যিশাইয়
২৮ ধিক ইফ্রয়িমের মাতালদের লোকদেখানো* মুকুটকে!*
ধিক সেটার মহিমাময় সৌন্দর্যের নেতিয়ে পড়া ফুলকে,
যেটা সেই উর্বর উপত্যকার মাথায় রয়েছে, যেখানে লোকেরা দ্রাক্ষারসের* নেশায় মত্ত হয়ে রয়েছে!
২ দেখো! যিহোবার একজন শক্তিশালী বীর রয়েছে।
সে ভয়ংকর শিলাবৃষ্টি, ধ্বংসাত্মক ঝড় এবং বন্যার প্রবল জলের তোড়ের মতো সেটাকে পৃথিবীতে ছুড়ে ফেলবে।
৩ ইফ্রয়িমের মাতালদের লোকদেখানো* মুকুটগুলো
পায়ের তলায় মাড়ানো হবে।
৪ সেটার মহিমাময় সৌন্দর্যের নেতিয়ে পড়া ফুল,
যেটা সেই উর্বর উপত্যকার মাথায় রয়েছে,
সেটা গ্রীষ্ম কালের ডুমুরের প্রথম ফলের মতো হবে,
যেটাকে দেখামাত্র লোকেরা পেড়ে খেয়ে নেয়।
৫ সেই দিন স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবা তাঁর অবশিষ্ট লোকদের জন্য মহিমাময় মুকুট এবং সুন্দর ফুলের মুকুট হবেন। ৬ যারা ন্যায়বিচার করতে বসে, তাদের তিনি ন্যায়বিচার করার জন্য অনুপ্রাণিত করবেন আর যারা দরজায় আক্রমণকারীদের মোকাবিলা করে, তাদের তিনি লড়াই করার ক্ষমতা দেবেন।
৭ যাজকেরা ও ভাববাদীরা দ্রাক্ষারসের* কারণে বিপথে যায়,
তারা মদের কারণে টলমল করে।
তাদের দর্শন তাদের বিপথে নিয়ে যায়
আর তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
৮ তাদের টেবিলগুলো জঘন্য বমিতে পূর্ণ,
একটুও পরিষ্কার জায়গা নেই।
৯ তারা বলে: “সে কাকে জ্ঞান দেবে?
সে কাকে বার্তা বুঝিয়ে দেবে?
আমরা কি এমন শিশুদের মতো, যাদের সবেমাত্র স্তন্যপান ছাড়ানো হয়েছে,
যাদের সবেমাত্র মায়ের বুক থেকে সরানো হয়েছে?
১০ সে সবসময় একই কথা বলে:
‘আদেশের পর আদেশ, আদেশের পর আদেশ,
আইনের* পর আইন, আইনের পর আইন,
একটু এখানে, একটু ওখানে।’”
১১ তাই, ঈশ্বর তোতলাদের মাধ্যমে এবং বিদেশি ভাষায় কথা বলে, এমন লোকদের মাধ্যমে এই লোকদের সঙ্গে কথা বলবেন। ১২ তিনি একসময় তাদের বলেছিলেন: “এটা বিশ্রামের জায়গা। যারা ক্লান্ত, তারা যেন বিশ্রাম নেয়। এটা সতেজতার জায়গা।” কিন্তু, তারা শুনতে চাইল না। ১৩ তাই, যিহোবা তাদের বলবেন:
যাতে তারা যখন হাঁটে,
তখন তারা হোঁচট খায় এবং পিছনের দিকে পড়ে
আর তারা আহত হয়, ফাঁদে পড়ে এবং ধরা পড়ে।
১৪ হে জেরুসালেমের লোকদের শাসকেরা,
তোমরা যারা বড়াই করে থাক, তোমরা যিহোবার কথা শোনো!
১৫ কারণ তোমরা বলে থাক:
যখন হঠাৎ করে বন্যা আসবে,
তখন সেটা আমাদের কাছে এসে পৌঁছোবে না
কারণ আমরা মিথ্যাকে আমাদের আশ্রয় করেছি,
আমরা মিথ্যার মধ্যে নিজেদের লুকিয়ে রেখেছি।”
১৬ তাই, নিখিলবিশ্বের প্রভু যিহোবা এই কথা বলেন:
“আমি সিয়োনে ভিত্তি হিসেবে একটা যাচাই-করা পাথর স্থাপন করছি,
সেটা এক নিশ্চিত ভিত্তির কোণের মূল্যবান পাথর।
যে-কেউ সেটার উপর বিশ্বাস রাখবে, সে ঘাবড়ে যাবে না।
শিলাবৃষ্টি মিথ্যার আশ্রয়কে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে,
বন্যার জল লুকোনোর জায়গাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে।
১৮ মৃত্যুর সঙ্গে তোমাদের চুক্তি ভেঙে যাবে,
কবরের* সঙ্গে তোমাদের চুক্তি আর থাকবে না।
যখন হঠাৎ করে বন্যা আসবে,
তখন সেটার দ্বারা তোমরা বিনষ্ট হয়ে যাবে।
১৯ যখনই সেটা আসবে,
সেটা তোমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাবে
কারণ প্রতি সকালে সেটা আসবে,
দিন কিংবা রাত, যা-ই হোক না কেন, সেটা আসবে।
একমাত্র আতঙ্কই তারা যা শুনেছিল, তা বুঝতে তাদের সাহায্য করবে।”*
২০ কারণ বিছানা এতই ছোটো যে, পা ছড়ানো যায় না
আর চাদর এতই ছোটো যে, গায়ে জড়ানো যায় না।
২১ কারণ যিহোবা উঠে দাঁড়াবেন, ঠিক যেভাবে তিনি পরাসীম পর্বতে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন,
তিনি পদক্ষেপ নেবেন, ঠিক যেমনটা তিনি গিবিয়োনের কাছের উপত্যকায়* নিয়েছিলেন,
যাতে তিনি নিজের কাজ, নিজের বিস্ময়কর কাজ করতে পারেন,
যাতে তিনি নিজের কাজ, নিজের অসাধারণ কাজ করতে পারেন।
২২ উপহাস কোরো না,
যাতে তোমাদের বাঁধন আরও শক্ত করা না হয়
কারণ নিখিলবিশ্বের প্রভু স্বর্গীয় বাহিনীর শাসক যিহোবার কাছ থেকে আমি শুনেছি,
পুরো দেশকে* ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২৩ আমার কথায় কান দাও
আর আমি যা বলছি, তা মন দিয়ে শোনো।
২৪ কৃষক কি বীজ বপন করার আগে সারাদিন ধরে লাঙল টানতে থাকে?
সে কি ক্রমাগত মাটির ড্যালা ভাঙতে থাকে এবং জমিতে মই দিতে থাকে? না!
২৫ সে কি মাটিকে সমতল করার পর
সেটাতে কালোজিরে ও জিরে ছড়ায় না
এবং সে কি সেটাতে গম, বাজরা ও যবের গাছ নিজের নিজের জায়গায় লাগায় না
এবং জমির কিনারায় অন্য ধরনের গম* লাগায় না?
২৬ কারণ ঈশ্বর মানুষকে সঠিক পথে চলতে শেখান,*
তার ঈশ্বর তাকে নির্দেশনা দেন।
২৭ কালোজিরেকে শস্য মাড়াই করার কাঠ দিয়ে মাড়াই করা হয় না
আর জিরের উপর দিয়ে গাড়ির চাকা গড়ানো হয় না।
এর পরিবর্তে, কালোজিরে দণ্ড দিয়ে
এবং জিরে লাঠি দিয়ে মাড়াই করা হয়।
২৮ যে-শস্য থেকে রুটি হয়, সেটাকে মাড়াই করা হয় ঠিকই,
কিন্তু ক্রমাগত নয়
আর সে যখন সেটার উপর দিয়ে ঘোড়ায় টানা গাড়ির চাকা চালায়,
তখন সে সেটাকে একেবারে পিষে দেয় না।