যেভাবে এক ছেলে তার বাবাকে সাহায্য করেছিল
ইংল্যান্ডের ৩২ বছর বয়সী জেমস্ তীব্র মানসিক অক্ষমতা ও অটিজম রোগে (যে রোগে ব্যক্তি বংশগত অভাবের জন্য দিবাস্বপ্ন দেখে) ভুগছিল। তবুও, অনেক বছর ধরে সে তার মা ও দিদির সঙ্গে যিহোবার সাক্ষিদের সভাগুলোতে যোগ দিয়ে আসছে। কিন্তু, তার বাবা তাদের বিশ্বাসের প্রতি কোন দিনই ততটা আগ্রহ দেখাননি। একদিন সন্ধ্যায় সভাতে, খ্রীষ্টের মৃত্যুর স্মরণার্থক সভায় কীভাবে পরিচিত কাউকে আমন্ত্রণ জানানো যায়, সেই নমুনা দেখার পর, জেমস্ তাড়াতাড়ি তার নিজের রুমে যায়। কৌতূহলবশত তার মা-ও পিছনে পিছনে যান এবং দেখেন যে, সে মরিয়া হয়ে প্রহরীদুর্গ ও সচেতন থাক! পত্রিকার পুরনো সংখ্যাগুলো থেকে কয়েকটাকে আলাদা করছিল। সে একটা পত্রিকা বেছে নেয় যেটার শেষ পৃষ্ঠায় স্মরণার্থক সভার আমন্ত্রণ ছিল এবং সেটা নিয়ে সে দৌড়ে তার বাবার কাছে যায়। প্রথমে সে সেটায় দেওয়া ছবিটা দেখায় ও এরপর সেটা তার বাবাকে দেখিয়ে বলে “তুমি!” তার মা ও বাবা যখন বুঝতে পারেন যে জেমস্ তার বাবাকে স্মরণার্থক সভার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছে, তখন তারা একে অপরের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকান। তার বাবা বলেন যে, তিনি সেখানে হয়তো যোগ দেবেন।
স্মরণার্থক দিনের সন্ধ্যায় জেমস্ তার বাবার আলমারি থেকে এক জোড়া প্যান্ট বেছে নিয়ে তার বাবার কাছে যায় ও ইশারা করে তাকে সেগুলো পরতে বলে। বাবা তাকে বলেছিলেন যে, তিনি সভাতে যাবেন না। তাই শুধু জেমস্ ও তার মা কিংডম হলে যান।
কিন্তু কিছু দিন পর, জেমসের মা যখন তাকে খ্রীষ্টীয় সভাগুলোতে যাওয়ার জন্য তৈরি করার চেষ্টা করেন, তখন সে কিছুতেই যেতে চাইত না বরং তার বাবার সঙ্গে ঘরে থাকতে চাইত। এরপর এক রবিবার সকালে জেমসের মা যখন তাকে সভার জন্য তৈরি করার চেষ্টা করেন, তখন সে আবারও সেখানে যেতে অস্বীকার করে। তার মা খুব অবাক হয়ে যান যখন জেমসের বাবা তার কাছে এসে বলেন, “জেমস্, আজ যদি আমি সভাতে যাই, তা হলে তুমিও কি যাবে?” জেমসের মুখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সে তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে “হ্যাঁ!” আর তিনজনই একসঙ্গে কিংডম হলে যান।
সেই দিন থেকে জেমসের বাবা রবিবারের সব সভাগুলোতে যোগ দিতে থাকেন এবং খুব শীঘ্রই তাকে জানানো হয় যে যদি তিনি উন্নতি করতে চান, তা হলে তাকে অন্যান্য সভাগুলোতেও যোগ দিতে হবে। (ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) তিনি তা করেন এবং দুমাস পরে তিনি নিয়মিত বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন। খুব শীঘ্রই তিনি উন্নতি করেন, দ্রুত নিজের জীবনে প্রয়োজনীয় রদবদল করেন এবং দেরি না করে তিনি রাজ্যের প্রচার কাজে অংশ নিতে শুরু করেন। বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করার এক বছর পর তিনি যিহোবার কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করেন ও এর চিহ্ন হিসেবে জলে বাপ্তিস্ম নেন। বর্তমানে তিনি নিজের মণ্ডলীতে পরিচারক দাস হিসেবে সেবা করছেন। এখন পরিবারের সবাই মিলে একতাবদ্ধভাবে যিহোবাকে সেবা করে চলেছেন।