-
যিশু কে?চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
৪. যিশু সর্বশক্তিমান ঈশ্বর নন
বাইবেল বলে যে, স্বর্গে যিশুর অনেক ক্ষমতা ও শক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি তাঁর পিতা যিহোবার সমান নন বরং তাঁর বশীভূত রয়েছেন। কেন আমরা তা বলতে পারি? ভিডিওটা দেখুন এবং যিশু যে যিহোবার চেয়ে আলাদা ব্যক্তি, সেই বিষয়ে বাইবেল কী বলে, তা লক্ষ করুন।
যিহোবা ও যিশুর মধ্যে কোন সম্পর্ক রয়েছে, তা নীচে দেওয়া শাস্ত্রপদগুলো আমাদের বুঝতে সাহায্য করে। প্রথমে শাস্ত্রপদ পড়ুন এবং এরপর নীচে দেওয়া প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
লূক ১:৩০-৩২ পদ পড়ুন।
স্বর্গদূত কী বলেছিলেন, যেটা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, ‘পরমেশ্বর’ যিহোবা এবং যিশু সমান নন?
মথি ৩:১৬, ১৭ পদ পড়ুন।
যিশুর বাপ্তিস্মের সময় স্বর্গ থেকে একটা কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে কী শোনা গিয়েছিল?
এই কণ্ঠস্বর কার ছিল বলে আপনার মনে হয়?
যোহন ১৪:২৮ পদ পড়ুন।
একটা পরিবারে বড়ো কে, বাবা না ছেলে? আর কার কাছে বেশি ক্ষমতা রয়েছে?
যিশু যিহোবাকে পিতা বলে ডাকতেন। এখান থেকে আমরা কী বুঝতে পারি?
যোহন ১২:৪৯ পদ পড়ুন।
যিশু কি এটা মনে করতেন যে, তিনি এবং তাঁর পিতা একই ব্যক্তি? আপনি কী মনে করেন?
-
-
ঈশ্বরের রাজ্য কী?চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
পাঠ ৩১
ঈশ্বরের রাজ্য কী?
বাইবেলের মূল বার্তাই হল, ঈশ্বরের রাজ্য। যিহোবা এই রাজ্যের মাধ্যমেই পুরো পৃথিবীকে এক পরমদেশে পরিণত করবেন, ঠিক যেমনটা তিনি শুরুতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, ঈশ্বরের রাজ্য কী? কীভাবে আমরা জানতে পারি, বর্তমানে এই রাজ্য শাসন করছে? ঈশ্বরের রাজ্য এখনও পর্যন্ত কী করেছে এবং ভবিষ্যতে কী করবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর এই পাঠে এবং পরবর্তী দুটো পাঠে দেওয়া হবে।
১. ঈশ্বরের রাজ্য কী এবং ঈশ্বর কাকে এই রাজ্যের রাজা করেছেন?
যিহোবা ঈশ্বর স্বর্গে একটা সরকার স্থাপন করেছেন, যেটাকে ঈশ্বরের রাজ্য বলা হয়েছে। যিহোবা যিশু খ্রিস্টকে এই রাজ্যের রাজা করেছেন। (মথি ৪:১৭; যোহন ১৮:৩৬) বাইবেল যিশু সম্বন্ধে বলে: তিনি রাজা হয়ে “চিরকাল রাজত্ব করবেন।” (লূক ১:৩২, ৩৩) যিশু রাজা হয়ে এই পৃথিবীর সমস্ত লোকের উপর রাজত্ব করবেন।
২. যিশুর সঙ্গে কারা রাজত্ব করবে?
যিশু একা রাজত্ব করবেন না। “সমস্ত বংশ ও ভাষা ও বর্ণ ও জাতির মধ্য থেকে” আসা ব্যক্তিরা রাজা হয়ে “পৃথিবীর উপর রাজত্ব করবে।” (প্রকাশিত বাক্য ৫:৯, ১০) যিশু পৃথিবীতে আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি তাঁর শিষ্য হয়েছে। কিন্তু, তারা প্রত্যেকেই কি তাঁর সঙ্গে স্বর্গে রাজত্ব করবে? না। তাদের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র ১,৪৪,০০০ জন ব্যক্তি যিশুর সঙ্গে স্বর্গে রাজত্ব করবে। (পড়ুন, প্রকাশিত বাক্য ১৪:১-৪.) আর যিশুর বাকি শিষ্যেরা সেই রাজ্যের প্রজা হয়ে এই পৃথিবীতে জীবনযাপন করবে।—গীতসংহিতা ৩৭:২৯.
৩. ঈশ্বরের রাজ্য কেন মানুষের সরকারের চেয়ে অনেক বেশি ভালো?
একজন মানব শাসক হয়তো মানুষের ভালোর জন্য অনেক কিছু করতে চান, কিন্তু সমস্ত কিছু করার ক্ষমতা তার কাছে থাকে না। শুধু তা-ই নয়, কিছুদিন পর এই শাসকের পরিবর্তে অন্য কোনো শাসক চলে আসেন এবং তিনি হয়তো লোকদের ভালোর জন্য চিন্তা না-ও করতে পারেন। কিন্তু, রাজা যিশুর জায়গায় কখনো অন্য কেউ শাসন করবে না। কারণ ঈশ্বর “এক রাজ্য স্থাপন করিবেন, তাহা কখনও বিনষ্ট হইবে না।” (দানিয়েল ২:৪৪) যিশু পুরো পৃথিবীর উপরে রাজত্ব করবেন এবং কারো প্রতি পক্ষপাতের মনোভাব দেখাবেন না। যিশু হলেন একজন প্রেমময়, দয়ালু এবং ন্যায়পরায়ণ রাজা। তিনি তাঁর প্রজাদেরও শেখাবেন, যেন তারা একে অপরের সঙ্গে প্রেম ও দয়া দেখিয়ে এবং ন্যায্যভাবে আচরণ করে।— পড়ুন, যিশাইয় ১১:৯.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
কেন ঈশ্বরের রাজ্য মানুষের সরকারের চেয়ে অনেক বেশি ভালো? আসুন তা জানি।
৪. ঈশ্বরের রাজ্য হল এমন এক ক্ষমতাশালী সরকার, যা পুরো পৃথিবীর উপর শাসন করবে
যিশু খ্রিস্টের কাছে এত ক্ষমতা রয়েছে, যা অন্য কোনো শাসকের কাছে নেই। মথি ২৮:১৮ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কেন আমরা বলতে পারি, যিশুর কাছে অন্য যেকোনো শাসকের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতা রয়েছে?
মানুষের সরকার পরিবর্তন হতেই থাকে। এ ছাড়া, প্রতিটা সরকার পৃথিবীর কোনো একটা দেশে অথবা এলাকায় শাসন করে থাকে। কিন্তু, ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে কী বলা হয়েছে, তা লক্ষ করুন। দানিয়েল ৭:১৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
ঈশ্বরের রাজ্য কখনো “বিনষ্ট হইবে না।” এর থেকে আমাদের কোন উপকার হবে বলে আপনার মনে হয়?
ঈশ্বরের রাজ্য পুরো পৃথিবীর উপর শাসন করবে। এর থেকে আমাদের কোন উপকার হবে বলে আপনার মনে হয়?
৫. ইতিহাস দেখায়, মানুষ সঠিকভাবে শাসন করতে পারে না
মানুষের সরকারের পরিবর্তে কেন আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যের প্রয়োজন? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
মানুষের শাসনের পরিণতি কী হয়েছে?
উপদেশক ৮:৯ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
আপনার কি মনে হয় যে, মানুষের সরকারের পরিবর্তে আমাদের ঈশ্বরের রাজ্যের প্রয়োজন? কেন আপনি তা মনে করেন?
৬. ঈশ্বরের রাজ্যের শাসকেরা আমাদের ভালোভাবে বোঝেন
আমাদের রাজা যিশু একজন মানুষ হিসেবে জীবনযাপন করেছেন। তাই, তিনি আমাদের ভালোভাবে বোঝেন এবং “আমাদের দুর্বলতার প্রতি সমবেদনা দেখাতে” পারেন। (ইব্রীয় ৪:১৫, ফুটনোট) যিহোবা এই পৃথিবী থেকে ১,৪৪,০০০ জন ব্যক্তিকে যিশুর সঙ্গে রাজত্ব করার জন্য বাছাই করেছেন। এই বিশ্বস্ত পুরুষ ও নারীদের “সমস্ত বংশ ও ভাষা ও বর্ণ ও জাতির মধ্য থেকে” বাছাই করা হয়েছে।—প্রকাশিত বাক্য ৫:৯.
যিশু এবং তাঁর সহ-শাসকেরা আমাদের অনুভূতি বোঝেন আর আমরা কোন সমস্যাগুলোর মুখোমুখি হই, তা তারা জানেন। কেন আপনি এই বিষয়টা জেনে সান্ত্বনা লাভ করতে পারেন?
৭. ঈশ্বরের রাজ্যের আইনগুলো অন্য যেকোনো সরকারের চেয়ে অনেক বেশি ভালো
সরকারগুলো তাদের নাগরিকদের ভালোর জন্য এবং তাদের সুরক্ষার জন্য সাধারণত কিছু আইন তৈরি করে থাকে। ঈশ্বরের রাজ্য বা সরকারও তার নাগরিকদের জন্য কিছু আইন তৈরি করেছে। ১ করিন্থীয় ৬:৯-১১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
সমস্ত ব্যক্তি যদি ঈশ্বরের আইন অনুযায়ী জীবনযাপন করে,a তা হলে এই পৃথিবী কেমন হবে?
যিহোবা তাঁর রাজ্যের নাগরিকদের কাছ থেকে আশা করেন, তারা যেন সেই আইনগুলো মেনে চলে। যিহোবার এইরকম আশা করা কি ভুল? কেন আপনি তা মনে করেন?
কোন বিষয়টা থেকে আমরা বুঝতে পারি, ঈশ্বরের আইন যে-লোকেরা মেনে চলে না, তারাও পরিবর্তিত হতে পারে?—১১ পদ দেখুন।
কেউ কেউ জিজ্ঞেস করতে পারে: “ঈশ্বরের রাজ্য কী?”
উত্তরে আপনি কী বলবেন?
সারাংশ
ঈশ্বরের রাজ্য হল, একটা বাস্তব সরকার আর এই সরকার স্বর্গ থেকে পুরো পৃথিবীর উপর শাসন করবে।
পুনরালোচনা
ঈশ্বরের রাজ্যের রাজা কে?
ঈশ্বরের রাজ্য কেন মানুষের সরকারের চেয়ে অনেক বেশি ভালো?
যিহোবা তাঁর রাজ্যের নাগরিকদের কাছ থেকে কী আশা করেন?
আরও জানুন
ঈশ্বরের রাজ্য সম্বন্ধে যিশু কী বলেছিলেন? আসুন তা জানি।
কেন যিহোবার সাক্ষিরা মানুষের সরকারের পরিবর্তে ঈশ্বরের রাজ্যকে সমর্থন করে?
বাইবেল আমাদের ১,৪৪,০০০ জন ব্যক্তি সম্বন্ধে কী জানায়, যাদের যিহোবা যিশুর সঙ্গে রাজত্ব করার জন্য বেছে নিয়েছেন? আসুন তা জানি।
জেলে বন্দি একজন মহিলা কোন বিষয়টা থেকে নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, একমাত্র ঈশ্বরই এই পৃথিবী থেকে সমস্ত অবিচার দূর করতে পারেন? আসুন তা জানি।
“অবশেষে আমি বুঝতে পারি, অবিচার একদিন শেষ হবে” (সচেতন থাক!, নভেম্বর ২০১১, ইংরেজি)
-