যেহূ উদ্যোগের সঙ্গে সত্য উপাসনাকে সমর্থন করেন
যেহূ ছিলেন বিশুদ্ধ উপাসনার একজন সমর্থক। এই ভূমিকা পালন করতে গিয়ে তিনি ছিলেন উদ্যোমী, তৎপর, দৃঢ়, উদ্যোগী এবং সাহসী। যেহূ এমন গুণাবলি প্রদর্শন করেছিলেন, যেগুলো আমাদের অনুকরণ করা উচিত।
যেহূ এমন এক সময়ে একটা কার্যভার পেয়েছিলেন, যখন ইস্রায়েল জাতি এক খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। দেশের ওপর আহাবের বিধবা স্ত্রী এবং শাসনরত রাজা যোরামের মা ঈষেবলের মন্দ প্রভাব ছিল। তিনি যিহোবার উপাসনাকে উচ্চীকৃত করার পরিবর্তে বরং বাল উপাসনাকে উচ্চীকৃত করেছিলেন, ঈশ্বরের ভাববাদীদের বধ করেছিলেন এবং লোকেদেরকে তার “ব্যভিচার” এবং “মায়াবিত্ব” দ্বারা কলুষিত করেছিলেন। (২ রাজা. ৯:২২; ১ রাজা. ১৮:৪, ১৩) যিহোবা যোরাম ও ঈষেবলসহ আহাবের পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়ার আদেশ জারি করেছিলেন। যেহূকে সেই কাজে নেতৃত্ব দিতে হয়েছিল।
শাস্ত্র যেহূকে এভাবে পরিচয় করিয়ে দেয় যে, তিনি সেই সময় সেনাপতিদের সঙ্গে বসে ছিলেন, যখন ইস্রায়েলীয়রা রামোৎ-গিলিয়দে যুদ্ধ করছিল। যেহূ একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আর সম্ভবত এমনকী ইস্রায়েল সেনাবাহিনীর সেনাপতি ছিলেন। ভাববাদী ইলীশায়, যেহূকে রাজা হিসেবে অভিষিক্ত করার এবং আহাব কুলের প্রত্যেক ধর্মভ্রষ্ট পুরুষকে হত্যা করার ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য একজন শিষ্য ভাববাদীকে প্রেরণ করেন।—২ রাজা. ৮:২৮; ৯:১-১০.
যেহূর সহকর্মকর্তারা যখন সেই সাক্ষাতের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে, তখন যেহূ তা বলতে ইতস্তত বোধ করেন। কিন্তু, যখন চাপ দেওয়া হয়, তখন তিনি তাদের কাছে সত্য কথা বলেন এবং তিনি ও তার সঙ্গীরা যোরামের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে শুরু করেন। (২ রাজা. ৯:১১-১৪) সম্ভবত, এর মূলে ছিল সেই পরিবারের শাসন প্রণালী এবং ঈষেবলের প্রভাবের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ ও বিরোধিতা। যাই হোক, যেহূ তার কার্যভার সর্বোত্তম উপায়ে সম্পাদন করার জন্য সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করেছিলেন।
রাজা যোরাম যুদ্ধে আহত হয়েছিলেন এবং আরোগ্য লাভের আশায় যিষ্রিয়েলে ফিরে গিয়েছিলেন। যেহূ জানতেন যে, তার পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করতে হলে একটা কথাও যিষ্রিয়েলে ফাঁস করা যাবে না। “যিষ্রিয়েলে সংবাদ দিবার জন্য কাহাকেও এই নগর হইতে পলাইয়া বাহির হইতে দিও না,” যেহূ বলেছিলেন। (২ রাজা. ৯:১৪, ১৫) তিনি হয়তো এমনটা আশা করেছিলেন যে, অন্ততপক্ষে যোরামের প্রতি অনুগত সেনাবাহিনী থেকে কোনো বিরোধিতা আসতে পারে। যেহূ এইরকম কোনো বিরোধিতার সম্ভাবনাকে দূর করে দিতে চেয়েছিলেন।
উন্মত্তের ন্যায় চালনা!
অবাক করে দিয়ে, যেহূ তার রথে চড়ে রামোৎ-গিলিয়দ থেকে যিষ্রিয়েলে যান, যা ৭২ কিলোমিটার (৪৫ মাইল) পথ দূরে অবস্থিত ছিল। তিনি যখন দ্রুতগতিতে তার গন্তব্যের কাছাকাছি আসেন, তখন দুর্গের একজন প্রহরী ‘যেহূর দলকে’ দেখতে পান। (২ রাজা. ৯:১৭) খুব সম্ভবত, যেহূ তার সঙ্গে করে এক বিরাট সেনাবাহিনী নিয়ে এসেছিলেন এই বিষয়টা নিশ্চিত করার জন্য যে, তার উদ্দেশ্য যেন সফল হয়।
একটা রথে যে সাহসী যেহূ রয়েছেন, তা বুঝতে পেরে সেই প্রহরী চিৎকার করে বলেছিলেন: “সে উন্মত্তের ন্যায় চালায়।” (২ রাজা. ৯:২০) সাধারণ সময়েই যদি যেহূ এভাবে রথ চালিয়ে থাকেন, তাহলে এই বিশেষ কার্যভারের কারণে তার দ্রুত চালনা নিশ্চয়ই আরও উন্মত্তের ন্যায় ছিল।
যেহূ, তার কাছে পাঠানো দুজন বার্তাবাহকের কাছে কোনো কিছু না বলেই রাজা যোরাম এবং তার মিত্র যিহূদা-রাজ অহসিয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, যারা তাদের নিজ নিজ রথে ছিল। যোরাম যখন এই প্রশ্ন করেছিলেন যে, “যেহূ, মঙ্গল ত?” তখন তাকে রাগান্বিতভাবে এই উত্তর দেওয়া হয়েছিল: “যে পর্য্যন্ত তোমার মাতা ঈষেবলের এত ব্যভিচার ও মায়াবিত্ব থাকে, সে পর্য্যন্ত মঙ্গল কোথায়?” এই উত্তরে ভীত হয়ে যোরাম পালানোর জন্য উদ্যত হন। কিন্তু, তার তুলনায় যেহূ আরও দ্রুত রথ চালাতেন! একটা ধনুক নিয়ে তিনি যোরামের হৃৎপিণ্ডের মধ্যে একটা তির নিক্ষেপ করেন এবং রাজা নিজের রথের মধ্যে পড়ে মারা যান। যদিও অহসিয় কোনোরকমে পালাতে পেরেছিলেন কিন্তু পরে যেহূ তার পিছু ধাওয়া করে তাকেও হত্যা করেছিলেন।—২ রাজা. ৯:২২-২৪, ২৭.
আহাবের পরিবারের পরবর্তী যে-সদস্যকে হত্যা করতে হবে, তিনি হলেন দুষ্ট রানি ঈষেবল। উপযুক্তভাবেই যেহূ তাকে ‘শাপগ্রস্তা’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। যেহূ যখন রথে করে যিষ্রিয়েলে আসেন, তখন তিনি তাকে রাজপ্রাসাদের জানালা দিয়ে নীচে তাকিয়ে থাকতে দেখেন। অনর্থক কথা বলে সময় নষ্ট না করে যেহূ নপুংসকদেরকে আজ্ঞা দেন, যেন তারা ঈষেবলকে জানালা থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দেয়। তা করার পর, যেহূ তার ঘোড়া দিয়ে ঈষেবলকে পদতলে দলিত করেন, যিনি সমস্ত ইস্রায়েলকে কলুষিত করেছিলেন। এরপর, যেহূ দুষ্ট আহাবের পরিবারের আরও অনেক সদস্যকে হত্যা করার জন্য অগ্রসর হন।—২ রাজা. ৯:৩০-৩৪; ১০:১-১৪.
যদিও দৌরাত্ম্যের বিষয়টা চিন্তা করাটাই অপ্রীতিকর, তবুও আমাদেরকে এই বিষয়টা উপলব্ধি করতে হবে যে, তখনকার সময়ে যিহোবা তাঁর বিচার সম্পাদন করার জন্য তাঁর দাসদের ব্যবহার করতেন। শাস্ত্র বলে: “যোরামের নিকটে আসাতে ঈশ্বর হইতে অহসিয়ের নিপাত ঘটিল; কেননা তিনি যখন আসিলেন, তখন যিহোরামের সহিত নিম্শির পুত্ত্র সেই যেহূর বিরুদ্ধে বাহির হইলেন, যাঁহাকে ঈশ্বর আহাব-কুলের উচ্ছেদ করিবার জন্য অভিষেক করিয়াছিলেন।” (২ বংশা. ২২:৭) তিনি যখন যোরামের দেহ তার নিজের রথ থেকে নিক্ষেপ করেছিলেন, তখন যেহূ বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই কাজ নাবোতকে যে আহাব হত্যা করেছিলেন, সেটার উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করার বিষয়ে যিহোবার প্রতিজ্ঞা পরিপূর্ণ করেছে। অধিকন্তু, যেহূকে ঈষবলের দ্বারা হত ‘ঈশ্বরের দাসের রক্তের প্রতিশোধ’ নেওয়ার আজ্ঞাও দেওয়া হয়েছিল।—২ রাজা. ৯:৭, ২৫, ২৬; ১ রাজা. ২১:১৭-১৯.
বর্তমানে, যিহোবার কোনো দাসই বিশুদ্ধ উপাসনার বিরোধীদের বিরুদ্ধে আক্ষরিকভাবে সেনাবাহিনী ব্যবহার করেন না। “প্রতিশোধ দেওয়া আমারই কর্ম্ম,” ঈশ্বর বলেন। (ইব্রীয় ১০:৩০) কিন্তু, মণ্ডলীকে সম্ভাব্য কলুষিত প্রভাব থেকে মুক্ত রাখার জন্য খ্রিস্টান প্রাচীনদেরকে হয়তো যেহূর মতো সাহসী পদক্ষেপ নিতে হয়। (১ করি. ৫:৯-১৩) আর মণ্ডলীর সকল সদস্যকে সমাজচ্যুত ব্যক্তির সঙ্গে মেলামেশা করা এড়িয়ে চলার ব্যাপারে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হতে হবে।—২ যোহন ৯-১১.
যিহোবার জন্য যেহূর উদ্যোগ
তার কার্যভার সম্পাদন করার ব্যাপারে যেহূর মনোভাব, বিশ্বস্ত যিহোনাদবের প্রতি বলা তার পরবর্তী কথাগুলো থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়: “আমার সঙ্গে চল, সদাপ্রভুর নিমিত্ত আমার যে উদ্যোগ, তাহা দেখ।” যিহোনাদব সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন, যেহূর রথে উঠেছিলেন এবং তার সঙ্গে করে শমরিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে যেহূ “বালের পূজকদিগকে বিনষ্ট করিবার আশয়ে এই ছল করিয়াছিলেন।”—২ রাজা. ১০:১৫- ১৭, ১৯.
যেহূ এই ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, তিনি বালের উদ্দেশে “মহাযজ্ঞ” বা বলিদান করতে যাচ্ছেন। (২ রাজা. ১০:১৮, ১৯) একজন পণ্ডিত ব্যক্তি বলেন: “যেহূর এই কথাগুলোর মধ্যে চতুরতা ছিল।” যদিও এখানে ব্যবহৃত শব্দটির “অর্থ মূলত ‘বলিদান’ কিন্তু এটা ধর্মভ্রষ্টদের ‘হত্যা’ করার জন্যও ব্যবহৃত হয়েছে।” যেহেতু যেহূ চাননি যে, একজন বাল উপাসকও যেন এই অনুষ্ঠান থেকে বাদ না পড়ে, তাই তিনি তাদের সকলকে বালের গৃহে সমবেত করেছিলেন এবং তাদেরকে ভিন্ন ধরনের বস্ত্র পরিয়েছিলেন। “হোম কার্য্য সাঙ্গ হইলে” যেহূ তার ৮০ জন অস্ত্রধারী লোকদের দিয়ে বালের উপাসকদের হত্যা করান। এরপর, তিনি বালের গৃহ ভেঙ্গে চূর্ণ করে দেন এবং এর মধ্যে শৌচাগার তৈরি করেন আর এভাবে সেই জায়গাকে উপাসনার জন্য একেবারে অযোগ্য করে তোলেন।—২ রাজা. ১০:২০-২৭.
এটা ঠিক যে, যেহূ অনেক রক্তপাত ঘটিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও, শাস্ত্র তাকে একজন সাহসী ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরে, যিনি ইস্রায়েলকে ঈষেবল এবং তার পরিবারের পীড়নকর শাসন থেকে মুক্ত করেছিলেন। ইস্রায়েলের কোনো নেতা যদি এইরকম কাজে সফল হতে চাইতেন, তাহলে তাকে একজন সাহসী, দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ, উদ্যোগী ব্যক্তি হতে হতো। “এটা অনেক কঠিন কাজ ছিল এবং এটা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে করা হয়েছিল,” একটা বাইবেল অভিধান মন্তব্য করে। “কঠোরভাবে করা না হলে সম্ভবত ইস্রায়েল থেকে বাল উপাসনা নির্মূল করার বিষয়টা ব্যর্থ হতো।”
নিঃসন্দেহে, আপনি লক্ষ করতে পারেন যে, বর্তমানে খ্রিস্টানরা যে-পরিস্থিতিগুলোর মুখোমুখি হয়, সেগুলোর জন্য তাদের যেহূর মতো কিছু গুণাবলি প্রকাশ করার প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, সেই সময় আমাদের কেমন প্রতিক্রিয়া দেখানো উচিত, যখন আমরা এমন কার্যকলাপে রত হওয়ার জন্য প্রলোভিত হই, যেগুলোকে যিহোবা নিন্দা করেন? সেটা প্রত্যাখ্যান করার ব্যাপারে আমাদের তৎপর, সাহসী এবং উদ্যোগী হওয়া উচিত। ঈশ্বরীয় ভক্তির বিষয়টা আসলে আমাদের যিহোবার প্রতি উদ্যোগী হতে হবে।
যিহোবার ব্যবস্থা অনুযায়ী চলার জন্য সতর্ক হোন
এই গল্পের শেষ এক সতর্কবাণী প্রদান করে। যেহূ ‘বৈথেলস্থ ও দানস্থ স্বর্ণময় দুই গোবৎসের অনুগমন হইতে ফিরিলেন না।’ (২ রাজা. ১০:২৯) এমন একজন ব্যক্তির পক্ষে প্রতিমাপূজা সহ্য করা কীভাবে সম্ভব, যাকে কিনা বিশুদ্ধ উপাসনার ব্যাপারে এতটা উদ্যোগী বলে মনে হয়েছিল?
যেহূ হয়তো এইরকমটা মনে করেছিলেন যে, যিহূদা থেকে ইস্রায়েল রাজ্যকে স্বাধীন হওয়ার জন্য দুই রাজ্যকে ধর্মীয় দিক দিয়ে পৃথক হতে হবে। তাই, ইস্রায়েলের প্রাক্তন রাজাদের মতো বাছুর উপাসনাকে স্থায়ী করার মাধ্যমে তিনি তাদেরকে পৃথক রাখার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু, এটা যিহোবার প্রতি বিশ্বাসের অভাবকে প্রকাশ করেছিল, যিনি তাকে রাজা করেছিলেন।
যিহোবা যেহূর প্রশংসা করেছিলেন, কারণ ‘ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যাহা ন্যায্য, তাহা করিয়া তিনি ভাল কাজ করিয়াছেন।’ তবে, যেহূ “সর্ব্বান্তঃকরণে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ব্যবস্থানুসারে চলিবার জন্য সতর্ক হইলেন না।” (২ রাজা. ১০:৩০, ৩১) এর আগে যেহূ যেসমস্ত কাজ করেছিলেন, সেটা বিবেচনা করে আপনি হয়তো অবাক এবং দুঃখিত হতে পারেন। কিন্তু, এটা আমাদের জন্য একটা শিক্ষা প্রদান করে। আমরা কখনো যিহোবার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে হালকাভাবে নিতে পারি না। প্রতিদিন, তাঁর বাক্য অধ্যয়ন করার, সেটা নিয়ে ধ্যান করার এবং আমাদের স্বর্গীয় পিতার কাছে আন্তরিকভাবে প্রার্থনা করার মাধ্যমে ঈশ্বরের প্রতি আমাদের আনুগত্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে হবে। তাই, আসুন আমরা ক্রমাগত সর্বান্তকরণে যিহোবার ব্যবস্থা অনুযায়ী চলার জন্য আমাদের যথাসাধ্য করি।—১ করি. ১০:১২.
[৪ পৃষ্ঠার বাক্স]
জগতের ইতিহাসে যেহূ
সমালোচকেরা প্রায়ই এই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে যে, শাস্ত্রে উল্লেখিত চরিত্রগুলো আসলেই বাস্তবে ছিল কি না। তাই, বাইবেল ছাড়াও অন্য কোনো জায়গায় কি যেহূ সম্বন্ধে কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে?
অন্ততপক্ষে, প্রাচীন অশূরের তিনটে নথিপত্রে ইস্রায়েলের এই রাজার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে একটা যেহূকে অথবা তার প্রতিনিধিদের মধ্যে একজনকে দেখাচ্ছে বলে দাবি করা হয়, যিনি অশূরীয় রাজা শল্মনেষর ৩য়কে প্রণিপাত করছেন এবং উপঢৌকন দিচ্ছেন। এর সঙ্গে দেওয়া অভিলিখনে এভাবে বলা হয়েছে: “অম্রির (হুমরির) ছেলে যেহূর (আউয়া) উপঢৌকন; আমি তার কাছ থেকে রুপা, সোনা, একটা সোনার সাপ্লু-বাটী, নীচে কাজ করা একটা সোনার ফুলদানি, একটা সোজা সোনার গ্লাস, সোনার বালতি, টিন, রাজার জন্য একটা রাজদণ্ড (এবং) কাঠের পুরুহ্তু [শেষের শব্দটির অর্থ অজানা রয়ে গিয়েছে] গ্রহণ করেছি।” যেহূ “অম্রির” নিজের “পুত্ত্র” ছিলেন না, কিন্তু এই অভিব্যক্তিটি ইস্রায়েল রাজাদের উত্তরসূরিকে নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে আর তা সম্ভবত অম্রির খ্যাতি ছিল বলে এবং তিনি ইস্রায়েলের রাজধানী শমরিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বলে।
অশূরীয় রাজাকে যেহূ সম্ভবত যে-উপঢৌকন দিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়, সেটার সত্যতা সম্বন্ধে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না। তা সত্ত্বেও, তিনি যেহূ সম্বন্ধে তিন বার উল্লেখ করেন—ওপরের নথিপত্রে, শল্মনেষর মূর্তির নথিপত্রে এবং অশূরিয়ার রাজবংশের ইতিহাসে। এই তথ্যগুলো, বাইবেলের এই চরিত্রের ঐতিহাসিক বাস্তবতা সম্বন্ধে সন্দেহের কোনো অবকাশই রাখে না।