এক অসিদ্ধ জগতে নির্ভরতা
“আমি যাহা ইচ্ছা করি, সেই উত্তম ক্রিয়া করি না; কিন্তু মন্দ, যাহা ইচ্ছা করি না, কাজে তাহাই করি।” আপনার ক্ষেত্রে কি আপনি এই বিষয়টি সত্য হতে দেখেন? এটি জেনে উৎসাহিত হোন যে, প্রেরিত পৌলেরও একই সমস্যা ছিল; তবুও তিনি উল্লেখযোগ্য খ্রীষ্টীয় বিশ্বস্ততা রক্ষাকারী এক পুরুষ ছিলেন। এটি কি একটি স্ববিরোধী বিষয় নয়? রোমের খ্রীষ্টানদের প্রতি তার পত্রে, পৌল সমস্যাটিকে বিশ্লেষণ করেছিলেন: “পরন্তু যাহা আমি ইচ্ছা করি না, তাহা যদি করি, তবে তাহা আর আমি সম্পন্ন করি না, কিন্তু আমাতে বাসকারী পাপ তাহা করে।” তিনি কোন্ পাপের কথা উল্লেখ করেন এবং বিশ্বস্ত এক পুরুষ হওয়ার জন্য তিনি কিভাবে তা অতিক্রম করেছিলেন?—রোমীয় ৭:১৯, ২০.
পূর্বে তার পত্রে, পৌল লিখেছিলেন: “এক মনুষ্য দ্বারা পাপ, ও পাপ দ্বারা মৃত্যু জগতে প্রবেশ করিল; আর এই প্রকারে মৃত্যু সমুদয় মনুষ্যের কাছে উপস্থিত হইল, কেননা সকলেই পাপ করিল।” এই “এক মনুষ্য” ছিল আদম। (রোমীয় ৫:১২, ১৪) আদমজাত পাপ—প্রথম মানুষ আদমের পাপ—মানবজাতির জন্মগত অসিদ্ধতার কারণ এবং কেন বিশ্বস্ততা রক্ষা করা প্রকৃতই এক প্রতিদ্বন্দ্বিতাস্বরূপ তার মূল হেতু।
যেভাবে এটিকে পূর্বে ব্যবহার করা হত, “আদি পাপ” সম্বন্ধে পৌলের দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমানে ব্যাপকভাবে গৃহীত নয় কারণ বাইবেলের সৃষ্টির বিবরণ ক্রমবিবর্তনের মতবাদগুলির সমর্থনে ঈশ্বরতত্ত্বগত বৃত্তে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। “পণ্ডিতেরা সমস্ত বিবরণগুলিকে একপাশে সরিয়ে দিয়েছে,” এইভাবেই রোমীয় ৫:১২-১৪ পদের উপর এক আধুনিক মন্তব্য বর্ণনা করে। তথাপি একশ বছর আগে, বাইবেল সংক্রান্ত মন্তব্যগুলি সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে ব্যাখ্যা করেছিল যে “যখন আদম পাপ করেছিল . . . তখন সেই পাপ ও তার পরিণতির দ্বারা সে তার সমস্ত বংশধরদের কলঙ্কিত করেছিল।”a
বিশ্বস্ততার আদি পতন
বর্তমানে অনেকে যেমন প্রথম মানুষ আদমের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে, ঠিক তেমনই শয়তান, দিয়াবলকে এক পৌরাণিক কাহিনীর মিথ্যা রচনা বলে মনে করে অগ্রাহ্য করা হয়।b কিন্তু মুখ্য কর্তৃপক্ষ যীশু খ্রীষ্ট আমাদের বলেন যে, সে “সত্যে থাকে নাই,” অন্য কথায়, সে নির্ভরযোগ্য ছিল না। (যোহন ৮:৪৪) আর শয়তানের প্ররোচনাতেই আদম এবং তার স্ত্রী হবা, যিহোবার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল এবং পরীক্ষার সময়ে তাদের বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করেছিল।—আদিপুস্তক ৩:১-১৯.
যেহেতু আমরা সকলে আদমের বংশধর, তাই আমরা সকলে উত্তরাধিকার সূত্রে পাপ করার প্রবণতা অর্জন করেছি। জ্ঞানী ব্যক্তি শলোমন উল্লেখ করেছিলেন: “এমন ধার্ম্মিক লোক পৃথিবীতে নাই, যে সৎকর্ম্ম করে, পাপ করে না।” (উপদেশক ৭:২০) তবুও, যে কোন মানুষই নির্ভরযোগ্য হতে পারে। তা কিভাবে সম্ভব? কারণ বিশ্বস্ততা রক্ষা করতে কোন সিদ্ধ মানুষের প্রয়োজন হয় না।
বিশ্বস্ততার ভিত্তি
ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ অনেক ভুল করেছিলেন যার মধ্যে বৎশেবার সাথে তার সু-প্রমাণিত পারদারিকতামূলক সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত ছিল। (২ শমূয়েল ১১:১-২৭) দায়ূদের বহু ব্যর্থতা সুস্পষ্ট করেছিল যে, তিনি কোনভাবেই সিদ্ধ ছিলেন না। তবুও, এই ব্যক্তির মধ্যে যিহোবা কী দেখেছিলেন? দায়ূদের পুত্র শলোমনকে সম্বোধন করে, যিহোবা বলেছিলেন: “তোমার পিতা দায়ূদ যেমন চলিতেন, তেমনি . . . চিত্তের সিদ্ধতায় [“বিশ্বস্ততায়,” NW] ও সরলভাবে আমার সাক্ষাতে চল।” (বাঁকা অক্ষরে মুদ্রণ আমাদের।) (১ রাজাবলি ৯:৪) তার অনেক ভুল সত্ত্বেও, দায়ূদের মৌলিক নির্ভরযোগ্যতা সম্বন্ধে যিহোবা উপলব্ধি করেছিলেন। কেন?
দায়ূদ এর উত্তর দিয়েছিলেন, যখন তিনি শলোমনকে বলেছিলেন: “সদাপ্রভু সমস্ত অন্তঃকরণের অনুসন্ধান করেন, ও চিন্তার সমস্ত কল্পনা বুঝেন।” (১ বংশাবলি ২৮:৯) দায়ূদ ভুল করেছিলেন, কিন্তু তিনি নম্র ছিলেন এবং যা সঠিক তিনি সেটি করতে চেয়েছিলেন। তিনি অবিরতভাবে তিরস্কার এবং সংশোধন গ্রহণ করেছিলেন—বাস্তবিকই, তিনি তা চেয়েছিলেন। তার বিনতি ছিল, “সদাপ্রভু, আমার পরীক্ষা করিয়া প্রমাণ লও, আমার মর্ম্ম ও চিত্ত নির্ম্মল কর।” (গীতসংহিতা ২৬:২) আর দায়ূদ শোধিত হয়েছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, বৎশেবার সাথে তার পাপের কষ্টদায়ক ফল তার জীবনের শেষ পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। তবুও, দায়ূদ কখনও তার অন্যায়কে ন্যায়সংগত প্রমাণ করতে চেষ্টা করেননি। (২ শমূয়েল ১২:১-১২) অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, তিনি কখনও সত্য উপাসনা থেকে সরে যাননি। এই কারণে এবং দায়ূদের অকৃত্রিম আন্তরিক মর্মপীড়া ও অনুতাপের জন্য যিহোবা তার পাপ ক্ষমা করতে এবং বিশ্বস্ত এক পুরুষ হিসাবে তাকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত ছিলেন।—এছাড়াও গীতসংহিতা ৫১ অধ্যায়টি দেখুন।
পরীক্ষার সময়ে নির্ভরযোগ্য
তাঁর বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করার এক প্রচেষ্টায় যীশু শয়তান দিয়াবলের দ্বারা পরীক্ষিত হয়েছিলেন। আদমের বৈসাদৃশ্যে, একজন সিদ্ধ মানুষ হিসাবে যার বাধ্যতা কেবলমাত্র সাধারণভাবে ঐশিক ব্যবস্থাকে পালন করার নির্দেশের মাধ্যমেই পরীক্ষিত হয়েছিল, তাঁকে কষ্ট ও দুঃখভোগের মধ্যে দিয়ে বিশ্বস্ততা বজায় রাখতে হয়েছিল। তদুপরি, মানব পরিবারের উদ্ধার তাঁর বিশ্বস্ততার উপর নির্ভর করে, এটি জানার চাপও যীশুর ছিল।—ইব্রীয় ৫:৮, ৯.
যীশুর বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করার দৃঢ়সংকল্প নিয়ে শয়তান যীশুর দুর্বলতম মুহূর্তে তার সামনে উপস্থিত হয়েছিল—প্রান্তরে তাঁর ৪০ দিনব্যাপী ধ্যান এবং উপবাস সমাপ্ত করার পরে। তিন বার সে যীশুকে প্রলুব্ধ করেছিল—পাথরগুলিকে রুটিতে পরিণত করতে বলে; ধর্মধামের চূড়া থেকে ঝাঁপ দিতে এই বিষয়টি অনুমান করে যে, দূতেদের হস্তক্ষেপ তাঁকে রক্ষা করবে এবং এইভাবে তাঁর মশীহ ভূমিকা প্রমাণ করার জন্য একটি অলৌকিক চিহ্ন দিতে বলে এবং শুধু একবার শয়তানকে “প্রণাম” করার পরিবর্তে এই জগতের সমস্ত রাজ্যের কর্তৃত্ব গ্রহণ করতে বলে। কিন্তু যীশু, যিহোবার প্রতি তাঁর বিশ্বস্ততা বজায় রেখে প্রতিটি প্রলোভনকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন।—মথি ৪:১-১১; লূক ৪:১-১৩.
ইয়োবের বিশ্বস্ততা
পরীক্ষার মধ্যেও বিশ্বস্ততা বজায় রাখা সম্বন্ধে ইয়োবের পদক্ষেপ সুপরিচিত। আগ্রহের বিষয় হল, ইয়োব বুঝতে পারেননি কেন তার উপরে বিপর্যয় এসেছিল। তিনি জানতেন না যে শয়তান তার প্রতি মিথ্যা অভিপ্রায়ের দোষ আরোপ করেছিল এই বিষয়ে অভিযুক্ত করে যে, ইয়োব স্বার্থপর কারণগুলির জন্য ঈশ্বরকে সেবা করেছিল এবং দাবি করছিল যে তার নিজ চর্ম রক্ষার জন্য, ইয়োব স্বেচ্ছায় তার বিশ্বস্ততা ভঙ্গ করবেন। শয়তান যে ভুল ছিল, তা দেখাতে ঈশ্বর ইয়োবকে কিছু অত্যন্ত কষ্টকর অভিজ্ঞতা ভোগ করতে অনুমোদন করেছিলেন।—ইয়োব ১:৬-১২; ২:১-৮.
দৃশ্যপটে তিনজন মিথ্যা বন্ধু প্রবেশ করেছিল। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঈশ্বরের মানদণ্ড এবং উদ্দেশ্যগুলি ভুলভাবে উপস্থাপিত করেছিল। এমনকি ইয়োবের স্ত্রীও বিচার্য বিষয়টি বুঝতে অসমর্থ হওয়ায়, তার স্বামীর এই চরম প্রয়োজনীয় মুহূর্তে তাকে উৎসাহিত করতে ব্যর্থ হয়েছিল। (ইয়োব ২:৯-১৩) কিন্তু ইয়োব দৃঢ় ছিলেন। “প্রাণ থাকিতে আমি আপন সিদ্ধতা [“বিশ্বস্ততা,” NW] ত্যাগ করিব না। আমার ধার্ম্মিকতা আমি রক্ষা করিব, ছাড়িব না। আমি জীবিত থাকিতে আমার মন আমাকে ধিক্কার দিবে না।”—ইয়োব ২৭:৫, ৬.
বাইবেলে লিপিবদ্ধ অন্যান্য বিশ্বস্ত পুরুষ এবং নারীদের সাথে ইয়োবের অসাধারণ উদাহরণ, শয়তানকে এক মিথ্যাবাদী হিসাবে প্রমাণ করেছিল।
বিশ্বস্ততা এবং খ্রীষ্টীয় পরিচর্যা
বিশ্বস্ততা কি এমন একটি গুণ, যা যিহোবা কেবলমাত্র তাঁর নিজের সন্তুষ্টির জন্য উচ্চমূল্য দেন? না। আমাদের মনুষ্যদের জন্য, বিশ্বস্ততার এক অপরিহার্য মূল্য রয়েছে। এটি আমাদের উপকারার্থে, কারণ যীশু আমাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, ‘আমাদের সমস্ত অন্তঃকরণ, আমাদের সমস্ত প্রাণ ও আমাদের সমস্ত মন দিয়া আমাদের ঈশ্বর প্রভুকে [“যিহোবাকে,” NW] প্রেম’ করতে। সত্যই, এটি হল “মহৎ ও প্রথম আজ্ঞা” এবং বিশ্বস্ত এক পুরুষ, নারী অথবা শিশুই তা বজায় রাখতে পারে। (মথি ২২:৩৬-৩৮) এর সাথে কী জড়িত এবং এর পুরস্কারগুলি কী?
বিশ্বস্ত এক ব্যক্তি কেবলমাত্র তার সহমানবদের কাছেই নয়, কিন্তু অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে সে ঈশ্বরের কাছেও নির্ভরযোগ্য হতে পারে। তার হৃদয়ের শুদ্ধতা তার কাজের মাধ্যমে দেখা যায়; তিনি কপটতা মুক্ত। তিনি প্রতারণাপূর্ণ অথবা কলুষিত নন। প্রেরিত পৌল এটিকে এইভাবে বর্ণনা করেন: “লজ্জার গুপ্ত কার্য্যসমূহে জলাঞ্জলি দিয়াছি, ধূর্ত্ততায় চলি না, ঈশ্বরের বাক্যে ভাঁজ দিই না, কিন্তু সত্য প্রকাশ দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে মনুষ্যমাত্রের সংবেদের কাছে আপনাদিগকে যোগ্যপাত্র দেখাইতেছি।”—২ করিন্থীয় ৪:২.
লক্ষ্য করুন, পৌল সেই মনোভাবগুলির বিষয়ে উল্লেখ করেন যা খ্রীষ্টীয় পরিচর্যাকে অন্তর্ভুক্ত করে। কিভাবে একজন খ্রীষ্টীয় পরিচারক অন্যদের সেবা করবে যদি তার হাত বিশুদ্ধ না হয়, যদি তিনি বিশ্বস্ত এক ব্যক্তি না হন? আইরিশ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের একজন প্রধান যিনি সম্প্রতি পদত্যাগ করেছিলেন বিষয়টিকে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেন। দি ইনডিপেনডেন্ট সংবাদপত্র অনুসারে, তিনি স্বীকার করেছিলেন যে, তিনি “একজন শিশু যৌন নিপীড়নকারী পাদ্রিকে তার শিশু অপব্যবহারের কথা প্রকাশিত হওয়ার পরেও, শিশুদের সাথে কাজ চালিয়ে যেতে অনুমোদন করেছিলেন।” বিবরণটি ব্যাখ্যা করেছিল যে অপব্যবহার ২৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলেছিল। সেই পাদ্রির চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল, কিন্তু তার অধ্যক্ষের কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহণে নৈতিক বিশ্বস্ততার অভাবের কারণে, তার আক্রমণের দ্বারা ঐ বছরগুলিতে শিশুদের যে কষ্টভোগ সহ্য করতে হয়েছিল, তা চিন্তা করুন!
বিশ্বস্ততা—পুরস্কারগুলি
প্রেরিত যোহন একজন নির্ভীক পুরুষ ছিলেন। তাদের প্রবল উদ্দীপনার কারণে, যীশু তাকে এবং তার ভাই যাকোবকে “মেঘধ্বনির পুত্ত্র” বলে অভিহিত করেছিলেন। (মার্ক ৩:১৭) উল্লেখযোগ্য বিশ্বস্ততা রক্ষাকারী এক ব্যক্তি যোহন, পিতরের সাথে যিহূদী শাসকদের কাছে ব্যাখ্যা করেছিলেন যে, তিনি যীশুর সাথে থাকাকালীন যা দেখেছেন এবং শুনেছেন ‘তা না বলে থাকতে পারেন না।’ এছাড়াও যোহন সেই প্রেরিতদের একজন ছিলেন যারা বলেছিলেন: “মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।”—প্রেরিত ৪:১৯, ২০; ৫:২৭-৩২.
মনে হয় যে যোহন যখন তার বয়স ৯০ বছরের শেষের দিকে ছিল, “ঈশ্বরের বাক্য ও যীশুর সাক্ষ্য প্রযুক্ত” পাট্ম দ্বীপে নির্বাসিত হয়েছিলেন। (প্রকাশিত বাক্য ১:৯) তার সেই বয়সে, তিনি হয়ত ভেবেছিলেন যে তার পরিচর্যা শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কেবলমাত্র তার মত বিশ্বস্ত এক পুরুষকে প্রকাশিত বাক্যের রোমাঞ্চকর দর্শনগুলি লেখার কার্যভার অর্পণ করা যেতে পারত। এই ক্ষেত্রে যোহন বিশ্বস্ত ছিলেন। এটি তার জন্য কতই না এক অপূর্ব সুযোগ ছিল! এছাড়া আরও কিছু আসার ছিল। পরবর্তীকালে, স্পষ্টতই ইফিষের উপকণ্ঠে তিনি তার সুসমাচারের পুস্তক এবং তিনটি পত্র লিখেছিলেন। ৭০ বছরের বিশ্বস্ত, নির্ভরযোগ্য পরিচর্যাকে মুকুটিত করার জন্য কতই না মহান সুযোগ!
সাধারণভাবে বিশ্বস্ত এক ব্যক্তি হওয়া গভীর পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে। ঈশ্বরের দৃষ্টিতে নির্ভরযোগ্য হওয়া অনন্তকালীন পুরস্কারগুলি নিয়ে আসে। বর্তমানে, সত্য উপাসকদের “এক বিস্তর লোক” অনন্ত জীবনের প্রত্যাশাসহ, শান্তি এবং একতার এক নতুন জগতে প্রবেশের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। (প্রকাশিত বাক্য ৭:৯) এই বিধিব্যবস্থার পরীক্ষাগুলি এবং শয়তানের অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলি সত্ত্বেও, নৈতিকতা এবং উপাসনার জরুরী বিষয়গুলিতে অবশ্যই বিশ্বস্ততাকে উর্ধ্বে তুলে ধরতে হবে। আশ্বস্ত হোন যে, যিহোবা প্রদত্ত শক্তি দ্বারা আপনি সফল হতে পারেন!—ফিলিপীয় ৪:১৩.
বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ এই উভয় বিষয়ে বলতে গিয়ে, গীতরচক দায়ূদ যিহোবার প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপক প্রার্থনায় আমাদের সকলকে পুনরায় আশ্বস্ত করেছিলেন যখন তিনি বলেন: “তুমি আমার সিদ্ধতায় [“বিশ্বস্ততায়,” NW] আমাকে ধরিয়া রাখিয়াছ, এবং চিরতরে আপনার সাক্ষাতে স্থাপন করিয়াছ। ধন্য সদাপ্রভু . . . আমেন ও আমেন।”—গীতসংহিতা ৪১:১২, ১৩.
[পাদটীকাগুলো]
a বিভিন্ন রচয়িতাদের দ্বারা সংক্ষিপ্ত মন্তব্যসহ প্রামাণিক সংস্করণ অনুসারে, আমাদের প্রভু ও পরিত্রাতা যীশু খ্রীষ্টের নতুন নিয়ম থেকে মন্তব্য।
b শয়তান নামের অর্থ “বিপক্ষ।” “দিয়াবল” এর অর্থ “অপবাদক।”
[৪ পৃষ্ঠার চিত্র]
তার ভুলগুলি সত্ত্বেও দায়ূদ নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হয়েছিলেন
[৫ পৃষ্ঠার চিত্র]
যীশু আমাদের জন্য নির্ভরযোগ্যতার সর্বোত্তম উদাহরণ রেখে গেছেন
[Pictures on page 7]
নির্ভরযোগ্য হওয়া পরম পরিতৃপ্তি নিয়ে আসে