আপনার চোখ সরল রাখুন
১ পর্বতেদত্ত উপদেশে, যিশু রূপক অথবা আধ্যাত্মিক চোখ আমাদের সমগ্র জীবনধারার ওপর যে-অসাধারণ প্রভাব ফেলতে পারে, সেটার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “অতএব তোমার চক্ষু যদি সরল হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর দীপ্তিময় হইবে। কিন্তু তোমার চক্ষু যদি মন্দ হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারময় হইবে।” (মথি ৬:২২, ২৩) সরল চোখ হল সেই চোখ, যা কেবল একটা উদ্দেশ্যর—ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার—ওপরই কেন্দ্রীভূত থাকে, বস্তুগত বিষয়গুলো নিয়ে অত্যধিক ভাবনা বা উদ্বেগের দ্বারা বিক্ষিপ্ত হয় না। (মথি ৬:১৯-২১, ২৪-৩৩) সরল চোখ বজায় রাখতে কী আমাদের সাহায্য করতে পারে?
২ সন্তুষ্টি গড়ে তোলা: নিজ পরিজনের প্রয়োজনগুলো পর্যাপ্তভাবে জোগানো হল এক শাস্ত্রীয় বাধ্যবাধকতা। (১ তীম. ৫:৮) কিন্তু তাই বলে সর্বোত্তম ও সর্বাধুনিক বিষয়গুলো অনুসন্ধান করার জন্য আমাদের অন্তহীনভাবে রত থাকার দরকার নেই। (হিতো. ২৭:২০; ৩০:৮, ৯) বরং, শাস্ত্র আমাদের “গ্রাসাচ্ছাদন,” অর্থাৎ জীবনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে সন্তুষ্ট থাকতে পরামর্শ দেয়। (১ তীম. ৬:৮; ইব্রীয় ১৩:৫, ৬) এই উপদেশে মনোযোগ দেওয়া আমাদেরকে আমাদের চোখকে যথাযথ বিষয়ের ওপর কেন্দ্রীভূত রাখতে সাহায্য করতে পারে।
৩ অপ্রয়োজনীয় ঋণ ও ধনসম্পদ অথবা সেই সমস্ত কাজ, যেগুলোর জন্য অনেক সময় ও মনোযোগের দরকার, সেগুলোর দ্বারা নিজেদেরকে ভারগ্রস্ত করা এড়িয়ে চলে আমরা বুদ্ধিমানের কাজ করি। (১ তীম. ৬:৯, ১০) কীভাবে আমরা এটা করতে পারি? কোনো একটা কাজ করার বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার সময়, প্রার্থনাপূর্বক বিষয়টা বিবেচনা করুন এবং সততার সঙ্গে মূল্যায়ন করে দেখুন যে, এটা আধ্যাত্মিক কাজগুলোর ওপর হস্তক্ষেপ করবে কি না। আপনার জীবনে আধ্যাত্মিক বিষয়গুলোকে প্রথমে রাখতে দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ হোন।—ফিলি. ১:১০, NW; ৪:৬, ৭.
৪ আপনার জীবনধারাকে সাধাসিধে রাখুন: বস্তুবাদিতার আকর্ষণকে প্রতিরোধ করার আরেকটা সহায়ক হল, আপনার জীবনধারাকে সাধাসিধে করার উপায়গুলো খোঁজা। একজন ভাই যিনি দেখেছিলেন যে, তার পরিবার অতিরিক্ত বস্তুগত বিষয়গুলো ছাড়াই ভালভাবে চালিয়ে নিতে পারবে, তিনি বলেছিলেন: “আমি এখন মণ্ডলীতে আমার ভাইদের সেবা করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে পারি। আমি নিশ্চিত যে, যিহোবা তাঁর সমস্ত দাসকে আশীর্বাদ করেন, যখন তারা সত্য উপাসনাকে ব্যক্তিগত বিষয়গুলোর আগে স্থান দেয়।” আপনার জীবনধারাকে সাধাসিধে রাখার দ্বারা আপনি কি আরও মহৎ আশীর্বাদগুলো উপভোগ করতে পারেন?
৫ শয়তান, তার বস্তুবাদী জগৎ এবং আমাদের নিজস্ব অসিদ্ধতার প্রভাবকে প্রতিরোধ করতে অবিরত প্রচেষ্টার প্রয়োজন। তাই আমাদের চোখকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে না দিয়ে বরং আসুন আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করার এবং আমাদের অমূল্য অনন্ত জীবনের আশার ওপর সেগুলোকে কেন্দ্রীভূত রাখি।—হিতো. ৪:২৫; ২ করি. ৪:১৮.
[অধ্যয়ন প্রশ্নাবলি]
১. সরল চোখ থাকার মানে কী এবং কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
২. বস্তুগত বিষয়গুলো সম্বন্ধে ঈশ্বরের বাক্য কোন দৃষ্টিভঙ্গিকে উৎসাহিত করে?
৩. স্বেচ্ছায় গৃহীত ভারগুলোকে এড়িয়ে চলতে কী আমাদের সাহায্য করতে পারে?
৪. আমাদের জীবনধারাকে সাধাসিধে রাখার জন্য কেন আমাদের উপায়গুলো খোঁজা উচিত?
৫. আমাদের চোখ সরল রাখতে কেন অবিরত প্রচেষ্টার প্রয়োজন?