জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
অক্টোবর ২-৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দানিয়েল ৭-৯
“দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী মশীহের আগমন সম্বন্ধে জানিয়েছিল”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৯০২ অনু. ২, ইংরেজি
সত্তর সপ্তাহ
অপরাধ ও পাপ শেষ করা হয়। মৃত্যুবরণ করার মাধ্যমে যিশুর উচ্ছিন্ন হওয়া, তাঁর পুনরুত্থান এবং তাঁর স্বর্গারোহণের ফলে ‘পাপ শেষ করা, অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করা’ হয়েছিল। (দানি ৯:২৪) ব্যবস্থা চুক্তি যিহুদিদের পাপী হিসেবে প্রকাশ করে দিয়েছিল, তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছিল এবং চুক্তি ভঙ্গকারী হিসেবে তাদের উপর অভিশাপ নিয়ে এসেছিল। যদিও মোশির ব্যবস্থা দ্বারা পাপের “বাহুল্য” প্রকাশ পেয়েছিল বা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, তবে ঈশ্বরের কাছ থেকে আসা মশীহের মাধ্যমে তাঁর করুণা ও অনুগ্রহ আরও উপচে পড়েছিল। (রোমীয় ৫:২০) মশীহের বলিদানের মাধ্যমে অনুতপ্ত পাপীদের অপরাধ ও পাপ ক্ষমা করা হয় আর এভাবে শাস্তি তুলে নেওয়া সম্ভব হয়।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৯০০ অনু. ৭, ইংরেজি
সত্তর সপ্তাহ
‘উনসত্তর সপ্তাহ’ পর মশীহের আগমন। পরবর্তী “বাষট্টি সপ্তাহ” (দানি ৯:২৫), “সাত সপ্তাহ” শেষ হওয়ার পর পরই শুরু হয় কারণ সেগুলো ৭০ সপ্তাহের অংশ ও বর্ণনার মধ্যে দ্বিতীয়তে রয়েছে। তাই, যিরূশালেম পুনর্স্থাপন ও নির্মাণ করার “আজ্ঞা বাহির হওয়া অবধি অভিষিক্ত ব্যক্তি, নায়ক, পর্য্যন্ত” সময়টা হবে ৭ যোগ ৬২ “সপ্তাহ” বা ৬৯ “সপ্তাহ”—৪৮৩ বছর—খ্রিস্টপূর্ব ৪৫৫ সাল থেকে শুরু করে ২৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। উপরে যেমনটা উল্লেখ করা হয়েছে, ২৯ খ্রিস্টাব্দের শরৎ কালে যিশু জলে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন, পবিত্র আত্মার দ্বারা অভিষিক্ত হয়েছিলেন এবং “অভিষিক্ত ব্যক্তি, নায়ক” হিসেবে তাঁর পরিচর্যা শুরু করেছিলেন।—লূক ৩:১, ২, ২১, ২২.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৯০১ অনু. ২, ইংরেজি
সত্তর সপ্তাহ
সপ্তাহের অর্ধকালে “উচ্ছিন্ন” হওয়া। গাব্রিয়েল দানিয়েলকে আরও বলেছিলেন: “বাষট্টি সপ্তাহের পরে অভিষিক্ত ব্যক্তি উচ্ছিন্ন হইবেন, এবং তাঁহার কিছুই থাকিবে না।” (দানি ৯:২৬) এটা ‘সাত যোগ বাষট্টি’ সপ্তাহের শেষ হওয়ার কিছু সময় পর, আসলে প্রায় সাড়ে তিন বছর পর হয়েছিল, যখন খ্রিস্টকে যাতনাদণ্ডে হত্যা করার মাধ্যমে উচ্ছিন্ন করা হয়েছিল আর এভাবে তিনি মানবজাতির জন্য মুক্তির মূল্য হিসেবে তাঁর কাছে যা-কিছু ছিল, সবই প্রদান করেছিলেন। (যিশা ৫৩:৮) সাক্ষ্যপ্রমাণ ইঙ্গিত করে যে, ‘সপ্তাহের’ প্রথম অর্ধকাল যিশু পরিচর্যায় ব্যয় করেছিলেন। একবার, সম্ভবত ৩২ খ্রিস্টাব্দের শরৎ কালে তিনি একটা দৃষ্টান্ত তুলে ধরেছিলেন, স্পষ্টতই যিহুদি জাতিকে একটা ডুমুর গাছের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, (তুলনা করুন, মথি ১৭:১৫-২০; ২১:১৮, ১৯, ৪৩) যে-গাছ “তিন বৎসর” ধরে কোনো ফল দেয়নি। দ্রাক্ষা-পালক দ্রাক্ষাক্ষেত্রের মালিককে বলেছিলেন: “প্রভু, এই বৎসরও ওটা থাকিতে দিউন, আমি ইহার মূলের চারিদিকে খুঁড়িয়া সার দিব, তাহার পরে উহাতে ফল ধরে ত ভালই, নয় ত ওটা কাটিয়া ফেলিবেন।” (লূক ১৩:৬-৯) এখানে তিনি হয়তো সেই অসংবেদনশীল জাতির জন্য করা তাঁর পরিচর্যার সময়কাল সম্বন্ধে উল্লেখ করেছিলেন, যে-পরিচর্যা তিনি প্রায় তিন বছর ধরে করেছিলেন ও সেটা চতুর্থ বছরে পড়তে যাচ্ছিল।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৯০১ অনু. ৫, ইংরেজি
সত্তর সপ্তাহ
‘সপ্তাহের অর্দ্ধকাল’ হবে সাত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বা বছরের “সপ্তাহ” শুরু হওয়ার সাড়ে তিন বছর পর। যেহেতু ৭০তম “সপ্তাহ” ২৯ খ্রিস্টাব্দের শরৎ কালের দিকে অর্থাৎ যিশুর বাপ্তিস্ম এবং খ্রিস্ট হিসেবে অভিষিক্ত হওয়ার সময় শুরু হয়েছিল, তাই সপ্তাহের অর্ধকাল (সাড়ে তিন বছর) ৩৩ খ্রিস্টাব্দের বসন্ত কাল বা সেই বছরের নিস্তারপর্বের সময় (১৪ নিশান) পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী সেই দিনটা সম্ভবত ৩৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসের ১ তারিখ ছিল। (প্রভুর সান্ধ্যভোজ [এটা প্রবর্তনের সময়] দেখুন।) প্রেরিত পৌল আমাদের বলেন, যিশু ‘ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করিতে’ এসেছিলেন, আর তা ছিল ‘প্রথম বিষয় [ব্যবস্থা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বলি ও উৎসর্গ] লোপ করা, যেন তিনি দ্বিতীয় বিষয় স্থির করিতে পারেন।’ তিনি নিজের দেহ বলি হিসেবে উৎসর্গ করার মাধ্যমে তা করেছিলেন।—ইব্রীয় ১০:১-১০.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
পাঠকদের থেকে প্রশ্নসকল
দানিয়েল ৯:২৪ পদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, “মহাপবিত্রকে” কখন অভিষেক করা হয়েছিল?
দানিয়েল ৯:২৪-২৭ পদগুলোতে “অভিষিক্ত ব্যক্তি, নায়ক” খ্রিস্টের আগমন সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। তাই, “মহাপবিত্রকে” অভিষেক করার বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণীটা যিরূশালেম মন্দিরের অতি পবিত্র স্থানের অভিষেকের কথা বোঝাচ্ছে না। বরং, এখানে ‘মহাপবিত্র’ বলতে ঈশ্বরের স্বর্গীয় পবিত্র স্থানকে অর্থাৎ যিহোবার মহান আত্মিক মন্দিরের স্বর্গীয় অতি পবিত্র স্থানকে বোঝাচ্ছে।—ইব্রীয় ৮:১-৫; ৯:২-১০, ২৩.
ঈশ্বরের আত্মিক মন্দির কখন থেকে কার্যকর হতে শুরু করে? এটা জানার জন্য, সা.কা. ২৯ সালে যিশু যখন বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন তখন কী হয়েছিল তা ভেবে দেখুন। তখন থেকে যিশু গীতসংহিতা ৪০:৬-৮ পদের কথাগুলো পূর্ণ করেছিলেন। প্রেরিত পৌল পরে বলেছিলেন যে, যিশু ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছিলেন: “তুমি যজ্ঞ ও নৈবেদ্য ইচ্ছা কর নাই, কিন্তু আমার জন্য দেহ রচনা করিয়াছ।” (ইব্রীয় ১০:৫) যিশু জানতেন যে, যিরূশালেম মন্দিরে সবসময়ই পশু বলিদান করা হবে তা ঈশ্বর ‘ইচ্ছা করেননি।’ এর বদলে যিশুর জন্য যিহোবা এক সিদ্ধ দেহ রচনা করেছিলেন, যাতে বলি হিসেবে তা তিনি উৎসর্গ করতে পারেন। মনপ্রাণ দিয়ে তা পালন করতে চেয়ে যিশু বলেছিলেন: “আমি আসিয়াছি,—গ্রন্থখানিতে আমার বিষয় লিখিত আছে—হে ঈশ্বর, যেন তোমার ইচ্ছা পালন করি।” (ইব্রীয় ১০:৭) আর এর উত্তরে যিহোবা কী বলেছিলেন? মথির সুসমাচার জানায়: “পরে যীশু বাপ্তাইজিত হইয়া অমনি জল হইতে উঠিলেন; আর দেখ, তাঁহার নিমিত্ত স্বর্গ খুলিয়া গেল, এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে কপোতের ন্যায় নামিয়া আপনার উপরে আসিতে দেখিলেন। আর দেখ, স্বর্গ হইতে এই বাণী হইল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্ত্র, ইঁহাতেই আমি প্রীত।’”—মথি ৩:১৬, ১৭.
যিশুর দেহকে বলি হিসেবে মেনে নিয়ে যিহোবা ঈশ্বর দেখিয়েছিলেন যে, যিরূশালেম মন্দিরের আক্ষরিক বেদির চেয়ে আরও মহান এক বেদি কার্যকর হয়েছিল। এটা ছিল ঈশ্বরের ‘ইচ্ছার’ এক বেদি অর্থাৎ যিশুর মানবদেহকে বলি হিসেবে গ্রহণ করার জন্য একটা ব্যবস্থা। (ইব্রীয় ১০:১০) যিশুকে পবিত্র আত্মা দ্বারা অভিষেক করা বুঝিয়েছিল যে, ঈশ্বর তখন থেকে তাঁর পুরো আত্মিক মন্দির ব্যবস্থাকে কার্যকর করেছিলেন। তাই, যিশুর বাপ্তিস্মের সময় ঈশ্বরের স্বর্গীয় আবাসকে, মহান আত্মিক মন্দির ব্যবস্থায় ‘মহাপবিত্র’ হিসেবে অভিষিক্ত অথবা আলাদা করা হয়েছিল।
দানিয়েল বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৯:২৭—বছরের হিসেবে ৭০তম সপ্তাহের শেষ বা সা.কা. ৩৬ সাল পর্যন্ত কোন নিয়ম বা চুক্তি “অনেকের সহিত দৃঢ়” বা কার্যকর ছিল? সা.কা. ৩৩ সালে যখন যিশুকে বিদ্ধ করা হয়েছিল, তখন ব্যবস্থা চুক্তি দূর করা হয়েছিল। কিন্তু, যিহোবা মাংসিক ইস্রায়েলের সঙ্গে করা অব্রাহামের চুক্তি সা.কা. ৩৬ সাল পর্যন্ত কার্যকর রাখার মাধ্যমে, অব্রাহামের বংশধর হওয়ার কারণে যিহুদিদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ দেখানোর সময়কাল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। অব্রাহামের চুক্তি ‘ঈশ্বরের ইস্রায়েলের’ প্রতি এখনও কার্যকর রয়েছে।—গালাতীয় ৩:৭-৯, ১৪-১৮, ২৯; ৬:১৬.
অক্টোবর ৯-১৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | দানিয়েল ১০-১২
“যিহোবা রাজাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পেয়েছিলেন”
দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী ২১২-২১৩ অনু. ৫-৬, ইংরেজি
দুই রাজা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন
৫ প্রথম তিন জন রাজা ছিলেন মহান কোরস, ক্যামবাইসিজ ২য় ও দারিয়াবস ১ম (হিসটাসপিস)। যেহেতু ব্যারডিয়া (বা গওমাটা নামে সিংহাসনের একজন দাবিদার) কেবল সাত মাস শাসন করেছিলেন, তাই ভবিষ্যদ্বাণীতে তার এই সংক্ষিপ্ত শাসনকাল বিবেচনা করা হয়নি। খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০ সালে, তৃতীয় রাজা দারিয়াবস ১ম, দ্বিতীয় বার গ্রিস আক্রমণ করার পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। যাইহোক, পারসিকরা এক দীর্ঘ যাত্রা শুরু করেছিল এবং পিছু হটে এশিয়া মাইনরে অবস্থান নিয়েছিল। যদিও দারিয়াবস গ্রিসের বিরুদ্ধে আরও এক বার আক্রমণ করার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, তবে তিনি তা সম্পন্ন করতে পারেননি, কারণ চার বছর পর তিনি মারা গিয়েছিলেন। তিনি তার ছেলে ও উত্তরসূরি অর্থাৎ “চতুর্থ” রাজা জার্কসিজ ১ম-এর জন্য তা রেখে গিয়েছিলেন। এই ব্যক্তি ছিলেন রাজা অহশ্বেরশ, যিনি ইষ্টেরকে বিয়ে করেছিলেন।—ইষ্টের ১:১; ২:১৫-১৭.
৬ জার্কসিজ ১ম এমনকী “যবন-রাজ্যের” অর্থাৎ গ্রিসের স্বাধীন প্রদেশগুলোর ‘বিরুদ্ধে সকলকে উত্তেজিত করিয়া’ তুলেছিলেন। মাদীয় ও পারসিক—বিজয়ী ও কূটকৌশলী (ইংরেজি) বইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, “উচ্চাকাঙ্ক্ষী রাজকর্মচারীদের উৎসাহে, জার্কসিজ স্থল ও সমুদ্রপথে আক্রমণ শুরু করেছিলেন।” খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীর গ্রিক ইতিহাসবেত্তা হেরোডোটাস লিখেছিলেন, “অন্য কোনো আক্রমণের সঙ্গে এই আক্রমণের কোনো তুলনাই করা যায় না।” তার বিবরণ জানায়, সমুদ্রপথে আক্রমণকারী পুরুষের সংখ্যা ছিল “সর্বমোট ৫,১৭,৬১০ জন। পদাতিক সৈন্যের সংখ্যা ছিল ১৭,০০,০০০ জন; অশ্বারোহী সৈন্যের সংখ্যা ছিল ৮০,০০০ জন; আর এদের সঙ্গে উটের পিঠে চড়ে আসা আরবীয়দের ও রথে চড়ে যুদ্ধ করতে আসা লুবীয়দেরও যুক্ত করতে হবে, যাদের সংখ্যা ছিল আমার মতে ২০,০০০ জন। তাই, স্থল ও সমুদ্রপথে আসা সৈন্যের মোট সংখ্যা ছিল ২৩,১৭,৬১০ জন।”
দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী ২১৩ অনু. ৮, ইংরেজি
দুই রাজা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন
৮ স্বর্গদূত বলেছিলেন, “বীর্য্যবান্এক রাজা উৎপন্ন হইবে, সে মহাকর্ত্তৃত্ব-বিশিষ্ট কর্ত্তা হইবে ও স্বেচ্ছানুসারে কর্ম্ম করিবে।” (দানিয়েল ১১:৩) খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৬ সালে, ২০ বছর বয়সি আলেকজান্ডার মাকিদনিয়ার রাজা হিসেবে ‘উৎপন্ন হইয়াছিলেন।’ তিনি “বীর্য্যবান্ এক রাজা”—মহান অলেকজান্ডার—হয়ে উঠেছিলেন। তার বাবা ফিলিপ ২য়-র পরিকল্পনা অনুসরণ করে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে পারসিকদের বিভিন্ন প্রদেশ দখল করে নিয়েছিলেন। তার ৪৭,০০০ সৈন্য ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদী অতিক্রম করে, গগামিলা নামক একটা স্থানে দারিয়াবস ৩য়-র ২,৫০,০০০ সৈন্যকে ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল। এরপর, দারিয়াবস পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে হত্যা করা হয়েছিল আর এভাবে পারসিক রাজবংশের সমাপ্তি ঘটেছিল। গ্রিস সেই সময় বিশ্বশক্তি হয়ে উঠেছিল এবং আলেকজান্ডার ‘মহাকর্ত্তৃত্ব-বিশিষ্ট কর্ত্তা হইয়াছিলেন ও স্বেচ্ছানুসারে কর্ম্ম করিয়াছিলেন।’
দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী ২১৪ অনু. ১১, ইংরেজি
দুই রাজা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন
১১ আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর তার রাজ্য “চারি বায়ুর দিকে বিভক্ত” হয়ে গিয়েছিল। তার অনেক সেনাপতি এলাকা দখল করার জন্য নিজেরা দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছিল। সেনাপতি এনটিগোনাস ১ম, যিনি শুধু এক চোখে দেখতে পেতেন, তিনি আলেকজান্ডারের সমস্ত সাম্রাজ্য নিজের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু, ফরুগিয়ার ইপসাসে সংঘটিত যুদ্ধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩০১ সালের মধ্যে, আলেকজান্ডারের চার জন সেনাপতি সেই বিশাল এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেয়, যে-এলাকা তাদের নেতা জয় করেছিলেন। ক্যাসেন্ডার, ম্যাসিডোনিয়া ও গ্রিসের উপর শাসন করেছিলেন। লাইসিমেকাস, এশিয়া মাইনর ও থ্রাসের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। সেলিউকাস ১ম নিকেটর, মেসোপটেমিয়া ও সিরিয়া অধিকার করেছিলেন। আর টলেমি লাগাস, প্যালেস্টাইন ও মিশর দখল করেছিলেন। ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা স্বরূপ, আলেকজান্ডারের বিশাল সাম্রাজ্য চারটে রাজ্যে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৭/১৫ ১৩ অনু. ১৬, টীকা
‘দেখ, আমিই প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি’
দানিয়েল ১২:৩ পদ বলে, “যাহারা বুদ্ধিমান্, তাহারা [অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা] বিতানের দীপ্তির ন্যায় . . . দেদীপ্যমান হইবে।” পৃথিবীতে থাকাকালীন প্রচারে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে তারা দেদীপ্যমান হয়। কিন্তু, মথি ১৩:৪৩ পদ সেই সময়কে নির্দেশ করে, যখন তারা স্বর্গীয় রাজ্যে দেদীপ্যমান হবে। আগে আমরা মনে করতাম যে, এই দুটো শাস্ত্রপদ একই কাজকে—প্রচার কাজকে—নির্দেশ করে।
দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী ৩১৫ অনু. ১৮, ইংরেজি
যিহোবা দানিয়েলকে এক চমৎকার পুরস্কার দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেন
১৮ মানুষের জন্য করা ঈশ্বরের অন্যতম চমৎকার এক প্রতিজ্ঞা দিয়ে দানিয়েল বইটি শেষ হয়। যিহোবার স্বর্গদূত দানিয়েলকে বলেছিলেন: “তুমি . . . দিন-সমূহের শেষে আপন অধিকারে দণ্ডায়মান হইবে।” সেই স্বর্গদূত কী বুঝিয়েছিলেন? সবেমাত্র তার উল্লেখিত “বিশ্রাম” শব্দটা যেহেতু মৃত্যুকে নির্দেশ করে, তাই দানিয়েল যে কিছু সময় পর “দণ্ডায়মান” হবেন, সেই প্রতিজ্ঞা কেবল একটা বিষয়কেই—পুনরুত্থানকেই—বোঝাতে পারে! আসলে, কোনো কোনো পণ্ডিত ব্যক্তি এমনটা দাবি করেছেন, ইব্রীয় শাস্ত্রে দানিয়েল ১২ অধ্যায়েই পুনরুত্থান সম্বন্ধে প্রথম বার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। (দানিয়েল ১২:২) তবে, এক্ষেত্রে তারা ভুল করেছেন। দানিয়েল পুনরুত্থানের আশা সম্বন্ধে ভালোভাবে জানতেন।
অক্টোবর ১৬-২২
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | হোশেয় ১-৭
“যিহোবা অনুগত প্রেম দেখে আনন্দিত হন—আপনিও কি হন?”
প্রহরীদুর্গ ১০ ৮/১৫ ২৫ অনু. ১৮
প্রেমপূর্ণ-দয়ার ব্যবস্থা আপনার জিহ্বাকে রক্ষা করুক
১৮ যিহোবার সহউপাসকদের সঙ্গে আমাদের সমস্ত আচরণে অনুগত প্রেম দেখানো উচিত। এমনকী কঠিন পরিস্থিতিতেও, আমাদের জিহ্বা থেকে প্রেমপূর্ণ-দয়ার ব্যবস্থা বিচ্যুত হওয়া উচিত নয়। ইস্রায়েল সন্তানদের প্রেমপূর্ণ-দয়া যখন “শিশিরের ন্যায়” হয়ে উঠেছিল, “যাহা প্রত্যূষে উড়িয়া যায়,” তখন যিহোবা অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। (হোশেয় ৬:৪, ৫) অন্যদিকে, যখন নিয়মিতভাবে প্রেমপূর্ণ-দয়া দেখানো হয়, তখন যিহোবা আনন্দিত হন। যারা এর অনুধাবন করে, তাদেরকে তিনি কীভাবে আশীর্বাদ করেন, তা বিবেচনা করুন।
হোশেয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৬:৬. পাপ করে চলা ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্যহীনতা এবং প্রেমের অভাবকে ইঙ্গিত করে। কোনো আধ্যাত্মিক বলিই এই ঘাটতির ক্ষতিপূরণ করতে পারে না।
যিহোবা আপনার বাধ্যতাকে মূল্যবান বলে গণ্য করেন
৭ এই প্রসঙ্গে স্মরণ করে দেখুন, অতীতে যিহোবা তাঁর প্রাচীন লোকেদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন যে, পশুবলির চেয়ে বাধ্যতা এমনকী আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। (হিতোপদেশ ২১:৩, ২৭; হোশেয় ৬:৬; মথি ১২:৭) যেখানে যিহোবাই তাঁর লোকেদেরকে এই ধরনের বলিদান করতে আজ্ঞা দিয়েছিলেন, সেখানে কেন তিনিই এই কথা বলেছিলেন? আসলে, যে-ব্যক্তি বলি উৎসর্গ করছেন, তার উদ্দেশ্য কী? তিনি কি ঈশ্বরকে খুশি করার জন্য তা করছেন? না কি তিনি কেবল কিছু আচার-অনুষ্ঠান পালন করছেন? একজন উপাসক যদি সত্যিই ঈশ্বরকে খুশি করতে আকাঙ্ক্ষী হন, তা হলে ঈশ্বরের সমস্ত আজ্ঞার প্রতি বাধ্য হওয়ার বিষয়ে তিনি যত্নশীল হবেন। ঈশ্বরের পশুবলির কোনো প্রয়োজন নেই কিন্তু আমাদের বাধ্যতাই এমন এক মূল্যবান বিষয়, যা আমরা তাঁকে দিতে পারি।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
হোশেয় বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
১:৭—কখন যিহূদা-কুলের প্রতি করুণা দেখানো হয়েছিল এবং তাদের পরিত্রাণ করা হয়েছিল? এটা সা.কা.পূ. ৭৩২ সালে রাজা হিষ্কিয়ের সময়ে পরিপূর্ণ হয়েছিল। সেই সময়ে একজন দূতের মাধ্যমে এক রাতে ১,৮৫,০০০ জন শত্রু সেনাকে হত্যা করে যিহোবা যিরূশালেমের প্রতি অশূরীয়দের হুমকিকে শেষ করে দিয়েছিলেন। (২ রাজাবলি ১৯:৩৪, ৩৫) এভাবে যিহোবা যিহূদাকে “ধনু কি খড়্গ কি যুদ্ধ কি অশ্ব কি অশ্বারোহী দ্বারা” নয় কিন্তু একজন দূতের দ্বারা উদ্ধার করেছিলেন।
প্রহরীদুর্গ ০৫ ১১/১৫ ২০ অনু. ১৬
হোশেয়র ভবিষ্যদ্বাণী ঈশ্বরের সঙ্গে গমনাগমন করতে আমাদের সাহায্য করে
১৬ ঈশ্বর এই প্রতিজ্ঞাও পরিপূর্ণ করেছিলেন: “সেই দিন আমি লোকদের নিমিত্ত মাঠের পশু, আকাশের পক্ষী ও ভূমির সরীসৃপ সকলের সহিত নিয়ম করিব; এবং ধনুক, খড়্গ ও রণসজ্জা ভাঙ্গিয়া দেশের মধ্য হইতে উচ্ছিন্ন করিব, ও তাহাদিগকে নিশ্চিন্তে শয়ন করাইব।” (হোশেয় ২:১৮) যে-যিহুদি অবশিষ্টাংশরা তাদের জন্মভূমিতে ফিরে গিয়েছিল তারা নিরাপদে বাস করেছিল, পশুদের ভয় পাওয়ার কোনো কারণ তাদের ছিল না। এই ভবিষ্যদ্বাণী সা.কা. ১৯১৯ সালেও পরিপূর্ণ হয়েছিল, যখন আত্মিক ইস্রায়েলের অবশিষ্টাংশরা মিথ্যা ধর্মের বিশ্ব সাম্রাজ্য “মহতী বাবিল” থেকে মুক্ত হয়েছিল। তারা এখন নিরাপদে বাস করছে এবং তাদের সেই সহযোগীদের সঙ্গে আধ্যাত্মিক পরমদেশে জীবন উপভোগ করছে, যারা চিরকাল পৃথিবীতে বেঁচে থাকার আশা রাখে। এই সত্য খ্রিস্টানদের মধ্যে পশুসুলভ কোনো বৈশিষ্ট্য নেই।—প্রকাশিত বাক্য ১৪:৮; যিশাইয় ১১:৬-৯; গালাতীয় ৬:১৬.
সজাগ হোন! ০৫ ৯/৮ ১২ অনু. ২, ইংরেজি
যখন বিশ্বব্যাপী ঐক্য বিরাজ করবে
আসলে, পৃথিবীর প্রাণীরা এক নতুন ধরনের একতা উপভোগ করবে, কারণ ঈশ্বর তাঁর অনুগত মানব প্রজাদের তাদের পার্থিব গৃহের উত্তম তত্ত্বাবধায়ক হতে শিক্ষা দেবেন। তিনি এমনকী সকল শিকারি পশুর সঙ্গে রূপকভাবে ‘নিয়ম করিবেন,’ সেগুলোকে মানুষের বশ্যতাস্বীকার করে শান্তিপূর্ণভাবে বাস করতে পরিচালিত করবেন।—হোশেয় ২:১৮; আদিপুস্তক ১:২৬-২৮; যিশাইয় ১১:৬-৮.
অক্টোবর ২৩-২৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | হোশেয় ৮-১৪
“যিহোবাকে আপনার সর্বোত্তমটা দিন”
ঈশ্বরকে খুশি করে এমন বলিগুলো উৎসর্গ করা
অধিকন্তু, বাইবেল ইঙ্গিত করে যে, আমাদের প্রশংসার অভিব্যক্তিগুলোকে যিহোবার প্রতি উৎসর্গীকৃত বলি হিসেবে দেখা হয়। ঈশ্বর যে আমাদের ওষ্ঠাধরের প্রশংসাকে সবচেয়ে চমৎকার এক বলি হিসেবে বিবেচনা করেন, তা দেখাতে ভাববাদী হোশেয় ‘আপন আপন ওষ্ঠাধর বৃষরূপ’ বাক্যাংশটা ব্যবহার করেছিলেন। (হোশেয় ১৪:২) প্রেরিত পৌল ইব্রীয় খ্রিস্টানদের জোরালো পরামর্শ দিয়েছিলেন: ‘ঈশ্বরের উদ্দেশে নিয়ত স্তব-বলি, অর্থাৎ তাঁহার নাম স্বীকারকারী ওষ্ঠাধরের ফল, উৎসর্গ কর।’ (ইব্রীয় ১৩:১৫) আজকে, যিহোবার সাক্ষিরা সুসমাচার প্রচারে এবং সমস্ত জাতির লোকেদের শিষ্য করায় খুবই ব্যস্ত থাকে। (মথি ২৪:১৪; ২৮:১৯, ২০) তারা পৃথিবীব্যাপী দিনরাত্রি ঈশ্বরের উদ্দেশে স্তব বা প্রশংসাবলি উৎসর্গ করে চলেছে।—প্রকাশিত বাক্য ৭:১৫.
প্রহরীদুর্গ ১১ ২/১৫ ১৬ অনু. ১৫
ঈশ্বরের অনুমোদন লাভ করা অনন্তজীবনের দিকে পরিচালিত করে
১৫ একজন ইস্রায়েলীয় যিহোবার কাছে উৎসর্গ করতে পারত এমন পশুপাখির মধ্যে বৃষ বা ষাঁড় ছিল সবচেয়ে দামি। তাই, ‘আমাদের আপন আপন ওষ্ঠাধরের বৃষ’ সত্য ঈশ্বরের প্রশংসার জন্য আন্তরিকভাবে এবং ভেবে-চিন্তে বলা কথাকে নির্দেশ করে। যারা এই ধরনের বলি উৎসর্গ করেছিল, তাদের প্রতি যিহোবা কেমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন? তিনি বলেছিলেন: “আমি স্বেচ্ছায় তাহাদিগকে প্রেম করিব।” (হোশেয় ১৪:৪) যারা এই ধরনের স্তববলি উৎসর্গ করে, তারা যিহোবার ক্ষমা ও অনুমোদন লাভ করে এবং তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে।
যিহোবার দিন ৮৭ অনু. ১১, ইংরেজি
যিহোবার উচ্চ মান অনুযায়ী তাঁর সেবা করুন
১১ এ ছাড়া, হোশেয় ১৪:৯ পদ এক সরল পথে চলার ইতিবাচক দিকের প্রতিও মনোযোগ আকর্ষণ করে। ঈশ্বর যা চান, সেগুলো পরিপূর্ণ করার ফলে আশীর্বাদ ও উপকার লাভ করা যায়। আমাদের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তিনি আমাদের গঠন জানেন। তিনি আমাদের কাছ থেকে যা আশা করেন, তা আমাদের মঙ্গলের জন্যই। আমাদের ও ঈশ্বরের মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা করার জন্য আমরা হয়তো একটা গাড়ি ও এটার প্রস্তুতকারীর কথা চিন্তা করতে পারি। সেই নির্মাতা জানেন যে, কীভাবে গাড়িটা নকশা ও তৈরি করা হয়েছে। তিনি এটাও জানেন, গাড়িটার তেল প্রায়ই পরিবর্তন করতে হবে। আপনি যদি সেই মান উপেক্ষা করেন, হতে পারে এমন যুক্তি করেন, গাড়িটা তো ভালোমতোই চলছে, তা হলে কী হবে? সেটার ইঞ্জিন হয়তো সাধারণ সময়ের অনেক আগেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে ও একসময়ে বন্ধ হয়ে যাবে। মানুষের ক্ষেত্রে একই বিষয় সত্য। আমাদের সৃষ্টিকর্তা আমাদের বিভিন্ন আজ্ঞা দিয়েছেন। সেগুলো পালন করলে আমরা উপকার লাভ করব। (যিশাইয় ৪৮:১৭, ১৮) আমরা যে উপকার লাভ করি তা বুঝতে পারা, আমাদের তাঁর মান অনুযায়ী চলার ও তাঁর আজ্ঞা পালন করার আরেকটা কারণ জোগায়।—গীতসংহিতা ১১২:১.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ০৫ ১১/১৫ ২৮ অনু. ৭
“যিহোবার পথ সকল ন্যায়নিষ্ঠ”
৭ আমরা যদি যিহোবাকে কপটতাহীন এবং ন্যায়নিষ্ঠ উপায়ে উপাসনা করি, তা হলে আমরা তাঁর দয়া বা প্রেমপূর্ণ-দয়া অথবা অনুগত প্রেম লাভ করব। বিপথগামী ইস্রায়েলীয়দের বলা হয়েছিল: “তোমরা আপনাদের জন্য ধার্ম্মিকতার বীজ বপন কর, দয়ানুযায়ী শস্য কাট, আপনাদের জন্য পতিত ভূমি তোল; কেননা সদাপ্রভুর অন্বেষণ করিবার সময় আছে, যে পর্য্যন্ত তিনি আসিয়া তোমাদের উপরে ধার্ম্মিকতা না বর্ষান।”—হোশেয় ১০:১২.
প্রহরীদুর্গ ১১ ৮/১৫ ১০ অনু. ১০
তারা মশীহের অপেক্ষায় ছিল
১০ ইস্রায়েলীয়দের মতো, মশীহকেও মিশর হতে ডেকে আনা হবে। (হোশেয় ১১:১) হেরোদ হত্যাযজ্ঞের আদেশ জারি করার আগেই একজন স্বর্গদূত যোষেফ, মরিয়ম ও যিশুকে মিশরে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাদেরকে সেখানে “হেরোদের মৃত্যু পর্য্যন্ত” থাকতে হয়েছিল, “যেন ভাববাদী [হোশেয়] দ্বারা কথিত প্রভুর [ঈশ্বরের] এই বচন পূর্ণ হয়, ‘আমি মিসর হইতে আপন পুত্ত্রকে ডাকিয়া আনিলাম।’” (মথি ২:১৩-১৫) নিশ্চিতভাবেই, তাঁর জন্ম ও প্রাথমিক জীবনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ভবিষ্যদ্বাণীকৃত ঘটনাগুলো যিশু নিজেই তাঁর ইচ্ছামতো সাজাননি।
অক্টোবর ৩০–নভেম্বর ৫
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যোয়েল ১-৩
“তোমাদের পুত্ত্রকন্যাগণ ভাববাণী বলিবে”
প্রহরীদুর্গ ০২ ৮/১ ১৫ অনু. ৪-৫
“ঈশ্বরের মহৎ মহৎ কর্ম্মের” দ্বারা উদ্দীপিত হওয়া
৪ পবিত্র আত্মা লাভ করার পর যিরূশালেমের শিষ্যরা সময় নষ্ট না করে সঙ্গেসঙ্গে পরিত্রাণের সুসমাচার অন্যদের কাছে জানিয়েছিলেন, বসন্ত কালের এই সকালে যে-জনতা একত্র হয়েছিল, তাদের কাছেই প্রথমে বলেছিলেন। তাদের প্রচার কাজ এক লক্ষণীয় ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করেছিল, যে-সম্বন্ধে আট-শো বছর আগে পথূয়েলের পুত্র যোয়েল বলেছিলেন: “আমি মর্ত্ত্যমাত্রের উপরে আমার আত্মা সেচন করিব, তাহাতে তোমাদের পুত্ত্রকন্যাগণ ভাববাণী বলিবে তোমাদের প্রাচীনেরা স্বপ্ন দেখিবে, তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাইবে; আর তৎকালে আমি দাসদাসীদিগেরও উপরে আমার আত্মা সেচন করিব। . . . সদাপ্রভুর ঐ মহৎ ও ভয়ঙ্কর দিনের আগমনের পূর্ব্বে।”—যোয়েল ১:১; ২:২৮, ২৯, ৩১; প্রেরিত ২:১৭, ১৮, ২০.
৫ এর মানে কি এই ছিল যে, ঈশ্বর ভাববাদীদের এক বংশ উৎপন্ন করতে অর্থাৎ দায়ূদ, যোয়েল ও দবোরার মতো নারী-পুরুষদের উৎপন্ন করতে চলেছিলেন ও ভবিষ্যতের ঘটনাগুলো বলার জন্য তাদের ব্যবহার করতে যাচ্ছিলেন? না। খ্রিস্টান ‘পুত্ত্রকন্যাগণ এবং দাসদাসীগণ’ এই অর্থে ভাববাণী বলবেন যে, যিহোবা যে-‘মহৎ মহৎ কর্ম্ম’ করেছেন এবং আরও করবেন, সেগুলো বলার জন্য তারা যিহোবার আত্মার দ্বারা চালিত হবেন। তাই, তারা সর্বোচ্চ ব্যক্তির জন্য মুখপাত্র হিসেবে সেবা করবেন। কিন্তু, সেই জনতা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিল?—ইব্রীয় ১:১, ২.
যিহোবার দিন ১৬৭ অনু. ৪, ইংরেজি
“তোমরা জাতিগণের মধ্যে এই কথা প্রচার কর”
৪ আরেকটা দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা বিবেচনা করুন। যিহোবা ঈশ্বর ভাববাদী যোয়েলকে এমন এক সময়ের কথা বলেছিলেন, যখন বলতে গেলে সমস্ত ধরনের ব্যক্তি ভবিষ্যদ্বাণী করবে: “আর তৎপরে এইরূপ ঘটিবে, আমি মর্ত্ত্যমাত্রের উপরে আমার আত্মা সেচন করিব, তাহাতে তোমাদের পুত্ত্রকন্যাগণ ভাববাণী বলিবে তোমাদের প্রাচীনেরা স্বপ্ন দেখিবে, তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাইবে।” (যোয়েল ২:২৮-৩২) প্রেরিত পিতর এই বাক্যাংশকে ৩৩ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চাশত্তমীর দিন যিরূশালেমে উপরের কুঠরিতে সমবেত হওয়া ব্যক্তিদের উপর পবিত্র আত্মা বর্ষণ আর এরপর “ঈশ্বরের মহৎ মহৎ কর্ম্মের” বিষয়ে তাদের প্রচারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করেছিলেন। (প্রেরিত ১:১২-১৪; ২:১-৪, ১১, ১৪-২১) এখন আমাদের সময়ের কথা বিবেচনা করুন। বিংশ শতাব্দীর শুরু থেকে যোয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী ব্যাপক আকারে পরিপূর্ণ হয়ে আসছে। আত্মায় অভিষিক্ত খ্রিস্টানরা—নারী-পুরুষ, যুবক-বৃদ্ধ সকলে—‘ভাববাণী বলিতে’ অর্থাৎ “ঈশ্বরের মহৎ মহৎ কর্ম্মের” বিষয়ে ঘোষণা করতে শুরু করেছিলেন আর এর অন্তর্ভুক্ত ছিল রাজ্যের সুসমাচার, যে-রাজ্য এখন স্বর্গে প্রতিষ্ঠিত।
যোয়েল ও আমোষ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
২:৩২—‘সদাপ্রভুর [“যিহোবার,” NW] নামে ডাকিবার’ অর্থ কী? ঈশ্বরের নামে ডাকার অর্থ হল সেই নাম জানা, সেই নামকে গভীরভাবে সম্মান করা এবং সেই নামের অধিকারীর প্রতি আস্থা রাখা ও নির্ভর করা।—রোমীয় ১০:১৩, NW, ১৪.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
যোয়েল ও আমোষ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
২:১২, ১৩. অকৃত্রিম অনুতাপ অন্তর থেকে হতে হবে। এর সঙ্গে বাহ্যিক ‘বস্ত্র ছেঁড়া’ নয় বরং আভ্যন্তরীণ ‘আপন আপন অন্তঃকরণ চেরা’ জড়িত।
যোয়েল ও আমোষ বইয়ের প্রধান বিষয়গুলো
৩:১৪—‘দণ্ডাজ্ঞার তলভূমি’ কী? এটা হল ঈশ্বরের বিচার সম্পাদন করার জন্য এক প্রতীকী স্থান। যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যার নামের অর্থ “যিহোবা বিচারক,” তার দিনে ঈশ্বর তাদের চারপাশের জাতিগুলোর সেনাবাহিনীকে বিভ্রান্ত করার মাধ্যমে যিহূদাকে উদ্ধার করেছিলেন। তাই, এই স্থানকে ‘যিহোশাফট তলভূমিও’ বলা হয়। (যোয়েল ৩:২, ১২) আমাদের দিনে, এটা এক প্রতীকী স্থানকে চিত্রিত করে, যেখানে জাতিগুলোকে মদিরাকুণ্ডে দ্রাক্ষা চূর্ণ করার মতো চূর্ণ করা হবে।—প্রকাশিত বাক্য ১৯:১৫.