আপনি কি জানতেন?
নীনবী নগরের কী হয়েছিল?
খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ৬৭০ সালে, অশূর পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো সাম্রাজ্য হয়ে উঠেছিল। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের একটা ওয়েবসাইটে লেখা আছে, “এই সাম্রাজ্য সাইপ্রাস থেকে শুরু করে পূর্বে ইরান পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। কিছু সময়ের জন্য মিশরও এই সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।” এর রাজধানী নীনবী পৃথিবীর সবচেয়ে বড়ো নগর ছিল। সেখানে উঁচু উঁচু স্মৃতিস্তম্ভ, সুন্দর সুন্দর বাগান, বিলাসবহুল প্রাসাদ ও বড়ো বড়ো গ্রন্থাগার ছিল। প্রাচীন নীনবী নগরের দেওয়ালে যা লেখা ছিল, তা থেকে বোঝা যায় যে, রাজা অশূরবানীপাল অন্যান্য অশূরীয় রাজার মতো নিজেকে “পৃথিবীর রাজা” বলে মনে করতেন। তার শাসনকালে এমনটা মনে হত যে, অশূর ও নীনবীর বিরুদ্ধে কেউই জয়ী হতে পারবে না।
কিন্তু, সেইসময় যিহোবার একজন ভাববাদী সফনিয় বলেছিলেন: “[যিহোবা] … অশূরকে বিনষ্ট কবিবেন, এবং নীনবীকে ধ্বংস ও প্রান্তরের ন্যায় জলহীন স্থান করিবেন।” যিহোবার আরেকজন ভাববাদী নহূম বলেছিলেন: “তোমরা রৌপ্য লুট কর, স্বর্ণ লুট কর … সে শূন্য, শূন্যীকৃত ও উৎসন্ন; … তাই যে কেহ তোমাকে দেখিবে, সে তোমার নিকট হইতে পলায়ন করিবে, আর বলিবে, নীনবী উৎসন্ন হইল।” (সফ. ২:১৩; নহূম ২:৯, ১০; ৩:৭) এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো শুনে কিছু লোকের হয়তো মনে হয়েছিল, ‘এমনটা কি সত্যিই হবে? এই শক্তিশালী অশূরীয়দের কি কেউ পরাজিত করতে পারবে?’ তারা হয়তো এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর উপর বিশ্বাস করেনি।
তবে, যিহোবার কথা পরিপূর্ণ হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ সালের কিছুসময় আগে বাবিল ও মাদীয়ের লোকেরা অশূরীয়দের পরাজিত করে। সময় গড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকেরা নীনবী নগরে বসবাস করা বন্ধ করে দেয় আর এই নগরের বিষয়ে পুরোপুরিভাবে ভুলে যায়। দ্য মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অভ্ আর্ট-এর একটা প্রকাশনায় লেখা আছে, “মধ্যযুগ পর্যন্ত এই নগর পুরোপুরিভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে যায় এবং বাইবেল ছাড়া আর কোথাও এই নগরের উল্লেখ পাওয়া যায় না।” বিবলিক্যল আর্কিয়োলজী সোসাইটি অনুযায়ী, “কেউই জানত না যে, অশূরের এই রাজধানী [নীনবী] সত্যিই অস্তিত্বে ছিল কি না।” কিন্তু, ১৮৪৫ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ অস্টেন হেনরি লেয়ার্ড যখন নীনবীর ধ্বংসাবশেষ খনন করেন, তখন জানা যায় যে, নীনবী নগর সত্যিই অস্তিত্বে ছিল আর একসময় এই নগর খুবই সমৃদ্ধিশালী ছিল।
নীনবী নগর সম্বন্ধে যে-সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, সেগুলো সবই পরিপূর্ণ হয়েছিল। এটা বাইবেলের অন্যান্য ভবিষ্যদ্বাণীর উপরও আমাদের বিশ্বাস আরও শক্তিশালী করে, যেগুলোতে লেখা আছে, বর্তমানের সরকারগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।—দানি. ২:৪৪; প্রকা. ১৯:১৫, ১৯-২১.