পাঠ ৩৭
কাজ ও টাকাপয়সার বিষয়ে বাইবেল আমাদের কী বলে?
আপনি কি কখনো কাজ ও টাকাপয়সা নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন? এটা ঠিক যে, সংসার চালানোর পাশাপাশি যিহোবার সেবাকে প্রথম স্থানে রাখা আমাদের জন্য কঠিন হতে পারে। বাইবেল এই বিষয়ে আমাদের কোন পরামর্শ দেয়, যা আমাদের সাহায্য করতে পারে? আসুন তা জানি।
১. কাজ সম্বন্ধে বাইবেল আমাদের কী বলে?
যিহোবা চান যেন আমরা কাজ করে আনন্দ লাভ করি। বাইবেল বলে, “নিজ পরিশ্রমের মধ্যে প্রাণকে সুখভোগ করান ব্যতীত আর মঙ্গল মানুষের হয় না।” (উপদেশক ২:২৪) যিহোবা নিজেও অনেক পরিশ্রম করে থাকেন। আমরা যখন যিহোবার মতো কঠোর পরিশ্রম করি, তখন তিনি খুশি হন এবং আমরাও সন্তুষ্টি লাভ করি।
আমাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে। তবে কাজ নয় বরং যিহোবার সেবা যেন আমাদের জীবনে প্রথম স্থানে থাকে। (যোহন ৬:২৭) যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন, যদি আমরা তাঁকে আমাদের জীবনে প্রথম স্থানে রাখি, তা হলে তিনি আমাদের যত্ন নেবেন এবং আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জুগিয়ে দেবেন।
২. টাকাপয়সার প্রতি আমাদের কোন মনোভাব রাখা উচিত?
বাইবেল এটা স্বীকার করে, “ধনও আশ্রয়” বা সুরক্ষা দেয়। (উপদেশক ৭:১২) কিন্তু, এটি আমাদের সাবধানও করে যে, শুধুমাত্র টাকাপয়সা আমাদের সুখ দিতে পারে না। সেইজন্য আমাদের উৎসাহিত করা হয়েছে, আমরা যেন টাকাপয়সাকে ভালো না বাসি বরং ‘আমাদের যা আছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাকি।’ (পড়ুন, ইব্রীয় ১৩:৫.) আমরা যদি সন্তুষ্ট থাকি, তা হলে আমাদের এই চিন্তা আসবে না যে, কীভাবে আরও টাকাপয়সা কামানো যায় আর আমরা অযথা ধারদেনা করাও এড়িয়ে চলতে পারব। (হিতোপদেশ ২২:৭) এ ছাড়া, আমরা জুয়া খেলার এবং রাতারাতি বড়োলোক হওয়ার স্কীমের ফাঁদে জড়িয়ে পড়ব না।
৩. কীভাবে আমরা টাকাপয়সা ব্যবহার করে অন্যদের সাহায্য করতে পারি?
যিহোবা হলেন একজন উদার ঈশ্বর। আর আমরা ‘নিজের যা আছে, তা অন্যের সঙ্গে ভাগ করে নিয়ে’ তাঁকে অনুকরণ করতে পারি। (১ তীমথিয় ৬:১৮) কীভাবে আমরা এটা করতে পারি? আমরা মণ্ডলীর কাজের জন্য দান দিতে পারি এবং প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের, বিশেষ করে মণ্ডলীর ভাই-বোনদের আমরা টাকাপয়সা ব্যবহার করে সাহায্য করতে পারি। যিহোবা এটা দেখেন না যে, আমরা কতটা দিচ্ছি বরং তিনি এটা দেখেন, আমরা কোন মনোভাব নিয়ে তা দিচ্ছি। আমরা যখন হৃদয় থেকে অন্যদের দেব, তখন যিহোবা খুশি হবেন আর আমরাও খুশি হব।—পড়ুন, প্রেরিত ২০:৩৫.
গভীরভাবে গবেষণা করুন
কাজের প্রতি সঠিক মনোভাব বজায় রাখার এবং আমাদের কাছে যা আছে, তাতে সন্তুষ্ট থাকার কোন উপকারিতা রয়েছে? আসুন তা জানি।
৪. কাজের প্রতি সঠিক মনোভাব বজায় রাখার মাধ্যমে যিহোবার প্রশংসা হয়
যিহোবার সঙ্গে যদি আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব থাকে, তা হলে তিনি যেভাবে কাজকে দেখেন, আমরাও সেভাবে দেখব। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
কাজের জায়গায় জেসনের আচরণ এবং মনোভাব কেমন ছিল, তা আপনি এখানে লক্ষ করলেন। জেসনের কোন বিষয়টা আপনার ভালো লেগেছে?
জেসন এমন কী করেছিলেন, যেটা থেকে বোঝা যায়, চাকরি তার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল না?
কলসীয় ৩:২৩, ২৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
পূর্ণহৃদয়ে কাজ করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আমাদের অবশ্যই কাজ করতে হবে। তবে কাজ নয় বরং যিহোবার সেবা যেন আমাদের জীবনে প্রথম স্থানে থাকে
৫. সন্তুষ্ট থাকার ফলে কোন উপকার আসে?
অনেক লোক প্রচুর টাকাপয়সা কামানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, বাইবেল কী পরামর্শ দেয়, তা লক্ষ করুন। ১ তীমথিয় ৬:৬-৮ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
বাইবেল আমাদের কী করার জন্য উৎসাহিত করে?
আমাদের কাছে এমনকি অনেক কম টাকাপয়সা থাকলেও আমরা খুশি থাকতে পারি। ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন।
এই পরিবারগুলোর কাছে টাকাপয়সা কম থাকা সত্ত্বেও, কেন তারা খুশি ছিল?
আমাদের কাছে যথেষ্ট থাকা সত্ত্বেও মনে হতে পারে যে, আমাদের আরও প্রয়োজন। যিশু একটা দৃষ্টান্ত বলেছিলেন, যেটা থেকে বোঝা যায় যে, কেন এইরকম চিন্তা বিপদজনক হতে পারে। লূক ১২:১৫-২১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
যিশুর বলা দৃষ্টান্ত থেকে আপনি কী শিখেছেন?—১৫ পদ দেখুন।
হিতোপদেশ ১০:২২ এবং ১ তীমথিয় ৬:১০ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, যিহোবার সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব না কি অনেক টাকাপয়সা থাকা? কেন আপনি তা মনে করেন?
টাকাপয়সার পিছনে ছোটার ফলে কোন সমস্যা আসে?
৬. যিহোবা আমাদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জুগিয়ে দেবেন
চাকরি ও টাকাপয়সা নিয়ে কখনো কখনো আমাদের সামনে এমন সমস্যাগুলো আসে, যখন যিহোবার উপর নির্ভর করা আমাদের জন্য কঠিন বলে মনে হতে পারে। কীভাবে আমরা বিশ্বাসের এই পরীক্ষাগুলোর সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারি? এটা জানার জন্য ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন।
এই ভাইয়ের সামনে কোন সমস্যাগুলো এসেছিল?
এই ভাই সমস্যাগুলোর সঙ্গে সফলভাবে মোকাবিলা করার জন্য কী করেছিলেন?
মথি ৬:২৫-৩৪ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
যারা তাদের জীবনে যিহোবাকে প্রথম স্থানে রাখে, তাদের কাছে যিহোবা কোন প্রতিজ্ঞা করেছেন?
কেউ কেউ বলে থাকে: “সংসার চালানোর জন্য কতটা পরিশ্রম করতে হয় জানেন, কীভাবে আমি প্রতিটা সভায় যাব?”
আপনি কোন শাস্ত্রপদ থেকে বুঝতে পেরেছেন যে, এইরকম পরিস্থিতির মধ্যেও যিহোবার উপাসনাকে প্রথম স্থানে রাখা উচিত?
সারাংশ
কাজ ও টাকাপয়সার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু, এই বিষয়গুলো যেন যিহোবার সেবার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে না ওঠে।
পুনরালোচনা
কোন বিষয়টা আপনাকে কাজের প্রতি সঠিক মনোভাব বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে?
আমাদের যা-কিছু আছে, তাতে সন্তুষ্ট থাকার কোন কোন উপকার রয়েছে?
কীভাবে আপনি দেখাতে পারেন, যিহোবা তাঁর লোকদের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো জুগিয়ে দেওয়ার যে-প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেটার উপর আপনার আস্থা রয়েছে?
আরও জানুন
বাইবেল কি এটা বলে যে, টাকাপয়সা অনেক খারাপ জিনিস? আসুন তা জানি।
কোন ধরনের দান যিহোবাকে খুশি করে? আসুন তা জানি।
“অন্যদের সাহায্য করার বিষয়ে পবিত্র শাস্ত্র আমাদের কী বলে?” (অনলাইন প্রবন্ধ)
জুয়াখেলা কি ভুল?
একজন ব্যক্তি জুয়া খেলতেন এবং চুরি করতেন। কোন বিষয়টা তাকে তার জীবনধারা পরিবর্তন করতে সাহায্য করেছিল? আসুন তা জানি।
“ঘোড়া এবং ঘোড়দৌড়ের ব্যাপারে আমি পাগল ছিলাম” (প্রহরীদুর্গ, এপ্রিল ১ ২০১২)