রাজাবলির দ্বিতীয় খণ্ড
১৩ যিহূদায় অহসিয়ের ছেলে যিহোয়াশের রাজত্বের ২৩তম বছরে ইজরায়েলে যেহূর ছেলে যিহোয়াহস রাজা হলেন। যিহোয়াহস শমরিয়া থেকে ১৭ বছর ধরে রাজত্ব করলেন। ২ তিনি যিহোবার দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতে থাকলেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইজরায়েলকে দিয়ে যে-পাপ করিয়েছিলেন, তিনি তা করতে থাকলেন। তিনি তা ছাড়লেন না। ৩ তাই, ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যিহোবার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠল আর তিনি সিরিয়ার রাজা হসায়েল এবং তার ছেলে বিন্হদদের হাতে তাদের তুলে দিলেন আর তারা অনেক দিন পর্যন্ত তাদের অধীনে রইল।
৪ কিছুসময় পর, যিহোয়াহস যিহোবার কাছে অনুগ্রহ চেয়ে বিনতি করলেন আর যিহোবা তার বিনতি শুনলেন। কারণ তিনি দেখেছিলেন, সিরিয়ার রাজা ইজরায়েলের উপর কোন ধরনের অত্যাচার করছিলেন। ৫ তাই, যিহোবা ইজরায়েলকে একজন উদ্ধারকর্তা দিলেন, যিনি তাদের সিরিয়ার হাত থেকে উদ্ধার করলেন। এর ফলে, ইজরায়েলীয়েরা আবারও নিজের নিজের বাড়িতে থাকতে লাগল।* ৬ (তারপরও, যারবিয়ামের পরিবার ইজরায়েলকে দিয়ে যে-পাপ করিয়েছিল, তারা সেই পাপ করা ছাড়ল না। তারা সেই পাপ করে চলল আর শমরিয়ায় যে-উপাসনার খুঁটি* ছিল, সেটাকে দূর করা হল না।) ৭ যিহোয়াহসের কাছে মাত্র ৫০ জন অশ্বারোহী, ১০টা রথ এবং ১০,০০০ জন পদাতিক সৈন্য অবশিষ্ট ছিল কারণ সিরিয়ার রাজা তার সেনাবাহিনীকে বিনষ্ট করে দিয়েছিলেন আর তাদের শস্য মাড়াই করার জায়গার ধুলোর মতো মাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
৮ যিহোয়াহসের জীবনের বাকি কাহিনি এবং তিনি যে-সমস্ত কাজ করেছিলেন ও সেইসঙ্গে তিনি যে-সমস্ত বড়ো বড়ো কাজ করেছিলেন, সেই সমস্ত কিছুর বিবরণ ইজরায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে। ৯ তারপর, যিহোয়াহস মারা গেলেন* আর তাকে শমরিয়ায় কবর দেওয়া হল। তার জায়গায় তার ছেলে যিহোয়াশ রাজা হলেন।
১০ যিহূদার রাজা যিহোয়াশের রাজত্বের ৩৭তম বছরে যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশ ইজরায়েলের রাজা হলেন। ইজরায়েলের রাজা যিহোয়াশ শমরিয়া থেকে ১৬ বছর ধরে রাজত্ব করলেন। ১১ তিনি যিহোবার দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই করতে থাকলেন আর নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইজরায়েলকে দিয়ে যে-পাপগুলো করিয়েছিলেন, তিনি সেগুলো ছাড়লেন না। তিনি সেই পাপগুলো করে চললেন।
১২ যিহোয়াশের জীবনের বাকি কাহিনি, তিনি যে-সমস্ত কাজ করেছিলেন ও সেইসঙ্গে তিনি যে-সমস্ত বড়ো বড়ো কাজ করেছিলেন এবং কীভাবে তিনি যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন, সেই সমস্ত কিছুর বিবরণ ইজরায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইয়ে লেখা আছে। ১৩ তারপর, যিহোয়াশ মারা গেলেন* আর তাকে শমরিয়ায় ইজরায়েলের রাজাদের কবরে কবর দেওয়া হল। যিহোয়াশের পরে যারবিয়াম* সিংহাসনে বসলেন।
১৪ ইলীশায় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, যেটার কারণে অবশেষে তিনি মারা গিয়েছিলেন। তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন, তখন ইজরায়েলের রাজা যিহোয়াশ তার কাছে এলেন এবং তাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলেন। তিনি বললেন: “হে আমার প্রভু, হে আমার প্রভু!* ইজরায়েলের রথ ও অশ্বারোহীরা!” ১৫ ইলীশায় তাকে বললেন: “একটা ধনুক আর কয়েকটা তির নিন।” তিনি একটা ধনুক আর কয়েকটা তির নিলেন। ১৬ ইলীশায় ইজরায়েলের রাজাকে বললেন: “আপনার ধনুকটা হাতে নিন।” তিনি ধনুকটা নিলেন আর ইলীশায় রাজার হাতের উপর নিজের হাত রাখলেন। ১৭ তিনি রাজাকে বললেন: “পূর্ব দিকের জানালাটা খুলুন।” তিনি জানালাটা খুললেন। ইলীশায় বললেন: “তির ছুড়ুন!” তাই, তিনি তির ছুড়লেন। ইলীশায় বললেন: “এটা যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া বিজয়ের* তির, সিরিয়ার উপর লাভ করা বিজয়ের* তির! আপনি অফেকে সিরিয়ার লোকদের ততক্ষণ পর্যন্ত আঘাত* করতে থাকবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সিরিয়াকে পুরোপুরিভাবে বিনষ্ট করে দেন।”
১৮ তারপর, ইলীশায় বললেন: “কয়েকটা তির নিন।” তাই, তিনি তির নিলেন। ইলীশায় ইজরায়েলের রাজাকে বললেন: “এগুলো দিয়ে মাটিতে আঘাত করুন।” তিনি তিন বার আঘাত করে থেমে গেলেন। ১৯ এটা দেখে সত্য ঈশ্বরের দাস তার উপর প্রচণ্ড রেগে গেলেন আর তিনি বললেন: “আপনার মাটিতে পাঁচ বার কিংবা ছ-বার আঘাত করা উচিত ছিল! এমনটা করলে আপনি সিরিয়ার লোকদের ততক্ষণ পর্যন্ত আঘাত* করতে পারতেন, যতক্ষণ না আপনি সিরিয়াকে পুরোপুরিভাবে বিনষ্ট করে দিতেন। কিন্তু, এখন আপনি সিরিয়াকে মাত্র তিন বার আঘাত* করতে পারবেন।”
২০ এরপর, ইলীশায় মারা গেলেন আর তাকে কবর দেওয়া হল। মোয়াবের লুটকারী দলগুলো বছরের শুরুতে* ইজরায়েলের উপর আক্রমণ করতে আসত। ২১ কয়েক জন ব্যক্তি যখন একটা মৃতদেহকে কবর দিচ্ছিল, তখন তারা মোয়াবের লুটকারী দলকে দেখতে পেল। তাই, তারা তাড়াহুড়ো করে মৃতদেহটা ইলীশায়ের কবরে ফেলে পালিয়ে গেল। সেই মৃতদেহের সঙ্গে যখন ইলীশায়ের হাড়ের ছোঁয়া লাগল, তখন সেই ব্যক্তিটি জীবিত হল এবং নিজের পায়ে উঠে দাঁড়াল।
২২ যিহোয়াহসের পুরো জীবনকালে সিরিয়ার রাজা হসায়েল ইজরায়েলের উপর অত্যাচার করলেন। ২৩ কিন্তু, যিহোবা অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের সঙ্গে করা তাঁর চুক্তির কারণে ইজরায়েলের প্রতি অনুগ্রহ ও করুণা দেখালেন। তিনি ইজরায়েলকে বিনষ্ট করতে চাননি। আজ পর্যন্ত তিনি ইজরায়েলকে তাঁর সামনে থেকে দূর করে দেননি। ২৪ সিরিয়ার রাজা হসায়েল যখন মারা গেলেন, তখন তার জায়গায় তার ছেলে বিন্হদদ রাজা হলেন। ২৫ তারপর, যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশ হসায়েলের ছেলে বিন্হদদের কাছ থেকে সেই নগরগুলো ফিরিয়ে নিলেন, যেগুলো হসায়েল যিহোয়াহসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তার কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছিলেন। যিহোয়াশ বিন্হদদকে তিন বার আঘাত* করলেন আর ইজরায়েলের নগরগুলো তার কাছ থেকে ফিরিয়ে নিলেন।