-
গৌরবান্বিত রাজা খ্রিস্টের প্রশংসা করুন!২০১৪ প্রহরীদুর্গ | ফেব্রুয়ারি ১৫
-
-
রাজা ‘সত্যের পক্ষে’ বাহনে চড়েন
১১. কীভাবে খ্রিস্ট “সত্যের পক্ষে” বাহনে চড়েন?
১১ গীতসংহিতা ৪৫:৪ পদ পড়ুন। রাজা ও যোদ্ধা হিসেবে খ্রিস্ট এলাকা দখল এবং লোকেদের জয় করার জন্য যুদ্ধ করবেন না। তিনি এক মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ধার্মিকতা সহকারে যুদ্ধ করবেন। তিনি “সত্যের ও ধার্ম্মিকতাযুক্ত নম্রতার পক্ষে” বাহনে চড়েন। সবচেয়ে বড়ো যে-সত্যের পক্ষসমর্থন করতে হবে, তা হল যিহোবা হচ্ছেন নিখিলবিশ্বের শাসক। শয়তান যিহোবার শাসনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, যখন সে তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল। তখন থেকে সেই মৌলিক সত্য নিয়ে মন্দদূত এবং মানুষেরা তর্ক করছে। এখনই হচ্ছে সেই সময়, যখন যিহোবার অভিষিক্ত রাজা বাহনে চড়ে যিহোবার কর্তৃত্ব করার অধিকারের বিষয়টা চিরতরে প্রতিষ্ঠিত করবেন।
১২. কীভাবে রাজা “নম্রতার পক্ষে” বাহনে চড়েন?
১২ এ ছাড়া, রাজা “নম্রতার পক্ষে” বাহনে চড়েন। ঈশ্বরের একজাত পুত্র হিসেবে, তিনি নম্রতার ক্ষেত্রে এবং পিতার কর্তৃত্বের প্রতি অনুগতভাবে বশীভূত থাকার বিষয়ে এক চমৎকার উদাহরণ স্থাপন করেছেন। (যিশা. ৫০:৪, ৫; যোহন ৫:১৯) রাজার সমস্ত অনুগত প্রজাকে অবশ্যই তাঁর উদাহরণ অনুসরণ করতে এবং সমস্ত বিষয়ে নম্রভাবে যিহোবার কর্তৃত্বের বশীভূত হতে হবে। যারা তা করবে, একমাত্র তারাই ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাত নতুন জগতে বেঁচে থাকার সুযোগ পাবে।—সখ. ১৪:১৬, ১৭.
১৩. কীভাবে খ্রিস্ট ‘ধার্ম্মিকতার পক্ষে’ বের হন?
১৩ এ ছাড়া, খ্রিস্ট ‘ধার্ম্মিকতার পক্ষে’ বের হন। রাজা যে-সত্যের পক্ষসমর্থন করেন, তা হল সেই ধার্মিকতা, যেটাকে ঈশ্বর “ধার্ম্মিকতা” বলে মনে করেন আর তা হল, কোনটা সঠিক এবং কোনটা ভুল সেই বিষয়ে যিহোবার মান। (রোমীয় ৩:২১; দ্বিতীয়. ৩২:৪) রাজা যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধে যিশাইয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “এক রাজা ধার্ম্মিকতায় রাজত্ব করিবেন।” (যিশা. ৩২:১) যিশুর শাসন প্রতিজ্ঞাত ‘নূতন আকাশমণ্ডল’ এবং ‘নূতন পৃথিবী’ নিয়ে আসবে, যেখানে “ধার্ম্মিকতা বসতি করে।” (২ পিতর ৩:১৩) সেই নতুন জগতের প্রত্যেক বাসিন্দাকে যিহোবার মান অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে।—যিশা. ১১:১-৫.
রাজা “ভয়াবহ কার্য্য” সম্পন্ন করেন
১৪. কীভাবে খ্রিস্টের দক্ষিণ হস্ত “ভয়াবহ কার্য্য” সম্পন্ন করবে? (শুরুতে দেওয়া ছবিটা দেখুন।)
১৪ রাজা যখন বাহনে চড়েন, তখন তিনি তাঁর কটিদেশে একটা খড়্গ বন্ধন করেন। (গীত. ৪৫:৩) কিন্তু, এখন দক্ষিণ হস্ত দ্বারা সেই খড়্গ ব্যবহার করার সময় আসে। গীতরচক ভবিষ্যদ্বাণী করেন: “তোমার দক্ষিণ হস্ত তোমাকে ভয়াবহ কার্য্য শিখাইবে।” (গীত. ৪৫:৪) আরমাগিদোনের সময় যিশু খ্রিস্ট যখন যিহোবার বিচার নিয়ে আসার জন্য বাহনে চড়বেন, তখন তিনি তাঁর শত্রুদের বিরুদ্ধে “ভয়াবহ কার্য্য” সম্পন্ন করবেন। শয়তানের বিধিব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য যিশু কোন মাধ্যম ব্যবহার করবেন, তা আমরা জানি না। কিন্তু, এই পদক্ষেপ পৃথিবীর সেই লোকেদের মধ্যে ভয়ের সৃষ্টি করবে, যারা রাজার শাসনের প্রতি বশীভূত হওয়ার বিষয়ে ঈশ্বরের সাবধানবাণীর প্রতি কান দেয়নি। (পড়ুন, গীতসংহিতা ২:১১, ১২.) শেষকাল সম্বন্ধীয় ভবিষ্যদ্বাণীতে যিশু বলেছিলেন যে, “ভয়ে, এবং ভূমণ্ডলে যাহা যাহা ঘটিবে তাহার আশঙ্কায়” লোকেদের “প্রাণ উড়িয়া যাইবে; কেননা আকাশ-মণ্ডলের পরাক্রম সকল বিচলিত হইবে।” তিনি আরও বলেছিলেন: “আর তৎকালে তাহারা মনুষ্যপুত্রকে পরাক্রম ও মহাপ্রতাপ সহকারে মেঘযোগে আসিতে দেখিবে।”—লূক ২১:২৬, ২৭.
১৫, ১৬. কাদের নিয়ে সেই ‘সৈন্য’ গঠিত, যারা খ্রিস্টের পিছনে পিছনে আসে?
১৫ বিচার নিয়ে আসার জন্য “পরাক্রম ও মহাপ্রতাপ সহকারে” রাজার আসার বিষয়ে ঘোষণা করে প্রকাশিত বাক্য বই বলে: “আমি দেখিলাম, স্বর্গ খুলিয়া গেল, আর দেখ, শ্বেতবর্ণ একটী অশ্ব; যিনি তাহার উপরে বসিয়া আছেন, তিনি বিশ্বাস্য ও সত্যময় নামে আখ্যাত, এবং তিনি ধর্ম্মশীলতায় বিচার ও যুদ্ধ করেন। আর স্বর্গস্থ সৈন্যগণ তাঁহার অনুগমন করে, তাহারা শুক্লবর্ণ অশ্বে আরোহী, এবং শ্বেত শুচি মসীনা-বস্ত্র পরিহিত। আর তাঁহার মুখ হইতে এক তীক্ষ্ণ তরবারি নির্গত হয়, যেন তদ্দ্বারা তিনি জাতিগণকে আঘাত করেন; আর তিনি লৌহদণ্ড দ্বারা তাহাদিগকে শাসন করিবেন; এবং তিনি সর্ব্বশক্তিমান্ ঈশ্বরের প্রচণ্ড ক্রোধরূপ মদিরাকুণ্ড দলন করেন।”—প্রকা. ১৯:১১, ১৪, ১৫.
১৬ স্বর্গীয় ‘সৈন্য’ নিয়ে গঠিত খ্রিস্টের সহ-যোদ্ধারা কারা, যারা তাঁর পিছনে পিছনে যুদ্ধ করতে আসে? শয়তান ও তার মন্দদূতদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করার জন্য তিনি যখন প্রথম তাঁর খড়্গ বন্ধন করেন, তখন যিশুর সঙ্গে ‘তাঁহার দূতগণও’ ছিল। (প্রকা. ১২:৭-৯) তাই, এই উপসংহারে আসা যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় যে, আরমাগিদোনের যুদ্ধের সময় খ্রিস্টের সৈন্যদের মধ্যে পবিত্র দূতেরাও থাকবে। তাঁর সৈন্যদের মধ্যে কি অন্যেরাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে? যিশু তাঁর অভিষিক্ত ভাইদের কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেছিলেন: “যে জয় করে, ও শেষ পর্য্যন্ত আমার আদিষ্ট কার্য্য সকল পালন করে, তাহাকে আমি আপনি পিতা হইতে যেরূপ পাইয়াছি, তদ্রূপ ‘জাতিগণের উপরে কর্ত্তৃত্ব দিব; তাহাতে সে লৌহদণ্ড দ্বারা তাহাদিগকে এমনি শাসন করিবে যে, কুম্ভকারের মৃৎপাত্রের ন্যায় চুরমার হইয়া যাইবে’।” (প্রকা. ২:২৬, ২৭) তাই, খ্রিস্টের স্বর্গীয় সৈন্যদের মধ্যে তাঁর সেই অভিষিক্ত ভাইয়েরাও থাকবে, যারা সেই সময়ের মধ্যে তাদের স্বর্গীয় পুরস্কার লাভ করবে। জাতিগণকে লৌহদণ্ড দিয়ে শাসন করার সময় তিনি যখন “ভয়াবহ কার্য্য” সম্পন্ন করবেন, তখন অভিষিক্ত সহ-শাসকরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।
-
-
গৌরবান্বিত রাজা খ্রিস্টের প্রশংসা করুন!২০১৪ প্রহরীদুর্গ | ফেব্রুয়ারি ১৫
-
-
১৯. কীভাবে খ্রিস্ট “কৃতকার্য্য” হবেন এবং তাঁর জয় সম্পন্ন করবেন?
১৯ পৃথিবীতে শয়তানের দুষ্ট বিধিব্যবস্থা ধ্বংস করে দেওয়ার পর, খ্রিস্ট “স্বীয় প্রতাপে কৃতকার্য্য” হবেন। (গীত. ৪৫:৪) শয়তান ও তার মন্দদূতদেরকে অগাধলোকে নিক্ষেপ করার মাধ্যমে তিনি তাঁর জয় সম্পন্ন করবেন। আর হাজার বছরের রাজত্বের পুরো সময় তিনি তাদেরকে সেখানে আটকে রাখবেন। (প্রকা. ২০:২, ৩) দিয়াবল এবং তার দূতদেরকে একেবারে নিষ্ক্রিয় করে দেওয়ায় পৃথিবীর অধিবাসীরা শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকবে এবং তারা পুরোপুরিভাবে তাদের বিজয়ী ও গৌরবান্বিত রাজার বশীভূত হয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ পাবে। কিন্তু, পৃথিবীকে ধীরে ধীরে পরমদেশে রূপান্তরিত হতে দেখার আগে, রাজা এবং তাঁর স্বর্গীয় সহযোগীদের সঙ্গে আনন্দ করার আরেকটা কারণ তাদের থাকবে। সেই আনন্দময় ঘটনা পরের প্রবন্ধে পরীক্ষা করে দেখা হবে।
-