দ্বিতীয় বিবরণ
১৫ “প্রতি সাত বছরের শেষে তুমি মুক্তির ঘোষণা করবে। ২ তোমরা এমনটা করবে: যদি কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে তার প্রতিবেশী ঋণ নিয়ে থাকে, তা হলে সেই ঋণদাতার উচিত যেন তিনি এই বছরে সেই প্রতিবেশীর বা ভাইয়ের ঋণ মাফ করে দেয় আর ঋণ পরিশোধ করার দাবি না করে কারণ এই বছরে যিহোবার সম্মানে মুক্তির ঘোষণা করা হবে। ৩ তুমি বিদেশিদের কাছে ঋণ পরিশোধ করার দাবি করতে পারো, কিন্তু তুমি তোমার ভাইয়ের কাছে ঋণ পরিশোধ করার দাবি করতে পার না। ৪ তোমাদের মধ্যে যেন কেউ গরিব হয়ে না পড়ে কারণ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ উত্তরাধিকার হিসেবে দিতে চলেছেন, সেখানে যিহোবা তোমাকে অবশ্যই আশীর্বাদ করবেন। ৫ কিন্তু, এটা একমাত্র তখনই হবে, যখন তুমি খুব ভালোভাবে তোমার ঈশ্বর যিহোবার বাধ্য হবে এবং এই সমস্ত আজ্ঞা পালন করবে, যেগুলো আজ আমি তোমাকে দিচ্ছি। ৬ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে আশীর্বাদ করবেন, যেমনটা তিনি তোমার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন আর তোমার কাছে সব কিছু এত বেশি পরিমাণে থাকবে যে, তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দিতে পারবে।* তোমাকে কখনো তাদের কাছ থেকে ঋণ নিতে হবে না। তুমি অনেক জাতির উপর কর্তৃত্ব করবে কিন্তু তারা তোমার উপর কর্তৃত্ব করবে না।
৭ “তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দেবেন, সেখানে তোমার নগরে কোনো ইজরায়েলীয় ভাই যদি কাঙাল হয়ে পড়ে, তা হলে তাকে সাহায্য করার ক্ষেত্রে তুমি হাত গুটিয়ে নেবে না কিংবা তোমার হৃদয় কঠিন করবে না। ৮ এর পরিবর্তে, তুমি দু-হাত খুলে তাকে ঋণ দেবে।* সে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী তোমার কাছে যত ঋণই চাক না কেন, তুমি অবশ্যই তাকে তা দেবে। ৯ সাবধান থেকো, ‘সপ্তম বছর অর্থাৎ মুক্তির বছর তো কাছে এসে গিয়েছে,’ এই মন্দ চিন্তা মনের মধ্যে পুষে রেখে তুমি যেন তোমার গরিব ভাইকে সাহায্য করা থেকে এবং তাকে কিছু দেওয়া থেকে বিরত না হও। সেই ব্যক্তি যদি তোমার বিরুদ্ধে যিহোবার কাছে অভিযোগ করে, তা হলে তোমাকে পাপী হিসেবে গণ্য করা হবে। ১০ তোমার কাছে কেউ কিছু চাইলে তুমি অনিচ্ছুকভাবে নয় বরং মন খুলে তাকে দেবে। তা হলেই তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার পরিশ্রমের উপর আশীর্বাদ করবেন আর তুমি যে-কাজেই হাত দেবে, সেই কাজেই তিনি তোমাকে সফল করে তুলবেন। ১১ তোমার দেশে সবসময়ই গরিবেরা থাকবে। তাই, আমি তোমাকে এই আজ্ঞা দিচ্ছি, ‘তুমি তোমার দেশে সমস্যায় থাকা ব্যক্তিদের এবং তোমার গরিব ভাইদের দু-হাত খুলে উদারভাবে দান করবে।’
১২ “তোমার ইব্রীয় ভাইদের মধ্যে কাউকে অর্থাৎ কোনো পুরুষ অথবা মহিলাকে যদি তোমার কাছে বিক্রি করা হয় আর সে তোমার কাছে দাস হিসেবে ছয় বছর কাজ করে, তা হলে সপ্তম বছরে তুমি তাকে মুক্ত করে দেবে। ১৩ আর তুমি যখন তাকে মুক্ত করবে, তখন খালি হাতে তাকে বিদায় দেবে না। ১৪ তুমি তাকে উদারভাবে তোমার মেষ ও ছাগলের পালের মধ্য থেকে পশু, শস্য মাড়াই করার জায়গা থেকে শস্য এবং তোমার পেষাই করার গর্ত থেকে তেল ও দ্রাক্ষারস* দেবে। তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যতটা আশীর্বাদ করেছেন, সেই অনুযায়ী তুমি তাকে দেবে। ১৫ ভুলে যেয়ো না, মিশরে তুমিও দাস ছিলে আর তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে সেখান থেকে মুক্ত করে এনেছেন। এইজন্য আজ আমি তোমাকে এটা করার আজ্ঞা দিচ্ছি।
১৬ “কিন্তু যদি এমনটা হয়, তোমার দাস তোমাকে এবং তোমার পরিবারকে খুব ভালোবাসে আর সে তোমার কাছে থাকার সময় অনেক আনন্দে ছিল আর এইজন্য সে তোমাকে বলে, ‘আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না!’ ১৭ তা হলে তুমি সেই দাসকে দরজার কাছে নিয়ে যাবে আর একটা ফুটো করার যন্ত্র দিয়ে তার কান ফুটো করবে। এতে সে সারাজীবনের জন্য তোমার দাস হয়ে যাবে। তোমার দাসী যদি তোমাকে ছেড়ে যেতে না চায়, তা হলে তার প্রতিও তুমি তা-ই করবে। ১৮ তুমি যদি তোমার দাসকে মুক্ত কর আর সে তোমাকে ছেড়ে চলে যায়, তা হলে তুমি ভেবো না, এতে তোমার কষ্ট হবে কারণ সে ছয় বছর ধরে তোমার জন্য একজন বেতনভোগী মজুরের চেয়েও দ্বিগুণ কাজ করেছে আর তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার প্রতিটা কাজের উপর আশীর্বাদ করেছেন।
১৯ “তুমি তোমার গরু, মেষ ও ছাগলের সমস্ত প্রথম পুংশাবককে তোমার ঈশ্বর যিহোবার জন্য আলাদা করে রাখবে। তুমি প্রথমজাত ষাঁড়কে দিয়ে কোনো কাজ করাবে না কিংবা প্রথমজাত মেষের লোম ছেদন করবে না। ২০ তুমি প্রতি বছর তোমার পরিবারের সঙ্গে যিহোবা যে-জায়গা বেছে নেবেন, সেখানে তোমার ঈশ্বর যিহোবার সামনে এই প্রথমজাত পশুগুলোর মাংস খাবে। ২১ কিন্তু, তোমার সেই প্রথমজাত পশু যদি খোঁড়া কিংবা অন্ধ হয় অথবা তাতে অন্য কোনো রকমের বড়ো খুঁত থাকে, তা হলে তুমি সেটাকে তোমার ঈশ্বর যিহোবার কাছে বলি হিসেবে দেবে না। ২২ তুমি তোমার নগরেই* তা খাবে। সমস্ত লোক এই মাংস খেতে পারে, তা তারা শুচি অথবা অশুচি, যা-ই হোক না কেন, ঠিক যেমনটা তোমরা চিংকারা বা হরিণের মাংস খেয়ে থাকো। ২৩ কিন্তু, তুমি সেটার রক্ত খাবে না, এর পরিবর্তে তুমি মাটিতে সেটা জলের মতো ঢেলে দেবে।