অধ্যায় ৩৫
সর্ব্বাপেক্ষা সুবিদিত উপদেশ যা দত্ত হয়েছিল
এই দৃশ্যটি বাইবেলের ইতিহাসে সব থেকে স্মরণীয়: যীশু পর্বতের ধারে বসে আছেন, তাঁর বিখ্যাত পর্বতে দত্ত উপদেশ দিচ্ছেন। জায়গাটি গালীল সমুদ্রের ধারে, এবং সবেত কফরনাহূমের কাছে। সমস্ত রাত্রি প্রার্থনায় কাটানোর পর যীশু তাঁর শিষ্যদের মধ্যে থেকে ১২ জনকে বেছে নিয়েছেন যারা তাঁর প্রেরিত হবে। তারপর, তাদের সকলের সাথে, তিনি পর্বতের এই সমতল জায়গায় নেমে আসেন।
আপনি হয়ত ভাবছেন, যে যীশু খুব ক্লান্ত, এবং হয়ত একটু ঘুমাতে চাইবেন। কিন্তু বিরাট জনতা এসেছে, অনেকে যিহূদীয়া ও যিরূশালেম থেকে যা প্রায় ৯৬ থেকে ১১২ কিলোমিটার দূরে। অন্যরা এসেছে সোর ও সীদোনের সমুদ্র উপকূল থেকে যা উত্তরদিকে অবস্থিত। তারা যীশুর কথা শুনতে ও তাদের রোগ থেকে আরোগ্য লাভ করতে এসেছে। এমন লোকেরাও আছে যারা ভূতেদের দ্বারা পীড়িত, অর্থাৎ শয়তানের দুষ্ট দূতেদের দ্বারা।
যখন যীশু নেমে আসেন, অসুস্থ লোকেরা তাঁর কাছে আসে তাঁকে স্পর্শ করার জন্য আর তিনি তাদের সকলকে আরোগ্য করেন। হয়ত এরপর, যীশু পর্বতের একটি উঁচু জায়গায় উঠে যান। সেখানে তিনি বসে সেই বিরাট জনতাকে শিক্ষা দিতে আরম্ভ করেন যারা নীচের সমতলে বসে আছে। আর চিন্তা করুন! এখন সমবেত সেই শ্রোতাদের মধ্যে একজনও কেউ নেই যে কোন গুরুতর দুর্বলতা ভোগ করছে!
লোকেরা এইরূপ আশ্চর্য্যজনক অলৌকিক কাজ করতে সক্ষম শিক্ষকের কথা শুনতে খুব আগ্রহী। যীশু, অবশ্য, তাঁর উপদেশ বিশেষ করে তাঁর শিষ্যদের উপকারার্থে দেন, যারা তাঁর খুব কাছে চারিপাশে বসে ছিল। কিন্তু যাতে আমরাও উপকার পাই, মথি এবং লূক উভয়েই তা আমাদের জন্য লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।
মথি এই উপদেশ সম্বন্ধে যে বিবরণ দেন তা লূকের থেকে প্রায় চারগুণ বড়। আর, মথি যা লিপিবদ্ধ করেছেন তার কিছু অংশ, লূক দেখান যে যীশু অন্য সময় তাঁর পরিচর্য্যায় বলেছেন, যা লক্ষ্য করা যায় যদি আমরা মথি ৬:৯-১৩ এর সাথে লূক ১১:১-৪, ও মথি ৬:২৫-৩৪ এর সাথে লূক ১২:২২-৩১ মিলিয়ে দেখি। অবশ্য এতে আশ্চর্য্য হবার কিছু নেই। কারণ যীশু নিশ্চয় একই বিষয় অনেকবার শিক্ষা দিয়েছেন, আর লূক তার বিবরণে তা অন্য পরিস্থিতিতে লিপিবদ্ধ করেছেন।
যীশুর উপদেশকে যে জিনিসটি এত মূল্যবান করেছে তা কেবল এর আত্মিক বিষয়ের গভীরতা নয় কিন্তু সহজ ও পরিষ্কারভাবে তিনি এই সত্যগুলিকে যেরূপে তুলে ধরেছেন তার জন্যও। তিনি সাধারণ অভিজ্ঞতাগুলি ব্যবহার করেন এবং যে বিষয় লোকে পরিচিত সেই বিষয় বলেন, এইভাবে যে ব্যক্তিরা ঈশ্বরীয় পথে উত্তম জীবনের সন্ধান করে তাদের জন্য তাঁর ধারণাগুলি সহজ ও বোধগম্য হয়।
কারা সত্যই সুখী?
প্রত্যেকে সুখী হতে চায়। ইহা উপলব্ধি করে, যীশু তাঁর পর্বতে দত্ত উপদেশ শুরু করেন তাদের বিষয়ে বর্ণনা করে যে কারা প্রকৃত সুখী। আমরা যেমন ভাবতে পারি, ইহা তাড়াতাড়ি সব শ্রোতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। কিন্তু অনেকের কাছে প্রারকি উক্তিটি অবশ্যই বিপরীত মনে হতে পারে।
তাঁর উক্তি শিষ্যদের প্রতি ইঙ্গিত করে, যীশু বলেন: “ধন্য দীনহীনেরা, কারণ ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদেরই। ধন্য তোমরা যাহারা এক্ষণে ক্ষুধিত, কারণ তোমরা পরিতৃপ্ত হইবে। ধন্য তোমরা যাহারা এক্ষণে রোদন কর; কারণ তোমরা হাসিবে। ধন্য তোমরা যখন লোকে তোমাদিগকে দ্বেষ করে . . . সেই দিনে আনন্দ করিও ও নৃত্য করিও, কেননা, দেখ! স্বর্গে তোমাদের পুরস্কার প্রচুর।”
লূক এইভাবে যীশুর উপদেশের প্রারকি বর্ণনা দেন। কিন্তু মথির রেকর্ড অনুসারে, যীশু এও বলেছেন যে যারা নম্রমনা, করুণাময়, হৃদয়ে শুচি, এবং যারা শান্তিপ্রিয় তারা সুখী। এরা সুখী, যীশু বলেন, কারণ তারা পৃথিবীর অধিকারী থাকবে, তাদের করুণা দেখানো হবে, তারা ঈশ্বরকে দেখবে, এবং তাদের ঈশ্বরের পুত্র বলা হবে।
যখন যীশু সুখী হবার কথা বলেন, তার অর্থ, কেবল উৎফুল্ল বা উল্লাসিত হওয়া নয়, যেমন একজন কৌতুক করার সময় হয়। প্রকৃত সুখ অনেক গভীরে যায়, যার মধ্যে থাকে সন্তোষ, তৃপ্তির বোধ ও জীবনে সার্থকতার ভাব।
সেই কারণে যীশু দেখান সেই ব্যক্তিরা সত্যই সুখী, যারা বোঝেন তাদের আত্মিক চাহিদা, যারা তাদের পাপের জন্য দুঃখার্ত্ত, ও ঈশ্বরকে জেনে তাঁকে সেবা করতে অসে। তাই, তখন যদি তাদের উপর তাড়না আসেও ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার জন্য, তারা সুখী কারণ তারা জানে তারা ঈশ্বরকে খুশি করেছে এবং তার পুরস্কার অনন্ত জীবন পাবে।
যাইহোক, যীশুর অনেক শ্রোতারা মনে করে, ঠিক আজকে অনেকের মত, যে অঢেল পয়সা এবং আনন্দ উপভোগ করাই একজন ব্যক্তিকে সুখী করতে পারে। কিন্তু যীশু তার বিপরীতটিই জানেন। তিনি একটি পার্থক্য দেখান যা তাঁর অনেক শ্রোতাকে আশ্চর্য্য করে, তিনি বলেন:
“ধিক তোমাদিগকে হা ধনবানেরা, কারণ তোমরা আপনাদের সান্ত্বনা পাইয়াছ। ধিক তোমাদিগকে যাহারা এক্ষণে পরিতৃপ্ত, কারণ তোমরা ক্ষুধিত হইবে। ধিক তোমাদিগকে যাহারা এক্ষণে হাস্য করে, কারণ তোমরা বিলাপ ও রোদন করিবে। ধিক তোমাদিগকে, যখন সকল লোকে তোমাদের সুখ্যাতি করে, কারণ তাহাদের পিতৃপুরুষেরা ভাক্ত ভাববাদীদের প্রতি তাহাই করিত।”
যীশুর এই কথার অর্থ কি? কেন অর্থ, ও হাস্যময়ভাবে সুখের পেছনে দৌড়ান, ও জীবনের ভাল বিষয়গুলিকে উপভোগ করা লোকের জন্য যাতনা নিয়ে আসে? এর কারণ হল যখন ব্যক্তিরা এইগুলি খুব উপভোগ করে ও এগুলি তাদের কাছে থাকে, তখন ঈশ্বরের যে সেবা, যা একমাত্র সত্যিকারের সুখ আনতে পারে, তা জীবন থেকে বাদ চলে যায়। একই সঙ্গে, যীশু এই বোঝাননি যে একজন যদি গরীব, ক্ষুধার্ত হয়, ও বিলাপ করে তাহলে সে সুখী। প্রায়ই অবশ্য, এইরূপ দুরবস্থাপূর্ণ ব্যক্তিরা হয়ত যীশুর শিক্ষায় সাড়া দেবে, আর তার দ্বারা সত্য সুখের সন্ধান পাবে।
এরপর, তাঁর শিষ্যদের উদ্দেশ্যে যীশু বলেন: “তোমরা পৃথিবীর লবণ।” অবশ্যই, তিনি বলছেন না, যে আক্ষরিক আর্থে তারা লবণ। আসলে লবণের কোন জিনিষকে সংরক্ষণ করার গুণ আছে। এর এক বিরাট স্তূপ যিহোবার মন্দিরের বেদির সামনে রাখা থাকত, আর যাজকেরা তা ব্যবহার করত উৎসর্গগুলিকে লবণে জারিত করার জন্য।
যীশুর শিষ্যরা “পৃথিবীর লবণ” তার অর্থ তাদের লোকদের সংরক্ষণ করার প্রভাব আছে। হ্যাঁ, যে সংবাদ তারা বয়ে নিয়ে যায় তা সকলের জীবন রক্ষা করবে, যারা তার প্রতি সাড়া দেয়! ইহা সেই লোকদের জীবনে নিয়ে আসবে স্থায়ী থাকার গুণগুলি, বিশ্বস্ততা, আনুগত্যতা, যা তাদের আত্মিক ও নৈতিক ক্ষয় থেকে রক্ষা করবে।
“তোমরা জগতের দীপ্তি,” যীশু তাঁর শিষ্যদের বলেন। একটি প্রদীপকে কাঠার নীচে নয় কিন্তু দীপাধারে রাখা হয়, তাই যীশু বলেন: “তদ্রূপ তোমাদের দীপ্তি মনুষ্যদের সাক্ষাতে উজ্জ্বল হউক।” যীশুর শিষ্যরা এই কাজ করে থাকেন জনসাধারণ্যে সাক্ষ্যদান করে, এবং বাইবেলের নীতির সাথে মিল রেখে উত্তম আচরণের দ্বারা উজ্জ্বল দৃষ্টান্তস্বরূপ হয়ে।
তাঁর অনুগামীদের জন্য উচ্চ মান
ধর্মীয় নেতারা যীশুকে ঈশ্বরের নিয়ম ভঙ্গকারী পাপী বলে ভাবে এবং তাঁকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে। তাই যীশু তাঁর পর্বতে দত্ত উপদেশ পুনরারম্ভ করে, বুঝিয়ে দেন: “মনে করিও না যে, আমি ব্যবস্থা কি ভাববাদিগ্রন্থ লোপ করিতে আসিয়াছি; আমি লোপ করিতে আসি নাই, কিন্তু পূর্ণ করিতে আসিয়াছি।”
যীশু ঈশ্বরের আইনের প্রতি উচ্চ সম্মান রাখেন আর তিনি অন্যদের সেই একই সম্মান রাখার জন্য উৎসাহ দেন। বাস্তবে, তিনি বলেন: “অতএব যে কেহ এই সকল ক্ষুদ্রতম আজ্ঞার মধ্যে একটি আজ্ঞা লঙ্ঘন করে, ও লোকদিগকে সেইরূপ শিক্ষা দেয়, তাহাকে স্বর্গরাজ্যে অতি ‘ক্ষুদ্র’ বলা যাইবে,” এর অর্থ যে এইরূপ ব্যক্তি কখনোই রাজ্যে প্রবেশ করিবে না।
ঈশ্বরের আইন উপেক্ষা করা দূরে থাকুক, কোন ব্যক্তির তা ভঙ্গ করার এমনকি প্রবণতা থাকাকেও যীশু অপরাধ মনে করেন। আইন যা বলে, “তুমি নরহত্যা করিও না,” এর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর পর, যীশু যোগ করেন: “কিন্তু, আমি তোমাদিগকে কহিতেছি, যে কেহ আপন ভ্রাতার প্রতি আধ করে, সে বিচারের দায়ে পড়িবে।”
যেহেতু একজন সাথীর প্রতি আধ ও তা পোষণ করা এত গুরুতর, যা হয়ত হত্যায় পরিচালিত করতে পারে, যীশু দৃষ্টান্ত দেন যে কতদূর একজন যাবে এই শান্তি বজায় রাখতে। তিনি শিক্ষা দেন: “অতএব তুমি যখন যজ্ঞ বেদির সম্মুখে আপন [নৈবেদ্য] উৎসর্গ করিতেছ, তখন সেই স্থানে যদি মনে পড়ে যে, তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভ্রাতার কোন কথা আছে, তবে সেই স্থানে বেদির সম্মুখে তোমার নৈবেদ্য রাখ, আর চলিয়া যাও, প্রথমে তোমার ভ্রাতার সহিত সম্মিলিত হও, পরে আসিয়া তোমার নৈবেদ্য উৎসর্গ করিও।”
দশ আজ্ঞার সপ্তম আজ্ঞার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যীশু বলেন: “তোমরা শুনিয়াছ, উক্ত হইয়াছিল, ‘তুমি ব্যভিচার করিও না।’” কিন্তু, যীশু ব্যভিচারের প্রতি স্থায়ী মনোভাবকেও দোষারোপ করেন। “আমি তোমাদিগকে বলিতেছি, যে কেহ কোন স্ত্রীলোকের প্রতি কামভাবে দৃষ্টিপাত করে, সে তখনই মনে মনে তাহার সহিত ব্যভিচার করিল।”
যীশু এখানে মুহূর্তের অনৈতিক চিন্তার কথা বলছেন না কিন্তু ‘কামভাবে দৃষ্টিপাত করা’ সে সম্পর্কে। এই আমাগত দৃষ্টিপাত কামকে জাগরিত করে, যা যদি সুযোগ পায় তাহলে, ব্যভিচারে পরিচালিত করে। একজন ব্যক্তি কি করে এমন ঘটনা এড়াতে পারে? যীশু কিরূপ কঠোর পন্থা নেওয়ার প্রয়োজন সেই সম্বন্ধে বর্ণনা দিয়ে বলেন: “আর, তোমার দক্ষিণ চক্ষু যদি তোমার বিদ্ধ জন্মায়, তবে তাহা উপড়াইয়া দূরে ফেলিয়া দেও। . . . আর, তোমার দক্ষিণ হস্ত যদি তোমার বিদ্ধ জন্মায়, তবে তাহা কাটিয়া ফেলিয়া দেও।”
লোকে অনেক সময় তাদের শরীরের কোন অংশ রোগগ্রস্ত হলে তা কেটে ফেলতে ইচ্ছুক থাকে যাতে তাদের জীবন রক্ষা পায়। কিন্তু যীশুর কথা অনুসারে, ইহা আরও গুরুত্বপূর্ণ কোনকিছুকে ‘দূরে ফেলিয়া দেওয়া,’ এমনকি মূল্যবান চোখ অথবা হাত, যাতে অনৈতিক চিন্তা ও কাজ এড়ানো যেতে পারে। যীশু ব্যাখ্যা দেন, তা না করলে, এইরূপ ব্যক্তিদের গেহেন্নায় ফেলে দেওয়া হবে (যিরূশালেমের নিকট এক আবর্জনা প্তালাবার জায়গা), যা অনন্ত ধ্বংসকে চিত্রিত করে।
যীশু আরও আলোচনা করেন যে ব্যক্তিরা আঘাত করে ও বিদ্ধ জন্মায় তাদের সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে। “তোমরা দুষ্টের প্রতিরোধ করিও না,” তাঁর উপদেশ। “বরং যে কেহ তোমার দক্ষিণ গালে চড় মারে, অন্য গাল তাহার দিকে ফিরাইয়া দেও।” যীশু এই বলতে চাননি যে যদি কেউ একজন ব্যক্তিকে বা তার পরিবারকে আক্রমণ করে তবে সে তা প্রতিহত করবে না। একজনকে চড় মারার উদ্দেশ্য দৈহিক ক্ষতি করা নয়, কিন্তু, অপমান করা। তাই, যীশু যা বলছেন তা হল যে যদি কেউ ঝগড়া অথবা লড়াই বাধাবার চেষ্টা করে, চড় মেরে বা হুল ফোটানোর মত অপমানজনক কথা বলে, সেই পরিস্থিতিতে প্রতিহিংসা দেখান ভুল হবে।
ঈশ্বরের আইনে প্রতিবেশীকে প্রেম দেখানোর যে বিষয় আছে তার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে, যীশু বলেন: “আমি তোমাদিগকে বলিতেছি: তোমরা আপন আপন শত্রুদিগকে প্রেম করিও, এবং যাহারা তোমাদিগকে তাড়না করে, তাহাদের জন্য প্রার্থনা করিও।” কেন তা করা দরকার সেই সম্বন্ধে জোরাল যুক্তি দিয়ে, তিনি যোগ দেন: “[যেন] তোমরা আপনাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হও, কারণ তিনি ভাল মন্দ লোকদের উপরে আপনার সূর্য্য উদিত করেন।”
যীশু তাঁর উপদেশের এই অংশটি শেষ করেন এই উপদেশ দিয়ে: “তোমাদের স্বর্গীয় পিতা যেমন সিদ্ধ, তোমরাও তেমনি সিদ্ধ হও।” যীশু এখানে বোঝাতে চাননি যে লোকেরা একেবারে সম্পূর্ণ সিদ্ধ হবে। বরং তারা, ঈশ্বরকে অনুকরণ করে, তাদের প্রেমকে প্রসারিত করতে পারে তার মধ্যে শত্রুদেরও অন্তর্ভুক্ত করে। লূকের অনুরূপ বিবরণ যীশুর কথাগুলি এইভাবে লিপিবদ্ধ করে: “তোমাদের পিতা যেমন দয়ালু, তোমরাও তেমনি দয়ালু হও।”
প্রার্থনা, ও ঈশ্বরে অস্থা
যীশু তাঁর উপদেশে যখন এগিয়ে যান, তিনি সেই কপট লোকদের ভর্ৎসনা করেন যারা ঈশ্বরভক্তির ভান করে। “তুমি যখন দান কর,” তিনি বলেন, “তোমার সম্মুখে তুরী বাজাইও না, যেমন কপটীরা করিয়া থাকে।”
“আর,” যীশু বলে চলেন, “তোমরা যখন প্রার্থনা কর তখন কপটীদের ন্যায় হইও না, কারণ তাহারা সমাজগৃহে ও পথের কোণে দাঁড়াইয়া লোক দেখান প্রার্থনা করিতে ভালবাসে।” বরং তিনি তাদের উপদেশ দেন: “তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার অন্তরাগারে প্রবেশ করিও, আর দ্বার রুদ্ধ করিয়া তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তাঁহার নিকটে প্রার্থনা করিও।” যীশু নিজে জনসাধারণ্যে প্রার্থনা করেছেন, তাই তিনি এইপ্রকার প্রার্থনাকে ভর্ৎসনা করছেন না। তিনি যে প্রার্থনাকে ভর্ৎসনা করছেন তা হল, সেই প্রার্থনা যেগুলি করা হয় শ্রোতাদের উপর প্রভাব ফেলবার জন্য ও তাদের বাহবা কুড়াবার জন্য।
যীশু আরও উপদেশ দেন: “আর প্রার্থনাকালে তোমরা অনর্থক পুনরুক্তি করিও না, যেমন জাতিগণ করিয়া থাকে।” যীশু বলেননি যে পুনরুক্তি ভুল। একবার, তিনি নিজে “একই কথা” বার বার বলেন যখন প্রার্থনা করছিলেন। কিন্তু তিনি যা বারণ করেন তা হল মুখস্থ কয়েকটি শব্দসমষ্টি “বার বার বলা” যেমন যারা মালা জপ করে তারা করে থাকে।
তাঁর শ্রোতাদের প্রার্থনা করতে সাহায্য করতে, যীশু তাদের এক নমুনা প্রার্থনা দেন যার অন্তর্ভুক্ত সাতটি আবেদন। প্রথম তিনটি ঈশ্বরের সার্বভৌমত্বকে ও তাঁর উদ্দেশ্যকে সঠিকভাবে স্বীকৃতি দেয়। এইগুলি বিনতি ঈশ্বরের নাম গৌরবান্বিত হওয়ার জন্য, তাঁর রাজ্য আসবার আর তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ হওয়ার জন্য। বাকি চারটি ব্যক্তিগত অনুরোধ যেমন, দৈনন্দিন খাদ্য, পাপের ক্ষমা, ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রলোভনে না পড়া, আর মন্দ বিষয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
আরও যীশু বলেন, যেন আমরা জাগতিক বস্তুর উপর অযথা অতিরিক্ত দৃষ্টি দেবার যে ফাঁদ তাতে না পড়ি। তিনি উৎসাহ দেন “তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানেতো কীট ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিঁধ কাটিয়া চুরি করে।” কেবল যে এই ধনগুলি ক্ষয় পায় তা নয় কিন্তু এইগুলি ঈশ্বরের কাছে কোন মূল্য রাখে না।
সেইজন্য, যীশু বলেন: “কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর।” ইহা করা যেতে পারে ঈশ্বরের রাজ্যের কাজকে আপনার জীবনে প্রথম স্থান দিয়ে। কেউ ঈশ্বরের কাছে যে ধন সঞ্চিত হয় তা অথবা তার পুরস্কার কেড়ে নিতে পারে না। তারপর যীশু যোগ দেন: “যেখানে তোমার ধন, সেইখানে তোমার মনও থাকিবে।”
জাগতিক বস্তুবাদীতার ফাঁদ সম্বন্ধে আরও বলতে গিয়ে, যীশু একটি উপমা দেন: “চক্ষুই শরীরের প্রদীপ। অতএব তোমার চক্ষু যদি সরল হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর দীপ্তিময় হইবে; কিন্তু তোমার চক্ষু যদি মন্দ হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারময় হইবে।” যে চক্ষু সঠিকভাবে কাজ করে তা একজনের কাছে অন্ধকার স্থানে প্রদীপের তুল্য। কিন্তু সঠিকভাবে দেখবার জন্য, চোখকে সরল হতে হবে, অর্থাৎ, তা যেন একটি বিষয়ের উপর কেন্দ্রীভূত হয়। যে চক্ষুর দৃষ্টি সঠিক স্থানে কেন্দ্রীভূত হয় না তা অনেক ভুল জিনিষ নিরূপণ করে, আর তা বস্তুবাদীতাকে ঈশ্বরের উপাসনার আগে স্থান দেয়, আর ফলস্বরূপ “সমস্ত শরীর” অন্ধকারময় হয়।
যীশু এই বিষয়ের উপর একটি জোরালো উপমা দেন: “কেহই দুই কর্তার দাসত্ব করিতে পারে না; কেননা সে হয়ত একজনকে দ্বেষ করিবে, আর একজনকে প্রেম করিবে, নয়ত একজনের প্রতি অনুরক্ত হইবে, আর একজনকে তুচ্ছ করিবে। তোমরা ঈশ্বর এবং ধন উভয়ের দাসত্ব করিতে পার না।”
এই উপদেশ দেবার পর, যীশু তাঁর শ্রোতাদের আশ্বাস দেন যে তারা যদি ঈশ্বরের সেবাকে প্রথম স্থান দেয় তাহলে বাস্তব প্রয়োজনগুলি সম্বন্ধে তাদের ভাববার কিছু নেই। “আকাশের পক্ষীগণের প্রতি দৃষ্টিপাত কর,” তিনি বলেন, “তাহারা বুনেও না, কাটেও না, গোলা ঘরে সঞ্চয়ও করে না, তথাপি তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তাহাদের আহার দিয়া থাকেন।” তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করেন, “তোমরা কি তাহাদের হইতে অধিক শ্রেষ্ঠ নও?”
পরে, যীশু মাঠের কানুড় পুরে দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, “সলোমনও আপনার সমস্ত প্রতাপে ইহার একটির ন্যায় সুসজ্জিত ছিলেন না। ঈশ্বর যদি,” তিনি বলে চলেন, “এইরূপ বিভূষিত করেন ক্ষেত্রের তৃণগুলিকে, . . . তোমাদিগকে কি আরও অধিক নিশ্চয় বিভূষিত করিবেন না, হে অল্প বিশ্বাসীরা?” (NW) তাই যীশু শেষ করেন: “অতএব ইহা বলিয়া ভাবিত হইও না যে, ‘কি ভোজন করিব?’ বা ‘কি পান করিব?’ বা ‘কি পরিব?’ . . . কেননা তোমাদের স্বর্গীয় পিতা জানেন যে এই সকল দ্রব্যে তোমাদের প্রয়োজন আছে। তোমরা প্রথমে তাঁহার রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তাহা হইলে এই সকল দ্রব্যও তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে।”
জীবনের পথ
জীবনের পথ হল যীশুর শিক্ষা মেনে চলা। কিন্তু ইহা করা সহজ নয়। উদাহরণস্বরূপ ফরীশীরা, অন্যদের কঠোরভাবে বিচার করে, আর অনেকে তাদের অনুকরণ করে। তাই যীশু তাঁর পর্বতে দত্ত উপদেশ দেওয়াকালীন, এই উপদেশ দেন: “তোমরা বিচার করিও না, যেন বিচারিত না হও; কেননা যেরূপ বিচারে তোমরা বিচার কর, সেইরূপ বিচারে তোমরাও বিচারিত হইবে।”
যে ফরীশীরা অন্যদের অতিরিক্ত সমালোচনা করে তাদের পরিচালনায় চলা বিপদজনক। লূকের বিবরণ অনুসারে, যীশু এই বিপদ সম্বন্ধে এইভাবে উপমা দিয়ে বোঝান: “অন্ধ কি অন্ধকে পথ দেখাইতে পারে? উভয়েই কি গর্তে পড়িবে না?”
অন্যদের সম্বন্ধে অতিরিক্ত সমালোচনা করা, ও তাদের দোষকে বড় করে দেখান, গুরুতর অপরাধ। তাই যীশু জিজ্ঞাসা করেন: “তুমি কেমন করিয়া আপন ভ্রাতাকে বলিবে, ‘ভাই এস, আমি তোমার চক্ষু হইতে কুটাগাছটা বাহির করিয়া দিই’; আর দেখ! তোমার নিজের চক্ষে কড়িকাঠ রহিয়াছে? হে কপটি! আগে আপনার চক্ষু হইতে কড়িকাঠ বাহির করিয়া ফেল, আর তখন তোমার ভ্রাতার চক্ষু হইতে কুটা গাছটা বাহির করিবার নিমিত্ত স্পষ্ট দেখিতে পাইবে।”
এর অর্থ এই নয় যে যীশুর শিষ্যরা লোকেদের সম্বন্ধে তাদের নির্ণয় করার শক্তি ব্যবহার করবে না, কারণ তিনি বলেন: “পবিত্র বস্তু কুকুরদিগকে দিও না, এবং তোমাদের মুক্তা শূকরদের সম্মুখে ফেলিও না।” ঈশ্বরের বাক্যের সত্যগুলি পবিত্র। সেগুলি রূপক মুক্তার তুল্য। কিন্তু যদি কোন ব্যক্তি যারা কুকুর বা শূকরের মত, বহুমূল্য এই সত্যগুলি সম্বন্ধে কোন উপলব্ধি না দেখায়, যীশুর শিষ্যরা তাদের ছেড়ে যারা অধিক সাড়া দেয় এমন ব্যক্তিদের খুঁজবে।
যদিও এর আগে তাঁর পর্বতে দত্ত উপদেশে যীশু প্রার্থনার সম্বন্ধে আলোচনা করেছেন, এখন তিনি জোর দেন যেন অবিরত তা করা হয়। “যাচ্ঞা কর,” তিনি অনুরোধ করেন, “তোমাদিগকে দেওয়া যাইবে।” ঈশ্বর যে প্রার্থনার উত্তর দিতে প্রস্তুত তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে যীশু জিজ্ঞাসা করেন: “তোমাদের মধ্যে এমন লোক কে যে, আপনার পুত্র রুটি চাহিলে তাহাকে পাথর দিবে? . . . অতএব তোমরা মন্দ হইয়াও যদি তোমাদের সন্তানদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিতে জান, তবে ইহা কত অধিক নিশ্চয় যে, তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা, যাহারা তাঁহার কাছে যাচ্ঞা করে, তাহাদিগকে উত্তম উত্তম দ্রব্য দান করিবেন?”
এর পর যীশু সেই বিখ্যাত আচরণ সম্পর্কিত নিয়ম দেন, যাকে সাধারণত সুবর্ণ নিয়ম বলা হয়। তিনি বলেন: “অতএব সর্ব্ব বিষয়ে তোমরা যাহা যাহা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাহাদের প্রতি সেইরূপ করিও।” এই নিয়ম অনুসারে চলার অর্থ হচ্ছে অন্যদের জন্য ইতিবাচক কাজ করা, তাদের সাথে সেই রকম ব্যবহার করা যেরকম আপনি চান তারা আপনার প্রতি করুক।
জীবনের পথ যে সহজ নয় তা যীশুর উপদেশের মাধ্যমে পরিষ্কার হয়: “সঙ্কীর্ণ দ্বার দিয়া প্রবেশ কর; কেননা সর্বনাশে যাইবার দ্বার প্রশস্ত ও পথ পরিসর, এবং অনেকেই তাহা দিয়া প্রবেশ করে; কেননা, জীবনে যাইবার দ্বার সঙ্কীর্ণ ও পথ দুর্গম, এবং অল্প লোকেই তাহা পায়।”
বিপথে যাবার বিপদ অনেক, তাই যীশু সতর্ক করেন: “ভাক্ত ভাববাদীগণ হইতে সাবধান কারণ তাহারা মেষের বেশে তোমাদের নিকটে আইসে, কিন্তু অন্তরে গ্রাসকারী কেন্দুয়া।” ঠিক যেমন ভাল গাছ ও মন্দ গাছ তার ফল দ্বারা চেনা যায়, যীশু দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, যে মিথ্যা ভাববাদীদের তাদের শিক্ষায় ও ব্যবহারে চেনা যায়।
যীশু আরও বলে চলেন, এবং বোঝান যে কেবল একজন কি বলছে তা নয় কিন্তু কি করছে তাহাই একজনকে তাঁর শিষ্য করে। অনেকে দাবী করে যে তারা যীশুর শিষ্য, কিন্তু তারা যদি পিতার ইচ্ছা পালন না করে, তিনি বলেন: “তখন আমি তাহাদিগকে স্পষ্টই বলিব, আমি কখনও তোমাদিগকে জানি নাই! হে অধর্ম্মচারীরা, আমার নিকট হইতে দূর হও।”
শেষে, যীশু তাঁর উপদেশের স্মরণীয় উপসংহার করেন। তিনি বলেন: “অতএব যে কেহ আমার এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন করে, তাহাকে এমন একজন বুদ্ধিমান লোকের তুল্য বলিতে হইবে, যে পাষাণের উপর আপন গৃহ নির্ম্মাণ করিল। পরে বৃষ্টি নামিল, বন্যা আসিল, বায়ু বহিল, এবং সেই গৃহে লাগিল, তথাপি তাহা পড়িল না, কারণ পাষাণের উপরে তাহার ভিত্তিমূল স্থাপিত হইয়াছিল।”
অন্যদিকে যীশু ঘোষণা করেন: “আর যে কেহ আমার এই সকল বাক্য শুনিয়া পালন না করে, তাহাকে এমন একজন নির্বোধ লোকের তুল্য বলিতে হইবে, যে বালুকার উপরে আপন গৃহ নির্ম্মাণ করিল। পরে বৃষ্টি নামিল, বন্যা আসিল, বায়ু বহিল, এবং সেই গৃহে আঘাত করিল, তাহাতে তাহা পড়িয়া গেল ও তাহার পতন ঘোরতর হইল।”
যখন যীশু তাঁর উপদেশ শেষ করেন, জনতা তাঁর শিক্ষা পদ্ধতি দেখে চমৎকৃত হয়, কারণ তিনি ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তির ন্যায় তাদের শিক্ষা দেন, তাদের অধ্যাপকদের ন্যায় নয়। লূক ৬:১২-২৩; মথি ৫:১-১২; লূক ৬:২৪-২৬; মথি ৫:১৩-৪৮; ৬:১-৩৪; ২৬:৩৬-৪৫; ৭:১-২৯; লূক ৬:২৭-৪৯.
▪ যীশু যখন তাঁর সবচেয়ে স্মরণীয় উপদেশ দেন, তিনি তখন কোথায়, কারা সেখানে উপস্থিত, আর তাঁর এই উপদেশ দেবার ঠিক পূর্বে কি ঘটেছে?
▪ কেন ইহা আশ্চর্য্যের বিষয় নয় যে লূক এই শিক্ষার কিছু বিবরণ অন্যভাবে রেখেছেন?
▪ কি যীশুর উপদেশকে এত মূল্যবান করে?
▪ কারা সত্যই সুখী, এবং কেন?
▪ কাদের প্রতি ধিক, এবং কেন?
▪ কিভাবে যীশুর শিষ্যরা “পৃথিবীর লবন” ও “জগতের দীপ্তি?”
▪ কিভাবে যীশু ঈশ্বরের আইন সম্বন্ধে উচ্চ সম্মান দেখান?
▪ যীশু নরহত্যা ও ব্যভিচার গোড়া থেকে উপড়ে ফেলার জন্য কি শিক্ষা দেন?
▪ যীশু যখন বলেন অন্য গাল ফিরিয়ে দাও তার অর্থ কি?
▪ ঈশ্বর যেমন সিদ্ধ আমরা কিভাবে তেমন সিদ্ধ হতে পারি?
▪ প্রার্থনা সম্বন্ধে যীশু কি শিক্ষা দেন?
▪ কেন স্বর্গীয় ধন বেশী মূল্যবান, কিভাবে তা পাওয়া যায়?
▪ কি উদাহরণ দেওয়া হয়েছে যা একজনকে সাহায্য করবে বস্তুবাদীতা এড়িয়ে চলতে?
▪ কেন যীশু বলেন যে ভাবিত হবার কিছু নেই?
▪ যীশু অন্যদের বিচার করা সম্বন্ধে কি বলেন; কিন্তু তবুও কিভাবে তিনি দেখান যে লোকেদের সম্পর্কে তাঁর শিষ্যদের বিচক্ষণতা ব্যবহারের প্রয়োজন আছে?
▪ যীশু প্রার্থনা সম্বন্ধে কি বলেন, আর আচরণ সম্বন্ধে কি আইন দেন?
▪ কি করে যীশু দেখান যে জীবনের পথ সহজ নয় এবং বিপথে যাবার বিপদ আছে?
▪ কিভাবে যীশু তাঁর উপদেশ শেষ করেন, আর তার প্রতিক্রিয়া কি হয়?