দ্বিতীয় বিবরণ
১৪ “তোমরা তোমাদের ঈশ্বর যিহোবার ছেলে। তোমরা কারো মৃত্যুর শোক পালন করার জন্য নিজের শরীরে কাটাকুটি করবে না কিংবা তোমাদের ভুরু* চাঁচবে না। ২ কারণ তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবার পবিত্র জাতি আর যিহোবা পৃথিবীর সমস্ত জাতির মধ্য থেকে তোমাকে বেছে নিয়েছেন, যাতে তিনি তোমাকে তাঁর নিজের লোক এবং নিজের বিশেষ সম্পদ* করে তোলেন।
৩ “তুমি কোনো জঘন্য জিনিস খাবে না। ৪ তোমরা এইসমস্ত পশুর মাংস খেতে পারো: ষাঁড়, মেষ, ছাগল, ৫ হরিণ, চিংকারা, ছোটো হরিণ, বুনো ছাগল, নীলগাই,* বুনো মেষ এবং পাহাড়ি মেষ। ৬ তোমরা এমন যেকোনো পশুর মাংস খেতে পারো, যেটার খুর দু-ভাগে বিভক্ত এবং যেটা জাবরও কাটে। ৭ তোমরা এই পশুগুলোর মাংস খাবে না, যেগুলো হয় জাবর কাটে, না হয় দু-ভাগে বিভক্ত খুরবিশিষ্ট: উট, খরগোশ এবং পাথুরে এলাকার খরগোশ। এই পশুগুলো জাবর কাটে ঠিকই, কিন্তু এদের পায়ের খুর দু-ভাগে বিভক্ত নয়। এরা তোমাদের জন্য অশুচি। ৮ তোমরা শূকরের মাংসও খাবে না কারণ সেটার খুর দু-ভাগে বিভক্ত ঠিকই, কিন্তু সেটা জাবর কাটে না। সেটা তোমাদের জন্য অশুচি। তোমরা এইরকম পশুর মাংস খাবে না কিংবা তাদের মৃতদেহ স্পর্শ করবে না।
৯ “জলে থাকা প্রাণীদের মধ্যে তোমরা এমন যেকোনো প্রাণী খেতে পারো, যাদের পাখনা ও আঁশ রয়েছে। ১০ কিন্তু, তোমরা এমন কোনো প্রাণী খাবে না, যেটার পাখনা ও আঁশ নেই। সেগুলো তোমাদের জন্য অশুচি।
১১ “তোমরা এমন যেকোনো পাখির মাংস খেতে পারো, যেগুলো শুচি। ১২ কিন্তু, তোমরা এগুলোর মধ্যে কোনোটাই খাবে না: ঈগল, সামুদ্রিক বাজপাখি, কালো শকুন, ১৩ লাল চিল, কালো চিল, সমস্ত ধরনের চিল, ১৪ সমস্ত ধরনের কাক, ১৫ উটপাখি, পেঁচা, গাংচিল, সমস্ত ধরনের বাজপাখি, ১৬ ছোটো পেঁচা, লম্বা কানওয়ালা পেঁচা, রাজহাঁস, ১৭ পেলিক্যান, শকুন, পানকৌড়ি, ১৮ সারস, সব ধরনের বক, মোহনচূড়া ও বাদুড়। ১৯ ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ায় এমন প্রতিটা ডানাওয়ালা কীটপতঙ্গ তোমাদের জন্য অশুচি। তোমরা এগুলো খাবে না। ২০ উড়তে পারে এমন যেকোনো শুচি প্রাণী তোমরা খেতে পারো।
২১ “তোমরা মরে পড়ে থাকা কোনো পশুর মাংস খাবে না। তুমি তোমার নগরে* বসবাসরত কোনো বিদেশিকে তা দিতে পারো। সে সেটার মাংস খেতে পারে। কিংবা সেই মৃত পশু কোনো বিদেশির কাছে বিক্রি করা যেতে পারে। কিন্তু, তুমি সেটা খাবে না কারণ তুমি তোমার ঈশ্বর যিহোবার পবিত্র জাতি।
“তুমি ছাগলের বাচ্চাকে তার মায়ের দুধে সেদ্ধ করবে না।
২২ “বছরের পর বছর ধরে তুমি অবশ্যই তোমার সমস্ত ফসলের দশমাংশ দেবে। ২৩ তোমার ঈশ্বর যে-জায়গাকে নিজের নামের গৌরব করার জন্য বেছে নেবেন, সেখানে তুমি তোমার ফসল, নতুন দ্রাক্ষারস* ও তেলের দশমাংশ এবং তোমার গরু, মেষ ও ছাগলের প্রথম বাচ্চার মাংস তোমার ঈশ্বর যিহোবার সামনে খেয়ো। এভাবে তুমি সবসময় তোমার ঈশ্বর যিহোবাকে ভয় করতে শিখবে।
২৪ “কিন্তু, তোমার ঈশ্বর যিহোবা নিজের নামের গৌরব করার জন্য যে-জায়গা বেছে নেবেন, সেটা যদি তোমার বাড়ি থেকে অনেক দূরে হয় আর তোমার কাছে যিহোবার আশীর্বাদে যে-সম্পদ রয়েছে, সেটার দশমাংশ অত দূর নিয়ে যাওয়া যদি তোমার জন্য কঠিন হয়, ২৫ তা হলে তুমি তোমার দশমাংশ বিক্রি করতে পারো। তারপর, তুমি সেই টাকা হাতে নিয়ে তোমার ঈশ্বর যিহোবা যে-জায়গা বেছে নেবেন, সেখানে যাবে। ২৬ সেখানে পৌঁছানোর পর তুমি সেই টাকা দিয়ে যা ইচ্ছা, কিনতে পারো: গরু, ষাঁড়, মেষ, ছাগল, দ্রাক্ষারস,* অন্য কোনো মদ্য-জাতীয় পানীয় কিংবা যেকোনো পছন্দের জিনিস। আর তুমি তোমার পরিবারের সঙ্গে তোমার ঈশ্বর যিহোবার সামনে খাওয়া-দাওয়া করবে এবং আনন্দ করবে। ২৭ তুমি তোমার নগরে বসবাসরত লেবীয়দের অবহেলা করবে না কারণ তোমার সঙ্গে তাদের কোনো জমির অংশ কিংবা উত্তরাধিকার দেওয়া হয়নি।
২৮ “প্রতি তিন বছরের শেষে তুমি তৃতীয় বছরের ফসলের সম্পূর্ণ দশমাংশ তোমার নগরের মধ্যে জমা করবে। ২৯ তখন তোমার নগরে বসবাসরত লেবীয়েরা, যাদের তোমার সঙ্গে জমির কোনো অংশ কিংবা উত্তরাধিকার দেওয়া হয়নি ও সেইসঙ্গে তোমার মাঝে বসবাসরত বিদেশি, অনাথ* ও বিধবারা এসে সেই ভাণ্ডার থেকে খাদ্যদ্রব্য নেবে এবং মন ভরে খাবে আর তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার সমস্ত কাজে আশীর্বাদ করবেন।