আমাদের সক্রিয় নেতা খ্রিস্টের উপর আস্থা রাখুন
“তোমাদের আচার্য্য এক জন, তিনি খ্রীষ্ট।”—মথি ২৩:১০.
১, ২. মোশির মৃত্যুর পর যিহোশূয় কোন বিশাল কার্যভার লাভ করেছিলেন?
যিহোবা যিহোশূয়কে বলেছিলেন: “আমার দাস মোশির মৃত্যু হইয়াছে; এখন উঠ, তুমি এই সমস্ত লোক লইয়া এই যর্দ্দন পার হও, এবং তাহাদিগকে . . . আমি যে দেশ দিতেছি, সেই দেশে যাত্রা কর।” (যিহো. ১:১, ২) যিহোশূয়, যিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে মোশির পরিচারক হিসেবে কাজ করেছিলেন, তার জন্য এটা কতই-না বড়ো এক পরিবর্তন ছিল!
২ মোশি খুবই দীর্ঘ সময় ধরে ইস্রায়েলীয়দের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কিন্তু তার পর, যিহোশূয় নেতৃত্ব দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছিলেন। তাই, তিনি হয়তো ভেবেছিলেন, লোকেরা তাকে তাদের নেতা হিসেবে গ্রহণ করবে কি না। (দ্বিতীয়. ৩৪:৮, ১০-১২) যিহোশূয়ের পুস্তক ১:১, ২ পদের বিষয়ে উল্লেখ করে একটা বাইবেল তথ্যগ্রন্থ বলে যে, অতীতে হোক অথবা বর্তমানে, উভয় সময়েই একটা জাতির জন্য সবচেয়ে কঠিন ও বিপদজনক সময় হল সেই সময়, যখন তাদের নেতা পরিবর্তিত হয়।
৩, ৪. যিহোশূয় যে ঈশ্বরের উপর আস্থা রেখেছিলেন, সেইজন্য কীভাবে ঈশ্বর তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন এবং আমরা কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারি?
৩ যিহোশূয়ের চিন্তিত হওয়ার অনেক কারণ ছিল। কিন্তু, তিনি যিহোবার উপর আস্থা রেখেছিলেন এবং দ্রুত তাঁর নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করেছিলেন। (যিহো. ১:৯-১১) যিহোশূয় যে ঈশ্বরের উপর আস্থা রেখেছিলেন, সেইজন্য ঈশ্বর তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন এবং একজন স্বর্গদূতকে ব্যবহার করে যিহোশূয়কে ও ইস্রায়েলীয়দের নির্দেশনা দিয়েছিলেন। সেই স্বর্গদূত খুব সম্ভবত বাক্য অর্থাৎ ঈশ্বরের প্রথমজাত পুত্র ছিলেন।—যাত্রা. ২৩:২০-২৩; যোহন ১:১.
৪ যিহোবা ইস্রায়েল জাতিকে সাহায্য করেছিলেন, যাতে তারা সেই পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারে, যেগুলো যিহোশূয় তাদের নতুন নেতা হওয়ার কারণে এসেছিল। আমাদের দিনেও অনেক বড়ো বড়ো পরিবর্তন ঘটছে। আমরা হয়তো ভাবতে পারি, ‘ঈশ্বরের সংগঠন উন্নতি করে যাওয়ার সময়ে আমাদের কাছে কি আমাদের জন্য নিযুক্ত আচার্য অর্থাৎ নেতা যিশুর উপর আস্থা রাখার উত্তম কারণ রয়েছে?’ (পড়ুন, মথি ২৩:১০.) এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা পরীক্ষা করে দেখব যে, অতীতে বিভিন্ন পরিবর্তনের সময়ে কীভাবে যিহোবা তাঁর লোকেদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
ঈশ্বরের লোকেদের নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিজ্ঞাত দেশে নিয়ে যাওয়া
৫. যিরীহো নগরের কাছে যিহোশূয়ের কোন অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)
৫ ইস্রায়েলীয়রা যর্দন নদী পার হওয়ার অল্পসময় পরই যিহোশূয়ের এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। যিরীহো নগরের কাছে তার একজন পুরুষের সঙ্গে দেখা হয়েছিল, যাঁর কাছে একটা খড়্গ ছিল। যিহোশূয় সেই পুরুষকে জিজ্ঞেস করেছিলেন: “আপনি আমাদের পক্ষ, কি আমাদের শত্রুদের পক্ষ?” যিহোশূয় সেইসময় অবাক হয়ে গিয়েছিলেন, যখন সেই পুরুষ বলেছিলেন যে, তিনি হলেন “সদাপ্রভুর সৈন্যের অধ্যক্ষ” অর্থাৎ একজন স্বর্গদূত, যিনি ঈশ্বরের লোকেদের পক্ষ সমর্থন করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন। (পড়ুন, যিহোশূয়ের পুস্তক ৫:১৩-১৫.) যদিও এই বিবরণের অন্যান্য অংশ উল্লেখ করে যে, যিহোবা সরাসরি যিহোশূয়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন কিন্তু মনে হয়, ঈশ্বর তাঁর হয়ে কথা বলার জন্য একজন স্বর্গদূতকে ব্যবহার করছিলেন, ঠিক যেমনটা তিনি অতীতে প্রায়ই করেছিলেন।—যাত্রা. ৩:২-৪; যিহো. ৪:১, ১৫; ৫:২, ৯; প্রেরিত ৭:৩৮; গালা. ৩:১৯.
৬-৮. (ক) কেন সেই স্বর্গদূতের কোনো কোনো নির্দেশনাকে হয়তো অদ্ভুত বলে মনে হয়েছিল? (খ) কীভাবে আমরা জানি যে, সেই নির্দেশনা বিজ্ঞতাপূর্ণ ছিল এবং একেবারে সঠিক সময়ে এসেছিল? (এ ছাড়া, পাদটীকা দেখুন।)
৬ সেই স্বর্গদূত যিহোশূয়কে একেবারে নির্দিষ্টভাবে বলেছিলেন যে, যিরীহো নগর পরাজিত করার জন্য তাকে কী করতে হবে। প্রথমে, কোনো কোনো নির্দেশনাকে হয়তো অদ্ভুত বলে মনে হয়েছিল। উদাহরণ স্বরূপ, সেই স্বর্গদূত যিহোশূয়কে সমস্ত সৈন্যের ত্বকচ্ছেদ করাতে বলেছিলেন। এর অর্থ ছিল, তারা কিছু দিনের জন্য লড়াই করতে পারবে না। এই সময়টা কি সেই পুরুষদের ত্বকচ্ছেদ করার জন্য সত্যিই সর্বোত্তম ছিল?—আদি. ৩৪:২৪, ২৫; যিহো. ৫:২, ৮.
৭ সেই সৈন্যরা হয়তো ভেবেছিল, ‘শত্রুরা যদি আমাদের শিবিরে আক্রমণ করে, তা হলে কীভাবে আমরা আমাদের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখব?’ কিন্তু, তারপর এক অপ্রত্যাশিত বিষয় ঘটেছিল! যিরীহোর পুরুষরা ইস্রায়েলীয়দের আক্রমণ করার পরিবর্তে তাদের বিষয়ে ভয় পেয়ে গিয়েছিল। বাইবেলে আমরা পড়ি: “ইস্রায়েল-সন্তানগণের হেতু যিরীহো নগর রুদ্ধ ও সংরুদ্ধ ছিল, কেহ ভিতরে আসিত না, কেহ বাহিরে যাইত না।” (যিহো. ৬:১) এই খবরটা নিশ্চয়ই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বরের নির্দেশনার প্রতি আরও বেশি আস্থা রাখতে অনুপ্রাণিত করেছিল!
৮ সেই স্বর্গদূত যিহোশূয়কে বলেছিলেন যেন ইস্রায়েলীয়রা যিরীহো নগরে আক্রমণ না করে। এর পরিবর্তে, তাদের সেই নগরটা ছ-দিন ধরে দিনে এক বার এবং সপ্তম দিনে সাত বার প্রদক্ষিণ করতে বলা হয়েছিল। সৈন্যরা হয়তো ভেবেছিল, ‘এতে তো সময় ও শক্তির অপচয় হবে!’ কিন্তু, ইস্রায়েলের নেতা যিহোবা ঈশ্বর খুব ভালোভাবে জানতেন যে, তিনি কী করছেন! তাঁর নির্দেশনা অনুসরণ করা ইস্রায়েলীয়দের বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছিল এবং তাদের যিরীহোর সৈন্যদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়নি।—যিহো. ৬:২-৫; ইব্রীয় ১১:৩০.a
৯. কেন আমাদের ঈশ্বরের সংগঠনের কাছ থেকে পাওয়া যেকোনো নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত? একটা উদাহরণ দিন।
৯ এই বিবরণ থেকে আমরা কী শিখতে পারি? যিহোবার সংগঠন কখনো কখনো নতুন উপায়ে কোনো কোনো কাজ করে থাকে এবং আমরা হয়তো সবসময় সেগুলোর কারণ বুঝতে পারি না। উদাহরণ স্বরূপ, আমরা হয়তো আগে কখনো ভাবিনি যে, ব্যক্তিগত অধ্যয়নের জন্য, পরিচর্যায় অথবা সভায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করা একটা ভালো বিষয়। কিন্তু, এখন আমরা হয়তো দেখছি, আমাদের পক্ষে সম্ভব হলে সেগুলো ব্যবহার করার ফলে কোন কোন উপকারিতা আসে। আমরা যখন এইরকম পরিবর্তনের কারণে আসা ইতিবাচক ফলাফল দেখি, তখন আমাদের বিশ্বাস আরও শক্তিশালী হয় এবং আমরা আমাদের ভাই-বোনদের সঙ্গে আরও একতাবদ্ধ হই।
কীভাবে খ্রিস্ট প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন?
১০. কে আসলে ত্বকচ্ছেদের বিষয়ে যিরূশালেমে পরিচালকগোষ্ঠীর সেই গুরুত্বপূর্ণ সভার ব্যবস্থা করেছিলেন?
১০ কর্ণীলিয় নামে একজন অচ্ছিন্নত্বক পরজাতীয় ব্যক্তি খ্রিস্টান হওয়ার প্রায় ১৩ বছর পরও কোনো কোনো যিহুদি খ্রিস্টান বলছিল যে, ত্বকচ্ছেদ করার প্রয়োজন রয়েছে। (প্রেরিত ১৫:১, ২) আন্তিয়খিয়া নগরে ভাইয়েরা এই বিষয়টা নিয়ে তর্কবিতর্ক করছিল। তাই, প্রাচীনরা ব্যবস্থা করেছিলেন যেন পৌল যিরূশালেমে গিয়ে পরিচালকগোষ্ঠীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু কে আসলে তার সেখানে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিলেন? পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন: আমি “প্রত্যাদেশক্রমে গমন করিলাম।” স্পষ্টতই, খ্রিস্ট নিজে বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা জুগিয়েছিলেন যেন সেই প্রশ্নের উত্তর পরিচালকগোষ্ঠীর কাছ থেকেই আসে।—গালা. ২:১-৩.
১১. (ক) কোনো কোনো যিহুদি খ্রিস্টানের মনে ত্বকচ্ছেদের বিষয়ে কোন বিশ্বাস রয়ে গিয়েছিল? (খ) কীভাবে পৌল দেখিয়েছিলেন যে, তিনি যিরূশালেমের প্রাচীনদের নম্রভাবে সমর্থন করেছিলেন? (এ ছাড়া, পাদটীকা দেখুন।)
১১ খ্রিস্ট এটা স্পষ্ট করার জন্য পরিচালকগোষ্ঠীকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে, ন-যিহুদি খ্রিস্টানদের ত্বকচ্ছেদ করার প্রয়োজন নেই। (প্রেরিত ১৫:১৯, ২০) তা সত্ত্বেও, অনেক বছর পরও যিহুদি খ্রিস্টানরা তাদের ছেলেদের ত্বকচ্ছেদ করিয়ে যাচ্ছিল। এরপর, যিরূশালেমের প্রাচীনরা এই গুজব শুনেছিলেন যে, পৌল মোশির ব্যবস্থাকে সম্মান করেন না। তাই, প্রাচীনরা পৌলকে এমন কিছু করতে বলেছিলেন, যেটা ব্যবস্থার প্রতি তার সম্মানকে প্রকাশ করবে।b (প্রেরিত ২১:২০-২৬) তারা তাকে চার জন পুরুষকে মন্দিরে নিয়ে যেতে বলেছিলেন, যাতে লোকেরা এটা দেখে যে, পৌল সত্যিই ব্যবস্থাকে সম্মান করেন। পৌল হয়তো বলতে পারতেন: ‘এটার তো কোনো অর্থই হয় না! কেন আপনারা আমাকে এটা করতে বলবেন? যে-যিহুদি খ্রিস্টানরা ত্বকচ্ছেদের বিষয়টা বুঝতে পারে না, সমস্যাটা তো আসলে তাদেরই।’ কিন্তু, পৌল এটা বুঝেছিলেন যে, প্রাচীনরা চান যেন সমস্ত খ্রিস্টান একতাবদ্ধ থাকে আর তাই, তিনি নম্রভাবে তাদের নির্দেশনা অনুসরণ করেছিলেন। তারপরও, আমরা হয়তো ভাবতে পারি, যদিও মোশির ব্যবস্থা যিশুর মৃত্যুর সময়ে সমাপ্ত হয়ে গিয়েছিল, তবুও কেন যিশু ত্বকচ্ছেদের বিষয়ে এই সমস্যাটা এত দিন ধরে চলতে দিয়েছিলেন।—কল. ২:১৩, ১৪.
১২. ত্বকচ্ছেদের বিষয়ে সমস্যাটা সম্পূর্ণরূপে সমাধান করার আগে কেন খ্রিস্ট হয়তো সময় অতিবাহিত হতে দিয়েছিলেন?
১২ কোনো নতুন বোধগম্যতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার জন্য সময় লাগতে পারে। কোনো কোনো যিহুদি খ্রিস্টানের এটা মেনে নেওয়ার জন্য সময়ের প্রয়োজন হয়েছিল যে, তারা আর ব্যবস্থার অধীনে নেই। (যোহন ১৬:১২) তারা এটা ভেবে অভ্যস্ত ছিল যে, ত্বকচ্ছেদ হল ঈশ্বরের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্কের এক প্রতীক। (আদি. ১৭:৯-১২) অন্যেরা এই ভেবে ভয় পেয়েছিল যে, অন্যদের চেয়ে আলাদা হওয়ার কারণে যিহুদি সমাজে তারা তাড়িত হবে। (গালা. ৬:১২) কিন্তু, সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খ্রিস্ট পৌলের মাধ্যমে বিভিন্ন চিঠির দ্বারা তাদের আরও নির্দেশনা জুগিয়েছিলেন।—রোমীয় ২:২৮, ২৯; গালা. ৩:২৩-২৫.
খ্রিস্ট এখনও তাঁর মণ্ডলীকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন
১৩. বর্তমানে খ্রিস্ট আমাদের যেভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেটাকে সমর্থন করার জন্য কী আমাদের সাহায্য করতে পারে?
১৩ বর্তমানেও খ্রিস্ট হলেন খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর নেতা। তাই, সংগঠন যদি এমন কোনো পরিবর্তন করে, যেটা আপনি বুঝতে না পারেন, তা হলে চিন্তা করুন যে, কীভাবে খ্রিস্ট অতীতে ঈশ্বরের লোকেদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। যিহোশূয়ের দিনে হোক অথবা প্রেরিতদের দিনে হোক, উভয় সময়েই খ্রিস্ট ঈশ্বরের লোকেদের সুরক্ষিত রাখার, তাদের বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করার এবং তাদের একতাবদ্ধ থাকতে সাহায্য করার জন্য সবসময়ই বিজ্ঞ নির্দেশনা জুগিয়েছিলেন।—ইব্রীয় ১৩:৮.
১৪-১৬. কীভাবে ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্ দাসের’ কাছ থেকে আসা নির্দেশনা প্রমাণ করে যে, খ্রিস্ট আমাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী রাখার জন্য সাহায্য করতে চান?
১৪ বর্তমানে, “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান্ দাস” একেবারে উপযুক্ত সময়ে আমাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করছে। (মথি ২৪:৪৫) এই নির্দেশনা প্রমাণ করে যে, যিশু আমাদের জন্য চিন্তা করেন। মার্ক নামে একজন ভাই, যার চার সন্তান রয়েছে, বলেন: “শয়তান পরিবারগুলোকে আক্রমণ করার মাধ্যমে মণ্ডলীগুলোকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। এখন প্রতি সপ্তাহে পারিবারিক উপাসনা পরিচালনা করার জন্য উৎসাহিত করার মাধ্যমে পরিবারের মস্তকদের জন্য বার্তাটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে—আপনার পরিবারকে রক্ষা করুন!”
১৫ আমরা যখন দেখি যে, কীভাবে খ্রিস্ট আমাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন আমরা বুঝি, তিনি আমাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী রাখার জন্য সাহায্য করতে চান। উদাহরণ স্বরূপ, প্যাট্রিক নামে একজন প্রাচীন বলেন: “সপ্তাহের ছুটির দিনগুলোতে ক্ষেত্রের পরিচর্যার জন্য ছোটো ছোটো দলে মিলিত হওয়ার ব্যবস্থার কারণে শুরুতে কেউ কেউ নিরুৎসাহিত হতো।” কিন্তু তিনি বলেন, এই পরিবর্তন দেখায় যে, কীভাবে যিশু মণ্ডলীর সবার জন্য চিন্তা করেন। উদাহরণ স্বরূপ, কোনো কোনো ভাই-বোন, যারা লাজুক স্বভাবের অথবা যারা ক্ষেত্রের পরিচর্যায় খুব-একটা বের হতো না, তারা আরও বেশি করে মনে করে যে, তাদের প্রয়োজন ও মূল্য রয়েছে। এটা তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করেছে।
১৬ খ্রিস্ট আমাদের প্রচার কাজের উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতেও সাহায্য করেন, যেটা বর্তমানে পৃথিবীতে ঘটে চলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। (পড়ুন, মার্ক ১৩:১০.) আঁদ্রে নামে একজন নতুন প্রাচীন সবসময় যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে আসা যেকোনো নতুন নির্দেশনা অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন: “শাখা অফিসের কর্মীদের সংখ্যা কম করার বিষয়টা আমাদের সময়ের গুরুত্ব সম্বন্ধে এবং আমাদের শক্তিকে প্রচার কাজের উপর কেন্দ্রীভূত রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে স্মরণ করিয়ে দেয়।”
কীভাবে আমরা খ্রিস্টের নির্দেশনাকে সমর্থন করতে পারি?
১৭, ১৮. পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কারণে আমরা যে-সমস্ত উপায়ে উপকৃত হয়েছি, কেন আমাদের সেগুলোর উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা উচিত?
১৭ আমরা আমাদের শাসনরত রাজা যিশু খ্রিস্টের কাছ থেকে যে-নির্দেশনা পাই, সেটা আমাদের বর্তমানে ও ভবিষ্যতে সাহায্য করবে। আপনি সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কারণে যে-সমস্ত উপায়ে উপকৃত হয়েছেন, সেগুলো উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করার চেষ্টা করুন। পারিবারিক উপাসনার সময়ে আপনারা হয়তো আলোচনা করতে পারেন যে, কীভাবে সভা অথবা পরিচর্যায় করা পরিবর্তনগুলো আপনাদের পরিবারকে সাহায্য করেছে।
১৮ আমরা যদি স্মরণে রাখি যে, যিহোবার সংগঠনের কাছ থেকে আসা নির্দেশনাগুলো অনুসরণ করা উত্তম ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়, তা হলে সেই নির্দেশনা অনুসরণ করা এবং সুখী হওয়া আরও সহজ হবে। উদাহরণ স্বরূপ, যেহেতু আমরা আগের মতো বেশি করে সাহিত্যাদি ছাপাচ্ছি না, তাই আমরা অর্থ সঞ্চয় করছি। আর যেহেতু আমরা নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করি, তাই আমরা আরও বেশি লোকের কাছে সুসমাচার পৌঁছে দিতে সক্ষম হই। আমরা কি ব্যক্তিগতভাবে বেশি করে ইলেকট্রনিক আকারে প্রকাশনাদি, অডিও রেকর্ডিং ও ভিডিও ব্যবহার করতে পারি? এটা হল একটা উপায়, যেটার মাধ্যমে আমরা খ্রিস্টকে সমর্থন করতে পারি, যিনি চান যেন আমরা সংগঠনের সম্পদকে বিজ্ঞতার সঙ্গে ব্যবহার করি।
১৯. কেন আমাদের খ্রিস্টের নির্দেশনাকে সমর্থন করা উচিত?
১৯ আমরা যখন খ্রিস্টের নির্দেশনাকে সমর্থন করি, তখন আমরা আমাদের ভাই-বোনদের বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করতে এবং তাদের আরও বেশি একতাবদ্ধ হতে সাহায্য করি। বিশ্বব্যাপী বেথেল পরিবারের সদস্য সংখ্যার সাম্প্রতিক পরিবর্তন সম্বন্ধে ভাই আঁদ্রে বলেন: “বেথেল পরিবারের যে-প্রাক্তন সদস্যরা এই ধরনের পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে, তাদের উত্তম মনোভাব দেখে খ্রিস্টের নেতৃত্বের প্রতি আমার আস্থা ও সেই প্রাক্তন সদস্যদের প্রতি আমার সম্মান গড়ে উঠেছে। তাদের দেওয়া যেকোনো কার্যভারে আনন্দ খুঁজে পাওয়ার মাধ্যমে তারা যিহোবার রথের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলছে।”
আমাদের নেতার উপর বিশ্বাস ও আস্থা রাখুন
২০, ২১. (ক) কেন আমরা আমাদের নেতা খ্রিস্টের উপর আস্থা রাখতে পারি? (খ) পরবর্তী প্রবন্ধে আমরা কোন প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করব?
২০ শীঘ্রই, আমাদের নেতা যিশু খ্রিস্ট ‘জয় করিবেন’ বা সম্পন্ন করবেন এবং “ভয়াবহ কার্য্য” সম্পাদন করবেন। (প্রকা. ৬:২; গীত. ৪৫:৪) কিন্তু, এমনকী এখনই তিনি আমাদের নতুন জগতে জীবনযাপন করার এবং সেখানে আমরা যে-কাজ করব, সেটার জন্য প্রস্তুত করছেন, যেখানে আমরা পুনরুত্থিত ব্যক্তিদের শিক্ষা দেব ও পৃথিবীকে এক পরমদেশে পরিণত করতে সাহায্য করব।
২১ আমরা যতদিন আমাদের নেতা ও রাজার উপর আস্থা রাখব, তা যা-ই ঘটুক না কেন, ততদিন তিনি আমাদের নতুন জগতে নিয়ে যাওয়ার জন্য নেতৃত্ব দেবেন। (পড়ুন, গীতসংহিতা ৪৬:১-৩.) বর্তমানে, পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হতে পারে, বিশেষভাবে যখন সেগুলো অপ্রত্যাশিত উপায়ে আমাদের প্রভাবিত করে। যখন এমনটা ঘটে, তখন কীভাবে আমরা আমাদের মনের শান্তি ও যিহোবার প্রতি দৃঢ়বিশ্বাস বজায় রাখতে পারি? পরবর্তী প্রবন্ধে আমরা এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করব।
a যিরীহোর ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রত্নতত্ত্ববিদরা প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশস্য খুঁজে পেয়েছে, যেগুলো লোকেরা জমি থেকে ছেদন করেছিল ঠিকই কিন্তু খায়নি। এটা বাইবেলের বিবরণকে সমর্থন করে, যেটা আমাদের বলে যে, সেই অবরোধ অল্প সময়ের জন্য ছিল এবং ইস্রায়েলীয়দের যিরীহোর খাদ্যশস্য খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। যেহেতু সেটা শস্য ছেদনের সময় ছিল, তাই সেটা ইস্রায়েলীয়দের জন্য সেই নগর পরাজিত করার উপযুক্ত সময় ছিল কারণ ক্ষেত্রে প্রচুর খাদ্য ছিল।—যিহো. ৫:১০-১২.
b ২০০৩ সালের ১৫ মার্চ প্রহরীদুর্গ পত্রিকার ২৪ পৃষ্ঠায় দেওয়া “পৌল নম্রভাবে পরীক্ষার মোকাবিলা করেন” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।