‘শিশুদের মুখ হইতে’
যখন শমূয়েল ছোট বালক ছিলেন, তখন প্রধান পুরোহিত এলির পুত্রদের দুষ্টতা থাকা সত্ত্বেও তিনি সঠিক মান বজায় রেখেছিলেন। (১ শমূয়েল ২:২২; ৩:১) ইলীশায়ের দিনে, অরাম দেশে বন্দীপ্রাপ্ত একটি ছোট ইস্রায়েলীয় বালিকা সাহসের সাথে তার কর্ত্রীর কাছে সাক্ষ্য দান করে। (২ রাজাবলি ৫:২-৪) যখন যীশুর ১২ বছর বয়স, তখন তিনি সাহসের সাথে ইস্রায়েলের পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তাদের প্রশ্ন করেছিলেন এবং এমন উত্তর দিয়েছিলেন যে দর্শকেরা হতবাক হয়ে গিয়েছিল। (লূক ২:৪৬-৪৮) সমগ্র ইতিহাসব্যাপী অল্পবয়সী উপাসকেরা বিশ্বস্ততার সাথে যিহোবার সেবা করে এসেছে।
আজকের অল্পবয়সী ব্যক্তিরাও কি সেই একইধরনের বিশ্বস্ত মনোভাব দেখায়? অবশ্যই দেখায়! ওয়াচ টাওয়ার সোসাইটির শাখা অফিস থেকে পাওয়া রিপোর্টগুলি দেখায় যে অনেক, অনেক সংখ্যায় বিশ্বাসী যুবক-যুবতীরা “স্বেচ্ছায় দত্ত উপহার” হিসাবে যিহোবার পরিচর্যা করছে। (গীতসংহিতা ১১০:৩) তাদের এই প্রচেষ্টার উত্তম ফলগুলি, যুবক ও বৃদ্ধ, সমস্ত খ্রীষ্টানদের “সৎকর্ম্ম করিতে করিতে নিরুৎসাহ না [হয়ে পড়তে]” উৎসাহ দেয়।—গালাতীয় ৬:৯।
এক্ষেত্রে আয়ুমি এক উত্তম উদাহরণ, একটি ছোট জাপানি মেয়ে, যে ছয়-বছর বয়সে প্রকাশক হয় এবং লক্ষ্য স্থির করে যে তার ক্লাসের সবাইকে সে সাক্ষ্য দেবে। মেয়েটি অনুমতি নিয়ে তার ক্লাসের লাইব্রেরীতে নানা ধরনের প্রকাশন রাখার ব্যবস্থা করে এবং সহপাঠীরা যে কোন প্রশ্নই করুক না কেন, সেগুলির উত্তর দেওয়ার জন্য সে নিজেকে প্রস্তুত করে। তার ক্লাসের প্রায় অধিকাংশ সহপাঠীরা ও এমনকি শিক্ষকেরা পর্যন্ত সেই প্রকাশনাগুলি সম্বন্ধে জানতে পারে। ছয়-বছর প্রাথমিক স্কুলে থাকাকালীন, আয়ুমি ১৩টি বাইবেল অধ্যয়নের ব্যবস্থা করে। চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ার সময় সে বাপ্তিস্ম গ্রহণ করে এবং তার এক বন্ধু যার সাথে সে অধ্যয়ন করেছিল সে ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় বাপ্তিস্ম নেয়। এছাড়াও, সেই বাইবেল ছাত্রীটির মা ও দুই বড় বোনও অধ্যয়ন করে এবং বাপ্তিস্ম নেয়।
উত্তম আচরণ সাক্ষ্য বহন করে
“আর পরজাতীয়দের মধ্যে আপন আপন আচার ব্যবহার উত্তম করিয়া রাখ,” প্রেরিত পিতর বলেন এবং অল্পবয়স্ক খ্রীষ্টানেরা এই আদেশকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। (১ পিতর ২:১২) এর ফলে, তাদের উত্তম আচরণ প্রায়ই এক অপূর্ব সাক্ষ্যদানে সাহায্য করে। আফ্রিকার ক্যামারুন শহরে, একজন ব্যক্তি দ্বিতীয়বার যিহোবার সাক্ষীদের মণ্ডলীর সভায় আসেন এবং একটি ছোট মেয়ের পাশে বসেন। যখন বক্তা শ্রোতাদের আহাবন জানান বাইবেলের একটি অংশ দেখতে, তখন সেই ব্যক্তিটি লক্ষ্য করেন যে সেই ছোট মেয়েটি সঙ্গে সঙ্গে বাইবেল থেকে সেই পদটি খুলে মন দিয়ে পড়তে আরম্ভ করে। মেয়েটির মনোভাব তাকে এত প্রভাবিত করে যে সভার শেষে, সেই ব্যক্তিটি বক্তার কাছে যান এবং বলেন যে: “এই ছোট মেয়েটি আমাকে আপনাদের সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করতে বাধ্য করেছে।”
দক্ষিণ আফ্রিকার একটি স্কুলে ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল যিহোবার সাক্ষীদের সন্তান। তাদের উত্তম আচরণ যিহোবার সাক্ষীদের জন্য সুনাম অর্জন করতে সাহায্য করেছিল। এক শিক্ষক একজন সাক্ষী অভিভাবকের কাছে স্বীকার করেন যে তিনি কোন রকম ভাবেই বুঝে উঠতে পারেন না যে কিভাবে সাক্ষীরা তাদের সন্তানদের এত উত্তমরূপে শিক্ষা দেয়, বিশেষকরে যেখানে তার নিজের গির্জা ছোটদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে একেবারেই ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে। একজন নতুন শিক্ষক স্কুলকে সাহায্য করার জন্য আসেন এবং তিনি তৎক্ষণাৎ সাক্ষী ছেলেমেয়েদের উত্তম স্বভাব লক্ষ্য করেন। শিক্ষিকাটি একজন সাক্ষীর ছেলেকে জিজ্ঞাসা করেন যে যিহোবার সাক্ষী হতে গেলে তাকে কী করতে হবে। ছেলেটি বুঝিয়ে বলে যে তাকে বাইবেল অধ্যয়ন করতে হবে, সে শিক্ষিকাটির আগ্রহ জাগানোর জন্য তার মাবাবার সাথে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করে।
কস্টারিকাতে, রিগোবার্টো সত্যের সন্ধান পায় যখন তার দুই সহপাঠী বাইবেলের সাহায্যে তাকে ত্রিত্ব, প্রাণ এবং নরকাগিন সম্বন্ধে তার প্রশ্নগুলির উত্তর দেয়। তারা যা বলেছিল তা তাকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করে, বস্তুতপক্ষে সে প্রভাবিত হয়েছিল শুধুমাত্র তাদের শাস্ত্র দেখাবার কৌশলতা দেখে নয়, কিন্তু তাদের উত্তম আচরণ দেখে যা তার দেখা খ্রীষ্টজগতের আচরণ থেকে একেবারেই ভিন্ন ছিল। পারিবারিক বাধা থাকা সত্ত্বেও, রিগোবার্টো তার বাইবেল অধ্যয়নের ক্ষেত্রে খুব উন্নতি করছে।
স্পেনে দুজন যিহোবার সাক্ষী—একজনের বয়স নয়-বছর—ওনোফ্রে নামে এক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করে। প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষীটি বেশির ভাগ সময় কথা বললেও, কিন্তু সেই ছোট সাক্ষীটি নিঃশব্দে তার সাথে শাস্ত্রের পদগুলি খুলে পড়তে থাকে এবং কয়েকটি বাইবেল পদ মুখস্থ বলে। ওনোফ্রে অবাক হয়ে যান। তিনি ঠিক করেন যে, তিনি একমাত্র সেখানেই বাইবেল পড়বেন যেখান থেকে এই ছোট ছেলেটি এত উত্তম ভাবে শাস্ত্র ব্যবহার করতে শিখেছে। অতএব, পরবর্তী রবিবার সকালে, তিনি কিংডম হলে যান। তাকে দুপুর অবধি বাইরে অপেক্ষা করতে হয় যতক্ষণ না সাক্ষীরা তাদের সভার জন্য আসতে আরম্ভ করে। সেই দিন থেকে তিনি ভাল উন্নতি করতে থাকেন এবং সম্প্রতি প্রতীকরূপ জলে বাপ্তিস্ম নেওয়ার দ্বারা নিজেকে উৎসর্গ করেন।
ফলপ্রসু অল্পবয়স্ক সাক্ষীরা
হ্যাঁ, নম্র হৃদয় সম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছে পৌঁছানোর জন্য যিহোবা ছোট এবং বড় উভয়কেই ব্যবহার করেন। এটা বিশেষ ভাবে দেখা যায় হাঙ্গেরির একটি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে। সেখানে একটি হাসপাতালের নার্স লক্ষ্য করেন যে যখনই একজন দশবছর বয়স্ক রোগীকে কেউ দেখতে আসতো, তখনই তারা খাবার ছাড়াও মেয়েটির জন্য কিছু পড়ার বই নিয়ে আসতো। সেই নার্সটি ভাবতেন যে এই ছোট মেয়েটির পড়বার মতো কী এমন আগ্রহজনক বই থাকতে পারে এবং তারপর তিনি আবিষ্কার করলেন যে সেই বইটি হল বাইবেল। নার্সটি সেই মেয়েটির সাথে কথা বলেন এবং পরে জানান: “প্রথম দিন থেকেই, সে আমাকে কিছু শিক্ষা দিচ্ছিল।” হাসপাতাল থেকে চলে আসার সময় সেই মেয়েটি নার্সটিকে সম্মেলনে যোগদান করার জন্য আমন্ত্রণ জানায়, কিন্তু তিনি তার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন না। কিন্তু পরবর্তীকালে, “বিশুদ্ধ ওষ্ঠ” জেলা সম্মেলনে তিনি যোগদান করতে রাজি হন। এর ঠিক কিছুদিন পরেই, তিনি বাইবেল অধ্যয়ন আরম্ভ করেন এবং এক বছর পরে বাপ্তাইজিত হন—এই সমস্ত কিছু সম্ভব হয়েছিল শুধুমাত্র একটাই কারণে যে সেই ছোট মেয়েটি হাসপাতালে থাকাকালীন তার সময় ব্যবহার করেছিল বাইবেল সাহিত্যাদি পড়ার জন্য।
এল স্যালভাডোরে, আনা রূথ, উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছিল। যদি কেউ পড়তে চায় তাদের জন্য টেবিলের উপর বাইবেলের সাহিত্যাদি রেখে যাওয়ার তার অভ্যাস ছিল। একদিন সে লক্ষ্য করে যে ফেলে রাখা সেই বইগুলি হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে এবং আবার কয়েকদিন পরে সেগুলি ফিরে আসছে এবং পরিশেষে আনা রূথ আবিষ্কার করে যে তার সহপাঠী ইভলিন সেই বইগুলি পড়ছিল। কয়েকদিন বাদে, ইভলিন অধ্যয়ন শুরু করে এবং মণ্ডলীর সভাগুলিতে যোগদান করতে থাকে। অবশেষে, সে বাপ্তিস্ম নেয়, আর এখন নিয়মিতভাবে সহায়ক অগ্রগামী হিসাবে কাজ করছে। আনা রূথ একজন নিয়মিত অগ্রগামী।
পানামাতে একজন বোন এক মহিলার সাথে বাইবেল অধ্যয়ন শুরু করেন, কিন্তু তার স্বামী এতোই সত্যের বিরোধিতা করতে থাকে যে অধ্যয়ন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। যাইহোক, আস্তে আস্তে তার স্বামীর মনোভাবের একটু পরিবর্তন হয়। কিছুদিন পর সেই ভদ্রলোকটির বড় ভাই, যিনি একজন সাক্ষী ছিলেন, তিনি তাকে চোর আসার ভয় থেকে সাবধান থাকার জন্য একটি সংকেত বেল বাড়িতে লাগাবার পরামর্শ দেন। তিনি যখন সেই সংকেত বেলটি লাগাচ্ছিলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন যে তার নয়-বছরের এক ভাইজি বিমর্ষ মুখে ঘরে ঢুকছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে কী হয়েছে এবং মেয়েটি জানায় যে সে ও তার দিদি এক ব্যক্তির সাথে বাইবেল অধ্যয়ন করতে গিয়েছিল কিন্তু সে বাড়িতে না থাকায়, সে আজ যিহোবার জন্য কিছুই করতে পারলো না। মেয়েটির কাকা তাকে বলল: “আমাকে প্রচার কর না কেন? তাহলে তুমি যিহোবার জন্য কিছু করতে পারবে।” তার ভাইজিটি আনন্দের সাথে ছুটে গিয়ে বাইবেল নিয়ে আসে এবং অধ্যয়ন শুরু হয়।
মেয়েটির মা (ভদ্রলোকটির ভ্রাতৃবধূ) সবকিছু শুনছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন যে এগুলি সমস্তই নিছক একটা খেলামাত্র, কিন্তু যখনই সেই ব্যক্তিটি তাদের বাড়িতে যেতেন, তখনই তিনি তার ভাইজির কাছে বাইবেল অধ্যয়ন করতে চাইতেন। কিন্তু মেয়েটির মা যখন লক্ষ্য করলেন যে তার দেবর এই বিষয়টির ওপর খুব গুরুত্ব দিচ্ছে এবং তার বেশ কিছু কঠিন প্রশ্ন আছে, তখন তিনি তার মেয়ের উপস্থিতিতে, নিজেই অধ্যয়ন পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যক্তিটি সপ্তাহে দুবার করে অধ্যয়ন করা শুরু করেন আর খুব তাড়াতাড়ি উন্নতি করতে থাকেন। অবশেষে, তিনি উৎসর্গীকরণের পর্যায়ে পৌঁছান এবং তার স্ত্রীর সাথে সেই একই সম্মেলনে বাপ্তিস্ম নেন-এই ক্ষেত্রে তার ছোট ভাইজিটির মনোভাব অবশ্যই প্রশংসনীয়।
অল্পবয়স্কদের সাহস এক উত্তম সাক্ষ্য দেয়
বাইবেল বলে: “সাহস কর, তোমার অন্তঃকরণ সবল হউক; হ্যাঁ, সদাপ্রভুরই অপেক্ষায় থাক।” (গীতসংহিতা ২৭:১৪) এই বাক্যগুলি ঈশ্বরের সমস্ত দাসেদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য এবং গতবছরে, যুবক ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ই এটি প্রয়োগ করে। অস্ট্রেলিয়ায়, একটি পাঁচ বছরের মেয়ে যখন প্রথম স্কুলে যেতে শুরু করে, তখন তার মা শিক্ষকের কাছে গিয়ে যিহোবা সাক্ষীদের বিশ্বাস সম্বন্ধে ব্যাখ্যা করতে যান। শিক্ষকটি তাকে বলেন: “আমি ইতিমধ্যেই জানি যে আপনারা কি বিশ্বাস করেন। আপনার মেয়ে আমাকে সমস্ত কিছু বুঝিয়ে দিয়েছে।” এই ছোট মেয়েটি নিজের থেকে শিক্ষকের কাছে গিয়ে তার বিশ্বাস সম্বন্ধে বুঝিয়ে বলতে একেবারেই দ্বিধা বোধ করেনি।
রোমানিয়ার, পাঁচ বছরের আন্ড্রিয়াও সাহসের পরিচয় দিয়েছিল। যখন তার মা অর্থডক্স ধর্মীয় বিশ্বাসকে পরিত্যাগ করে একজন সাক্ষী হন, তখন তার প্রতিবেশীরা তার কথা শুনতে অসম্মত হয়। একদিন মণ্ডলীর বুকস্টাডিতে, আন্ড্রিয়া শুনতে পায় যে পরিচর্যা অধ্যক্ষ প্রতিবেশীর কাছে প্রচার করার গুরুত্বের ওপর জোর দিচ্ছেন। সে এই বিষয়টিকে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে চিন্তা করে এবং বাড়িতে ফিরে মাকে জিজ্ঞাসা করে: “মা, তুমি কাজে বেরিয়ে যাওয়ার পর, আমি ঠিক তোমার মতো ব্যাগের মধ্যে বইপত্র গুছিয়ে নেবো, আর আমি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করব যাতে করে তিনি আমাকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সত্য সম্বন্ধে কথা বলতে সাহায্য করেন।”
আন্ড্রিয়া যা প্রতিজ্ঞা করেছিল পরের দিন ঠিক তাই করে। সাহস জাগিয়ে তুলে সে এক প্রতিবেশীর বাড়ির ঘন্টা বাজায়। যখন সেই প্রতিবেশী দরজায় উত্তর দেবার জন্য আসে, সেই ছোট মেয়েটি বলে: “আমি জানি যে আমার মা যখন থেকে সাক্ষী হয়েছে তখন থেকে আপনি তাকে পছন্দ করেন না। সে আপনার সাথে অনেকবার কথা বলার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু আপনি তার কথা শুনতে চাননি। এটা তাকে খুব দুঃখ দিয়েছিল, কিন্তু আমি আপনাকে বলতে চাই যে আমরা আপনাকে ভালবাসি।” এরপর, আন্ড্রিয়া উত্তম সাক্ষ্যদান করে। এক দিনের মধ্যে, সে ছটি বই, ছটি পত্রিকা, চারটি পুস্তিকা, আর চারটি ট্র্যাক্ট বিতরণ করে। সেই দিন থেকে সে নিয়মিত ভাবে ক্ষেত্রের পরিচর্যায় বেরোতে থাকে।
রুয়ান্ডাতে আমাদের ভাইয়েদের বিরোধিতার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক সাহস দেখাতে হয়েছিল। এইরকম একসময় একটি সাক্ষী পরিবারকে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয় যেখানে তাদের হত্যা করার জন্য সৈন্যরা প্রস্তুত হচ্ছিল। প্রথমে প্রার্থনা করার জন্য পরিবারটি অনুমতি চায়। অনুমতি দেওয়া হয় এবং তাদের কন্যা ডেবোরা ছাড়া সকলে নিঃস্তব্ধে প্রার্থনা করে। এক রিপোর্ট অনুসারে ডেবোরা জোর গলায় প্রার্থনা করে: “যিহোবা, এই সপ্তাহে বাবা ও আমি পাঁচটি পত্রিকা বিতরণ করেছি। ঐ লোকেদের কাছে আমরা কিভাবে ফিরে যাব যাতে করে সত্য শিখতে এবং জীবন পেতে সাহায্য করতে পারি? তার উপর, আমি এখন প্রকাশক হব কী করে? আমি বাপ্তিস্ম নিয়ে তোমার সেবা করতে চেয়েছিলাম।” এটা শোনার পর, একজন সৈনিক বলে ওঠে: “আমরা এই ছোট মেয়েটির জন্য তোমাদের মারতে পারব না।” ডেবোরা উত্তর দেয়: “ধন্যবাদ।” সেই পরিবারটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
তাঁর পার্থিব জীবনের শেষের দিকে যীশু যখন বিজয়সূচকভাবে যিরূশালেমে প্রবেশ করেন, তখন এক বিশাল, আনন্দময় জনতা তাঁকে সংবর্ধনা জানায়। সেই জনতার অন্তর্ভুক্ত ছিল শিশুরা এবং প্রাপ্তবয়স্কেরা। বিবরণ অনুসারে বালকেরা “ধর্ম্মধামে এই বলে চেঁচাচ্ছিল: ‘দায়ূদের পুত্র, আমরা প্রার্থনা করি, আমাদেরকে রক্ষা কর!’” যখন প্রধান পুরোহিতেরা ও অধ্যাপকেরা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তখন যীশু বলে ওঠেন: “তোমরা কি কখনও পাঠ কর নাই যে, ‘তুমি শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ হইতে স্তব সম্পন্ন করিয়াছ’?”—মথি ২১:১৫, ১৬.
এটা দেখা কি উত্তেজনাসূচক নয় যে যীশুর বাক্য আজও সত্য প্রমাণিত হচ্ছে? “শিশু ও দুগ্ধপোষ্যদের মুখ হইতে”—এবং এর সাথে হয়ত আমরা যোগ করতে পারি কিশোরকিশোরীদের আর অল্পবয়সী পুরুষ ও নারীদের—যাদের মাধ্যমে যিহোবা তার প্রশংসা সম্পাদন করছেন। বাস্তকিই, যখন যিহোবাকে প্রশংসা করার ব্যাপারটি আসে, তখন বয়সের কোন সীমা নির্ধারণ করা চলে না।—যোয়েল ২:২৮, ২৯.