বিচারকর্তৃগণের বিবরণ
১৪ পরে, শিম্শোন তিম্নায় গেলেন। সেখানে তিনি একটি পলেষ্টীয় মেয়েকে দেখতে পেলেন। ২ তিনি গিয়ে নিজের বাবা-মাকে বললেন: “তিম্নায় আমি একটি পলেষ্টীয় মেয়েকে দেখেছি। তার সঙ্গে আমার বিয়ে দাও।” ৩ কিন্তু, তার বাবা-মা তাকে বললেন: “তুমি কি আমাদের আত্মীয়স্বজন এবং আমাদের লোকদের মধ্যে কোনো মেয়ে পাওনি যে, তুমি অচ্ছিন্নত্বক* পলেষ্টীয়দের মেয়েকে বিয়ে করতে চাও?” কিন্তু, শিম্শোন তার বাবাকে বললেন: “ওর সঙ্গেই আমার বিয়ে দাও। ও-ই আমার জন্য উপযুক্ত।” ৪ তার বাবা-মা বুঝতে পারল না যে, যিহোবাই তাকে এমনটা করার জন্য প্রেরণা দিচ্ছেন। তিনি* পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পথ প্রস্তুত করছিলেন কারণ সেই সময় পলেষ্টীয়েরা ইজরায়েলীয়দের উপর রাজত্ব করছিল।
৫ তারপর, শিম্শোন তার বাবা-মায়ের সঙ্গে তিম্নায় গেলেন। তিনি যখন তিম্নার আঙুর খেতগুলোর কাছে গিয়ে পৌঁছালেন, তখন হঠাৎ একটা যুবসিংহ তার সামনে এল এবং গর্জন করতে লাগল। ৬ ঠিক সেইসময়, যিহোবার পবিত্র শক্তি শিম্শোনের উপর কাজ করল আর তিনি তার দু-হাত দিয়ে এমনভাবে সিংহটাকে ছিঁড়ে দু-টুকরো করে ফেললেন, যেভাবে কেউ ছাগলছানা ছিঁড়ে ফেলে। কিন্তু, এই বিষয়ে তিনি তার বাবা-মাকে কিছুই বললেন না। ৭ তারপর, শিম্শোন সেই মেয়েটির কাছে গেলেন এবং তার সঙ্গে কথা বললেন। তিনি নিশ্চিত হলেন যে, সেই মেয়েটি তার জন্য একেবারে উপযুক্ত।
৮ কিছুসময় পর, শিম্শোন সেই মেয়েটিকে বাড়ি নিয়ে আসার জন্য গেলেন। রাস্তায় তিনি সেই মৃত সিংহটা দেখতে গেলেন। সেখানে তিনি সেই সিংহের কঙ্কাল পেলেন, যেটার মধ্যে মৌমাছিরা মৌচাক বানিয়েছিল আর সেই মৌচাকে অনেকটা মধু ছিল। ৯ শিম্শোন তার হাত দিয়ে মধু বের করলেন আর সেটা খেতে খেতে গেলেন। তিনি যখন তার বাবা-মায়ের কাছে পৌঁছালেন, তখন তিনি তাদেরও কিছুটা মধু খেতে দিলেন। কিন্তু, তিনি তাদের বললেন না যে, তিনি সিংহের কঙ্কাল থেকে সেই মধু বের করেছিলেন।
১০ তারপর, শিম্শোন তার বাবার সঙ্গে সেই মেয়েটির কাছে গেলেন আর সেখানে তিনি একটা বড়ো ভোজের আয়োজন করলেন। সেই সময়ের রীতি ছিল যে, বর এই ধরনের ভোজের আয়োজন করবেন। ১১ শিম্শোন যখন সেই ভোজে এলেন, তখন ৩০ জন পুরুষকে তার সঙ্গে সঙ্গে থাকার জন্য নিযুক্ত করা হল। ১২ শিম্শোন সেই ব্যক্তিদের বললেন: “আমি তোমাদের একটা ধাঁধা বলছি, তোমরা যদি সাত দিনের মধ্যে অর্থাৎ এই ভোজ শেষ হওয়ার আগেই ধাঁধাটার অর্থ বলতে পার, তা হলে আমি তোমাদের মিহি সুতোর ৩০টা অন্তর্বাস এবং ৩০ জোড়া পোশাক দেব। ১৩ কিন্তু, তোমরা যদি এই ধাঁধার অর্থ বলতে না পার, তা হলে তোমরা আমাকে মিহি সুতোর ৩০টা অন্তর্বাস এবং ৩০ জোড়া পোশাক দেবে।” তখন তারা বলল: “বলো, কী ধাঁধা? আমরা শুনতে চাই।” ১৪ শিম্শোন বললেন:
“খাদকের মধ্য থেকে বের হল খাদ্য,
বলবানের মধ্য থেকে বের হল মিষ্টি দ্রব্য।”
তারা তিন দিন ধরে চিন্তা করেও সেই ধাঁধার অর্থ বলতে পারল না। ১৫ চতুর্থ দিন তারা শিম্শোনের স্ত্রীকে* বলল: “তোমার স্বামীকে* ফুসলিয়ে ধাঁধার অর্থটা বের করো আর আমাদের তা বলো। নাহলে, আমরা তোমাকে এবং তোমার বাবার পুরো পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে দেব। তোমরা কি আমাদের জিনিসপত্র লুট করার জন্য আমাদের ভোজে নিমন্ত্রণ করেছিলে?” ১৬ তখন শিম্শোনের স্ত্রী এই বলে তার সামনে কান্নাকাটি করতে লাগল: “তুমি আমাকে একদম ভালোবাস না। তুমি আমাকে ঘৃণা কর। সেইজন্যই তো তুমি আমার লোকদের যে-ধাঁধা বলেছ, সেটার অর্থ আমাকে বলনি।” শিম্শোন বললেন: “আমি আমার বাবা-মাকেই বলিনি, তোমাকে কী বলব?” ১৭ কিন্তু, ভোজের শেষ দিন পর্যন্ত সে শিম্শোনের সামনে কান্নাকাটি করল। সপ্তম দিন শিম্শোন বিরক্ত হয়ে তাকে সেই ধাঁধার অর্থটা বলে দিলেন আর সে তার লোকদের সেই অর্থটা জানিয়ে দিল। ১৮ সপ্তম দিন সূর্যাস্তের আগে* নগরের লোকেরা শিম্শোনের কাছে এসে বলল:
“মধুর চেয়ে মিষ্টি আর কীই-বা হতে পারে
আর সিংহের চেয়ে বলবান আর কেই-বা হতে পারে?”
শিম্শোন তাদের বললেন:
“তোমরা যদি আমার গরু দিয়ে চাষ না করতে,*
তা হলে তোমরা কোনো দিন এই ধাঁধার অর্থ বলতে পারতে না।”
১৯ তখন যিহোবার পবিত্র শক্তি শিম্শোনের উপর কাজ করল আর তিনি অস্কিলোনে গিয়ে সেখানকার ৩০ জন পুরুষকে মেরে ফেললেন। তিনি তাদের পোশাক-আশাক খুলে নিয়ে গিয়ে সেই লোকদের দিলেন, যারা তাকে ধাঁধার অর্থটা বলেছিল। এরপর, তিনি প্রচণ্ড রেগে গিয়ে তার বাবার বাড়ি ফিরে গেলেন।
২০ তারপর, ভোজে যে-পুরুষেরা শিম্শোনের সঙ্গে সঙ্গে ছিল, তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে শিম্শোনের স্ত্রীর বিয়ে দেওয়া হল।