ইয়োব
৭ “মরণশীল মানুষের জীবন কি দাসত্বের চেয়ে কিছু কম?
তার দিনগুলো কি ভাড়া-করা মজুরের মতোই নয়?
২ দাসের মতোই সে ছায়ার জন্য আকাঙ্ক্ষা করে,
ভাড়া-করা মজুরের মতো নিজের মজুরি পাওয়ার অপেক্ষা করে।
৩ তেমনই আমার অংশে দুঃখে ভরা মাস জুড়ে দেওয়া হয়েছে
আর আমার জন্য দুঃখে ভরা রাত নির্ধারণ করা হয়েছে।
৪ আমি যখন শুই, তখন ভাবি, ‘সকাল কখন হবে?’
কিন্তু, রাত যেন কাটতেই চায় না! আমি ভোর পর্যন্ত এপাশ-ওপাশ করতে থাকি।
৫ আমার পুরো শরীর পোকায় ভরে গিয়েছে,
জায়গায় জায়গায় ধুলো জমেছে,
আমার ফোঁড়া ফেটে গিয়েছে আর পুঁজ গড়িয়ে পড়ছে।
৬ আমার দিনগুলো তাঁতির মাকুর চেয়েও তাড়াতাড়ি চলছে,
সেগুলো কোনোরকম আশা ছাড়া এমনি এমনিই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
৮ যে-চোখ আমাকে দেখে, সেটা আর আমাকে দেখতে পাবে না।
তোমার চোখ আমাকে খুঁজবে, কিন্তু আমি আর থাকব না।
১০ সে আর কখনো নিজের ঘরে ফিরে আসে না,
তার নিজের জায়গা তাকে আর চিনতে পারে না।
১১ এইজন্য আমি চুপ করে থাকব না,
আমার মনে জমে থাকা কষ্টের কারণে আমি কথা বলব,
আমার মধ্যে থাকা তিক্ততার কারণে আমি অভিযোগ করব।
১২ আমি কি সমুদ্র, না কি কোনো বড়ো সামুদ্রিক প্রাণী যে,
তুমি আমাকে পাহারা দিয়ে রেখেছ?
১৩ আমি যখন ভাবি, ‘আমার খাট আমাকে সান্ত্বনা দেবে,
আমার বিছানা আমার দুঃখ কমাবে,’
১৪ তখন তুমি স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাও
আর দর্শন দেখিয়ে আমাকে আতঙ্কিত করে তোল।
১৫ হায়! আমার যেন দম আটকে যাচ্ছে,
আমার বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো।
১৬ আমি আমার জীবনকে ঘৃণা করি, আমি আর বেঁচে থাকতে চাই না।
আমাকে একা ছেড়ে দাও কারণ আমার জীবন ক্ষণস্থায়ী।*
১৭ মরণশীল মানুষ কী যে, তুমি তার জন্য চিন্তা কর
এবং তার প্রতি মনোযোগ দাও?
১৮ কেন তুমি প্রতি সকালে তার উপর দৃষ্টি রাখ
এবং প্রতি মুহূর্তে তাকে পরীক্ষা কর?
১৯ তুমি কতক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে?
আমাকে কি ঢোক গেলার সময়টুকুও দেবে না?
২০ হে মানবজাতির পর্যবেক্ষক! আমি যদি পাপ করে থাকি, তা হলে তোমার কী ক্ষতি হয়েছে?
কেন তুমি আমাকে তোমার লক্ষ্যবস্তু করে তুলেছ?
আমি কি তোমার বোঝা হয়ে গিয়েছি?
২১ কেন তুমি আমার অপরাধ ক্ষমা করে দাও না?
কেন আমার ভুল উপেক্ষা কর না?
শীঘ্রই আমি ধুলোতে মিশে যাব,
তুমি খুঁজলেও আমাকে পাবে না।”