পাঠ ৫৪
“বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস“ কে আর তারা কী করে থাকে?
যিশু হলেন খ্রিস্টীয় মণ্ডলীর নেতা। (ইফিষীয় ৫:২৩) বর্তমানে, তিনি স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে থাকা তাঁর শিষ্যদের পরিচালনা দিচ্ছেন। কীভাবে? “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাসের” মাধ্যমে। (পড়ুন, মথি ২৪:৪৫.) যিশু নিজে এই ‘দাসকে’ নিযুক্ত করেছেন আর কিছু বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দিয়েছেন। কিন্তু, তারপরও এই দাস জানে যে, তাদের যিশুর অধীনে থাকতে হবে এবং খ্রিস্টের ভাইদের সেবা করতে হবে। এখন প্রশ্ন হল, এই দাস কে? আর কীভাবে তারা আমাদের যত্ন নিয়ে থাকে? আসুন তা জানি।
১. “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” কে?
যিহোবা সবসময় তাঁর লোকদের কোনো পুরুষ অথবা পুরুষদের নিয়ে গঠিত কোনো ছোটো দলের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়ে এসেছেন। (মালাখি ২:৭; ইব্রীয় ১:১) যিশু মারা যাওয়ার পর, যিরূশালেমের প্রেরিত ও প্রাচীনেরা ঈশ্বরের লোকদের পরিচালনা দিয়েছিল। (প্রেরিত ১৫:২) ঠিক একইভাবে, বর্তমানে প্রাচীনদের নিয়ে গঠিত একটা ছোটো দল, ঈশ্বরের বাক্য থেকে আধ্যাত্মিক খাদ্য জুগিয়ে থাকে এবং প্রচার কাজে নির্দেশনা দিয়ে থাকে। এই দলকে যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালকগোষ্ঠী বলা হয়ে থাকে আর এই পরিচালকগোষ্ঠীই হল, “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” যাকে যিশু নিজে “নিযুক্ত করেছেন।” (মথি ২৪:৪৫ক) পরিচালকগোষ্ঠীর প্রত্যেক সদস্য হল, অভিষিক্ত খ্রিস্টান আর তাদের এই আশা রয়েছে যে, পৃথিবীতে তাদের জীবন শেষ করার পর তারা স্বর্গে যাবে এবং যিশুর সঙ্গে রাজত্ব করবে।
২. বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস আমাদের যে-প্রয়োজনীয় খাবার দেয়, সেটা কী?
যিশু বলেছিলেন যে, বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস খ্রিস্টান ভাই-বোনদের “উপযুক্ত সময়ে . . . খাবার” দেবে। (মথি ২৪:৪৫খ) কিন্তু, এই খাবার কী? এটা হল ঈশ্বরের বাক্য থেকে পাওয়া নির্দেশনা। যেমন, আপনি জানেন যে, খাবার খাওয়ার ফলে আমরা পুষ্টি লাভ করি এবং আমাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। ঠিক একইভাবে, ঈশ্বরের বাক্য থেকে পাওয়া আধ্যাত্মিক খাবার আমাদের শক্তিশালী করে। এই শক্তির সাহায্যে আমরা বিশ্বাসে দৃঢ় থাকতে পারি এবং যিশু আমাদের যে-কাজ দিয়েছেন, তা করতে পারি। (১ তীমথিয় ৪:৬) আমরা এই খাবার বিভিন্ন সভা, সম্মেলন, ভিডিও এবং প্রকাশনার মাধ্যমে পেয়ে থাকি। আর এগুলোর সাহায্যে আমরা ঈশ্বরের ইচ্ছা জানতে পারি এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের যে-বন্ধুত্ব রয়েছে, তা আরও শক্তিশালী করতে পারি।
গভীরভাবে গবেষণা করুন
কেন আমাদের “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” অর্থাৎ পরিচালকগোষ্ঠীর প্রয়োজন রয়েছে? আসুন তা জানি।
৩. যিহোবার লোকেরা সুসংগঠিত উপায়ে কাজ করে থাকে
যিশুর নির্দেশনার অধীনে, পরিচালকগোষ্ঠী যিহোবার সাক্ষিদের কাজ দেখাশোনা করে থাকে আর এই একই ধরনের ব্যবস্থা প্রথম শতাব্দীতেও ছিল। ভিডিওটা দেখুন।
১ করিন্থীয় ১৪:৩৩, ৪০ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কীভাবে আমরা এই শাস্ত্রপদগুলো থেকে বুঝতে পারি যে, যিহোবা চান যেন তাঁর লোকেরা সুসংগঠিত উপায়ে কাজ করে?
৪. বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস প্রচার কাজকে সংগঠিত করে থাকে
প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানেরা প্রচার কাজকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিল। প্রেরিত ৮:১৪, ২৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
প্রথম শতাব্দীতে প্রচার কাজে কারা নির্দেশনা দিত?
পিতর ও যোহন যখন অন্যান্য প্রেরিতদের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছিলেন, তখন তারা কী করেছিলেন?
বর্তমানে পরিচালকগোষ্ঠীও প্রচার কাজকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। ভিডিওটা দেখুন।
যিশু বলেছিলেন যে, প্রচার কাজ কতটা গুরুত্বপূর্ণ। মার্ক ১৩:১০ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
পরিচালকগোষ্ঠী কেন প্রচার কাজকে এত বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে?
পুরো পৃথিবীতে এই কাজ করার জন্য কেন আমাদের ‘বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাসকে’ প্রয়োজন?
৫. বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস মণ্ডলীগুলোকে নির্দেশনা দেয়
পরিচালকগোষ্ঠী সারা পৃথিবীতে থাকা মণ্ডলীগুলোকে নির্দেশনা দেয়। কীভাবে তারা ঠিক করে যে, কখন কোন নির্দেশনা দিতে হবে? প্রথম শতাব্দীতে প্রাচীন ও প্রেরিতদের নিয়ে গঠিত পরিচালকগোষ্ঠী কী করত, তা লক্ষ করুন। প্রেরিত ১৫:১, ২ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
প্রথম শতাব্দীর কিছু খ্রিস্টানের মধ্যে কোন বিষয়টা নিয়ে কথা কাটাকাটি ও তর্ক বিতর্ক হয়েছিল?
পৌল, বার্ণবা এবং আরও কয়েক জন ভাই, এই সমস্যা সমাধান করার জন্য কার কাছে গিয়েছিল?
প্রেরিত ১৫:১২-১৮, ২৩-২৯ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
প্রথম শতাব্দীতে থাকা পরিচালকগোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ঈশ্বরের চিন্তাভাবনা জানার জন্য কী করেছিল?—১২, ১৫ ও ২৮ পদ দেখুন।
প্রেরিত ১৫:৩০, ৩১ এবং ১৬:৪, ৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
পরিচালকগোষ্ঠী যে-সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানদের উপর কেমন প্রভাব ফেলেছিল?
পরিচালকগোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার ফলে তারা যিহোবার কাছ থেকে কোন আশীর্বাদ লাভ করেছিল?
২ তীমথিয় ৩:১৬ এবং যাকোব ১:৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
বর্তমানে পরিচালকগোষ্ঠীকে যখন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তখন তারা কী করে?
কেউ কেউ বলে থাকে: “পরিচালকগোষ্ঠী তো মানুষদের নিয়েই গঠিত, তাই আপনি মানুষদের কথাই শুনছেন।”
কোন বিষয়টা থেকে আপনি নিশ্চিত হয়েছেন যে, যিশু পরিচালকগোষ্ঠীকে পরিচালনা দিচ্ছেন?
সারাংশ
যিহোবার সাক্ষিদের পরিচালকগোষ্ঠী হল, সেই “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” যাকে যিশু নিযুক্ত করেছেন। এই দাস পৃথিবীর সমস্ত খ্রিস্টানকে নির্দেশনা দিয়ে থাকে এবং তাদের বিশ্বাসকে শক্তিশালী করার জন্য প্রয়োজনীয় আধ্যাত্মিক খাদ্য জুগিয়ে থাকে।
পুনরালোচনা
“বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস” কে নিযুক্ত করেছেন?
পরিচালকগোষ্ঠী কীভাবে আমাদের যত্ন নেয়?
আপনি কি বিশ্বাস করেন, পরিচালকগোষ্ঠীই হল “বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস”?
আরও জানুন
পরিচালকগোষ্ঠী কীভাবে সুসংগঠিত উপায়ে কাজ করে থাকে? আসুন তা জানি।
পরিচালকগোষ্ঠী কীভাবে এই বিষয়টা নিশ্চিত করে যে, তারা আমাদের বিশ্বাস শক্তিশালী করার জন্য যে-নির্দেশনা দেয়, তা যেন নির্ভরযোগ্য হয়? আসুন তা জানি।
পরিচালকগোষ্ঠীকে যিশু যে-দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই বিষয়ে পরিচালকগোষ্ঠীর সদস্যেরা কেমন অনুভব করে?
বিভিন্ন সভা ও সম্মেলনগুলো থেকে কীভাবে আমরা বুঝতে পারি যে, যিহোবা পরিচালকগোষ্ঠীকে পরিচালনা দিচ্ছেন?