ইয়োব
১০ “আমি আমার জীবনকে ঘৃণা করি!
আমি চুপ করে থাকব না, আমার মনে থাকা সমস্ত অভিযোগ প্রকাশ করব,
আমার মধ্যে থাকা তিক্ততার কারণে আমি কথা বলব।
২ আমি ঈশ্বরকে বলব: ‘আমাকে দোষী সাব্যস্ত কোরো না।
বলো, কেন তুমি আমার সঙ্গে লড়াই করছ?
৩ আমাকে অত্যাচার করে, তোমার সৃষ্টিকে তুচ্ছ করে তোমার কী লাভ?
মন্দ ব্যক্তিদের পরামর্শে খুশি হয়ে তোমার কী লাভ?
৪ তোমার চোখ কি মানুষের চোখের মতো?
তুমি কি মরণশীল মানুষের মতো করে দেখ?
৫ তোমার আয়ু কি মরণশীল মানুষের আয়ুর মতো,
যেটা দিন ও বছরে গোনা হয়?
৬ কেন তুমি আমার মধ্যে ভুল খুঁজছ?
কেন তুমি আমার মধ্যে পাপ খুঁজছ?
৭ তুমি জান, আমি দোষী নই
আর কেউ আমাকে তোমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না।
৮ তুমি নিজের হাতে আমাকে গঠন করেছ এবং তৈরি করেছ
আর এখন তুমি নিজেই আমাকে ধ্বংস করে দিতে চাইছ?
৯ হে ঈশ্বর, স্মরণ করো, তুমি নিজে মাটি দিয়ে আমাকে তৈরি করেছ
আর এখন তুমি নিজেই আমাকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চাইছ?
১১ তুমি আমাকে চামড়া ও মাংস পরিয়েছ
আর হাড় ও শিরা দিয়ে আমাকে গড়েছ।
১২ এই জীবন তোমারই দান! তুমি আমার প্রতি অটল প্রেম দেখিয়েছ,
তুমি আমার যত্ন নিয়েছ, আমার প্রাণকে* সুরক্ষিত রেখেছ।
১৩ কিন্তু, মনে মনে তুমি আমার উপর বিপদ আনার কথা ভাবলে।*
আমি জানি, এই সবই তোমার কাজ।
১৪ আমি পাপ করলে তুমি তা দেখবে
আর তুমি আমার অপরাধ ক্ষমা করবে না।
১৫ আমি যদি দোষী হই, তা হলে ধিক আমাকে!
কিন্তু, আমি যদি নির্দোষ হই, তারপরও আমি মাথা তুলতে পারব না
কারণ আমি অনেক অপমান ও কষ্ট সহ্য করেছি।
১৬ আমি যদি আমার মাথা তুলি, তা হলে তুমি সিংহের মতো আমাকে আক্রমণ করবে,
তুমি আবারও আমার বিরুদ্ধে তোমার শক্তি দেখাবে।
১৭ তুমি আমার বিরুদ্ধে নতুন নতুন সাক্ষি দাঁড় করাও,
আমার বিরুদ্ধে তোমার রাগ বাড়তে থাকে
আর আমার উপর একের-পর-এক সমস্যা আসতে থাকে।
১৮ কেন তুমি আমাকে আমার মায়ের গর্ভ থেকে বের হতে দিলে?
ভালো হত যদি আমি সেখানেই মারা যেতাম আর কেউ আমাকে দেখতে পেত না।
১৯ তখন আমার থাকা না থাকা সমান হত!
আমি মায়ের গর্ভ থেকে সোজা কবরে যেতাম।’
২০ আমার কাছে কি আর অল্প কয়েক দিনই বাকি নেই?
হায়! ঈশ্বর যেন আমাকে একা ছেড়ে দেন,
তিনি যেন আমার দিক থেকে তাঁর চোখ সরিয়ে নেন, যাতে আমি একটু স্বস্তি* পাই।