সধূম শলিতা কি আপনি নিভিয়ে দেবেন?
যীশু খ্রীষ্ট সকল ধরনের লোকের কাছে ঈশ্বরের রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করেছিলেন। এদের মধ্যে অনেকেই উৎপীড়িত ও নিরুৎসাহী ছিল। কিন্তু যীশু তাদের এক হৃদয়গ্রাহী সংবাদ দিয়েছিলেন। নির্যাতিত লোকেদের প্রতি তাঁর সমবেদনা ছিল।
যিশাইয়ের দ্বারা লিখিত একটি ভবিষ্যদ্বাণীর প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর দ্বারা সুসমাচার লেখক মথি, যীশুর এই সমবেদনাকে আলোকপাত করেছিলেন। খ্রীষ্টের দ্বারা পরিপূর্ণ হওয়া বাক্যগুলিকে উদ্ধৃত করে মথি লিখেছিলেন: “তিনি থেৎলা নল ভাঙ্গিবেন না, সধূম শলিতা নির্ব্বাণ করিবেন না, যে পর্য্যন্ত না ন্যায়বিচার জয়ীরূপে প্রচলিত করেন।” (মথি ১২:২০; যিশাইয় ৪২:৩) এই বাক্যগুলির দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে এবং যীশু কিভাবে এই ভবিষ্যদ্বাণীটি পরিপূর্ণ করেন?
ভবিষ্যদ্বাণীটির প্রতি দৃষ্টিপাত
নল সাধারণত জলীয় এলাকায় বৃদ্ধি পায় এবং এটি কোন দৃঢ় বা টেকসই উদ্ভিদ্ নয়। অতএব একটি “থেৎলা নল” অবশ্যই দুর্বল হবে। সুতরাং সম্ভবত এটি শাসিত বা নিপীড়িত মানুষদের চিত্রিত করে যেমন একটি ব্যক্তির ক্ষয়ে যাওয়া হাতকে যীশু বিশ্রাম দিনে আরোগ্য করে তুলেছিলেন। (মথি ১২:১০-১৪) কিন্তু সধূম শলিতাকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যদ্বাণীমূলক উক্তিটির সম্বন্ধে কী বলা যায়?
সা.শ. প্রথম শতাব্দীতে সাধারণত লোকেদের ঘরে একটি ছোট পিদিমের মাটির পাত্রে আলো জ্বালানো হত। পিদিমটি সাধারণত জলপাই তেলে ভরা থাকত। কৈশিক ক্রিয়ার ফলে, সধূম নির্মিত শলতে আগুনকে জ্বালিয়ে রাখার জন্য তেলকে উপরের দিকে শুষে নিত। অবশ্য, ‘সধূম শলিতা’ প্রায় নিভে যাওয়ার পর্যায় থাকে।
যীশু তাঁর এই সান্ত্বনাদায়ক সংবাদ এমন অনেক লোকেদের কাছে ঘোষণা করেছিলেন যারা রূপক অর্থে থেৎলা নল অর্থাৎ সম্পূর্ণরূপে নিপীড়িত হয়ে পড়েছিল। এই লোকেরা ছিল ঠিক সধূম শলিতার মত, যাদের জীবনের শেষ দীপ্তিটুকু প্রায় নিভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এরা প্রকৃতপক্ষে উৎপীড়িত ও নিরুৎসাহী ছিল। কিন্তু, যীশু এই রূপক থেৎলা নলকে ভেঙে দেননি অথবা সধূম শলিতাকে নিভিয়েও দেননি। তাঁর প্রেমপূর্ণ, কোমল, সংবেদনশীল বাক্যগুলি কষ্টভোগরত লোকেদের আরও অধিকমাত্রায় নিরুৎসাহী ও হতাশাগ্রস্ত করে তোলেনি। বরঞ্চ, তাঁর মন্তব্যগুলি ও তাদের সাথে তাঁর আচরণ এক গঠনমূলক প্রভাবের সৃষ্টি করেছিল।—মথি ১১:২৮-৩০.
আজকেও অনেকে এমন আছে যাদের সমবেদনা ও উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে কারণ তারা অনেক হৃদয়স্পর্শকারী সমস্যার সম্মুখীন হয়। এমনকি যিহোবার দাসেরাও সবসময় দৃঢ়তার এক দুর্গে থাকে না। এক এক সময় এদের মধ্যেও কয়েকজন সধূম শলিতার মত হয়ে ওঠে। সুতরাং খ্রীষ্টানদের উচিত উৎসাহজনক হয়ে ওঠা—তথাকথিত আগুনকে জ্বালিয়ে রাখা—এইভাবে একে অপরকে দৃঢ় করে তোলা।—লূক ২২:৩২; প্রেরিত ১১:২৩.
খ্রীষ্টান হিসাবে আমরা গঠনমূলক হওয়ার চেষ্টা করব। যাদের আধ্যাত্মিক সাহায্যের প্রয়োজন আছে আমরা কখনও তাদের জেনেবুঝে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা করব না। অপরকে দৃঢ় করে তোলার ক্ষেত্রে যীশুর আদর্শকে অনুকরণ করার ইচ্ছা অবশ্যই আমাদের আছে। (ইব্রীয় ১২:১-৩; ১ পিতর ২:২১) বস্তুতপক্ষে আমাদের কাছে যারা উৎসাহ কামনা করে অজান্তে আমরা যে তাদের নিরাশ করতে পারি, এটিই আমাদের অপরের সাথে আচরণের ক্ষেত্রটিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করার এক উত্তম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা নিশ্চয়ই এই ‘সধূম শলিতা নেভাতে’ চাইব না। শাস্ত্রীয় কোন্ নির্দেশগুলি এই ক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য করতে পারে?
সমালোচনার প্রভাবগুলি
যদি কোন খ্রীষ্টান “কোন অপরাধে ধরাও পড়ে, তবে আত্মিক যে তোমরা, তোমরা সেই প্রকার ব্যক্তিকে মৃদুতার আত্মায় সুস্থ কর।” (গালাতীয় ৬:১) কিন্তু, অপরের ত্রুটি দেখা এবং সুযোগ পেলেই তাকে সংশোধন করা কি যথার্থ হবে? না কি এটি ঠিক হবে যে তাদের আরও উন্নতি করতে জোর দেওয়া এই বোঝানোর দ্বারা যে তাদের এই বর্তমান প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয় আর এইভাবে তাদের মনে দোষী হওয়ার অনুভূতিকে জাগিয়ে তোলা? এমন কিছু প্রমাণ নেই যার দ্বারা দেখা যায় যে যীশু এই রকম কিছু করেছিলেন। যদিও আমাদের উদ্দেশ্য হল অপরকে উন্নতি করতে সাহায্য করা, কিন্তু যারা এই নির্দয় সমালোচনা গ্রহণ করছে তারা হয়ত দৃঢ় হওয়ার পরিবর্তে আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এমনকি অতিরিক্ত পরিমাণে যদি গঠনমূলক সমালোচনাও করা হয় তবুও তা খুবই নিরুৎসাহজনক হয়ে উঠতে পারে। যদি একজন সচেতন খ্রীষ্টানের সাধ্যমত প্রচেষ্টা অনুমোদিত না হয়, তাহলে সে হয়ত তার হাত মুছে ফেলবে আর বলবে, ‘কেনই বা চেষ্টা করা?’ অবশ্যই, সে সম্পূর্ণরূপে হাল ছেড়ে দিতে পারে।
যদিও শাস্ত্রীয় উপদেশ গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু এটি যেন নিযুক্ত প্রাচীনদের অথবা মণ্ডলীর কোন ব্যক্তিদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে প্রতিফলিত না করে। উপদেশ দেওয়া বা নেওয়াই খ্রীষ্টীয় সভার মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। বরঞ্চ আমরা একে অপরকে গড়ে তুলতে ও উৎসাহিত করার জন্য নিয়মিতভাবে মিলিত হই যাতে করে সকলে তাদের সহভাগিতা ও ঈশ্বরের পবিত্র পরিচর্যা উপভোগ করতে পারে। (রোমীয় ১:১১, ১২; ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫) এটি কতই না উত্তম যখন আমরা গুরুতর অন্যায় এবং অসিদ্ধতা যা প্রেমের সাথে উপেক্ষা করে চলা বিজ্ঞতার কাজ, এই দুটির মধ্যে পার্থক্যকে উপলব্ধি করতে পারি!—উপদেশক ৩:১, ৭; কলসীয় ৩:১৩.
সমালোচনার চাইতে বরঞ্চ উৎসাহের প্রতি লোকেরা অনেক সক্রিয়ভাবে সাড়া দিয়ে থাকে। বস্তুতপক্ষে, যখন একজন মনে করে যে অন্যায়ভাবে তার সমালোচনা করা হয়েছে তখন সে আরও বেশি করে সমালোচনাপূর্বক আচরণের কথা মনে রাখে। কিন্তু তাদের যখন যথার্থভাবে প্রশংসা করা হয়, তখন তাদের মনোভাব আরও দৃঢ় হয়ে ওঠে এবং তারা উন্নতি করতে প্ররোচিত হয়। (হিতোপদেশ ১২:১৮) আসুন যীশুর মত, আমরাও যেন উৎসাহজনক হয়ে উঠি এবং কখনও যেন ‘সধূম শলিতা নেভানোর’ চেষ্টা না করি।
তুলনা করা সম্বন্ধে কী বলা যায়?
অন্যান্য খ্রীষ্টানদের অভিজ্ঞতা শোনা খুবই উৎসাহজনক। রাজ্যের বার্তা প্রচারের ক্ষেত্রে তাঁর শিষ্যদের সফলতার কথা শুনে যীশু নিজেও আনন্দিত হয়েছিলেন। (লূক ১০:১৭-২১) ঠিক একই রকমভাবে, আমরাও যখন অপরের সফলতা, উত্তম উদাহরণ অথবা বিশ্বাসের ক্ষেত্রে তাদের বিশ্বস্ততার কথা শুনি, তখন উৎসাহিত হই এবং খ্রীষ্টীয় জীবনধারাকে এইভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে আরও বদ্ধপরিকর হই।
কিন্তু, এই তথ্যটি যদি এমনভাবে উপস্থাপিত হয় যা ইঙ্গিত করে যে, ‘আপনি ঐ সব খ্রীষ্টানদের মত এত উত্তম নন এবং আপনি যা করছেন তার চাইতে আরও বেশি কিছু করা আপনার উচিত’? এই মন্তব্য শুনে শ্রোতা কি উৎসাহের সাথে উন্নতি করার পদক্ষেপ নেবে? এটি সম্ভব যে সে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বে এবং হয়ত হাল ছেড়ে দেবে, বিশেষকরে যদি প্রায়ই তুলনামূলক আলোচনা করা হয় বা তার ইঙ্গিত দেওয়া হয়। এটি ঠিক যেন একটি শিশুকে তার বাবা অথবা মা জিজ্ঞাসা করছে, ‘তুমি কেন তোমার ভাইয়ের মত হচ্ছ না?’ তার মত এইধরনের মন্তব্য বিদ্বেষ ও নিরুৎসাহের সূচনা করতে পারে, কিন্তু তা কোন রকমভাবেই উত্তম আচরণকে প্রণোদিত করবে না। তুলনা করার বিষয়টি প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও ঠিক একইরকম প্রভাব ফেলে, এমনকি যার সাথে তুলনা করা হচ্ছে তার প্রতি একটি বিদ্বেষ মনোভাবের সৃষ্টি করে।
আমরা আশা করতে পারি না যে সকলে ঈশ্বরের পরিচর্যায় একই পরিমাণে কাজ করবে। যীশুর একটি দৃষ্টান্তে, একজন প্রভু তার দাসেদের মধ্যে কাউকে একটি, দুটি অথবা পাঁচটি রুপোর তালন্ত দিয়েছিলেন। এগুলি “যাহার যেরূপ শক্তি, তাহাকে তদনুসারে” দেওয়া হয়েছিল। দুটি দাস যারা সঠিকভাবে ব্যবসা করে তাদের তালন্তের সংখ্যা বাড়িয়ে তুলেছিল, তাদের বিশ্বস্ততার জন্য প্রশংসা করা হয়েছিল, যদিও তাদের কাজ ভিন্ন ধরনের ফল এনেছিল।—মথি ২৫:১৪-৩০.
প্রেরিত পৌল যথার্থভাবে লিখেছিলেন: “প্রত্যেক জন নিজ নিজ কর্ম্মের পরীক্ষা করুক, তাহা হইলে সে কেবল আপনার কাছে শ্লাঘা করিবার হেতু পাইবে, অপরের কাছে নয়।” (গালাতীয় ৬:৪) অতএব, প্রকৃতপক্ষে অপরকে উৎসাহ দিতে হলে আমাদের উচিত নেতিবাচক তুলনাকে এড়িয়ে চলা।
গঠন করে তোলার কয়েকটি উপায়
নিরুৎসাহীকে গড়ে তুলতে এবং ‘সধূম শলিতা নেভানকে’ এড়িয়ে চলার জন্য আমরা কী করতে পারি? উৎসাহ দেওয়ার মানে নয় কয়েকটি নির্দিষ্ট ফরমুলাকে মেনে চলা। কিন্তু, এটি খুবই সম্ভব যে আমাদের বাক্য অপরকে গড়ে তুলতে সাহায্য করবে যদি আমরা বাইবেলের নীতিগুলি প্রয়োগ করি। এগুলির মধ্যে কয়েকটি কী?
নম্র হোন। ফিলিপীয় ২:৩ পদে পৌল আমাদের উপদেশ দেন ‘প্রতিযোগিতার কিম্বা অনর্থক দর্পের বশে কিছুই কোর না।’ পরিবর্তে, আমাদের উচিত নম্রতার সাথে কথা বলা ও কাজ করা। ‘নম্রভাবে প্রত্যেক জনের উচিত আপনা হইতে অন্যকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান করা।’ পৌল বলেননি যে আমরা নিজেদের সম্বন্ধে কিছুই ভাবব না। কিন্তু, আমাদের উপলব্ধি করতে হবে যে প্রত্যেক ব্যক্তি কোন না কোন ক্ষেত্রে আমাদের চাইতে উৎকৃষ্ট। যে গ্রীক শব্দটিকে এখানে “শ্রেষ্ঠ” বলে অনুবাদ করা হয়েছে সেটি এমন এক ব্যক্তির প্রতি ইঙ্গিত করে যে “নিজস্ব কর্মের থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নিয়ে, গভীরভাবে অপরের কাজের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করে যে ক্ষেত্রটিতে সে সেই ব্যক্তির চাইতে উৎকৃষ্ট।” (নিউ টেস্টামেন্ট ওয়ার্ড স্টাডিস, জন্ অ্যালবার্ট বেঙ্গেল, খণ্ড ২, পৃষ্ঠা ৪৩২) আমরা যদি এটি করি এবং অপরকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করি, তাহলে আমরা তাদের প্রতি নম্র আচরণ দেখাব।
সম্মান দেখান। আন্তরিক মনোভাব প্রকাশ করার দ্বারা, আমরা স্পষ্ট করে দেখাই যে বিশ্বস্ত সহবিশ্বাসীদের উপর আমাদের আস্থা আছে এবং আমরা তাদের সেই ধরনের ব্যক্তিবিশেষ হিসাবে জ্ঞান করি যারা ঈশ্বরকে খুশি করতে চায়। কিন্তু ধরুন তাদের আধ্যাত্মিক সাহায্যের প্রয়োজন। তখন আসুন আমরা যেন সেই সাহায্য সম্মানসূচক ও সম্ভ্রমতার সাথে দিতে পারি। পৌল এইভাবে বিষয়টিকে তুলে ধরেন: “একে অপরের প্রতি সমাদর দেখিয়ে নেতৃত্ব নিন।”—রোমীয় ১২:১০, NW.
এক উত্তম শ্রোতা হোন। যারা নিরুৎসাহজনক সমস্যাগুলির মুখোমুখি হয়েছে তাদের সাহায্য করার জন্য আমাদের উপদেশক নয়, বরঞ্চ উত্তম শ্রোতা হতে হবে। তাড়াহুড়ো করে, আপেক্ষিক প্রস্তাব না দিয়ে, আসুন আমরা যেন সময় নিয়ে শাস্ত্রীয় নির্দেশ দেওয়ার চেষ্টা করি যা বর্তমান প্রয়োজনের ক্ষেত্রে প্রকৃতই যথার্থ। কী বলতে হবে তা যদি আমরা না জানি, তাহলে বাইবেলের উপর গবেষণা আমাদের সাহায্য করবে সান্ত্বনামূলকভাবে কথা বলতে এবং অপরকে দৃঢ় করে তুলতে।
প্রেমময় হোন। যাদের আমরা উৎসাহ দিতে চাই তাদের প্রতি আমাদের প্রেম অনুভব করার প্রয়োজন আছে। যখন যিহোবার সহদাসেদেব প্রতি এটি প্রয়োগ করা হয়, তখন আমাদের প্রেম তাদের হিতকারের চাইতেও আরও বেশি কিছু করা উচিত। গভীর অনুভূতিও এর অন্তর্ভুক্ত হওয়া উচিত। সমস্ত যিহোবার লোকেদের প্রতি আমাদের যদি এইধরনের প্রেম থাকে, তাহলে আমাদের বাক্যগুলি তাদের আন্তরিকভাবেই উৎসাহ যোগাবে। এমনকি যদি উন্নতি করার প্রস্তাব দেওয়ার প্রয়োজনও হয়, তাহলেও খুব সম্ভবত এটি ভুলবোঝা অথবা ক্ষতির সৃষ্টি করবে না যদি আমাদের উদ্দেশ্য কেবলমাত্র বিষয়টি আলোকপাত করাই নয়, কিন্তু প্রেমপূর্ণ সাহায্য দান করা হয়ে থাকে। যেমন পৌল যথার্থভাবে বলেছিলেন, “প্রেমই গাঁথিয়া তুলে।”—১ করিন্থীয় ৮:১; ফিলিপীয় ২:৪; ১ পিতর ১:২২.
সবসময় গঠনমূলক হোন
এই সংকটপূর্ণ “শেষ কালে,” যিহোবার লোকেরা অনেক পরীক্ষার সম্মুখীন হয়ে থাকে। (২ তীমথিয় ৩:১-৫) আর এটি আশ্চর্যের বিষয় নয় যে এক এক সময় তারা এমন তাড়নার মধ্যে পড়ে যে তাদের ধৈর্যের সীমা পার হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। যিহোবার দাস হিসাবে, আমরা নিশ্চয়ই এমন কিছু বলব না বা করব না যা আমাদের সহউপাসকদের শীঘ্রই নিভে যাবে এমন এক সধূম শলতের মত করে তুলতে পারে।
সুতরাং, এটি কতই না গুরুত্বপূর্ণ যে, আমরা একে অপরকে উৎসাহ দিই! নিরুৎসাহী সহউপাসকদের প্রতি নম্রতা ও সম্মান প্রদর্শন করার দ্বারা আসুন আমরা গঠনমূলক হওয়ার পূর্ণ প্রচেষ্টা করি। যখন তারা আমাদের সাথে কথা বলে আসুন আমরা যেন মনোযোগসহকারে তা শুনি এবং ঈশ্বরের বাক্য, বাইবেলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানোর দ্বারা আমরা যেন সবসময় তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করি। সবচাইতে প্রধান বিষয় হল, আমরা যেন প্রেম প্রদর্শন করি কারণ যিহোবার পবিত্র আত্মার এই ফলটিই আমাদের সাহায্য করবে একে অপরকে দৃঢ় করে তুলতে। আমরা যেন কখনও এমনভাবে কথা না বলি বা কাজ না করি যা হয়ত ‘সধূম শলিতাকে নিভিয়ে দিতে পারে।’