-
দুঃখজনক পরিস্থিতি বেশি দিন থাকবে নাপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
দুঃখজনক পরিস্থিতি বেশি দিন থাকবে না
“শেষকালে পরিস্থিতি কঠিন ও বিপদজনক হবে।”—২ তীমথিয় ৩:১.
আপনি কি কখনো এইরকম পরিস্থিতি দেখেছেন অথবা এই ধরনের পরিস্থিতির বিষয়ে শুনেছেন?
● একটা মারাত্মক রোগ অনেক লোকের জীবন কেড়ে নিয়েছে।
● এক দুর্ভিক্ষের ফলে হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছে।
● একটা ভূমিকম্পের ফলে হাজার হাজার লোক মারা গিয়েছে এবং অনেক ব্যক্তির ঘরবাড়ি ভেঙে চুরমার হয়ে গিয়েছে।
এই পত্রিকায় আমরা এই ধরনের কিছু ঘটনা সম্বন্ধে জানব। সেইসঙ্গে এটাও দেখব, বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, বর্তমানে এই সমস্ত ঘটনা ঘটবে। আর এই সময়টাকে বাইবেলে “শেষকাল” বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
আমরা আপনাকে এটা বলছি না যে, এই পৃথিবীতে কত দুঃখকষ্ট রয়েছে কারণ আপনি ইতিমধ্যেই তা জানেন। এর পরিবর্তে, আমরা আপনাকে এটা বলছি যে, খুব শীঘ্রই এই সমস্যাগুলো দূর হয়ে যাবে। এই পত্রিকায় আমরা বাইবেলের ছয়টা ভবিষ্যদ্বাণী সম্বন্ধে দেখব, যেগুলো বর্তমানে পরিপূর্ণ হচ্ছে। আর এর থেকে আমরা বুঝতে পারব যে, এই “শেষকাল” খুব বেশি দিন থাকবে না আর এরপর একটা ভালো পরিস্থিতি আসবে। কিন্তু, অনেক লোক এই কথাগুলো বিশ্বাস করে না। আমরা দেখব যে, কেন আমরা বিশ্বাস করতে পারি, একটা ভালো পরিস্থিতি অবশ্যই আসবে।
-
-
১. ভূমিকম্পপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
১. ভূমিকম্প
“বড়ো বড়ো ভূমিকম্প হবে।”—লূক ২১:১১.
● উইনি নামে একটা মেয়ে হাইতিতে বসবাস করত। তার বয়স যখন দেড় বছর ছিল, তখন হাইতিতে এক বিরাট ভূমিকম্প হয়। মুহূর্তের মধ্যে বড়ো বড়ো বাড়ি ভেঙে পড়ে। আর এই বাচ্চা মেয়েটি সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে পড়ে। ঠিক সেইসময় কিছু টিভি রিপোর্টার সেখান দিয়ে যাচ্ছিল এবং হঠাৎ তারা সেই বাচ্চাটির কান্না শুনতে পায়। তারা উইনিকে ওখান থেকে বার করে বাঁচায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, এই দুর্ঘটনায় উইনির বাবা-মা মারা যান।
পরিসংখ্যান যা দেখায়: ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে হাইতিতে একটা ভূমিকম্প হয়, রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ৭.০ ছিল। এই ভূমিকম্পের ফলে প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ মারা যায় এবং সেইসঙ্গে ১৩ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। এমন নয় যে, সম্প্রতি এই একটাই বড়ো ভূমিকম্প হয়েছে। ২০০৯ সালের এপ্রিল থেকে ২০১০ সালের এপ্রিল-এর মধ্যে সারা পৃথিবীতে প্রায় ১৮টা বড়ো বড়ো ভূমিকম্প হয়েছে।
লোকেরা সাধারণত যা বলে: ‘এমন নয় যে, এখনই বেশি ভূমিকম্প হচ্ছে, ভূমিকম্প আগেও হত। আসলে, টেকনোলজির উন্নতি হওয়ার কারণে আমরা এখন এগুলো জানতে পারি।’
এই কথাগুলো কি সত্য? বাইবেলে এটা লেখা নেই, শেষকালে কতগুলো ভূমিকম্প হবে, কিন্তু এটা লেখা রয়েছে যে, “একের-পর-এক স্থানে” “বড়ো বড়ো” ভূমিকম্প হবে। আর এখান থেকে আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারি যে, আমরা শেষকালে বাস করছি।—মার্ক ১৩:৮; লূক ২১:১১.
আপনার কী মনে হয়? বাইবেলের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী বর্তমানে কি বড়ো বড়ো ভূমিকম্প হচ্ছে?
আমরা যে শেষকালে বাস করছি, তার একটা চিহ্ন হল ভূমিকম্প। এ ছাড়া আরও অনেক চিহ্ন রয়েছে যেগুলো প্রমাণ দেয় যে, আমরা শেষ কালে বাস করছি। আসুন দ্বিতীয় ভবিষ্যদ্বাণীটা লক্ষ করি।
[ব্লার্ব]
“ভূমিকম্পের ফলে অনেক কিছু ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।”—কেন হাডনাট, ইউ এস জিওলজিক্যাল সার্ভে
[সৌজন্যে]
© William Daniels/Panos Pictures
-
-
২. খাদ্যের অভাবপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
২. খাদ্যের অভাব
“খাদ্যের অভাব দেখা দেবে।”—মার্ক ১৩:৮.
● একজন ব্যক্তি খাবারের খোঁজে তার ভাই-বোনদের নিয়ে নিজের গ্রাম ছেড়ে অন্য গ্রামে চলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি খাবারের খোঁজ করেন, কিন্তু পান না। খাবার না পেয়ে তিনি এতটাই হতাশ হয়ে পড়েন যে, রাস্তার ধারে বসে পড়েন। কেন তিনি এমন করেছিলেন? গ্রামের প্রধান বলেন, ”তিনি তার পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করতে পারেননি, তাই তার পরিবারের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস তার হয়নি।”
পরিসংখ্যান যা দেখায়: আমরা যদি সারা পৃথিবীর পরিসংখ্যান দেখি তা হলে দেখব যে, প্রায় সাত জনের মধ্যে এক জন ব্যক্তি প্রতিদিন পেট ভরে খেতে পায় না। আর এর মধ্যে, আফ্রিকার কিছু জায়গায় পরিস্থিতি এত খারাপ যে, সেখানে তিন জনের মধ্যে একজন ব্যক্তি কখনোই পেট ভরে খেতে পায় না। এই পরিস্থিতিটা বোঝার জন্য চিন্তা করুন, একটা পরিবারে তিন জন রয়েছে, মা-বাবা এবং তাদের সন্তান। এই তিন জনের মধ্যে একজনকে তো খালি পেটে থাকতেই হয়। এই ধরনের পরিস্থিতিতে পরিবারের তিন জনকে প্রতিদিন চিন্তা করতে হয় যে, সেই দিন কে খালি পেটে থাকবে।
লোকেরা সাধারণত যা বলে: ‘পৃথিবীতে প্রচুর খাবার রয়েছে। কেউ বেশি পায় আবার কেউ কম পায়।’
এই কথাগুলো কি সত্য? বর্তমানে যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি পরিমাণে শস্য উৎপাদন করা হচ্ছে, আর তা খুব সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া যায়। এর থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, পৃথিবীতে খাদ্যের অভাব হওয়ার কথা নয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল, সরকারগুলো প্রয়োজন রয়েছে এমন লোকদের কাছে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সরকারগুলো এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু তারা এখনও তা করতে পারেনি।
আপনার কী মনে হয়? বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে, খাদ্যের অভাব দেখা দেবে। বর্তমানে কি তা দেখা যাচ্ছে? টেকনোলজি তো অনেক উন্নত হয়েছে, কিন্তু খাদ্যের অভাব কি দূর হয়ে গিয়েছে?
ভূমিকম্প এবং খাদ্যের অভাব দেখা দেওয়ার পর আরও একটা সমস্যা তৈরি হয়। বাইবেল আমাদের সেই বিষয়েও আগে থেকে জানিয়েছে।
[ব্লার্ব]
অ্যান.এম.ভেনামান যিনি যুক্তরাষ্ট্রের চিলড্রেন্স ফান্ডের একজন এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর ছিলেন, তিনি বলেন “তিন জনের মধ্যে একজন বাচ্চা নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও অন্যান্য রোগের কারণে মারা যায়। তারা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে পুষ্টি পেত, তা হলে তাদের মধ্যে অনেকেই মারা যেত না।”
-
-
৩. রোগব্যাধিপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
৩. রোগব্যাধি
”মহামারি দেখা দেবে।”—লূক ২১:১১.
● বোনজালে একজন স্বাস্থ্য আধিকারিক ছিলেন। তিনি আফ্রিকার এমন একটা দেশে বসবাস করতেন যেখানে গৃহযুদ্ধ চলছিল এবং সেইসঙ্গে সেই এলাকায় মারবুর্গ নামে একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। সেখানে খনিতে যারা কাজ করত, তারা সেই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয়। তাই বোনজালে তাদের চিকিৎসা করছিলেন। তিনি শহরের বড়ো বড়ো কতৃপক্ষের কাছ থেকে সাহায্য চান। কিন্তু, কেউই তাকে সেইসময় সাহায্য করেনি। চার মাস পর শহরের সেই কতৃপক্ষরা তাকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে, কিন্তু ততক্ষণে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। বোনজালে নিজেও সেই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হন এবং মারা যান।
পরিসংখ্যান যা দেখায়: প্রতি বছর নিউমোনিয়া, ডাইরিয়া, এইড্স, টিবি এবং ম্যালেরিয়ার কারণে লক্ষ লক্ষ লোক তাদের প্রাণ হারায়। আমরা যদি ২০০৪ সালের পরিসংখ্যান দেখি, তা হলে দেখতে পাব যে, এই পাঁচটা রোগের কারণে প্রায় এক কোটি সাত লক্ষ লোক তাদের প্রাণ হারিয়েছে। যার অর্থ হল, প্রতি তিন সেকেন্ডে একজন ব্যক্তি মারা গিয়েছে।
লোকেরা সাধারণত যা বলে: ‘দিনের পর দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই এটা তো স্বাভাবিক, অনেক বেশি মানুষ অসুস্থ হবে।’
এই কথাটা কি সত্য? এটা ঠিক যে, জনসংখ্যার বৃদ্ধি হচ্ছে, কিন্তু চিকিৎসার নতুন নতুন পদ্ধতিও আসছে। তাই, স্বাভাবিকভাবে লোকেরা কম অসুস্থ হওয়ার কথা। কিন্তু, আমরা দেখতে পাচ্ছি, অসুস্থতা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
আপনার কী মনে হয়? বাইবেলে যেমন ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল যে, বড়ো বড়ো রোগ দেখা দেবে। আমরা কি তা পরিপূর্ণ হতে দেখছি?
ভূমিকম্প, খাদ্যের অভাব এবং বড়ো বড়ো রোগের কারণে লক্ষ লক্ষ লোকের জীবন বরবাদ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, আরও একটা বড়ো সমস্যা রয়েছে, যেটার কারণে লোকেরা এখনও কষ্ট পাচ্ছে। আর সেটা হল, পরিবারের মধ্যে প্রেমের অভাব। আসলে, যে-ব্যক্তিদের মাঝখানে একজন ব্যক্তি সুরক্ষিত অনুভব করে, সেই ব্যক্তিরাই তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকে। পরবর্তী প্রবন্ধে আমরা দেখব, বাইবেল এই বিষয়ে আমাদের কী জানায়।
[ব্লার্ব]
ডক্টর মাইকেল অস্টারহোম বলেন, ”আপনি যখন কোনো বড়ো রোগের দ্বারা আক্রান্ত হন, তখন সেটা অনেকটা এইরকম যেন কোনো হিংস্র জন্তু আপনাকে আক্রমণ করেছে। কিন্তু এটা দেখাও অনেক কঠিন যে, আপনার চারপাশের লোকেরা বড়ো বড়ো রোগের দ্বারা কষ্ট পাচ্ছে।”
[সৌজন্যে]
© William Daniels/Panos Pictures
-
-
৪. পরিবারের মধ্যে প্রেম থাকবে নাপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
৪. পরিবারের মধ্যে প্রেম থাকবে না
‘লোকেরা . . . স্নেহ দেখাবে না।’—২ তীমথিয় ৩:১-৩.
● যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ক্রিস এমন একটা সংগঠনের সঙ্গে কাজ করেন, যারা পারিবারিক হিংসার শিকার হয়েছে এমন ব্যক্তিদের সাহায্য করে। তিনি বলেন, “একজন মহিলা একদিন আমার কাছে এসেছিলেন যার স্বামী তাকে অত্যন্ত খারাপভাবে মারধর করেছিল আর এর ফলে তাকে চেনা যাচ্ছিল না। আবার, কিছু মহিলার সঙ্গে এত খারাপ ব্যবহার করা হয় যে, তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং অন্যদের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে কথা পর্যন্ত বলতে পারে না।”
পরিসংখ্যান যা দেখায়: আফ্রিকার এক দেশে একটা সমীক্ষা করা হয়েছিল। এই সমীক্ষা থেকে জানা যায় যে, প্রায় তিন জনের মধ্যে এক জন মহিলা ছোটোবেলায় যৌন নিপীড়নের শিকার হয়ে থাকে। সেই দেশে আরও একটা সমীক্ষা করা হয়েছিল, যেখান থেকে জানা গিয়েছে যে, দেশের ৩৩ শতাংশ পুরুষ এটা মনে করে, তাদের স্ত্রীদের গায়ে হাত তোলা কোনো অপরাধ নয়। কিন্তু শুধুমাত্র মহিলাদের সঙ্গেই নয়, পুরুষদের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন, কানাডায় প্রায় ১০ জনের মধ্যে ৩ জন স্বামীর সঙ্গে তার স্ত্রীরা খারাপ ব্যবহার করে থাকে।
লোকেরা সাধারণত যা বলে: ‘পারিবারিক হিংসা কোনো নতুন বিষয় নয়। এটা আগেও ছিল, এখনও রয়েছে কিন্তু পার্থক্যটা হল, লোকেরা আগে এই বিষয়ে কথা বলত না, কিন্তু এখন তারা তা নিয়ে খোলাখুলিভাবে কথা বলছে।’
এই কথাটা কি সত্য? এটা ঠিক যে, লোকেরা এখন পারিবারিক হিংসার বিষয়ে খোলাখুলিভাবে কথা বলে। কিন্তু এর ফলে কি পারিবারিক হিংসা কমে গিয়েছে? কখনোই না। আসলে সত্য বিষয়টা হল, পরিবারের মধ্যে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসা কমে গিয়েছে আর এই কারণে পারিবারিক হিংসা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।
আপনার কী মনে হয়? বাইবেলে যেমন বলা হয়েছিল, পরিবারের মধ্যে কি ভালোবাসা কমে যাচ্ছে?
এখন আমরা বাইবেল থেকে পঞ্চম ভবিষ্যদ্বাণী সম্বন্ধে জানব, যা পৃথিবীর বিষয়ে বলা হয়েছে। আসুন দেখি সেটা কী।
[ব্লার্ব]
ওয়েলস্ ডোমেস্টিক অ্যাবিউস হেল্পলাইনের প্রবক্তা বলেন, “বেশিরভাগ লোক পারিবারিক হিংসার বিষয়ে পুলিশে রিপোর্ট লেখায় না। অনুমান করা হয়েছে যে, একজন স্বামী যখন তার স্ত্রীর উপর ৩৫ বারের বেশি অত্যাচার করেন, তখন সেই স্ত্রী পুলিশের কাছে রিপোর্ট লেখায়।”
-
-
৫. পৃথিবীর ধ্বংসপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
৫. পৃথিবীর ধ্বংস
‘যারা পৃথিবীকে ধ্বংস করছে [ঈশ্বর] তাদের ধ্বংস করবেন।’—প্রকাশিত বাক্য ১১:১৮.
● নাইজেরিয়ার কপর গ্রামে পিরি নামে একজন ব্যক্তি থাকেন, যিনি গাছ থেকে তাড়ি সংগ্রহের কাজ করতেন। কিন্তু যখন নাইজেরিয়ায় তেল লিকের ঘটনা ঘটে, তখন তার পক্ষে তার পরিবারের জন্য খাবার জোগানো অনেক কঠিন হয়ে যায়। কারণ তিনি বলেন, ”জল দূষিত হয়ে পড়েছিল, মাছ মারা যাচ্ছিল আর আমাদের শরীরের চামড়া নষ্ট হতে শুরু করেছিল, আমি বুঝতে পারছিলাম না যে, কীভাবে আমি আমার পরিবারের জন্য খাবার জোগাড় করব।”
পরিসংখ্যান যা দেখায়: কিছু বিশেষজ্ঞ বলে থাকে যে, প্রত্যেক বছর প্রায় ৬৫ লক্ষ টন আবর্জনা সমুদ্রে ফেলা হয়, যার মধ্যে প্রায় অর্ধেক প্লাস্টিক থাকে, যা পচে নষ্ট হতে কয়েকশো বছর লেগে যায়। পৃথিবীকে দূষিত করার পাশাপাশি, মানুষ প্রাকৃতিক সম্পদের অপব্যবহার করছে আর এই কারণে প্রাকৃতিক যে-সম্পদ রয়েছে, তা ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। একটা সমীক্ষা জানায়, মানুষ এক বছরে যে-পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে, তা পুনর্স্থাপন হতে এক বছর পাঁচ মাস সময় লেগে যায়। অস্ট্রেলিয়ার একটা বিখ্যাত পত্রিকা এভাবে বলে, ”যদি পৃথিবীর জনসংখ্যা এভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং প্রাকৃতিক সম্পদ এভাবে অপব্যবহার করা হয়, তা হলে মানুষের পক্ষে জীবনযাপন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে আর ২০৩৫ সালে আমাদের আরও একটা পৃথিবীর প্রয়োজন হবে।”
লোকেরা সাধারণত যা বলে: ‘বর্তমানে টেকনোলজি এত উন্নত হয়েছে যে, মানুষ তা ব্যবহার করে পৃথিবীর ক্ষতি পূরণ করে দিতে পারবে।’
এই কথাটা কি সত্য? অনেক লোকেরা প্রাকৃতিক দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে, কিন্তু দিনের পর দিন এই দূষণ বেড়েই চলেছে।
আপনার কী মনে হয়? ঈশ্বর কি এই পৃথিবীকে রক্ষা করতে পারবেন?
এই পাঁচটা ভবিষ্যদ্বাণী ছাড়াও বাইবেলে বলা হয়েছিল, শেষকালে কিছু ভালো বিষয়ও ঘটবে। আসুন আরও একটা ভবিষ্যদ্বাণী লক্ষ করি।
[ব্লার্ব]
ইরিন টেম্বার নামে একজন ব্যক্তি সমুদ্রের উপকূলে বসবাস করেন। ২০১০ সালে মেক্সিকো উপসাগরে তেল লিক হওয়ার পর তিনি বলেন, ”আমার ঘর একটা সুন্দর জায়গায় ছিল। কিন্তু এই ঘটনার পর সবকিছু শেষ হয়ে গিয়েছিল।”
[বাক্স]
এর জন্য কি ঈশ্বর দায়ী?
বাইবেলে লেখা ছিল যে, আমাদের দিনে পরিস্থিতি খুবই খারাপ হয়ে যাবে। এর অর্থ কি এই যে, আমাদের দুঃখকষ্টের জন্য ঈশ্বর দায়ী? এই প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য, যিহোবার সাক্ষিদের দ্বারা প্রকাশিত বাইবেল প্রকৃতপক্ষে কী শিক্ষা দেয়? বইয়ের ১১ অধ্যায় দেখুন।
[সৌজন্যে]
U.S. Coast Guard photo
-
-
৬. প্রচার কাজপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
৬. প্রচার কাজ
“রাজ্যের সুসমাচার . . . পুরো পৃথিবীতে . . . প্রচার করা হবে।”—মথি ২৪:১৪.
● ভাইতিয়া নামে একজন মহিলা প্রশান্ত মহাসাগরের একটা ছোটো দ্বীপে থাকেন, যেখানে খুব অল্প লোক বাস করে। কিন্তু তা সত্ত্বেও যিহোবার সাক্ষিরা ভাইতিয়া ও তার প্রতিবেশীদের কাছে যায়। কেন? এর কারণ হল, যিহোবার সাক্ষিরা প্রত্যেকের কাছে প্রচার করে থাকে, তা তারা যেখানেই বসবাস করুক না কেন।
পরিসংখ্যান যা দেখায়: যিহোবার সাক্ষিরা সারা পৃথিবীতে প্রচার করছে। ২০১০ সালে যিহোবার সাক্ষিরা দেশ ও দ্বীপ মিলিয়ে ২৩৬টা জায়গায় প্রায় ১৬০ কোটি ঘণ্টা প্রচার কাজে ব্যয় করেছে। যার অর্থ হল, ২০১০ সালে প্রত্যেক যিহোবার সাক্ষি প্রতি দিন গড়ে ৩০ মিনিট করে ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে অন্যদের জানিয়েছে। বিগত ১০ বছরে যিহোবার সাক্ষিরা প্রায় ২০০০ কোটি বাইবেলভিত্তিক পত্রপত্রিকা প্রকাশ করেছে এবং অন্যদের কাছে বিতরণ করেছে।
লোকেরা সাধারণত যা বলে: ‘এটা কোনো নতুন বিষয় নয় কারণ লোকেরা বছরের পর বছর ধরে বাইবেলের বার্তা প্রচার করে যাচ্ছে।’
এই কথাটা কি সত্য? এটা ঠিক যে, লোকেরা বাইবেলের বার্তা প্রচার করেছে কিন্তু তারা অল্প কিছু সময়ের জন্য তা করেছে আর সেটাও মাত্র কয়েকটা জায়গায়। এর বিপরীতে, যিহোবার সাক্ষিরা সারা পৃথিবীতে এক সংগঠিত উপায়ে কোটি কোটি লোকের কাছে বাইবেলের বার্তা জানাচ্ছে। কিছু সরকার এবং ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা তাদের এই প্রচার কাজ বন্ধ করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। এই প্রচার কাজ করার জন্য যিহোবার সাক্ষিরা কোনো অর্থ পায় না বরং তারা আনন্দের সঙ্গে তাদের সময় ও শক্তি ব্যয় করে থাকে। সেইসঙ্গে তারা বিভিন্ন বই ও পত্রিকা বিনা মূল্যে লোকদের দিয়ে থাকে। লোকেরা স্বেচ্ছায় যে-দান করে, সেই দানের মাধ্যমে এই কাজ চলে।
আপনার কী মনে হয়? ‘ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার’ কি পুরো পৃথিবীতে প্রচার করা হচ্ছে? এর অর্থ কি এই যে, সামনে ভালো সময় আসতে চলেছে?
[ব্লার্ব]
২০১০ সালের যিহোবার সাক্ষিদের বর্ষপুস্তকে (ইংরেজি) বলা হয়েছিল, “যিহোবা যতদিন চাইবেন আমরা ততদিন উদ্যোগের সঙ্গে তাঁর রাজ্যের সুসমাচার অন্য ব্যক্তিদের কাছে প্রচার করে যাব এবং লোকদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আমরা আমাদের সর্বোত্তম প্রচেষ্টা করব।”
-
-
এক অপূর্ব ভবিষ্যৎপ্রহরীদুর্গ: বাইবেলের ৬ ভবিষ্যদ্বাণী, যেগুলো আপনি পরিপূর্ণ হতে দেখছেন
-
-
এক অপূর্ব ভবিষ্যৎ
“আর ক্ষণকাল, পরে দুষ্ট লোক আর নাই . . . কিন্তু মৃদুশীলেরা দেশের অধিকারী হইবে, এবং শান্তির বাহুল্যে আমোদ করিবে।”—গীতসংহিতা ৩৭:১০, ১১.
আপনি কি চান, এই ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হোক? নিশ্চয়ই আপনি চান! আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, বাইবেলের এই কথাগুলো খুব তাড়াতাড়ি পরিপূর্ণ হবেই।
এখনও পর্যন্ত আমরা যে-ভবিষ্যদ্বাণীগুলো দেখেছি, সেগুলো থেকে আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি যে, আমরা এই দুষ্ট জগতের “শেষকালে” বাস করছি। (২ তীমথিয় ৩:১-৫) ঈশ্বর বাইবেলে এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো লিখিয়েছেন, যাতে আমরা এগুলো থেকে প্রত্যাশা লাভ করতে পারি। (রোমীয় ১৫:৪) এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো বর্তমানে পরিপূর্ণ হচ্ছে, যার অর্থ হল আমরা যে-সমস্যাগুলো ভোগ করছি, সেগুলো খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে।
শেষকালের পর কী হবে? ঈশ্বরের রাজ্য পুরো পৃথিবীর উপর শাসন করবে। (মথি ৬:৯) আসুন দেখি তখন পরিস্থিতি কেমন হবে।
● কেউ খাবার না খেয়ে থাকবে না। “দেশমধ্যে পর্ব্বত-শিখরে প্রচুর শস্য হইবে।”—গীতসংহিতা ৭২:১৬.
● কেউ অসুস্থ হবে না। “নগরবাসী কেহ বলিবে না, আমি পীড়িত।”—যিশাইয় ৩৩:২৪.
● পৃথিবী আবার আগের মতো সুন্দর হয়ে উঠবে। “প্রান্তর ও জলশূন্য স্থান আমোদ করিবে, মরুভূমি উল্লাসিত হইবে, গোলাপের ন্যায় উৎফুল্ল হইবে।”—যিশাইয় ৩৫:১.
এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো ছাড়াও বাইবেলে আরও অনেক ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে, যেগুলো খুব তাড়াতাড়ি পরিপূর্ণ হতে যাচ্ছে। কিন্তু কেন আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি যে, এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলোও পরিপূর্ণ হবে? যিহোবার সাক্ষিরা আপনাকে এই বিষয়গুলো জানাতে পেরে অনেক খুশি হবে।
-