আপনার কি “বাধ্য হৃদয়” আছে?
শলোমন যখন প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা হয়েছিলেন, তিনি কিছুর অভাব বোধ করেছিলেন। আর তাই, ঈশ্বরের কাছে তিনি প্রজ্ঞা ও বুদ্ধি চেয়েছিলেন। (২ বংশাবলি ১:১০) শলোমন এই বিষয়েও প্রার্থনা করেছিলেন: “তোমার প্রজাদের বিচার করিতে . . . তোমার এই দাসকে বুঝিবার চিত্ত [“বাধ্য হৃদয়,” “NW”] প্রদান কর।” (১ রাজাবলি ৩:৯) যদি শলোমনের “বাধ্য হৃদয়” থাকত, তবে তিনি ঐশিক ব্যবস্থা ও নীতিগুলি মেনে চলতেন ও যিহোবার আশীর্বাদ উপভোগ করতেন।
বাধ্য হৃদয় কোন বোঝা নয় কিন্তু আনন্দের এক উৎস। প্রেরিত যোহন লিখেছিলেন: “ঈশ্বরের প্রতি প্রেম এই, যেন আমরা তাঁহার আজ্ঞা সকল পালন করি; আর তাঁহার আজ্ঞা সকল দুর্ব্বহ নয়।” (১ যোহন ৫:৩) নিশ্চিতভাবেই আমাদের ঈশ্বরের বাধ্য হওয়া উচিত। সর্বোপরি যিহোবা আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তা। পৃথিবী ও এখানে অবস্থিত সমস্ত কিছু এমনকি সমস্ত রৌপ্য ও স্বর্ণ যিহোবার কাছ থেকে এসেছে। তাই বাস্তবিকপক্ষে বস্তুগত কোন জিনিস আমরা যিহোবাকে দিতে পারি না, যদিও তিনি তাঁর প্রতি আমাদের প্রেম প্রকাশের জন্য আমাদের অর্থগত সম্পদ ব্যবহার করতে অনুমোদন করেন। (১ বংশাবলি ২৯:১৪) যিহোবা আমাদের কাছে প্রত্যাশা করেন যে আমরা তাঁকে ভালবাসব ও তাঁর ইচ্ছা পালন করে নম্রভাবে তাঁর সঙ্গে পথ চলব।—মীখা ৬:৮.
যীশু খ্রীষ্টকে যখন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে ব্যবস্থায় সবচেয়ে মহৎ আজ্ঞা কোন্টি, তিনি বলেছিলেন: “‘তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে [“যিহোবাকে,” “NW”] প্রেম করিবে,’ এইটী মহৎ ও প্রথম আজ্ঞা।” (মথি ২২:৩৬-৩৮) এই প্রেম প্রকাশের একটি উপায় হল ঈশ্বরের বাধ্য হওয়া। তাই যিহোবা আমাদের সকলকে যেন বাধ্য হৃদয় দেন এটিই আমাদের সকলের প্রার্থনা হওয়া উচিত।
তাদের বাধ্য হৃদয় ছিল
বাইবেল এমন প্রচুর উদাহরণে পরিপূর্ণ যাদের বাধ্য হৃদয় ছিল। উদাহরণস্বরূপ, যিহোবা জীবন সংরক্ষণের জন্য নোহকে এক বিশাল জাহাজ নির্মাণ করতে বলেছিলেন। এটি এক ব্যাপক কাজ ছিল যা প্রায় ৪০ বা ৫০ বছর সময় নিয়েছিল। এমনকি এখন সহজলভ্য সমস্ত আধুনিক ক্ষমতাসপন্ন যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করে, জলে ভাসতে পারে এমন এক বিশাল কাঠামো নির্মাণ করা প্রকৃতই এক প্রকৌশলের কাজ। অধিকন্তু, নোহকে সেই লোকেদের সতর্ক করতে হয়েছিল যারা নিশ্চিতভাবেই তাকে বিদ্রূপ ও উপহাস করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি বাধ্য ছিলেন। বাইবেল বলে: “নোহ সেইরূপ করিলেন।” (আদিপুস্তক ৬:৯, ২২; ২ পিতর ২:৫) বহু বছর ধরে বিশ্বস্তভাবে বাধ্য থেকে নোহ যিহোবার প্রতি তার প্রেম দেখিয়েছিলেন। আমাদের সকলের জন্য কতই না এক উত্তম উদাহরণ!
কূলপতি অব্রাহামের কথাও বিবেচনা করুন। ঈশ্বর তাকে কল্দীয়দের সমৃদ্ধ নগর ঊর ছেড়ে এক অজানা দেশে যেতে বলেছিলেন। নির্দ্বিধায় অব্রাহাম বাধ্য হয়েছিলেন। (ইব্রীয় ১১:৮) তার জীবনের বাকি দিনগুলি তিনি এবং তার পরিবার তাঁবুতে বাস করেছিলেন। সেই দেশে অনেক বছর এক বিদেশী হিসাবে বাস করার পর যিহোবা তাকে ও তার বাধ্য স্ত্রী সারাকে ইস্হাক নামে এক পুত্রসন্তান দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন। ১০০ বছর বয়স্ক অব্রাহাম তার বৃদ্ধ বয়সের পুত্রকে কতই না ভালবাসতেন! কিছু বছর পরে, যিহোবা তার পুত্র ইস্হাককে হোমবলি হিসাবে উৎসর্গ করার জন্য অব্রাহামকে বলেছিলেন। (আদিপুস্তক ২২:১, ২) এটি করার কথা কল্পনা করা নিশ্চয়ই অব্রাহামকে খুব কষ্ট দিয়েছিল। তৎসত্ত্বেও, তিনি বাধ্য হওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন কারণ তিনি যিহোবাকে ভালবাসতেন আর বিশ্বাস করতেন যে এমনকি ইস্হাককে মৃতদের মধ্যে থেকে উত্থাপিত করতে হলেও ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত বীজ ইস্হাকের মাধ্যমেই আসবে। (ইব্রীয় ১১:১৭-১৯) কিন্তু অব্রাহাম যখন তার পুত্রকে হত্যা করতে উদ্যতপ্রায়, যিহোবা তাকে থামিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন: “এখন আমি বুঝিলাম, তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাকে আপনার অদ্বিতীয় পুত্ত্র দিতেও অসম্মত নও।” (আদিপুস্তক ২২:১২) তার বাধ্যতার কারণে ঈশ্বর ভয়শীল অব্রাহাম “ঈশ্বরের বন্ধু” হিসাবে পরিগণিত হয়েছিলেন।—যাকোব ২:২৩.
যীশু খ্রীষ্ট আমাদের জন্য বাধ্যতার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ। তাঁর মানবপূর্ব অস্তিত্বে তিনি স্বর্গে তাঁর পিতার প্রতি বাধ্য সেবা দিতে আনন্দিত ছিলেন। (হিতোপদেশ ৮:২২-৩১) একজন মানুষ হিসাবে, যীশু সমস্ত বিষয়ে যিহোবার বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁর ইচ্ছা পালন করতে সর্বদা আনন্দিত ছিলেন। (গীতসংহিতা ৪০:৮; ইব্রীয় ১০:৯) তাই, যীশু সততার সঙ্গে বলতে পেরেছিলেন: “আমি আপনা হইতে কিছুই করি না, কিন্তু পিতা আমাকে যেমন শিক্ষা দিয়াছেন, তদনুসারে এই সকল কথা কহি। আর যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তিনি আমার সঙ্গে আছেন; তিনি আমাকে একা ছাড়িয়া দেন নাই, কেননা আমি সর্ব্বদা তাঁহার সন্তোষজনক কার্য্য করি।” (যোহন ৮:২৮, ২৯) পরিশেষে, যিহোবার সার্বভৌমত্বকে মহিমান্বিত করতে ও বাধ্য মানবজাতিকে উদ্ধার করতে যীশু স্বেচ্ছায় তাঁর জীবন দিয়েছিলেন, এক অবমাননাকর ও অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু সহ্য করেছিলেন। প্রকৃতই “আকার প্রকারে মনুষ্যবৎ প্রত্যক্ষ হইয়া আপনাকে অবনত করিলেন; মৃত্যু পর্য্যন্ত, এমন কি, ক্রুশীয় মৃত্যু পর্য্যন্ত আজ্ঞাবহ হইলেন।” (ফিলিপীয় ২:৮) বাধ্য হৃদয় প্রদর্শন করার কতই না এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ!
আংশিক বাধ্যতা যথেষ্ট নয়
সকলেই যারা ঈশ্বরের বাধ্য বলে দাবি করেছিলেন, প্রকৃতপক্ষে তাঁর বাধ্য ছিলেন না। প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা শৌলের কথা বিবেচনা করুন। দুষ্ট অমালেকীয়দের নিঃশেষ করার জন্য ঈশ্বর তাকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। (১ শমূয়েল ১৫:১-৩) যদিও শৌল একটি জাতি হিসাবে তাদের ধ্বংস করেছিলেন কিন্তু তিনি তাদের রাজাকে নিষ্কৃতি দিয়েছিলেন এবং তাদের কিছু মেষ ও গবাদি পশু সংরক্ষিত করেছিলেন। শমূয়েল জিজ্ঞাসা করেছিলেন: ‘তুমি সদাপ্রভুর রবে অবধান কর নাই কেন?’ উত্তরে শৌল বলেছিলেন: “আমি ত সদাপ্রভুর রবে অবধান করিয়াছি, . . . কিন্তু . . . আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বলিদান করিবার জন্য [ইস্রায়েলের] লোকেরা বর্জ্জিত দ্রব্যের . . . মধ্য হইতে কতকগুলি মেষ ও গোরু আনিয়াছে।” সম্পূর্ণ বাধ্যতার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দিয়ে শমূয়েল উত্তর দিয়েছিলেন: “সদাপ্রভুর রবে অবধান করিলে যেমন, তেমন কি হোমে ও বলিদানে সদাপ্রভু প্রসন্ন হন? দেখ, বলিদান অপেক্ষা আজ্ঞাপালন উত্তম, এবং মেষের মেদ অপেক্ষা অবধান করা উত্তম। কারণ আজ্ঞালঙ্ঘন করা মন্ত্রপাঠ জন্য পাপের তুল্য, এবং অবাধ্যতা, পৌত্তলিকতা ও ঠাকুরপূজার সমান। তুমি সদাপ্রভুর বাক্য অগ্রাহ্য করিয়াছ, এই জন্য তিনি তোমাকে অগ্রাহ্য করিয়া রাজ্যচ্যুত করিয়াছেন।” (১ শমূয়েল ১৫:১৭-২৩) বাধ্য হৃদয় না থাকার কারণে শৌল কতই না ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন!
এমনকি জ্ঞানী রাজা শলোমন যিনি বাধ্য হৃদয়ের জন্য প্রার্থনা করেছিলেন, যিহোবার প্রতি বাধ্যতা বজায় রেখে চলতে পারেননি। ঐশিক ইচ্ছার বিপরীতে তিনি বিদেশী স্ত্রীদের বিবাহ করেছিলেন যারা তাকে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করতে পরিচালিত করেছিল। (নহিমিয় ১৩:২৩, ২৬) শলোমন ঐশিক অনুগ্রহ হারিয়েছিলেন কারণ তিনি বাধ্য হৃদয় রক্ষা করে চলেননি। আমাদের জন্য কতই না জরুরি এক সতর্কবাণী!
এর অর্থ এই নয়, যে যিহোবা তাঁর মনুষ্য সেবকদের কাছ থেকে সিদ্ধতা দাবি করেন। “আমরা যে ধূলিমাত্র, ইহা তাঁহার স্মরণে আছে।” (গীতসংহিতা ১০৩:১৪) কোন না কোন সময়, নিঃসন্দেহে আমরা সকলে ভুল করি কিন্তু ঈশ্বর দেখতে পান যে তাঁকে সন্তুষ্ট করার জন্য আমাদের প্রকৃতই আন্তরিক আকাঙ্ক্ষা আছে কি না। (২ বংশাবলি ১৬:৯) যদি আমরা মানব অসিদ্ধতার কারণে পাপ করি কিন্তু অনুতপ্ত হই, আমরা খ্রীষ্টের মুক্তির মূল্যের ভিত্তিতে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারি এই বিষয়ে প্রত্যয়ী হয়ে যে যিহোবা “প্রচুররূপে ক্ষমা করিবেন।” (যিশাইয় ৫৫:৭; ১ যোহন ২:১, ২) প্রেমময় খ্রীষ্টীয় প্রাচীনদের সাহায্যও প্রয়োজনীয় হতে পারে যাতে করে আমরা আধ্যাত্মিকভাবে পুনরুজ্জীবিত হতে পারি ও স্বাস্থ্যকর বিশ্বাস ও বাধ্য হৃদয় বজায় রাখতে পারি।—তীত ২:২; যাকোব ৫:১৩-১৫.
আপনার বাধ্যতা কতখানি সম্পূর্ণ?
যিহোবার সেবক হিসাবে, আমাদের মধ্যে অধিকাংশই নিঃসন্দেহে অনুভব করি যে আমাদের বাধ্য হৃদয় আছে। আমরা হয়ত যুক্তি দেখাতে পারি যে, আমি কি রাজ্য প্রচার কাজে অংশ নিচ্ছি না? নিরপেক্ষতার মত বড় বিষয় উপস্থিত হলে আমি কি দৃঢ় পদক্ষেপ নিই না? আর আমি কি নিয়মিতভাবে খ্রীষ্টীয় সভায় উপস্থিত হই না যেমন প্রেরিত পৌল উৎসাহিত করেছিলেন? (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০; যোহন ১৭:১৬; ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) এটি সত্য যে, সামগ্রিকভাবে যিহোবার লোকেরা এইধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির ক্ষেত্রে আন্তরিক বাধ্যতা প্রদর্শন করে থাকেন।
কিন্তু আমাদের প্রতিদিনের বিষয়গুলি সম্বন্ধে আচরণের ক্ষেত্রে কী বলা যায়, যেগুলি দেখতে হয়ত খুব ছোট বিষয় বলে মনে হয়? যীশু উল্লেখ করেছিলেন: “যে ক্ষুদ্রতম বিষয়ে বিশ্বস্ত, সে প্রচুর বিষয়েরও বিশ্বস্ত; আর যে ক্ষুদ্রতম বিষয়ে অধার্ম্মিক, সে প্রচুর বিষয়েও অধার্ম্মিক।” (লূক ১৬:১০) আমাদের প্রত্যেকে তাই নিজেকে জিজ্ঞাসা করলে ভাল করব যে, ছোটখাট বিষয়গুলি বা অন্যেরা এমনকি জানেনই না এমন বিষয়গুলির ক্ষেত্রে আমাদের কী বাধ্য হৃদয় আছে?
দায়ূদ দেখিয়েছিলেন যে এমনকি তার ঘরের অভ্যন্তরেও যেখানে অন্যেরা তাকে দেখতে পারতেন না তিনি ‘হৃদয়ের সিদ্ধতায় চলিয়াছিলেন।’ (গীতসংহিতা ১০১:২) আপনার ঘরে বসে হয়ত আপনি দূরদর্শনে কোন চলচ্চিত্র দেখতে শুরু করেছেন। ঠিক সেই ক্ষেত্রেও আপনার বাধ্যতা পরীক্ষিত হতে পারে। চলচ্চিত্রটি হয়ত অনৈতিক বিষয়ভিত্তিক। আপনি কি সেটি দেখেই চলবেন, এই যুক্তি দেখিয়ে যে আজকালকার দিনে কেবল এইধরনের চলচ্চিত্রই তৈরি হয়? অথবা আপনার বাধ্য হৃদয় আপনাকে শাস্ত্রীয় আদেশের সঙ্গে একমত হতে পরিচালিত করবে যেটি বলে ‘বেশ্যাগমনের ও অশুদ্ধতার নামও যেন তোমাদের মধ্যে না হয়’? (ইফিষীয় ৫:৩-৫) এমনকি গল্পটি যদি কৌতুহলজনকও হয়, আপনি কি আপনার দূরদর্শন বন্ধ করে দেবেন? অথবা একটি অনুষ্ঠান যদি দৌরাত্ম্যপূর্ণ হয় আপনি কি দূরদর্শনের কেন্দ্র পরিবর্তন করবেন? “সদাপ্রভু ধার্ম্মিকের পরীক্ষা করেন,” গীতরচক গেয়েছিলেন, “কিন্তু দুষ্ট ও দৌরাত্ম্যপ্রিয় লোক তাঁহার প্রাণের ঘৃণাস্পদ।”—গীতসংহিতা ১১:৫.
বাধ্য হৃদয় প্রচুর আশীর্বাদ নিয়ে আসে
অবশ্যই জীবনের অনেক ক্ষেত্রগুলিতে আমরা প্রকৃতই হৃদয় থেকে ঈশ্বরের বাধ্য কি না তা দেখার জন্য উপকারজনকভাবে নিজেদের পরীক্ষা করতে পারি। যিহোবার প্রতি আমাদের প্রেম তাঁকে সন্তুষ্ট করতে ও তাঁর বাক্য বাইবেলে তিনি যা বলেন তা করতে প্রণোদিত করবে। বাধ্য হৃদয় যিহোবার সঙ্গে উত্তম সম্পর্ক বজায় রাখতে আমাদের সাহায্য করবে। প্রকৃতই, যদি আমরা সম্পূর্ণ বাধ্য হই, ‘আমাদের মুখের বাক্য ও আমাদের চিত্তের ধ্যান যিহোবার দৃষ্টিতে গ্রাহ্য হইবে।’—গীতসংহিতা ১৯:১৪.
যেহেতু যিহোবা আমাদের ভালবাসেন, আমাদের মঙ্গলের জন্য তিনি আমাদের বাধ্যতা শেখান। আর ঐশিক শিক্ষার প্রতি সম্পূর্ণ হৃদয়ে মনোযোগ দেওয়ার দ্বারা আমরা নিজেদের প্রচুরভাবে উপকৃত করি। (যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮) সুতরাং আসুন তাঁর বাক্য, তাঁর আত্মা ও তাঁর সংগঠনের মাধ্যমে আমাদের স্বর্গীয় পিতা যে সহায়তা সরবরাহ করেন, আমরা তা আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করি। আমরা এত উপযুক্তভাবে শিক্ষাপ্রাপ্ত হচ্ছি যে আমরা যেন আমাদের পিছন থেকে ভেসে আসা একটি স্বর শুনতে পাই যা বলে “এই পথ, তোমরা এই পথেই চল।” (যিশাইয় ৩০:২১) যিহোবা যখন আমাদের বাইবেল, খ্রীষ্টীয় প্রকাশনা ও মণ্ডলীর সভাগুলির মাধ্যমে শিক্ষা দেন, আমরা যেন মনোযোগ দিই, আমরা যা শিখছি তা প্রয়োগ করি ও “সর্ব্ববিষয়ে আজ্ঞাবহ” হই।—২ করিন্থীয় ২:৯.
বাধ্য হৃদয় ফলস্বরূপ প্রচুর আনন্দ ও অসংখ্য আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। এটি আমাদের মানসিক শান্তি দেবে কারণ আমরা জানব যে আমরা যিহোবা ঈশ্বরকে প্রকৃতই সন্তুষ্ট করছি ও তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করছি। (হিতোপদেশ ২৭:১১) যখন আমরা অন্যায় করার জন্য প্রলোভিত হই তখন বাধ্য হৃদয় আমাদের জন্য সুরক্ষাস্বরূপ। তাই, নিশ্চিতভাবেই আমাদের উচিত আমাদের স্বর্গীয় পিতার প্রতি বাধ্য হওয়া ও এই বিষয়ে প্রার্থনা করা: “তোমার এই দাসকে বাধ্য হৃদয় প্রদান কর।”
[২৯ পৃষ্ঠার চিত্র সৌজন্যে]
সেল্ফ-প্রোনাউন্সিং এডিসন অফ দ্যা হোলি বাইবেল থেকে নেওয়া হয়েছে, কিং জেমস ও রিভাইজড ভারসন যার অন্তর্ভুক্ত