দ্বিতীয় বিবরণ
১৭ “তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবার কাছে কোনো রকমের খুঁতযুক্ত ষাঁড় অথবা মেষ উৎসর্গ করবে না কারণ এই ধরনের বলিদান তোমার ঈশ্বর যিহোবার দৃষ্টিতে জঘন্য।
২ “ধরো, তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দিতে চলেছেন, সেখানকার কোনো নগরে তোমাদের মধ্যে এমন কোনো পুরুষ অথবা মহিলাকে পাওয়া গেল, যে তোমার ঈশ্বর যিহোবার দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা করছে এবং তোমার ঈশ্বরের চুক্তি ভাঙছে ৩ আর সঠিক পথ ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের উপাসনা করছে, তাদের সামনে মাথা নত করছে কিংবা সূর্য, চাঁদ বা আকাশের তারাদের সামনে মাথা নত করছে, যেটা করার আজ্ঞা আমি দিইনি। ৪ যখন তোমাকে এই বিষয়টা জানানো হবে কিংবা তুমি এই বিষয়টা জানতে পারবে, তখন তুমি ভালোভাবে সেটার তদন্ত করবে। তুমি যদি জানতে পার যে, খবরটা সত্যি আর ইজরায়েলের মধ্যে সত্যিই এই জঘন্য কাজ করা হয়েছে, ৫ তা হলে যে-পুরুষ অথবা মহিলা এই মন্দ কাজ করেছে, তাকে তুমি নগরের দরজার কাছে নিয়ে যাবে এবং পাথর ছুড়ে মেরে ফেলবে। ৬ তাকে দুই অথবা তিন জন সাক্ষির সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত। এক জন সাক্ষির সাক্ষ্যের উপর ভিত্তি করে তাকে যেন মৃত্যুদণ্ড দেওয়া না হয়। ৭ তাকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলার জন্য সবচেয়ে প্রথমে যেন সেই ব্যক্তিদের হাত ওঠে, যারা তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে। এরপর যেন বাকি লোকেরা তাকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলে। এভাবে তুমি তোমার মধ্য থেকে যা মন্দ, তা দূর করে দেবে।
৮ “তোমার কোনো নগরে যদি এমন কোনো মামলা তোমার সামনে পেশ করা হয়, যেটার সমাধান করা তোমার পক্ষে খুব কঠিন বলে মনে হয়, হোক তা খুন, বৈধ অধিকার, মারামারি কিংবা ঝগড়াবিবাদ সংক্রান্ত মামলা, তা হলে তুমি সেই মামলা সেই জায়গায় গিয়ে পেশ করবে, যেটা তোমার ঈশ্বর যিহোবা বেছে নেবেন। ৯ তুমি সেই মামলা লেবীয় যাজকদের এবং তোমার সময়ের বিচারকদের সামনে পেশ করবে আর তারা সেটার রায় দেবে। ১০ যিহোবার বেছে নেওয়া জায়গা থেকে তোমাকে যে-রায় জানানো হবে, তুমি সেই অনুযায়ী কাজ করবে। তারা তোমাকে যে-পরামর্শই দিক না কেন, তুমি সেটা ভালোভাবে পালন করবে। ১১ তারা তোমাকে যে-আইন সম্বন্ধে শেখাবে এবং যে-রায় দেবে, তুমি সেই অনুসারে কাজ করবে। তুমি তাদের দেওয়া রায় অমান্য করবে না।* ১২ যদি কোনো ব্যক্তি বিচারকের কথা না শোনার মাধ্যমে কিংবা যে-যাজক তোমার ঈশ্বর যিহোবার সেবা করে, তার দেওয়া রায় না মানার মাধ্যমে দুঃসাহস দেখায়, তা হলে তুমি সেই ব্যক্তিকে মেরে ফেলবে। এভাবে তুমি ইজরায়েল থেকে যা মন্দ, তা দূর করে দেবে। ১৩ তখন ইজরায়েলের সমস্ত লোক এই বিষয়ে শুনে ভয় পেয়ে যাবে আর তারপর কেউ কখনো এইরকম দুঃসাহস দেখাবে না।
১৪ “তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দিতে চলেছেন, তুমি যখন সেই দেশে প্রবেশ করবে আর সেটা দখল করে সেখানে বাস করতে শুরু করবে এবং বলবে, ‘চলো, আমরাও আশেপাশের সমস্ত জাতির মতো আমাদের জন্য একজন রাজা নিযুক্ত করি,’ ১৫ তখন তুমি এমন ব্যক্তিকে রাজা হিসেবে নিযুক্ত করবে, যাকে তোমার ঈশ্বর যিহোবা বেছে নেবেন। তুমি তোমার ইজরায়েলীয় ভাইদের মধ্য থেকে কাউকে রাজা হিসেবে বেছে নেবে। তোমার ইজরায়েলীয় ভাই নয়, এমন কোনো বিদেশিকে তুমি রাজা হিসেবে নিযুক্ত করতে পারবে না। ১৬ আর যে-ব্যক্তিকে রাজা হিসেবে নিযুক্ত করা হবে, সে যেন নিজের জন্য অনেক ঘোড়া সংগ্রহ না করে কিংবা আরও ঘোড়া আনানোর জন্য তার লোকদের মিশরে না পাঠায় কারণ যিহোবা তোমাদের বলেছেন, ‘তোমরা আর কখনো মিশরে ফিরে যাবে না।’ ১৭ আর একজন রাজা যেন অনেকগুলো বিয়েও না করে, যাতে তার হৃদয় বিপথে চলে না যায়। আর সে যেন নিজের জন্য অনেক সোনা-রুপো সঞ্চয় না করে। ১৮ সে যখন সিংহাসনে বসে শাসন করতে শুরু করবে, তখন সে যেন লেবীয় যাজকদের কাছে রাখা ব্যবস্থার পুস্তকটা নিয়ে তাতে লেখা সমস্ত বিষয় নিজের জন্য একটা বইতে* হুবহু লিখে নেয়।
১৯ “সে যেন তার এই বইটা নিজের কাছে রাখে আর সারাজীবন ধরে প্রতিদিন এটা পড়ে, যাতে সে তার ঈশ্বর যিহোবাকে ভয় করতে শেখে আর তাতে দেওয়া সমস্ত নিয়ম ও আইনকানুন পালন করে চলে। ২০ এতে তার মন অহংকারে ভরে উঠবে না আর সে নিজেকে তার ভাইদের চেয়ে বড়ো বলে মনে করবে না। সে ঈশ্বরের আজ্ঞা অমান্য করবে না* আর সে ও তার বংশধরেরা ইজরায়েলের উপর দীর্ঘসময় ধরে রাজত্ব করবে।