ইষ্রা
১০ ইষ্রা সত্য ঈশ্বরের গৃহের সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে প্রার্থনা করছিলেন এবং তার লোকদের পাপ স্বীকার করছিলেন। তখন ইজরায়েলীয় পুরুষ, মহিলা ও সন্তানদের একটা বড়ো দল তার কাছে একত্রিত হল এবং তারা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। ২ তখন এলমের ছেলেদের* মধ্য থেকে যিহীয়েলের ছেলে শখনিয় ইষ্রাকে বলল: “আমরা আমাদের আশেপাশের দেশের মহিলাদের বিয়ে করে* আমাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অবিশ্বস্ততার কাজ করেছি। কিন্তু, ইজরায়েলের জন্য এখনও আশা রয়েছে। ৩ এখন আসুন, আমরা আমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে এই চুক্তি করি যে, আমরা আমাদের স্ত্রীদের এবং তারা যে-সন্তানদের জন্ম দিয়েছে, তাদের নিজেদের দেশে পাঠিয়ে দেব। এভাবে আমরা যিহোবার নির্দেশনা এবং যারা ঈশ্বরের আজ্ঞাকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে,* তাদের নির্দেশনা অনুসারে চলব। আসুন, আমরা ব্যবস্থা অনুসারে কাজ করি। ৪ হে ইষ্রা, উঠুন কারণ এই কাজের দায়িত্ব আপনার আর আমরা আপনার সঙ্গে রয়েছি। দৃঢ় হোন এবং পদক্ষেপ নিন।”
৫ তখন ইষ্রা উঠলেন এবং তিনি যাজকদের প্রধানদের, লেবীয়দের এবং সমস্ত ইজরায়েলীয়কে দিয়ে এই শপথ করালেন যে, তারা যা বলেছে, তা-ই করবে। তাই, তারা সবাই শপথ করল। ৬ তারপর, ইষ্রা সত্য ঈশ্বরের গৃহের সামনে থেকে উঠে ইলীয়াশীবের ছেলে যিহোহাননের কামরায়* গেলেন, কিন্তু ইষ্রা সেখানে খাবার কিংবা জল, কিছুই খেলেন না কারণ তিনি বন্দিত্ব থেকে ফিরে আসা লোকদের অবিশ্বস্ততার জন্য শোক করছিলেন।
৭ তখন পুরো যিহূদা ও জেরুসালেমে ঘোষণা করা হল, যেন বন্দিত্ব থেকে ফিরে আসা সমস্ত লোক জেরুসালেমে একত্রিত হয়। ৮ কেউ যদি অধ্যক্ষ ও প্রাচীনদের এই সিদ্ধান্ত অনুসারে তিন দিনের মধ্যে না আসে, তা হলে তার সব কিছু বাজেয়াপ্ত করা হবে এবং তাকে বন্দিত্ব থেকে ফিরে আসা লোকদের মণ্ডলী থেকে বের করে দেওয়া হবে। ৯ যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত পুরুষ তিন দিনের মধ্যে জেরুসালেমে একত্রিত হল। নবম মাসের ২০তম দিনে সমস্ত লোক সত্য ঈশ্বরের গৃহের প্রাঙ্গণে বসে ছিল। যেহেতু সভাটা খুবই গুরুগম্ভীর ছিল ও সেইসঙ্গে মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছিল, তাই লোকেরা ঠক ঠক করে কাঁপছিল।
১০ তখন যাজক ইষ্রা উঠে দাঁড়িয়ে তাদের বললেন: “তোমরা আশেপাশের দেশের মহিলাদের বিয়ে করে অবিশ্বস্ততার কাজ করেছ। এভাবে তোমরা ইজরায়েলের দোষ আরও বাড়িয়ে তুলেছ। ১১ তাই, এখন তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যিহোবার সামনে তোমাদের পাপ স্বীকার করো আর তাঁর ইচ্ছা অনুসারে কাজ করো। তোমরা আশেপাশের দেশের লোকদের থেকে এবং তোমরা যে-মহিলাদের বিয়ে করেছিলে, তাদের থেকে নিজেদের পৃথক করো।” ১২ তখন পুরো মণ্ডলী উচ্চস্বরে বলল: “আপনি যা বললেন, আমরা তা-ই করব। ১৩ কিন্তু, এই বর্ষার মরসুমে এত লোকের পক্ষে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়। আর এই বিষয়টা দু-এক দিনের মধ্যে সমাধান করাও সম্ভব নয় কারণ আমাদের মধ্যে অনেকে এই পাপ করেছে। ১৪ তাই, পুরো মণ্ডলীর পরিবর্তে আমাদের অধ্যক্ষদের এখানে থাকতে দিন আর যে-ব্যক্তিরা আশেপাশের দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছে, তারা যেন একটা নির্ধারিত সময়ে তাদের নগরের প্রাচীনদের ও বিচারকদের সঙ্গে আসে। এতে আমাদের বিরুদ্ধে ঈশ্বরের প্রচণ্ড রাগ কমে যাবে।”
১৫ কিন্তু, অসাহেলের ছেলে যোনাথন এবং তিক্বের ছেলে যহসিয় এটার বিরোধিতা করল আর মশুল্লম ও শব্বথয় নামে দু-জন লেবীয় তাদের পক্ষ নিল। ১৬ কিন্তু, বন্দিত্ব থেকে ফিরে আসা লোকেরা সেটাই করল, যেটা নির্ধারণ করা হয়েছিল। দশম মাসের প্রথম দিনে যাজক ইষ্রা বিষয়টার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য ইজরায়েলের সেই ব্যক্তিদের সঙ্গে সভার আয়োজন করলেন, যারা তাদের বাবার বংশের প্রধান ব্যক্তি ছিলেন এবং যাদের নাম লেখা ছিল। ১৭ আর প্রথম মাসের প্রথম দিনের মধ্যে তারা সেইসমস্ত পুরুষের মামলার নিষ্পত্তি করলেন, যারা আশেপাশের দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছিল। ১৮ খোঁজখবর নেওয়ার পর জানা গেল, যাজকদের কয়েক জন ছেলে আশেপাশের দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছিল। তারা ছিল: যিহোষাদকের ছেলে যেশূয়ের ছেলেদের ও ভাইদের মধ্য থেকে মাসেয়, ইলীয়েষর, যারিব ও গদলিয়। ১৯ কিন্তু, তারা প্রতিজ্ঞা করল যে, তারা তাদের স্ত্রীদের তাদের নিজেদের দেশে পাঠিয়ে দেবে। আর তারা যেহেতু দোষী ছিল, তাই তারা এও বলল যে, তারা তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য মেষপাল থেকে একটা করে পুংমেষ উৎসর্গ করবে।
২০ যারা পাপ করেছিল, তাদের মধ্যে এরাও ছিল: ইম্মেরের ছেলেদের মধ্য থেকে হনানি ও সবদিয়; ২১ হারীমের ছেলেদের মধ্য থেকে মাসেয়, এলিয়, শময়িয়, যিহীয়েল ও উষিয়; ২২ পশ্হূরের ছেলেদের মধ্য থেকে ইলীয়ৈনয়, মাসেয়, ইশ্মায়েল, নথনেল, যোষাবদ ও ইলীয়াসা। ২৩ আর লেবীয়দের মধ্য থেকে যোষাবদ, শিমিয়ি, কলায় (অর্থাৎ কলীট), পথাহিয়, যিহূদা ও ইলীয়েষর; ২৪ গায়কদের মধ্য থেকে ইলীয়াশীব; এবং দারোয়ানদের মধ্য থেকে শল্লুম, টেলম ও ঊরি।
২৫ ইজরায়েলীয়দের মধ্যে এরা ছিল: পরোশের ছেলেদের মধ্য থেকে রমিয়, যিষিয়, মল্কিয়, মিয়ামীন, ইলিয়াসর, মল্কিয় ও বনায়; ২৬ এলমের ছেলেদের মধ্য থেকে মত্তনিয়, সখরিয়, যিহীয়েল, অব্দি, যিরেমোৎ ও এলিয়; ২৭ সত্তূর ছেলেদের মধ্য থেকে ইলীয়ৈনয়, ইলীয়াশীব, মত্তনিয়, যিরেমোৎ, সাবদ ও অসীসা; ২৮ বেবয়ের ছেলেদের মধ্য থেকে যিহোহানন, হনানিয়, সব্বয় ও অৎলয়; ২৯ বানির ছেলেদের মধ্য থেকে মশুল্লম, মল্লূক, অদায়া, যাশূব, শাল ও যিরেমোৎ; ৩০ পহৎ-মোয়াবের ছেলেদের মধ্য থেকে অদ্ন, কলাল, বনায়, মাসেয়, মত্তনিয়, বৎসলেল, বিন্নূয়ি ও মনঃশি; ৩১ হারীমের ছেলেদের মধ্য থেকে ইলীয়েষর, যিশিয়, মল্কিয়, শময়িয়, শিমিয়োন, ৩২ বিন্যামীন, মল্লূক ও শমরিয়; ৩৩ হশুমের ছেলেদের মধ্য থেকে মত্তনয়, মত্তত্ত, সাবদ, ইলীফেলট, যিরেময়, মনঃশি ও শিমিয়ি; ৩৪ বানির ছেলেদের মধ্য থেকে মাদয়, অম্রম, ঊয়েল, ৩৫ বনায়, বেদিয়া, কলূহূ, ৩৬ বনিয়, মরেমোৎ, ইলীয়াশীব, ৩৭ মত্তনিয়, মত্তনয় ও যাসয়; ৩৮ বিন্নূয়ির ছেলেদের মধ্য থেকে শিমিয়ি, ৩৯ শেলিমিয়, নাথন, অদায়া, ৪০ মক্নদ্বয়, শাশয়, শারয়, ৪১ অসরেল, শেলিমিয়, শমরিয়, ৪২ শল্লুম, অমরিয় ও যোষেফ; ৪৩ আর নবোর ছেলেদের মধ্য থেকে যিয়ীয়েল, মত্তিথিয়, সাবদ, সবীনঃ, যাদয়, যোয়েল ও বনায়। ৪৪ এই সমস্ত লোক আশেপাশের দেশের মহিলাদের বিয়ে করেছিল এবং তারা তাদের স্ত্রী ও সন্তানদের তাদের নিজেদের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছিল।