করিন্থীয়দের প্রতি দ্বিতীয় চিঠি
৮ হে ভাইয়েরা, ম্যাসিডোনিয়ার মণ্ডলীগুলোর প্রতি ঈশ্বর যে-মহাদয়া দেখিয়েছেন, সেই সম্বন্ধে আমরা তোমাদের জানাতে চাই। ২ তারা যখন ক্লেশের মধ্যে চরম পরীক্ষা ভোগ করেছিল, তখন নিজেদের চরম দরিদ্রতা সত্ত্বেও তারা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে দান করেছিল আর এটা তাদের মহৎ উদারতাকে প্রকাশ করেছিল। ৩ কারণ তারা তাদের সাধ্য অনুযায়ী, এমনকী তাদের সাধ্যের অতিরিক্ত দান করেছিল। আমি নিজে সেই বিষয়ের সাক্ষি। ৪ তারা দান করার এবং পবিত্র ব্যক্তিদের সাহায্য করার কাজে অংশ নেওয়ার বিশেষ সুযোগের জন্য নিজে থেকে বার বার আন্তরিকভাবে অনুরোধ করেছিল। ৫ আমরা যতটা আশা করেছিলাম, তারা তার চেয়েও বেশি দান করেছিল। কিন্তু, তারা প্রথমে তাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে প্রভুর সেবা করার চেষ্টা করেছিল এবং ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুযায়ী আমাদের সাহায্য করেছিল। ৬ তাই, আমরা তীতকে উৎসাহিত করেছি, যেন তিনি তোমাদের কাছ থেকে স্বেচ্ছাকৃত দান সংগ্রহ করার যে-কাজ শুরু করেছিলেন, তা শেষ করেন। ৭ তোমাদের মধ্যে সমস্ত কিছুই, যেমন বিশ্বাস, কথা বলার ক্ষমতা, জ্ঞান ও আন্তরিকতা প্রচুর পরিমাণে রয়েছে এবং আমরা যেমন তোমাদের অনেক ভালোবাসি, তেমনই তোমরাও লোকদের ভালোবাস। তাই, তোমরা এই দান দেওয়ার ক্ষেত্রেও উদার হও।
৮ আমি তোমাদের আদেশ দেওয়ার জন্য এই কথা বলছি না, বরং অন্যদের আন্তরিকতা সম্বন্ধে তোমাদের জানানোর জন্য এবং তোমাদের প্রেম কতটা অকপট, তা পরীক্ষা করার জন্য বলছি। ৯ কারণ তোমরা আমাদের প্রভু যিশু খ্রিস্টের মহাদয়া সম্বন্ধে জান। তিনি যদিও ধনী ছিলেন কিন্তু তোমাদের জন্য দরিদ্র হয়েছিলেন, যাতে তাঁর দরিদ্রতার মধ্য দিয়ে তোমরা ধনী হতে পার।
১০ আর আমি এই বিষয়ে আমার মতামত জানাচ্ছি: এটা তোমাদের উপকারের জন্য, কারণ এক বছর আগে তোমরা সেই দান সংগ্রহের কাজ কেবল শুরুই করনি, কিন্তু সেইসঙ্গে তা করার ব্যাপারে তোমাদের আকাঙ্ক্ষাও দেখিয়েছিলে। ১১ তাই, তোমরা দান সংগ্রহের কাজ শুরু করার জন্য যেমন উৎসুক মনোভাব দেখিয়েছিলে, তা শেষ করার জন্যও একইরকম উৎসুক মনোভাব দেখাও। ১২ হৃদয় থেকে করা দান, ঈশ্বরকে খুশি করে। কারণ ঈশ্বর চান, একজন ব্যক্তি যেন তার যা রয়েছে, সেই অনুসারে দান করে, যা নেই, সেই অনুসারে নয়। ১৩ কারণ আমি চাই না, অন্যেরা আরামে থাকুক আর তোমরা কষ্টের মধ্যে পড়; ১৪ কিন্তু, বর্তমানে তোমাদের অতিরিক্ত বিষয়ের দ্বারা যেন তাদের অভাব পূরণ হয়, আবার তাদের অতিরিক্ত বিষয়ের দ্বারা যেন তোমাদের অভাব পূরণ হয়। আর এভাবে ভারসাম্য বজায় থাকে। ১৫ ঠিক যেমন লেখা আছে: “যে বেশি সংগ্রহ করেছে, তার অতিরিক্ত হয়নি আর যে অল্প সংগ্রহ করেছে, তার অভাব হয়নি।”
১৬ আমরা ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিই, তোমাদের জন্য আমাদের যে-চিন্তা রয়েছে, তীতের সেই একই চিন্তা রয়েছে। ১৭ কারণ আমরা তাকে যা বলেছিলাম, তিনি তাতে রাজি হয়েছিলেন। তবে, তিনি নিজেও তা করার জন্য অত্যন্ত উৎসুক বলে নিজের উদ্যোগে তোমাদের কাছে যাচ্ছেন। ১৮ কিন্তু, আমরা তার সঙ্গে আরেকজন ভাইকে পাঠাচ্ছি, সুসমাচার প্রচার করার বিষয়ে যার প্রশংসা সমস্ত মণ্ডলীতে ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯ শুধু তা-ই নয়, এই দান নিয়ে যাওয়ার জন্য মণ্ডলীগুলো তাকে আমাদের ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে নিযুক্ত করেছে। এই দানই আমরা প্রভুর গৌরবের জন্য এবং আমরা যে অন্যদের সাহায্য করতে ইচ্ছুক, তা প্রমাণ করার জন্য বিতরণ করব। ২০ উদারভাবে করা এই দান বিতরণ করার বিষয়ে আমরা আগে থেকেই সাবধান হচ্ছি, যেন কেউ আমাদের দোষ ধরতে না পারে। ২১ কারণ আমরা ‘সমস্ত কিছু সৎভাবে করার চেষ্টা করি আর তা কেবলমাত্র যিহোবার* সামনেই নয়, বরং মানুষের সামনেও।’
২২ এ ছাড়া, আমরা তাদের সঙ্গে আমাদের আরেকজন ভাইকে পাঠাচ্ছি, যাকে আমরা অনেক বার পরীক্ষা করে দেখেছি যে, তিনি বিভিন্ন কাজ অত্যন্ত উদ্যোগের সঙ্গে করে থাকেন। আর তোমাদের উপর তার দৃঢ় আস্থা রয়েছে বলে তিনি এখন আরও বেশি উদ্যোগী। ২৩ তীতের ব্যাপারে তোমাদের যদি কোনো সন্দেহ থাকে, তা হলে নিশ্চিত থাক, তিনি আমার সঙ্গী এবং আমার মতো তিনিও তোমাদের মঙ্গলের জন্য সেবা করার বিষয়ে আমার সহকর্মী; কিংবা তার সঙ্গে আমাদের যে-ভাইয়েরা রয়েছে, তাদের ব্যাপারে তোমাদের যদি কোনো সন্দেহ থাকে, তা হলে নিশ্চিত থাক, মণ্ডলীগুলোই তাদের পাঠিয়েছে এবং তারা খ্রিস্টের গৌরব করে। ২৪ তাই, এই ভাইদের দেখাও, তোমরা তাদের ভালোবাস এবং মণ্ডলীগুলোকে দেখাও, কেন আমরা তোমাদের নিয়ে গর্ব করি।