যোহনের প্রথম চিঠি
৪ প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এমন প্রতিটা বার্তা বিশ্বাস কোরো না, যেগুলো ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে বলে দাবি করা হয়, বরং পরীক্ষা করে দেখো যে, সেগুলো সত্যিই তাঁর কাছ থেকে এসেছে কি না। কারণ জগতে অনেক মিথ্যা ভাববাদী দেখা যাচ্ছে।
২ কোনো বার্তা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে কি না, তা তোমরা এভাবে বুঝতে পারবে: যে-বার্তা স্বীকার করে, যিশু খ্রিস্ট মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে এসেছিলেন, সেই বার্তাই ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে। ৩ কিন্তু, যে-বার্তা যিশুকে স্বীকার করে না, তা ঈশ্বরের কাছ থেকে আসেনি। এই বার্তা খ্রিস্টের বিরোধীর* কাছ থেকে এসেছে। সে যে এই বার্তা বলবে, তা তো তোমরা শুনেছ আর সেই বার্তা সত্যিই এখন জগতে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ প্রিয় সন্তানেরা, তোমরা ঈশ্বরের লোক এবং তোমরা মিথ্যা ভাববাদীদের পরাজিত করেছ, কারণ যিনি তোমাদের পক্ষে রয়েছেন, তিনি সেই দিয়াবলের চেয়েও শক্তিশালী, যে জগতের পক্ষে রয়েছে। ৫ এই মিথ্যা ভাববাদীরা এই জগতের; তাই তারা জগতের সঙ্গে মিল রেখে কথা বলে আর জগৎ তাদের কথা শোনে। ৬ আমরা ঈশ্বরের লোক। যে-কেউ ঈশ্বরকে জানে, সে আমাদের কথা শোনে; যে-কেউ ঈশ্বরের লোক নয়, সে আমাদের কথা শোনে না। এর দ্বারাই আমরা বুঝতে পারি, কোন বার্তা সত্য এবং কোন বার্তা মিথ্যা।
৭ প্রিয় ভাই ও বোনেরা, এসো আমরা পরস্পরের প্রতি প্রেম দেখিয়ে চলি, কারণ প্রেম ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে আর যে-কেউ প্রেম দেখায়, সে ঈশ্বরের সন্তান এবং সে ঈশ্বরকে জানে। ৮ যে-কেউ প্রেম দেখায় না, সে ঈশ্বরকে জানে না, কারণ ঈশ্বর প্রেম। ৯ আমাদের প্রতি ঈশ্বরের প্রেম এভাবে প্রকাশিত হয়েছে যে, ঈশ্বর তাঁর একজাত পুত্রকে জগতে পাঠিয়েছিলেন, যেন আমরা তাঁর মাধ্যমে জীবন লাভ করতে পারি। ১০ এই প্রেম হল: আমরা ঈশ্বরকে প্রেম করেছিলাম বলে যে তিনি তাঁর পুত্রকে আমাদের পাপের জন্য বলি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন, এমন নয়, বরং তিনিই আমাদের প্রেম করেছিলেন এবং তাঁর পুত্রকে আমাদের পাপের জন্য এমন এক বলি হিসেবে পাঠিয়েছিলেন, যা ঈশ্বরের সঙ্গে আমাদের পুনরায় সম্মিলিত করে।*
১১ প্রিয় ভাই ও বোনেরা, যেহেতু ঈশ্বর এভাবে আমাদের প্রতি প্রেম দেখিয়েছেন, তাই আমরাও পরস্পরের প্রতি প্রেম দেখাতে বাধ্য। ১২ কেউ কখনো ঈশ্বরকে দেখেনি। আমরা যদি পরস্পরের প্রতি প্রেম দেখিয়ে চলি, তা হলে ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে রয়েছেন আর আমাদের মধ্যে তাঁর প্রেম পূর্ণতা লাভ করেছে। ১৩ তিনি আমাদের তাঁর পবিত্র শক্তি দিয়েছেন আর এটা থেকেই আমরা জানতে পারি যে, আমরা তাঁর সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছি এবং তিনি আমাদের সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছেন। ১৪ এ ছাড়া, আমরা নিজেরা দেখেছি এবং সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, পিতা তাঁর পুত্রকে জগতের ত্রাণকর্তা হিসেবে পাঠিয়েছিলেন। ১৫ কেউ যদি স্বীকার করে, যিশু হলেন ঈশ্বরের পুত্র, তা হলে ঈশ্বর তার সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছেন এবং সেই ব্যক্তি ঈশ্বরের সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছে। ১৬ ঈশ্বর যে আমাদের ভালোবাসেন, তা আমরা জানি এবং সেই বিষয়ে আমরা নিশ্চিত।
ঈশ্বর প্রেম আর যে প্রেম দেখিয়ে চলে, সে ঈশ্বরের সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছে এবং ঈশ্বর তার সঙ্গে একতাবদ্ধ রয়েছেন। ১৭ এভাবেই প্রেম আমাদের মধ্যে পূর্ণতা লাভ করেছে, যাতে বিচারদিনে আমরা নির্দ্বিধায় কথা বলতে* পারি, কারণ এই জগতে আমরা খ্রিস্টেরই মতো। ১৮ প্রেমের মধ্যে কোনো ভয় নেই, বরং পরিপূর্ণ প্রেম ভয় দূর করে দেয়, কারণ ভয় আমাদের বাধা দেয়। কেউ যদি ভয় পায়, তা হলে তার মধ্যে প্রেম পূর্ণতা লাভ করেনি। ১৯ আমরা প্রেম দেখাই, কারণ ঈশ্বর প্রথমে আমাদের প্রতি প্রেম দেখিয়েছেন।
২০ কেউ যদি বলে, “আমি ঈশ্বরকে প্রেম করি” অথচ নিজের ভাইকে ঘৃণা করে, তা হলে সে একজন মিথ্যাবাদী। কারণ যাকে দেখেছে, সেই ভাইকে যে প্রেম করে না, সে যাঁকে দেখেনি, সেই ঈশ্বরকে প্রেম করতে পারে না। ২১ আর আমরা তাঁর কাছ থেকে এই আজ্ঞা পেয়েছি, যে-কেউ ঈশ্বরকে প্রেম করে, সে যেন নিজের ভাইকেও প্রেম করে।