পাঠ ০৫
বাইবেলে ঈশ্বরের বার্তা রয়েছে
বাইবেল হল যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া একটি সুন্দর উপহার। এটির মধ্যে ৬৬টা ছোটো ছোটো বই রয়েছে। কিন্তু, আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন: ‘বাইবেল আমাদের কাছে কীভাবে এসেছে? বাইবেল যদি মানুষ লিখে থাকে, তা হলে কেন আমরা বলি এটিতে ঈশ্বরের বার্তা রয়েছে?’ আসুন দেখি।
১. কেন আমরা বলি, বাইবেলে ঈশ্বরের বার্তা রয়েছে?
বাইবেল লিখতে প্রায় ১৬০০ বছর সময় লেগেছে।a ৪০ জন ব্যক্তি এটি লিখেছেন, তাদের মধ্যে কেউ ছিলেন মেষপালক, কেউ জেলে, আবার কেউ রাজা আর এই ব্যক্তিরা আলাদা আলাদা সময় এই পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন। এই লেখকেরা একে অন্যের চেয়ে অনেক আলাদা হওয়া সত্ত্বেও, তাদের লেখার মধ্যে অনেক মিল রয়েছে। কীভাবে এটা সম্ভব? এর কারণ হচ্ছে, যিহোবা ঈশ্বর বাইবেল লিখিয়েছেন আর এটিতে তাঁর বার্তা রয়েছে। (পড়ুন, ১ থিষলনীকীয় ২:১৩.) বাইবেলের লেখকেরা নিজেদের চিন্তাভাবনা লেখেননি। এর পরিবর্তে, তারা “পবিত্র শক্তির দ্বারা পরিচালিত হয়ে . . . ঈশ্বরের কাছ থেকে যে-বার্তা পেয়েছেন, তা-ই জানিয়েছেন।” (২ পিতর ১:২১) ঈশ্বর তাঁর পবিত্র শক্তির মাধ্যমে নিজের চিন্তাভাবনা সেই ব্যক্তিদের জানিয়েছেন আর তারা সেগুলো লিখেছেন। তাই আমরা বলতে পারি যে, বাইবেলে ঈশ্বরের বার্তা রয়েছে।—২ তীমথিয় ৩:১৬.
২. বাইবেল পড়ে কারা উপকার লাভ করতে পারে?
ঈশ্বর বলেছিলেন, “প্রত্যেক জাতি ও বংশ ও ভাষা ও বর্ণের” লোক বাইবেলে পাওয়া সুসমাচার থেকে উপকার লাভ করতে পারে। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৪:৬.) আর আমরা তা পরিপূর্ণ হতে দেখছি কারণ বর্তমানে অন্য যেকোনো বইয়ের চেয়ে বাইবেল অনেক বেশি ভাষায় পাওয়া যায়। তাই, লোকেরা পৃথিবীর যেখানেই বাস করুক না কেন অথবা যে-ভাষাতেই কথা বলুক না কেন, তারা বাইবেল পড়ে উপকার লাভ করতে পারে।
৩. যিহোবা কীভাবে বাইবেল সংরক্ষণ করেছেন?
বাইবেল প্রথমে এমন কিছুর উপরে লেখা হয়েছিল, যেগুলো বেশি দিন টিকত না। কিন্তু, বাইবেল এখনও পর্যন্ত টিকে রয়েছে। কীভাবে? কারণ, কিছু ব্যক্তি বাইবেলকে ভালোবাসত আর তাই তারা অত্যন্ত যত্ন সহকারে হাতে লিখে এটির অনেক কপি তৈরি করেছিল। ক্ষমতাশালী লোকেরা বাইবেলকে পুরোপুরি নষ্ট করে ফেলার অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, সেইসময় কিছু ব্যক্তি নিজের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলে বাইবেলকে রক্ষা করেছিল। বাইবেলের বার্তা আমাদের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে কেউই অথবা কোনো কিছুই যিহোবাকে বাধা দিতে পারেনি। বাইবেল বলে: “আমাদের ঈশ্বরের বাক্য চিরকাল থাকিবে।”—যিশাইয় ৪০:৮.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
যিহোবা কীভাবে মানুষকে বাইবেল লেখার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন, তিনি কীভাবে এটি সংরক্ষণ করেছেন এবং পৃথিবীর সমস্ত লোক যাতে এটি পড়তে পারে, সেইজন্য তিনি কী করেছেন, তা দেখুন।
৪. বাইবেল নিজেই জানায়, এটিতে কার বার্তা রয়েছে
ভিডিওটা দেখুন আর ২ তীমথিয় ৩:১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
বাইবেল যদি মানুষ লিখে থাকে, তা হলে কেন এটিকে ঈশ্বরের বাক্য বলা হয়?
ঈশ্বর কি সত্যিই মানুষের কাছে তাঁর চিন্তাভাবনা প্রকাশ করতে পারেন?
৫. বহু প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, কেউই বাইবেলকে নষ্ট করতে পারেনি
বাইবেল যেহেতু ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছে, তাই আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, তিনি কখনো এটিকে নষ্ট হতে দেবেন না। ইতিহাস দেখায়, ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা বাইবেলকে নষ্ট করে ফেলার অনেক চেষ্টা করেছে। ধর্মীয় নেতারা চাইত না যে, লোকেরা বাইবেল পড়ুক। অন্যদিকে, কিছু ব্যক্তি নিজের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলে বাইবেলকে রক্ষা করেছিল। এইরকম একজন ব্যক্তি সম্বন্ধে জানার জন্য ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
বাইবেলকে রক্ষা করার জন্য লোকেরা যে কতটা প্রচেষ্টা করেছে, তা জানার পর আপনি কি এটি পড়ে দেখতে চাইবেন? কেন?
গীতসংহিতা ১১৯:৯৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
বাইবেল অনুবাদ করার জন্য এবং এটি লোকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কেন অনেকে নিজের জীবন ঝুঁকির মুখে ফেলেছিল?
৬. সমস্ত লোকের জন্য একটি বই
বাইবেল সবচেয়ে বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং সবচেয়ে বেশি লোকের কাছে রয়েছে। প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন ঈশ্বর চান যেন বাইবেল সবচেয়ে বেশি ভাষায় অনুবাদ করা হয় এবং এটি সবচেয়ে বেশি লোকের কাছে থাকে?
বাইবেল সম্বন্ধে এত কিছু জানার পর, কোন বিষয়টা আপনার সবচেয়ে ভালো লেগেছে?
পৃথিবীর প্রায়
১০০%
লোক এমন একটা ভাষায়
বাইবেল পড়তে পারে, যে-ভাষা তারা বোঝে
সম্পূর্ণ অথবা আংশিকভাবে
৩,০০০
ভাষারও বেশি ভাষায়
পাওয়া যাচ্ছে
৫০০,০০,০০,০০০
কপির মতো ছাপানো হয়েছে,
যেটি অন্য যেকোনো বইয়ের চেয়ে অনেক বেশি
কেউ কেউ বলে থাকে: “বাইবেল তো মানুষের লেখা একটা পুরোনো বই।”
আপনি কী মনে করেন?
কোন প্রমাণ দেখায় যে, বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য?
সারাংশ
বাইবেল হল ঈশ্বরের বাক্য এবং তিনি সমস্ত লোকের কাছে এটি পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছেন।
পুনরালোচনা
আমরা যখন বলি, ঈশ্বর মানুষকে ব্যবহার করে বাইবেল লিখিয়েছেন, তখন এর অর্থ কী?
বাইবেল যেভাবে রক্ষা করা হয়েছে এবং সমস্ত লোকের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তা থেকে আমরা কী বুঝতে পারি?
ঈশ্বর আপনার কাছে তাঁর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য যা-কিছু করেছেন, তা জেনে আপনার কেমন লাগছে?
আরও জানুন
মূল পাণ্ডুলিপি থেকে আধুনিক অনুবাদ পর্যন্ত বাইবেলের ইতিহাস সম্বন্ধে জানুন।
“বাইবেল যেভাবে আমাদের কাছে এসেছে” (সচেতন থাক! নভেম্বর ২০০৭, ইংরেজি)
তিনটে বড়ো বড়ো আক্রমণ আসা সত্ত্বেও, বাইবেল কীভাবে আজও টিকে রয়েছে, তা জানুন।
বাইবেল অনুবাদ করার জন্য কিছু ব্যক্তি কোন কোন বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন, তা দেখুন।
বার বার হাতে লিখে বাইবেলের কপি তৈরি করা হয়েছে এবং এটি বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। কীভাবে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, ঈশ্বরের বার্তা পরিবর্তিত হয়ে যায়নি?
“বাইবেলের বার্তা কি পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
a খ্রিস্টপূর্ব ১৫১৩ সাল থেকে প্রায় ৯৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।