-ই জানে, যে তা পায়।’
১৮ “থুয়াতীরার মণ্ডলীর বার্তাবাহকের* প্রতি লেখো: যাঁর চোখ আগুনের শিখার মতো এবং যাঁর পা চকচকে তামার মতো, ঈশ্বরের সেই পুত্র এই কথা বলেন: ১৯ ‘আমি তোমার কাজ এবং তোমার প্রেম ও বিশ্বাস ও সেবা ও ধৈর্য সম্বন্ধে জানি; আর আমি এও জানি, তুমি প্রথমে যে-সমস্ত কাজ করেছিলে, সেগুলোর চেয়ে এখন আরও উত্তম কাজ করছ।
২০ “‘তা সত্ত্বেও, তোমার বিরুদ্ধে আমার কথা রয়েছে। ঈষেবলের মতো সেই মহিলাকে তুমি থাকতে দিয়েছ, যে নিজেকে ভাববাদিনী বলে। সে তার শিক্ষাগুলোর মাধ্যমে আমার দাসদের ভ্রান্ত করছে, যাতে তারা যৌন অনৈতিক কাজ* করে এবং প্রতিমার প্রসাদ খায়। ২১ আমি তাকে অনুতপ্ত হওয়ার জন্য সময় দিয়েছিলাম, কিন্তু সে তার যৌন অনৈতিকতার* জন্য অনুতপ্ত হতে চায় না। ২২ দেখো! আমি খুব শীঘ্রই তাকে রোগে আক্রান্ত করে বিছানায় ফেলে রাখব এবং যারা তার সঙ্গে ব্যভিচার* করে, তাদের প্রচণ্ড ক্লেশের মধ্যে ফেলব, যদি না তারা সেই কাজগুলোর জন্য অনুতপ্ত হয়, যেগুলো করার জন্য সে তাদের প্ররোচিত করেছিল। ২৩ আর আমি তার সন্তানদের মারাত্মক মহামারি দ্বারা হত্যা করব। এতে সমস্ত মণ্ডলী জানতে পারবে, আমিই মানুষের গভীরতম চিন্তা* ও হৃদয় অনুসন্ধান করি। আর আমি তোমাদের প্রত্যেককে তোমাদের কাজ অনুযায়ী ফল দেব।
২৪ “‘তবে, থুয়াতীরার বাকি লোকেরা, তোমরা যারা ঈষেবলের শিক্ষা গ্রহণ কর না এবং যে-বিষয়গুলোকে “শয়তানের গভীর বিষয়” বলা হয়, সেগুলো সম্বন্ধে কিছুই জান না, তোমাদের আমি বলছি: আমি তোমাদের উপর অন্য আর কোনো বোঝা চাপাচ্ছি না। ২৫ কেবল এটা বলছি, তোমাদের যা আছে, আমি না আসা পর্যন্ত তা দৃঢ়ভাবে ধরে রাখো। ২৬ আর যে জয় করে এবং শেষ পর্যন্ত আমার আজ্ঞা পালন করে, তাকে আমি জগতের লোকদের উপর শাসন করার অধিকার দেব, ২৭ ঠিক যেমন আমি আমার পিতার কাছ থেকে লাভ করেছি। আর সে লোহার দণ্ড দিয়ে লোকদের এমনভাবে শাসন করবে যে, তারা মাটির পাত্রের মতো ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। ২৮ আর আমি তাকে শুকতারা দেব। ২৯ যার কান আছে, সে শুনুক, পবিত্র শক্তি মণ্ডলীগুলোকে কী বলছে।’