পাঠ ৩৬
সমস্ত বিষয়ে সৎ হোন
প্রত্যেক ব্যক্তি তার বন্ধুদের কাছ থেকে আশা করে, তারা যেন সত্যি কথা বলে এবং সৎ হয়। যিহোবাও তাঁর বন্ধুদের কাছ থেকে এটাই আশা করেন। কিন্তু, এই জগতে সৎ থাকা সহজ নয়। তা সত্ত্বেও, সমস্ত বিষয়ে সৎ থাকার কোন কোন উপকারিতা রয়েছে? আসুন তা জানি।
১. সৎ হওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ কী?
আমরা যখন অন্যদের সত্যি কথা বলি এবং সৎ হই, তখন আমরা দেখাই যে, আমরা যিহোবাকে ভালোবাসি এবং তাঁকে সম্মান করি। একটু চিন্তা করে দেখুন, যিহোবা আমাদের বিষয়ে সবকিছু জানেন। আমরা কী চিন্তা করি, আমরা কী করি, তিনি সবকিছু জানেন। (ইব্রীয় ৪:১৩) তিনি যখন দেখেন, আমরা যেকোনো পরিস্থিতিতে সৎ আছি, তখন তিনি অনেক খুশি হন। তাঁর বাক্য আমাদের জানায়: “খল সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র; কিন্তু সরলগণের” বা সৎ ব্যক্তিদের “সহিত তাঁহার গূঢ় মন্ত্রণা [ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব, NW]।”—হিতোপদেশ ৩:৩২.
২. কীভাবে আমরা রোজকার জীবনে দেখাতে পারি যে, আমরা সৎ?
যিহোবা চান আমরা যেন ‘আপন আপন প্রতিবাসীর কাছে সত্য বলি।’ (সখরিয় ৮:১৬, ১৭) এর অর্থ হল, আমরা যেন আমাদের পরিবার, মণ্ডলীর ভাই-বোন, সহকর্মী এবং সরকারি অফিসারদের কাছে মিথ্যা কথা না বলি আর তাদের ভুল তথ্য না দিই। আমরা যেন কখনো কারো জিনিস চুরি না করি এবং কখনো কাউকে না ঠকাই। (পড়ুন, হিতোপদেশ ২৪:২৮ এবং ইফিষীয় ৪:২৮.) এ ছাড়া, সরকার আমাদের কাছ থেকে যে-কর বা ট্যাক্স চায়, আমরা যেন সেটা দিই। (রোমীয় ১৩:৫-৭) এগুলো হল কয়েকটা উপায়, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা দেখাতে পারি যে, “আমরা সমস্ত বিষয়ে সৎভাবে জীবনযাপন করতে চাই।”—ইব্রীয় ১৩:১৮.
৩. সৎ হওয়ার ফলে কোন কোন উপকার আসবে?
লোকেরা যখন জানবে আমরা সৎ ব্যক্তি, তখন তারা আমাদের উপর নির্ভর করবে। আর মণ্ডলীর ভাই-বোনেরাও আমাদের উপর নির্ভর করতে পারবে, ফলে আমাদের মধ্যে প্রেম বৃদ্ধি পাবে এবং ভাই-বোনদের সঙ্গে এক পরিবারের মতো সম্পর্ক গড়ে উঠবে। সৎ হওয়ার ফলে আমাদের এক শুদ্ধ বিবেক থাকবে। শুধু তা-ই নয়, আমরা ‘আমাদের ত্রাণকর্তা ঈশ্বরের শিক্ষার সৌন্দর্যকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলব’ এবং আমাদের সততা দেখে লোকেরা যিহোবার কাছে আসবে।—তীত ২:১০.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
আপনি যখন সৎ হন, তখন যিহোবার কেমন লাগে আর এর ফলে আপনার কোন কোন উপকার আসে? আপনি আর কোন কোন বিষয়ে সৎ হতে পারেন? আসুন তা জানি।
৪. আমাদের সততা দেখে যিহোবা খুশি হন
গীতসংহিতা ৪৪:২১ এবং মালাখি ৩:১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন এটা চিন্তা করা ভুল হবে যে, আমরা যিহোবার কাছে সত্য লুকাতে পারি?
সত্যি কথা বলা কঠিন বলে মনে হলেও আমরা যখন তা বলি, তখন যিহোবার কেমন লাগে?
৫. যেকোনো পরিস্থিতিতে সৎ হোন
অনেক লোক মনে করে, সবসময় সৎ হওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কিন্তু, যেকোনো পরিস্থিতিতে কেন আমাদের সৎ হওয়া উচিত, আসুন তা জানি। ভিডিওটা দেখুন।
ইব্রীয় ১৩:১৮ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কীভাবে আমরা পরিবারের লোকদের সঙ্গে সৎভাবে আচরণ করতে পারি?
কীভাবে আমরা কাজের জায়গায় কিংবা স্কুলে সৎ থাকতে পারি?
কীভাবে আমরা অন্যান্য পরিস্থিতিতে সৎ থাকতে পারি?
৬. সৎ হওয়ার ফলে আমরা উপকৃত হই
সৎ হওয়ার ফলে আমাদের হয়তো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়, কিন্তু পরবর্তী সময়ে আমরা উপকৃত হবই। গীতসংহিতা ৩৪:১২-১৬ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
সৎ হওয়ার ফলে আপনি কোন উপকার পেতে পারেন?
ক. স্বামী ও স্ত্রী যখন একে অন্যকে সত্যি কথা বলে, তখন তাদের সম্পর্ক দৃঢ় হয়
খ. একজন ব্যক্তি যখন সততার সঙ্গে কাজ করেন, তখন তিনি তার মালিকের আস্থা অর্জন করেন
গ. একজন নাগরিক যখন সততার সঙ্গে সমস্ত আইনকানুন মেনে চলেন, তখন সরকারি অফিসারদের কাছে তিনি সুনাম অর্জন করেন
কেউ কেউ বলে থাকে: “ছোটোখাটো মিথ্যা কথা বলা ভুল নয়।”
কেন আপনি বিশ্বাস করেন যে, যিহোবা সমস্ত ধরনের মিথ্যা কথাকে ঘৃণা করেন?
সারাংশ
যিহোবা চান যেন তাঁর বন্ধুরা সমস্ত বিষয়ে সৎ হয় এবং সবসময় সত্যি কথা বলে।
পুনরালোচনা
কোন কোন উপায়ে আমরা দেখাতে পারি যে, আমরা সৎ?
কেন এটা চিন্তা করা ভুল হবে যে, আমরা যিহোবার কাছে সত্য লুকাতে পারি?
কেন আপনি যেকোনো পরিস্থিতিতে সৎ হতে চাইবেন?
আরও জানুন
কীভাবে বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের সত্যি কথা বলতে শেখাতে পারেন?
নিজের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করার কোন উপকার রয়েছে?
আমরা যে-কর বা ট্যাক্স দিই, তা ভুলভাবে ব্যবহার করা হতে পারে। তারপরও, কেন আমাদের কর বা ট্যাক্স দেওয়া উচিত? আসুন তা জানি।
“ট্যাক্স কি দিতেই হবে?” (প্রহরীদুর্গ, সেপ্টেম্বর ১ ২০১১, ইংরেজি)
একজন ব্যক্তি আগে অসৎ উপায়ে জীবনযাপন করতেন। কোন বিষয়টা তাকে পরিবর্তিত হতে এবং সৎভাবে জীবনযাপন করতে সাহায্য করেছিল? আসুন তা জানি।
“আমি জেনেছি যে, যিহোবা হলেন করুণাময় ও ক্ষমাবান” (প্রহরীদুর্গ, মে ১ ২০১৫)