দ্বিতীয় বিবরণ
৩৩ সত্য ঈশ্বরের দাস মোশি তার মৃত্যুর আগে ইজরায়েলীয়দের এই বলে আশীর্বাদ করলেন। ২ তিনি বললেন:
“যিহোবা সীনয় থেকে এলেন,
সেয়ীর থেকে তাদের উপর তাঁর আলো এসে পড়ল।
তিনি পারণের পার্বত্য এলাকা থেকে তাঁর মহিমার তেজ প্রকাশ করলেন,
তাঁর সঙ্গে লক্ষ লক্ষ পবিত্র স্বর্গদূত ছিলেন
আর তাঁর ডান দিকে তাঁর যোদ্ধারা ছিল।
৩ তিনি তাঁর লোকদের ভালোবাসতেন,
তাদের সমস্ত পবিত্র লোক তোমার হাতে রয়েছে।
তারা তোমার পায়ের কাছে বসল,
তারা তোমার উপদেশ শুনতে লাগল।
৪ (মোশি আমাদের এক আজ্ঞা দিলেন, এক আইন দিলেন,
যেটার উপর যাকোবের মণ্ডলীর অধিকার রয়েছে।)
৫ যখন লোকদের অধ্যক্ষেরা এবং ইজরায়েলের সমস্ত বংশ একত্রিত হল,
তখন ঈশ্বর যিশুরূণে* রাজা হলেন।
৬ রূবেণ যেন বেঁচে থাকে, সে যেন কখনও মারা না যায়,
তার পুরুষদের সংখ্যা যেন কখনো কমে না যায়।”
৭ মোশি যিহূদাকে এই বলে আশীর্বাদ করলেন:
“হে যিহোবা, যিহূদার বিনতি শোনো,
তুমি তাকে তার লোকদের কাছে ফিরিয়ে এনো।
যেটা তার, সেটাকে সে নিজের হাত দিয়ে সুরক্ষিত রেখেছে,*
তুমি তাকে শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য কোরো।”
৮ লেবির বিষয়ে তিনি বললেন:
“তোমার* তুম্মীম ও ঊরীম তোমার অনুগত ব্যক্তির,
যাকে তুমি মঃসায় পরীক্ষা করেছিলে।
তুমি মরীবার জলের কাছে তার সঙ্গে ঝগড়া করতে শুরু করেছিলে।
৯ সে তার বাবা-মায়ের বিষয়ে বলল, ‘আমি তাদের পরোয়া করিনি।’
সে তার ভাইদের উপেক্ষা করল
আর সে এমনকী নিজের ছেলেদেরও উপেক্ষা করল।
কারণ তারা তোমার কথার বাধ্য হয়েছিল
এবং তোমার চুক্তি অনুযায়ী কাজ করেছিল।
১০ তারা যেন যাকোবকে তোমার বিচার সংক্রান্ত রায়
এবং ইজরায়েলকে তোমার ব্যবস্থা শেখায়।
তারা যেন তোমার জন্য ধূপ জালায়, যেটার সুগন্ধ পেয়ে তুমি আনন্দিত হও
আর তারা যেন তোমার বেদির উপর সম্পূর্ণ বলিদান উৎসর্গ করে।
১১ হে যিহোবা, তার শক্তির উপর আশীর্বাদ করো
আর তুমি যেন তার হাতের কাজের দ্বারা আনন্দিত হও।
যারা তার বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়াবে, তাদের পা* ভেঙে গুড়িয়ে দাও,
যাতে যারা তাকে ঘৃণা করে, তারা আর তার বিরুদ্ধে উঠে না দাঁড়ায়।”
১২ বিন্যামীনের বিষয়ে তিনি বললেন:
“যিহোবার প্রিয় ব্যক্তি তার* কাছে নিরাপদে বাস করবে,
সে সারাদিন তাকে আশ্রয় দেবে,*
সে তার দুই কাঁধের* মাঝে বাস করবে।”
১৩ যোষেফের বিষয়ে তিনি বললেন:
“যিহোবা যেন তার জমির উপর আশীর্বাদ করেন,
আকাশের উত্তম উত্তম বিষয় বর্ষণ করেন,
শিশিরবিন্দু এবং মাটির গভীরে থাকা জল,
১৪ সূর্যের দ্বারা উৎপাদিত উত্তম উত্তম বিষয়,
প্রতি মাসে পাওয়া উত্তম উত্তম ফসল,
১৫ প্রাচীন পর্বতগুলোর* সবচেয়ে উত্তম বিষয়,
চিরস্থায়ী পাহাড়ের উত্তম উত্তম বিষয়,
১৬ পৃথিবী এবং তাতে উৎপাদিত সমস্ত কিছুর উত্তম উত্তম বিষয় দেন
আর সে যেন ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করে, যিনি কাঁটাঝোপে দেখা দিয়েছিলেন।
যোষেফের মাথার উপর যেন এই আশীর্বাদগুলো বর্ষণ করা হয়,
তার মাথার উপর, যাকে তার ভাইদের মধ্য থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
১৭ তার শোভা প্রথমজাত ষাঁড়ের মতো,
তার শিং বন্য ষাঁড়ের শিঙের মতো।
সে তার শিং দিয়ে বিভিন্ন জাতির লোককে
পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত ধাক্কা* মেরে সরিয়ে দেবে।
তার শিং ইফ্রয়িমের লক্ষ লক্ষ লোক
এবং মনঃশির হাজার হাজার লোক।”
১৮ সবূলূনের বিষয়ে তিনি বললেন:
“হে সবূলূন, তুমি বাইরে যাওয়ার সময় আনন্দ করো
আর হে ইষাখর, তুমি তোমার তাঁবুর ভিতরে আনন্দ করো।
১৯ তারা সমুদ্রের সম্পদ থেকে
এবং বালির গুপ্তধন থেকে প্রচুর পরিমাণে ধনসম্পদ তুলে আনবে।
এইজন্য তারা বিভিন্ন জাতির লোককে পর্বতে ডাকবে
আর ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সঠিক এমন বলিদান উৎসর্গ করবে।”
২০ গাদের বিষয়ে তিনি বললেন:
“সুখী তিনি, যিনি গাদের সীমানা বিস্তার করেন।
গাদ সেখানে সিংহের মতো ওত পেতে বসে রয়েছে,
সে তার শিকারের হাত, এমনকী মাথাও ছিঁড়ে খাওয়ার জন্য প্রস্তুত।
২১ সে নিজের জন্য প্রথম অংশ বেছে নেবে
কারণ আইনদাতা তার জন্য সেখানেই তার অংশ নির্ধারণ করেছেন।
লোকদের অধ্যক্ষেরা একসঙ্গে একত্রিত হবে।
গাদ যিহোবার হয়ে ন্যায়বিচার করবে,
তার বিচার সংক্রান্ত রায়গুলো ইজরায়েলের মামলায় প্রয়োগ করবে।”
২২ দানের বিষয়ে তিনি বললেন:
“দান সিংহশাবক।
সে বাশন থেকে লাফ দেবে।”
২৩ নপ্তালির বিষয়ে তিনি বললেন:
“নপ্তালি যিহোবার অনুমোদন পেয়ে সন্তুষ্ট,
সে ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে আশীর্বাদ পেয়েছে।
তুমি পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক দখল করে নাও।”
২৪ আশেরের বিষয়ে তিনি বললেন:
“আশের অনেক সন্তান লাভ করার আশীর্বাদ পেয়েছে।
তার ভাইয়েরা যেন তার প্রতি অনুগ্রহ দেখায়
আর সে যেন তার পা তেলে ডোবায়।*
২৫ তোমার দরজার খিল লোহা ও তামা দিয়ে তৈরি,
তুমি সারাজীবন নিরাপদে থাকবে।”*
২৬ তিনি আরও বললেন: “যিশুরূণের সত্য ঈশ্বরের মতো আর কেউ নেই,
যিনি তোমার সাহায্য করার জন্য আকাশ থেকে আসেন,
যিনি পূর্ণ মহিমা সহকারে মেঘে চড়ে আসেন।
২৭ ঈশ্বর প্রাচীনকাল থেকে তোমার আশ্রয় হয়ে রয়েছেন,
তাঁর দুই বাহু তোমাকে চিরকাল ধরে রাখবে।
তিনি শত্রুদের তোমার সামনে থেকে তাড়িয়ে দেবেন
আর বলবেন, ‘এদের সবাইকে নিশ্চিহ্ন করে দাও!’
২৮ ইজরায়েল সেই দেশে নিরাপদে বাস করবে,
যাকোবের ঝরনা সুরক্ষিত থাকবে,
যেটা ফসল ও নতুন দ্রাক্ষারসের* দেশ,
যেটার উপর আকাশ থেকে শিশির পড়ে।
২৯ হে ইজরায়েল, তুমি কতই-না সুখী!
তোমার মতো আর কেউ নেই,
যিহোবা তোমাকে উদ্ধার করেন,
তিনি তোমার রক্ষার ঢাল,
তিনি তোমার বিজয়ী তলোয়ার।
শত্রুরা তোমার সামনে ভয়ে কাঁপবে
আর তুমি তাদের পিঠ* মাড়াবে।”