যিশাইয়
১০ ধিক সেই লোকদের, যারা এমন আইন তৈরি করে,
যেগুলো লোকদের ক্ষতি করে,
যারা সবসময় এমন নিয়ম তৈরি করে,
যেগুলোর কারণে লোকেরা অত্যাচারিত হয়,
২ যাতে তারা গরিব লোকদের আইনি অধিকার থেকে
এবং আমার লোকদের মধ্যে যারা দুঃখী,
তাদের ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করতে পারে।
তারা বিধবাদের ও অনাথদের* লুট-করা জিনিস হিসেবে দেখে!
৩ বিচারের* দিনে তোমরা কী করবে,
যখন দূর থেকে বিনাশ আসবে?
তুমি সাহায্যের জন্য কার কাছে পালাবে,
তোমার ধনসম্পদ* কোথায় রেখে যাবে?
৪ বন্দিদের মাঝে হাঁটু গেড়ে বসে থাকা
কিংবা মৃতদেহের মাঝে পড়ে থাকা ছাড়া
তোমাদের সামনে আর কোনো উপায় থাকবে না।
এই সমস্ত কিছুর কারণে ঈশ্বরের রাগ ঠাণ্ডা হয়নি
আর তিনি তাদের আঘাত করার জন্য এখনও নিজের হাত বাড়িয়ে রেখেছেন।
৫ “দেখো, সেই অশূরীয়!
সে আমার রাগ প্রকাশ করার দণ্ড
আর তাদের হাতে যে-লাঠি রয়েছে, সেটা দিয়ে আমি জোরালোভাবে ধমক দেব।
৬ আমি তাকে এক ধর্মভ্রষ্ট দেশের বিরুদ্ধে পাঠাব,
সেই জাতির বিরুদ্ধে, যারা আমাকে রাগিয়ে তুলেছে।
আমি তাকে আদেশ দেব যেন সে লুট করে অনেক জিনিস নেয়
এবং রাস্তার কাদার মতো তাদের মাড়িয়ে দেয়।
৭ কিন্তু, তার মনের ইচ্ছা এইরকম হবে না,
সে তার হৃদয়ে এই ষড়যন্ত্র করবে না।
কারণ তার মনের ইচ্ছা শুধু কয়েকটা জাতিকে ধ্বংস করা নয়
বরং অনেক জাতিকে বিনষ্ট করা।
৮ কারণ সে বলে,
‘আমার অধীনে থাকা সমস্ত অধ্যক্ষ কি আগে রাজা ছিল না?
৯ কল্নো কি কর্কমীশের মতো নয়?
হমাৎ কি অর্পদের মতো নয়?
শমরিয়া কি দামেস্কের মতো নয়?
১০ আমি নিজের হাতে অপদার্থ মূর্তিগুলোর সেই রাজ্যগুলোকে কেড়ে নিয়েছি,
যাদের কাছে জেরুসালেম ও শমরিয়ার চেয়েও বেশি খোদাই-করা মূর্তি ছিল!
১১ আমি শমরিয়া এবং তার অপদার্থ দেবতাগুলোর প্রতি যা করেছি,
জেরুসালেম এবং তার মূর্তিগুলোর প্রতিও কি তা-ই করব না?’
১২ “যিহোবা যখন সিয়োন পর্বতে এবং জেরুসালেমে তাঁর সমস্ত কাজ শেষ করে ফেলবেন, তখন তিনি* অশূরের রাজাকে তার একগুঁয়ে হৃদয় এবং গর্বিত ও অহংকারী চাহনির জন্য শাস্তি দেবেন। ১৩ কারণ সে বলে,
‘আমি নিজের হাতের শক্তিতে
এবং নিজের প্রজ্ঞায় এটা করব কারণ আমি বিজ্ঞ।
আমি জাতিগুলোর সীমা দূর করে দেব,
আমি তাদের ধনসম্পদ লুট করে নেব,
একজন বীরযোদ্ধার মতো আমি সেখানকার বাসিন্দাদের পরাজিত করব।
১৪ যেভাবে একজন ব্যক্তি পাখির বাসায় হাত ঢোকায়,
সেভাবেই আমি নিজের হাতে জাতিগুলোর সম্পদ কেড়ে নেব
আর যেভাবে একজন ব্যক্তি পরিত্যক্ত ডিম সংগ্রহ করে,
সেভাবেই আমি পুরো পৃথিবী সংগ্রহ করব!
কেউ ডানা ঝাপটাবে না কিংবা নিজের মুখ খুলবে না
কিংবা কিচিরমিচির করবে না।’”
১৫ কুড়ুল কি নিজেকে সেই ব্যক্তির চেয়ে উচ্চীকৃত করবে, যে তাকে ব্যবহার করে?
করাত কি নিজেকে সেই ব্যক্তির চেয়ে উচ্চীকৃত করবে, যে তাকে ব্যবহার করে?
লাঠি কি সেই ব্যক্তিকে চালাতে পারে, যে তাকে তোলে?
কিংবা দণ্ড কি সেই ব্যক্তিকে তুলতে পারে, যে তাকে ধরে রাখে?
১৬ তাই, সত্য প্রভু স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা
তার মোটাসোটা লোকদের খুবই রোগা করে দেবেন
আর তিনি তার মহিমার নীচে এক বিশাল আগুন ধরিয়ে দেবেন।
১৭ ইজরায়েলের আলো এক আগুন
এবং তার পবিত্র ঈশ্বর আগুনের এক শিখা হয়ে উঠবেন।
সেটা দাউদাউ করে জ্বলে উঠবে
এবং এক দিনের মধ্যেই তার আগাছা ও কাঁটাঝোপগুলো পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে।
১৮ তিনি তার বনের এবং ফলের বাগানের গৌরব দূর করে দেবেন,
এটা এমন হবে যেন কোনো অসুস্থ ব্যক্তি ক্ষয়ে যাচ্ছে।
১৯ তার বনে এত কম গাছ পড়ে থাকবে যে,
ছোটো বাচ্চাও সেগুলো গুনতে পারবে।
২০ সেই দিন ইজরায়েলের অবশিষ্ট লোকেরা
এবং যাকোবের পরিবারের রক্ষা পাওয়া লোকেরা
সেই ব্যক্তির উপর আর নির্ভর করবে না, যে তাদের আঘাত করেছিল।
এর পরিবর্তে, তারা বিশ্বস্তভাবে ইজরায়েলের পবিত্র ঈশ্বর যিহোবার উপর নির্ভর করবে।
২১ কেবল এক অবশিষ্ট অংশ, যাকোবের অবশিষ্ট অংশ
শক্তিশালী ঈশ্বরের কাছে ফিরে আসবে।
২২ হে ইজরায়েল, যদিও তোমার লোকেরা
সমুদ্রের বালির কণার মতো অসংখ্য,
তবুও তাদের মধ্য থেকে কেবল এক অবশিষ্ট অংশ ফিরে আসবে।
একটা ধ্বংস আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে
আর ন্যায়বিচার* তাদের বন্যার মতো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।
২৩ হ্যাঁ, নিখিলবিশ্বের প্রভু স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা
এই ধ্বংস আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন
আর এটা পুরো দেশের উপর এসে পড়বে।
২৪ তাই, নিখিলবিশ্বের প্রভু স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা এই কথা বলেন: “হে আমার লোকেরা, তোমরা যারা সিয়োনে বাস কর, সেই অশূরীয়ের কারণে ভয় পেয়ো না, যে মিশরের মতোই তোমাকে দণ্ড দিয়ে আঘাত করত এবং তোমার বিরুদ্ধে তার লাঠি তুলত। ২৫ কারণ অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি জোরালোভাবে ধমক দেওয়া বন্ধ করে দেব আর আমার রাগ তাদের ধ্বংসের দিকে পরিচালিত করবে। ২৬ স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা তাকে মারার জন্য চাবুক তুলবেন, ঠিক যেমনটা তিনি ওরেবের শিলার কাছে মিদিয়নকে পরাজিত করার সময় করেছিলেন আর তিনি সমুদ্রের উপর তাঁর লাঠি তুলবেন, ঠিক যেমনটা তিনি মিশরের ক্ষেত্রে করেছিলেন।
২৭ সেই দিন তোমার কাঁধ থেকে তার বোঝা
এবং তোমার ঘাড় থেকে তার জোয়াল দূর হয়ে যাবে
আর সেই তেলের কারণে জোয়াল ভেঙে ফেলা হবে।”
২৮ সে অয়াতে এসেছে,
সে মিগ্রোণের মধ্য দিয়ে গিয়েছে,
মিক্মসে সে নিজের জিনিসপত্র রেখেছে।
২৯ তারা নদীর যে-জায়গা দিয়ে হেঁটে পার হওয়া যায়,
সেটা পার হয়ে গেবায় রাত কাটিয়েছে।
রামা থরথর করে কাঁপছে, শৌলের গিবিয়া পালিয়ে গিয়েছে।
৩০ হে গল্লীমের মেয়ে, চিৎকার করে কাঁদো!
হে লয়িশা, মনোযোগ দাও!
বেচারি অনাথোত!
৩১ মদ্মেনা পালিয়ে গিয়েছে।
গেবীমের বাসিন্দারা আশ্রয়ের খোঁজ করেছে।
৩২ আজই সে নোবে থামবে।
সে সিয়োনের মেয়ের পর্বতের বিরুদ্ধে,
জেরুসালেমের পাহাড়ের বিরুদ্ধে নিজের হাত তুলেছে।
৩৩ দেখো! সত্য প্রভু স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা
ভয়ংকর আওয়াজ করে ডালপালা কেটে দিচ্ছেন,
সবচেয়ে লম্বা গাছগুলোকে কেটে দেওয়া হচ্ছে
আর বড়ো বড়ো গাছগুলোকে নীচে নামানো হল।
৩৪ তিনি কুড়ুল দিয়ে বনের ঘন ঝোপগুলো কেটে ফেলেন
আর লেবানন এক বীরযোদ্ধার হাতে ধ্বংস হবে।