পাঠ ১৪
কোন ধরনের উপাসনা ঈশ্বরকে খুশি করে?
আগের পাঠে আমরা দেখেছি যে, সমস্ত ধর্ম ঈশ্বরকে খুশি করে না। এর মানে কি এই যে, ঈশ্বরকে খুশি করা অসম্ভব? আসলে, বিষয়টা এমন নয়। বাইবেল আমাদের জানায়, কোন ধরনের “উপাসনা [বা ধর্ম]” ঈশ্বরকে খুশি করে। (যাকোব ১:২৭, পাদটীকা) আসুন, তা জানি।
১. কীসের উপর ভিত্তি করে আমাদের উপাসনা করা উচিত?
যিশু ঈশ্বরকে বলেছিলেন: “তোমার বাক্যই হল সত্য।” (যোহন ১৭:১৭) তাই, আমাদের উপাসনা ঈশ্বরের বাক্য বাইবেলের উপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত অর্থাৎ বাইবেল যেভাবে বলে, আমাদের সেভাবেই উপাসনা করা উচিত। কিন্তু, কিছু ধর্মগুরু ঈশ্বরের বাক্য থেকে শেখানোর পরিবর্তে মানুষের বিভিন্ন শিক্ষা এবং রীতিনীতি অন্যদের শিখিয়েছে। যিহোবা সেই ব্যক্তিদের প্রতি খুশি হন না, যারা ‘ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করে থাকে।’ (পড়ুন, মার্ক ৭:৯.) কিন্তু, আমরা যদি বাইবেলের উপর ভিত্তি করে উপাসনা করি এবং যিহোবার আদেশ মেনে চলি, তা হলে তিনি খুশি হবেন।
২. কীভাবে আমাদের যিহোবার উপাসনা করা উচিত?
সৃষ্টিকর্তা হিসেবে একমাত্র যিহোবাই আমাদের উপাসনা পাওয়ার যোগ্য। (প্রকাশিত বাক্য ৪:১১) এর অর্থ হল, আমাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে তাঁকে ভালোবাসতে হবে এবং একমাত্র তাঁকেই উপাসনা করতে হবে। যিহোবা চান না, আমরা কোনো ছবি বা মূর্তির সাহায্যে তাঁর উপাসনা করি।—পড়ুন, যিশাইয় ৪২:৮.
আমাদের উপাসনা যেন অবশ্যই “পবিত্র” এবং যিহোবার কাছে “প্রীতিজনক” হয়। (রোমীয় ১২:১) এর অর্থ হল, আমাদের অবশ্যই সঠিক ও ভুলের বিষয়ে যিহোবার যে-মান রয়েছে, সেই অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, বিয়ে সম্বন্ধে যিহোবার যে-মান রয়েছে, সেগুলো আমরা স্বেচ্ছায় মেনে চলি, কারণ আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি। এ ছাড়া, আমরা সেই সমস্ত অভ্যাস থেকে দূরে থাকি, যেগুলো যিহোবা পছন্দ করেন না এবং যেগুলো আমাদের ক্ষতি করতে পারে যেমন, তামাক সেবন করা, পান ও সুপারি খাওয়া, ড্রাগ ও মদের প্রতি আসক্তি গড়ে তোলা এবং অন্যান্য নেশা করা।a
৩. কেন আমাদের যিহোবার লোকদের সঙ্গে তাঁর উপাসনা করা উচিত?
সাপ্তাহিক সভাগুলো মণ্ডলীতে আমাদের যিহোবার ‘স্তব [‘প্রশংসা,’ NW]’ করার সুযোগ করে দেয়। (গীতসংহিতা ১১১:১, ২) যিহোবার প্রশংসা অর্থাৎ তাঁর উপাসনা করার একটা উপায় হল, তাঁর উদ্দেশে গান গাওয়া। (পড়ুন, গীতসংহিতা ১০৪:৩৩.) যিহোবা আমাদের ভালোবাসেন আর তাই তিনি আমাদের সভাগুলোতে যোগ দিতে বলেন। তিনি জানেন যে, সভাগুলো আমাদের চিরকাল জীবন উপভোগ করতে সাহায্য করবে। আমরা যখন সভাগুলোতে যোগ দিই, তখন আমরা অন্যদের উৎসাহিত করি এবং নিজেরাও উৎসাহিত হই।
গভীরভাবে গবেষণা করুন
যিহোবা কেন চান না, আমরা কোনো ছবি বা মূর্তির সাহায্যে তাঁর উপাসনা করি? কোন কোন উপায়ে আমরা তাঁর উপাসনা করতে পারি? আসুন, তা জানি।
৪. যিহোবা চান না, আমরা কোনো ছবি বা মূর্তির সাহায্যে তাঁর উপাসনা করি
যিহোবা কেন এই ধরনের উপাসনায় খুশি হন না, আসুন তা দেখি। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
প্রাচীন কালে কিছু লোক যখন যিহোবার উপাসনা করার জন্য একটা মূর্তি বানিয়েছিল, তখন কী ঘটেছিল?
অনেক লোক বলে থাকে, যখন তারা মূর্তির সাহায্যে উপাসনা করে, তখন তাদের মনে হয় যেন ঈশ্বর তাদের সঙ্গে রয়েছেন। কিন্তু, যিহোবাও কি একইরকম মনে করেন? যাত্রাপুস্তক ২০:৪-৬ এবং গীতসংহিতা ১০৬:৩৫, ৩৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
লোকদের আপনি কোন কোন বস্তু বা ছবির উপাসনা করতে দেখেছেন?
মূর্তির সাহায্যে উপাসনা করার বিষয়ে যিহোবা কী মনে করেন?
মূর্তির সাহায্যে উপাসনা করার বিষয়ে আপনি কী মনে করেন?
৫. একমাত্র যিহোবার উপাসনা করার মাধ্যমে আমরা সমস্ত মিথ্যা ধারণা থেকে মুক্ত হতে পারব
যিহোবাকে সঠিক উপায়ে উপাসনা করার মাধ্যমে কীভাবে আমরা মিথ্যা ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস থেকে মুক্ত হতে পারব, আসুন তা দেখি। ভিডিওটা দেখুন।
গীতসংহিতা ৯১:১৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
একমাত্র যিহোবার উপাসনা করার মাধ্যমে আমরা যখন দেখাই যে, আমরা তাঁকে ভালোবাসি, তখন তিনি আমাদের জন্য কী করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন?
৬. সভাগুলোতে আমরা যিহোবার উপাসনা করি
সভাগুলোতে আমরা গান গাওয়ার এবং মন্তব্য করার মাধ্যমে যিহোবার প্রশংসা করি এবং একে অন্যকে উৎসাহিত করি। গীতসংহিতা ২২:২২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
সভাতে অন্যদের মন্তব্য শুনে আপনার কেমন লাগে?
সভাতে একটা মন্তব্য করার জন্য আপনিও কি প্রস্তুতি নিতে চান?
৭. বাইবেলের কথাগুলো আমরা যখন অন্যদের জানাই, তখন যিহোবা খুশি হন
বাইবেল থেকে আমরা যা শিখেছি, তা অন্যদের জানাতে পারি। গীতসংহিতা ৯:১ এবং ৩৪:১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
বাইবেল থেকে আপনি যে-বিষয়গুলো শিখেছেন, সেগুলোর মধ্যে থেকে কোন বিষয়টা অন্যদের জানাতে চান?
কেউ কেউ বলে থাকে: “ঈশ্বরকে আমরা যেকোনো উপায়ে উপাসনা করতে পারি, শুধু মন পরিষ্কার থাকলেই হবে।”
আপনি কী মনে করেন?
সারাংশ
আমরা যখন একমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তার উপাসনা করি, মণ্ডলীর সভাগুলোতে তাঁর প্রশংসা করি এবং বাইবেলের কথাগুলো অন্যদের জানাই, তখন তিনি খুশি হন।
পুনরালোচনা
কীসের উপর ভিত্তি করে আমাদের উপাসনা করা উচিত?
কেন আমাদের একমাত্র যিহোবার উপাসনা করা উচিত?
কেন আমাদের যিহোবার লোকদের সঙ্গে তাঁর উপাসনা করা উচিত?
আরও জানুন
“আমি আর মূর্তির দাসত্বে নেই” এই জীবন কাহিনী পড়ার মাধ্যমে জানুন যে, মূর্তির সাহায্যে উপাসনা করা বন্ধ করার পর একজন মহিলার কেমন লেগেছিল।
“বাইবেল জীবনকে পরিবর্তন করে” (প্রহরীদুর্গ, জুলাই ১, ২০১১, ইংরেজি)
মণ্ডলীর সভাগুলোতে মন্তব্য করার জন্য আপনি কী করতে পারেন, তা জানুন।
“মণ্ডলীতে যিহোবার প্রশংসা করুন” (প্রহরীদুর্গ, জানুয়ারি ২০১৯)
একজন যুবকের পক্ষে মণ্ডলীর সভাগুলোতে যোগ দেওয়া কঠিন ছিল। তা সত্ত্বেও, সভাগুলোতে যোগ দেওয়ার ফলে কীভাবে তিনি উপকৃত হয়েছিলেন, তা দেখুন।
অনেক লোক বিশ্বাস করে, ক্রুশ হল খ্রিস্টধর্মের প্রতীক। কিন্তু, উপাসনায় আমাদের কি এটা ব্যবহার করা উচিত?
“কেন যিহোবার সাক্ষিরা উপাসনায় ক্রুশ ব্যবহার করে না?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
a এই বিষয়গুলো নিয়ে পরের পাঠগুলোতে আলোচনা করা হবে।