যে-বাছাইগুলো সুখের দিকে পরিচালিত করে
“ইস্, আমি যদি অন্য কিছু বাছাই করতাম!” কতবার আপনি মনে মনে এই কথাগুলো বলেছেন? আমরা সকলেই এমন বাছাইগুলো করতে চাই, যেগুলোর জন্য পরে আমাদের আপশোস করতে হবে না, বিশেষভাবে যখন সেই বাছাইগুলো আমাদের জীবনকে প্রভাবিত করে। কিন্তু, কীভাবে আমরা এমন বাছাইগুলো করতে পারি, যা সুখের দিকে পরিচালিত করে?
প্রথমত, আমাদের এমন মানগুলো থাকা প্রয়োজন, যেগুলো প্রকৃতপক্ষেই নির্ভরযোগ্য। এইরকম মানগুলোর কি অস্তিত্ব রয়েছে? অনেকেই মনে করে যে, এগুলো অস্তিত্বে নেই। যুক্তরাষ্ট্রে করা একটা সমীক্ষা অনুযায়ী, কলেজের প্রবীণ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ৭৫ শতাংশই মনে করে যে, সঠিক ও ভুল বলে কিছু নেই আর ভাল-মন্দের এই ধারণাগুলো “প্রত্যেকের মূল্যবোধ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য” অনুসারে বিভিন্ন হয়ে থাকে।
এটা চিন্তা করা কি যুক্তিযুক্ত যে, নৈতিক মানগুলো শুধুমাত্র ব্যক্তিগত বা জনপ্রিয় মতামতের এক বিষয়? না, তা নয়। লোকেরা যদি তাদের যা ইচ্ছা তা-ই করার জন্য স্বাধীন হয়, তা হলে এর ফল হবে বিশৃঙ্খলা। কেই বা এমন এক পরিবেশে বাস করতে চাইবে, যেখানে কোনো আইন-আদালত নেই বা কোনো পুলিশ নেই? অন্যদিকে, ব্যক্তিগত মতামত সবসময় এক নির্ভরযোগ্য নির্দেশনা বলে প্রমাণিত হয় না। আমরা হয়তো এমন কিছু করা বেছে নিতে পারি, যেটাকে আমরা সঠিক বলে মনে করি অথচ পরে দেখা যায় যে, আমাদের আসলে ভুল হয়েছিল। বাস্তবিকপক্ষে, সমগ্র মানব ইতিহাস বাইবেলের এই নীতিকে সত্য বলে প্রমাণ করে: “মনুষ্যের পথ তাহার বশে নয়, মনুষ্য চলিতে চলিতে আপন পাদবিক্ষেপ স্থির করিতে পারে না।” (যিরমিয় ১০:২৩) এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা যখন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত নিই, তখন নির্দেশনার জন্য আমরা কোথায় যেতে পারি?
আগের প্রবন্ধে যে-যুবক শাসকের কথা বলা হয়েছে, তিনি পরামর্শের জন্য বিজ্ঞতাপূর্বক যিশুর কাছে গিয়েছিলেন। আমরা যেমন দেখেছি যে, সেই যুবক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে যিশু ঈশ্বরের ব্যবস্থাকে নির্দেশ করেছিলেন। যিশু শনাক্ত করেছিলেন যে, জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সর্বোচ্চ উৎস হলেন যিহোবা ঈশ্বর আর তিনি জানেন যে, তাঁর সৃষ্ট প্রাণীদের জন্য কোনটা সর্বোৎকৃষ্ট। তাই, যিশু বলেছিলেন: “আমার উপদেশ আমার নহে, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠাইয়াছেন, তাঁহার।” (যোহন ৭:১৬) সত্যিই, ঈশ্বরের বাক্য হল সেই নির্দেশনার এক নির্ভরযোগ্য উৎস, যা আমাদের জীবনে বিজ্ঞ বাছাইগুলো করার ব্যাপারে সাহায্য করবে। আসুন আমরা ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত কয়েকটা নীতিকে বিবেচনা করে দেখি, যেগুলো প্রয়োগ করা আমাদের সুখের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে।
সুবর্ণ নিয়ম
তাঁর বিখ্যাত পর্বতেদত্ত উপদেশে, যিশু একটি মৌলিক নীতি শিক্ষা দিয়েছিলেন, যেটি অন্যদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ সিদ্ধান্তগুলো নিতে সাহায্য করবে। তিনি এই কথা বলেছিলেন: “অতএব সর্ব্ববিষয়ে তোমরা যাহা যাহা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাহাদের প্রতি সেইরূপ করিও।” (মথি ৭:১২) আচরণ সম্পর্কিত এই নীতিটিকে প্রায়ই সুবর্ণ নিয়ম বলা হয়।
কেউ কেউ এই একই অভিব্যক্তিকে উলটো করে ব্যবহার করেছে: “তোমার প্রতি যা করা হোক বলে তুমি চাও না, অন্যদের প্রতি তুমি তা কোরো না।” সুবর্ণ নিয়ম ও এটাকে উলটো করে বলা অভিব্যক্তির মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য, যিশুর প্রতিবেশীসুলভ শমরীয়ের নীতিগল্পটি বিবেচনা করুন। একজন যিহুদিকে প্রহার করা হয়েছিল এবং রাস্তার পাশে আধমরা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছিল। একজন যাজক ও একজন লেবীয় তাকে দেখা সত্ত্বেও, পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিল। যেহেতু তারা সেই ব্যক্তির দুর্দশায় কোনোরকম সাহায্য করেনি, তাই এইরকম বলা যায় যে, তারা সুবর্ণ নিয়মের উলটো সংস্করণ অনুসারে কাজ করেছিল। এর বিপরীতে, একজন শমরীয় পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সাহায্য করার জন্য থেমেছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তির ক্ষতস্থানগুলোকে বেঁধে দিয়ে তাকে একটা পান্থশালায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সেই ব্যক্তির প্রতি তা-ই করেছিলেন, যা তিনি তার নিজের প্রতিও করা হোক বলে চেয়েছিলেন। তিনি সুবর্ণ নিয়ম প্রয়োগ করেছিলেন—এবং সঠিক বাছাই করেছিলেন।—লূক ১০:৩০-৩৭.
অনেক উপায়ে আমরা এই আচরণ সম্পর্কিত নিয়ম প্রয়োগ করে সুখী হতে পারি। ধরুন, আপনার পাড়ায় একটা নতুন পরিবার এসেছে। তাদের সঙ্গে দেখা করতে ও তাদেরকে স্বাগত জানাতে নিজে থেকেই এগিয়ে যান না কেন? আপনি হয়তো এলাকা সম্বন্ধে তাদেরকে জানাতে এবং সেইসঙ্গে তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও প্রয়োজনগুলো সম্বন্ধে তাদেরকে সাহায্য করতে পারেন। প্রতিবেশীসুলভ বিবেচনা দেখানোর ক্ষেত্রে এভাবে নিজে থেকে এগিয়ে যাওয়ার দ্বারা আপনি আপনার নতুন প্রতিবেশীদের সঙ্গে উত্তম সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন। আপনি এটা জেনেও পরিতৃপ্তি লাভ করবেন যে, ঈশ্বরকে যা সন্তুষ্ট করে আপনি তা-ই করেছেন। এটা কি এক বিজ্ঞ সিদ্ধান্ত নয়?
যে-বাছাইগুলোর ভিত্তি হল অন্যদের প্রতি ভালবাসা
সুবর্ণ নিয়ম ছাড়াও যিশু অন্য নির্দশনা দিয়েছেন, যেটা আপনাকে বিজ্ঞ বাছাইগুলো করতে সাহায্য করবে। মোশির ব্যবস্থায় কোন আইনটি মহৎ তা জিজ্ঞেস করা হলে যিশু উত্তর দিয়েছিলেন: “‘তোমার সমস্ত অন্তঃকরণ, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়া তোমার ঈশ্বর প্রভুকে [“যিহোবাকে,” NW] প্রেম করিবে,’ এইটী মহৎ ও প্রথম আজ্ঞা। আর দ্বিতীয়টী ইহার তুল্য; ‘তোমার প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।’ এই দুইটি আজ্ঞাতেই সমস্ত ব্যবস্থা এবং ভাববাদিগ্রন্থও ঝুলিতেছে।”—মথি ২২:৩৬-৪০.
তাঁর মৃত্যুর আগের রাতে, যিশু তাঁর শিষ্যদের একে অন্যকে প্রেম করার “এক নূতন আজ্ঞা” দিয়েছিলেন। (যোহন ১৩:৩৪) কেন তিনি সেই আজ্ঞাটিকে এক নতুন আজ্ঞা হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন? বস্তুতপক্ষে, তিনি কি ইতিমধ্যেই তাদেরকে বলেননি যে, প্রতিবেশীকে প্রেম করার আজ্ঞাটি সেই দুটি আজ্ঞার মধ্যে একটি, যেটির ওপর সমস্ত ব্যবস্থা ঝুলছে? মোশির ব্যবস্থার অধীনে ইস্রায়েলীয়দের আজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল: “তুমি . . . আপন প্রতিবাসীকে আপনার মত প্রেম করিবে।” (লেবীয় পুস্তক ১৯:১৮) কিন্তু, যিশু তাঁর শিষ্যদের এর চেয়েও বেশি কিছু করতে আজ্ঞা দিয়েছিলেন। সেই রাতেই যিশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন যে, তিনি তাদের জন্য তাঁর জীবন দিতে যাচ্ছেন। তারপর তিনি তাদের বলেছিলেন: “আমার আজ্ঞা এই, তোমরা পরস্পর প্রেম কর, যেমন আমি তোমাদিগকে প্রেম করিয়াছি। কেহ যে আপন বন্ধুদের নিমিত্ত নিজ প্রাণ সমর্পণ করে, ইহা অপেক্ষা অধিক প্রেম কাহারও নাই।” (যোহন ১৫:১২, ১৩) হ্যাঁ, এই আজ্ঞাটি এই অর্থে নতুন ছিল যে, এটি পালন করার জন্য অন্য লোকেদের আগ্রহকে একজন ব্যক্তির নিজস্ব আগ্রহগুলোর চেয়ে প্রথমে রাখতে হতো।
শুধুমাত্র আমাদের নিজের স্বার্থের কথা না ভেবে অনেক উপায়ে আমরা নিঃস্বার্থ ভালবাসা দেখাতে পারি। উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনি একটা আ্যপার্টমেন্টে থাকেন এবং আপনি যতটা জোরে গান শুনতে চান, সেটা হয়তো আপনার ভাল লাগে কিন্তু আপনার প্রতিবেশীকে বিরক্ত করে। আপনি কি আপনার আনন্দকে খানিকটা কাটছাঁট করতে পারেন, যাতে আপনার প্রতিবেশী কিছুটা শান্তিতে থাকতে পারে? অন্য কথায় বলতে গেলে, আপনি কি আপনার চাইতে আপনার প্রতিবেশীর মঙ্গলকে প্রথমে রাখবেন?
আরেকটা পরিস্থিতি বিবেচনা করুন। কানাডাতে বসবাসকারী একজন বয়স্ক ব্যক্তির কাছে এক ঠাণ্ডা এবং তুষারপাতের দিনে দুজন যিহোবার সাক্ষি এসেছিলেন। কথোপকথনের সময় সেই ব্যক্তি বলেছিলেন যে, তার হার্টের অসুখের কারণে তিনি তার বাড়ির সামনে জমে থাকা তুষারের স্তূপ পরিষ্কার করতে পারেননি। প্রায় এক ঘন্টা পরে, তিনি জোরে জোরে বেলচা দিয়ে পরিষ্কার করার আওয়াজ শুনতে পান। সেই দুইজন সাক্ষি তার বাড়ির সামনের রাস্তা ও সিঁড়ি থেকে তুষারের স্তূপ পরিষ্কার করার জন্য ফিরে এসেছিল। “আজ আমি প্রকৃত খ্রিস্টীয় প্রেমকে কার্যরত দেখেছি,” যিহোবার সাক্ষিদের কানাডার শাখা অফিসের উদ্দেশে একটা চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন। “এটা সত্যিই আজকের জগৎ সম্বন্ধে আমার সাধারণ নিরাশাবাদী দৃষ্টিভঙ্গিকে উন্নত ও পরিবর্তিত করেছিল। অধিকন্তু, এটা আপনাদের বিশ্বব্যাপী কাজগুলোর জন্য ইতিমধ্যেই আমার যে-সম্মান ছিল, সেটাকে আরও বৃদ্ধি করেছিল।” হ্যাঁ, সাহায্য করা বেছে নেওয়া অন্যদের ওপর এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, তা সেটা যত ছোট বলেই মনে হোক না কেন। এইরকম আত্মত্যাগমূলক বাছাই করা কতই না সুখ নিয়ে আসে!
যে-বাছাইগুলোর ভিত্তি হল ঈশ্বরের প্রতি ভালবাসা
বিভিন্ন বাছাই করার সময় আরেকটা যে-বিষয়কে আমাদের অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে তা হল, আমরা ঈশ্বরকে যেন ভালবাসি যেটাকে যিশু শ্রেষ্ঠ আজ্ঞা বলে বর্ণনা করেছিলেন। যিশু এই কথাগুলো সেই যিহুদিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, যাদের ইতিমধ্যেই যিহোবার সঙ্গে এক উৎসর্গীকৃত সম্পর্ক ছিল। তা সত্ত্বেও, ইস্রায়েলীয়দের আলাদা আলাদাভাবে বাছাই করতে হয়েছিল যে, তারা তাদের ঈশ্বরকে সমস্ত প্রাণ দিয়ে সেবা করবে কি না ও পূর্ণহৃদয় দিয়ে তাঁকে ভালবাসবে কি না।—দ্বিতীয় বিবরণ ৩০:১৫, ১৬.
একইভাবে, আপনি যে-বাছাইগুলো করে থাকেন, সেগুলো ঈশ্বর সম্পর্কে আপনি কেমন অনুভব করেন, তা প্রকাশ করে। উদাহরণস্বরূপ, বাইবেলের ব্যবহারিক মূল্যের প্রতি আপনার উপলব্ধি যতই বৃদ্ধি পাবে, ততই আপনিও এক বাছাইয়ের মুখোমুখি হবেন। যিশুর একজন অনুসারী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে আপনি কি ধারাবাহিকভাবে বাইবেল অধ্যয়ন করতে ইচ্ছুক হবেন? তা করা বেছে নেওয়া নিশ্চিতভাবেই আপনাকে সুখ এনে দেবে, কারণ যিশু বলেছেন: “ধন্য [“সুখী,” NW] যাহারা আত্মাতে দীনহীন।”—মথি ৫:৩.
সেই যুবক তার সিদ্ধান্তের জন্য আপশোস করেছিলেন কি না, তা আমরা জানি না। কিন্তু, বহু বছর ধরে যিশু খ্রিস্টকে অনুসরণ করার পর প্রেরিত পিতর কেমন অনুভব করেছিলেন, তা আমরা জানি। সা.কা. প্রায় ৬৪ সালে, তার জীবনের শেষের দিকে পিতর তার সহবিশ্বাসীদের উৎসাহ দিয়েছিলেন: “যত্ন কর, যেন [ঈশ্বরের] কাছে তোমাদিগকে নিষ্কলঙ্ক ও নির্দ্দোষ অবস্থায় শান্তিতে দেখিতে পাওয়া যায়!” (২ পিতর ১:১৪; ২ পিতর ৩:১৪) স্পষ্টতই, পিতর ৩০ বছর আগে যে-বাছাই করেছিলেন, তার জন্য তিনি আপশোস করেননি আর তাই অন্যদেরকে তাদের করা বাছাইয়ে স্থির থাকতে উৎসাহ দিয়েছিলেন।
পিতরের উপদেশ মেনে চলার মানে হল, যিশুর একজন শিষ্য হওয়ার দায়িত্বকে গ্রহণ করা এবং ঈশ্বরের আজ্ঞাগুলো পালন করা। (লূক ৯:২৩; ১ যোহন ৫:৩) এটা হয়তো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ মনে হতে পারে কিন্তু আমাদের কাছে যিশুর এই আশ্বাসজনক প্রতিজ্ঞা রয়েছে: “হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। আমার যোঁয়ালি আপনাদের উপরে তুলিয়া লও, এবং আমার কাছে শিক্ষা কর, কেননা আমি মৃদুশীল ও নম্রচিত্ত; তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে। কারণ আমার যোঁয়ালি সহজ ও আমার ভার লঘু।”—মথি ১১:২৮-৩০.
আর্থারের অভিজ্ঞতাটি বিবেচনা করুন। আর্থার দশ বছর বয়সে, একজন পেশাদার বেহালাবাদক হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে বেহালা বাজানো শিখতে শুরু করেছিলেন। তার বয়স যখন ১৪ বছর, এর মধ্যেই তিনি একজন কনসার্ট বেহালাবাদক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তা সত্ত্বেও, তিনি সুখী ছিলেন না। জীবনের অর্থ কী, সেই বিষয়ে তার বাবার মনে সবসময়ই নানা প্রশ্ন ছিল আর তিনি তার বাড়িতে ধর্মশিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাতেন; কিন্তু, তাদের উত্তর শুনে তিনি কখনোই সন্তুষ্ট হতেন না। ঈশ্বর সত্যিই আছেন কি না এবং কেন তিনি মন্দতাকে থাকতে দিয়েছেন, এই বিষয়ে তারা পরিবারগতভাবে কথা বলত। তারপর আর্থারের বাবা যিহোবার সাক্ষিদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সেই আলোচনা আর্থারের বাবার হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল, যেটা পরে পুরো পরিবারকে বাইবেল অধ্যয়ন করার দিকে পরিচালিত করেছিল।
পরে, আর্থার শাস্ত্র থেকে বুঝতে পারেন যে, ঈশ্বর কেন দুঃখকষ্ট থাকতে দিয়েছেন এবং তিনি স্পষ্টভাবে জীবনের উদ্দেশ্যকে দেখতে পেয়েছিলেন। তার পরিবারের অন্য তিনজন সদস্যের সঙ্গে, আর্থার এমন এক বাছাই করেছিলেন, যার জন্য তিনি আপশোস করেননি। তিনি যিহোবার কাছে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। “আমি খুবই খুশি যে, যিহোবা আমাকে সত্যের জ্ঞান দিয়ে আশীর্বাদ করেছেন এবং পেশাদার সুরকারদের মধ্যে সাধারণত যে-প্রতিযোগিতা থাকে, তা থেকে উদ্ধার করেছেন। সফল হওয়ার জন্য লোকেরা যেকোনো কিছু করতে পারে।”
বন্ধুদের মনোরঞ্জনের জন্য আর্থার এখনও বেহালা বাজাতে পছন্দ করেন কিন্তু তার জীবন এটার ওপর কেন্দ্রীভূত নয়। বরং, তার জীবন ঈশ্বরের প্রতি তার সেবার ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি যিহোবার সাক্ষিদের একটা শাখা অফিসে সেবা করছেন। সেই যুবক শাসকের বৈসাদৃশ্যে কিন্তু আর্থার এবং অন্যান্য লক্ষ লক্ষ ব্যক্তির মতো, আপনিও এমন এক বাছাই করতে পারেন, যেটা আপনাকে সবচেয়ে বেশি সুখ এনে দেবে আর সেটা হল, যিশুর কাছ থেকে তাঁর শিষ্য হওয়ার আমন্ত্রণ গ্রহণ করা।
[৬ পৃষ্ঠার চিত্র]
আপনার সিদ্ধান্ত অন্য লোকেদের জীবনে এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে
[৭ পৃষ্ঠার চিত্র]
আপনি কি বাইবেল অধ্যয়ন করবেন এবং যিশুর একজন অনুসারী হবেন?