দ্বিতীয় বিবরণ
২১ “তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে যে-দেশ দখল করার জন্য দিতে চলেছেন, সেখানে তুমি যদি মাঠে কারো মৃতদেহ দেখতে পাও আর কেউ যদি এটা না জানে যে, কে তাকে খুন করেছে, ২ তা হলে তোমার প্রাচীনেরা ও বিচারকেরা যেন সেখানে যায় এবং সেখান থেকে আশেপাশের নগরগুলোর দূরত্ব মাপে। ৩ এরপর, সবচেয়ে কাছের নগরের প্রাচীনেরা যেন এমন একটা গরু নেয়, যেটাকে দিয়ে কখনো কোনো কাজ করানো হয়নি এবং যেটা কখনো জোয়াল বহন করেনি। ৪ প্রাচীনেরা যেন সেই গরুটাকে এমন একটা উপত্যকায় নিয়ে যায়, যেখানে জল বয়ে যায় এবং যেখানে কখনো চাষবাস করা হয়নি কিংবা বীজ বোনা হয়নি আর তারা যেন ওই উপত্যকায় সেই গরুটার ঘাড় ভেঙে সেটাকে মেরে ফেলে।
৫ “এরপর, লেবীয় যাজকেরা সেখানে আসবে কারণ তোমার ঈশ্বর যিহোবা তাদের তাঁর সেবা করার এবং যিহোবার নামে লোকদের আশীর্বাদ করার জন্যই বেছে নিয়েছেন। তারা বলে দেবে যে, দৌরাত্ম্য সংক্রান্ত প্রতিটা মামলা কীভাবে মীমাংসা করতে হবে। ৬ পরে, সবচেয়ে কাছের সেই নগরের সমস্ত প্রাচীন সেই গরুর উপরে তাদের হাত ধোবে, যেটাকে সেই উপত্যকায় ঘাড় ভেঙে মেরে ফেলা হয়েছিল ৭ আর বলবে, ‘আমরা এই ব্যক্তিকে খুন করিনি* কিংবা এ-কে খুন হতেও দেখিনি। ৮ তাই হে যিহোবা, তুমি তোমার লোকদের, ইজরায়েলীয়দের এটার জন্য দায়ী কোরো না, যাদের তুমি মুক্ত করে এনেছ আর সেই নির্দোষ ব্যক্তির রক্তপাতের দোষ তোমার ইজরায়েলীয় লোকদের মধ্য থেকে মুছে ফেলো।’ এতে সেই ব্যক্তির রক্তপাতের দোষ তোমাদের উপর আসবে না। ৯ এভাবে তুমি সেই নির্দোষ ব্যক্তির রক্তপাতের দোষ তোমার মধ্য থেকে মুছে ফেলবে কারণ তুমি যিহোবার দৃষ্টিতে যা সঠিক, তা-ই করেছ।
১০ “যখন তুমি তোমার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাবে এবং তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমার হয়ে লড়াই করে তাদের পরাজিত করবেন এবং তুমি তাদের বন্দি করবে, ১১ তখন তুমি যদি সেই বন্দিদের মধ্যে কোনো সুন্দরী মহিলাকে দেখতে পাও এবং তাকে তোমার খুব পছন্দ হয় এবং তুমি তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে চাও, ১২ তা হলে তুমি তাকে তোমার বাড়িতে নিয়ে আসতে পারো। সেই মহিলা যেন ন্যাড়া হয়, নিজের নখ কাটে ১৩ এবং তার সেই পোশাক পরিবর্তন করে, যেটা পরে সে বন্দি হয়ে এসেছিল। সে তোমার ঘরে থাকবে আর পুরো এক মাস ধরে তার বাবা-মায়ের জন্য শোক পালন করবে। এরপর, তুমি তাকে তোমার স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে পারো আর তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে পারো। ১৪ কিন্তু, পরে তুমি যদি তার উপর খুশি না হও, তা হলে তার যেখানে ইচ্ছা, সেখানে তুমি তাকে চলে যেতে দিয়ো। তবে, তুমি যেন সেই মহিলাকে টাকার বিনিময়ে বিক্রি না কর কিংবা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার না কর কারণ তুমি জোর করে তাকে বিয়ে করেছিলে।
১৫ “ধরো, একজন ব্যক্তির দু-জন স্ত্রী রয়েছে আর সে একজনকে অন্য জনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে।* দু-জন স্ত্রীরই ছেলে হয়, কিন্তু প্রথমজাত ছেলে সেই স্ত্রীর সন্তান, যাকে সে কম ভালোবাসে। ১৬ যখন তার ছেলেদের মধ্যে সম্পত্তি ভাগ করার সময় আসবে, তখন সে তার প্রথমজাত ছেলের অধিকার অর্থাৎ যে-স্ত্রীকে সে কম ভালোবাসে, তার ছেলের অধিকার কেড়ে নিয়ে তার প্রিয় স্ত্রীর ছেলেকে দিতে পারবে না। ১৭ ওই ব্যক্তি যেন সেই স্ত্রীর ছেলেকেই তার প্রথমজাত সন্তান হিসেবে মেনে নেয়, যাকে সে কম ভালোবাসে আর তাকেই যেন তার প্রতিটা জিনিসের দ্বিগুণ অংশ দেয় কারণ সেই ছেলেই তার ক্ষমতার* প্রথম ফল। প্রথমজাত হিসেবে সেই ছেলের যে-অধিকার রয়েছে, সেটা তারই থাকবে।
১৮ “যদি কোনো ব্যক্তির ছেলে একগুঁয়ে ও বিদ্রোহী হয় এবং তার বাবা-মায়ের বাধ্য না হয় আর তার বাবা-মা তাকে সংশোধন করার অনেক চেষ্টা করা সত্ত্বেও সে তাদের কোনো কথাই না শোনে, ১৯ তা হলে তার বাবা-মা যেন তাকে ধরে নগরের দরজার কাছে প্রাচীনদের সামনে নিয়ে যায় ২০ এবং প্রাচীনদের এই কথা বলে, ‘আমাদের এই ছেলে খুবই একগুঁয়ে ও বিদ্রোহী, এ আমাদের কোনো কথাই শোনে না। এ পেটুক ও মাতাল।’ ২১ তখন নগরের সমস্ত পুরুষ যেন তাকে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলে। এভাবে তুমি তোমার মধ্য থেকে যা মন্দ, তা দূর করে দেবে। ইজরায়েলের সমস্ত লোক যখন এই বিষয়ে জানতে পারবে, তখন তারা ভয় পাবে।
২২ “যদি কোনো ব্যক্তি এমন পাপ করে, যেটার শাস্তি মৃত্যু আর তুমি তাকে মেরে ফেলার পর একটা দণ্ডে ঝুলিয়ে দাও, ২৩ তা হলে তার মৃতদেহ যেন সারারাত দণ্ডে ঝুলিয়ে রাখা না হয়। যে-দিন তুমি সেই ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেবে, সেই দিনই যেন তার মৃতদেহ কবর দেওয়া হয়। কারণ যে-কাউকে দণ্ডে ঝোলানো হয়, সে ঈশ্বরের দ্বারা অভিশপ্ত। তুমি তোমার দেশকে কলুষিত করবে না, যেটা তোমার ঈশ্বর যিহোবা তোমাকে উত্তরাধিকার হিসেবে দিতে চলেছেন।