অধ্যায় দুই
এক সফল বিয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া
১, ২. (ক) কীভাবে যিশু পরিকল্পনা করার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন? (খ) বিশেষ করে কোন ক্ষেত্রে পরিকল্পনা করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ?
একটা দালান নির্মাণ করার জন্য মনোযোগপূর্ণ প্রস্তুতির প্রয়োজন। ভিত্তি স্থাপন করার আগে অবশ্যই জমি কিনতে হবে এবং নকশা অঙ্কন করতে হবে। কিন্তু, আরেকটা বিষয় অতীব গুরুত্বপূর্ণ। যিশু বলেছিলেন: “দুর্গ নির্ম্মাণ করিতে ইচ্ছা হইলে তোমাদের মধ্যে কে অগ্রে বসিয়া ব্যয় হিসাব করিয়া না দেখিবে, সমাপ্ত করিবার সঙ্গতি তাহার আছে কি না?”—লূক ১৪:২৮.
২ একটা দালান নির্মাণ করার জন্য যে-বিষয়টা সত্য, তা এক সফল বিয়ে গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অনেকে বলে থাকে: “আমি বিয়ে করতে চাই।” কিন্তু, কতজন একটু থেমে এর ব্যয় বিবেচনা করে দেখে? যদিও বাইবেল বিয়ে সম্বন্ধে অনুকূল কথা বলে, তবে এটি সেই প্রতিদ্বন্দ্বিতাগুলোর প্রতিও মনোযোগ আকর্ষণ করায়, যেগুলো বিয়ে করার সঙ্গে সঙ্গে এসে থাকে। (হিতোপদেশ ১৮:২২; ১ করিন্থীয় ৭:২৮) তাই, যারা বিয়ের কথা ভাবছে, তাদের বিয়ে করার আশীর্বাদ ও মূল্য, দুটো বিষয়েই এক বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি রাখতে হবে।
৩. যারা বিয়ে করার পরিকল্পনা করছে, তাদের জন্য বাইবেল কেন এক মূল্যবান সহায়ক আর এটি আমাদের কোন তিনটে প্রশ্নের উত্তর দিতে সাহায্য করবে?
৩ বাইবেল এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে। এটির পরামর্শ বিয়ের উদ্যোক্তা যিহোবা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত। (ইফিষীয় ৩:১৪, ১৫; ২ তীমথিয় ৩:১৬) প্রাচীন অথচ খুবই আধুনিক এই নির্দেশিকায় প্রাপ্ত নীতিগুলো ব্যবহার করে আসুন আমরা নির্ধারণ করি, (১) একজন ব্যক্তি বিয়ের জন্য প্রস্তুত কি না, তা তিনি কীভাবে বলতে পারেন? (২) একজন সাথির মধ্যে কোন বিষয়গুলো দেখা উচিত? এবং (৩) কীভাবে বিবাহপূর্ব মেলামেশাকে সম্মানজনক রাখা যায়?
আপনি কি বিয়ের জন্য প্রস্তুত?
৪. এক সফল বিয়েকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় কী এবং কেন?
৪ একটা দালান নির্মাণ করা ব্যয়বহুল হতে পারে কিন্তু সেইসঙ্গে এর দীর্ঘস্থায়ী রক্ষণাবেক্ষণ করাও খরচের ব্যাপার। বিয়ের ক্ষেত্রেও একই বিষয় সত্য। বিয়ে করা যথেষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক বলে মনে হতে পারে; কিন্তু বছরের পর বছর ধরে বৈবাহিক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখাকেও অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে। এই ধরনের এক সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সঙ্গে কী জড়িত? অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় হল, পূর্ণহৃদয় দিয়ে করা প্রতিশ্রুতি। বিয়ের সম্পর্ককে বাইবেল এভাবে বর্ণনা করে: “মনুষ্য আপন পিতা মাতাকে ত্যাগ করিয়া আপন স্ত্রীতে আসক্ত হইবে, এবং তাহারা একাঙ্গ হইবে।” (আদিপুস্তক ২:২৪) যিশু খ্রিস্ট পুনরায় বিয়ে করার সম্ভাবনা সহকারে বিবাহবিচ্ছেদ করার একমাত্র শাস্ত্রীয় ভিত্তি প্রদান করেছেন—“ব্যভিচার” অর্থাৎ বিয়ের বাইরে অবৈধ যৌনসম্পর্ক। (মথি ১৯:৯) আপনি যদি বিয়ের কথা ভেবে থাকেন, তাহলে এই শাস্ত্রীয় মানগুলো মনে রাখুন। আপনি যদি এই গুরুগম্ভীর প্রতিশ্রুতির জন্য প্রস্তুত না হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত নন।—দ্বিতীয় বিবরণ ২৩:২১; উপদেশক ৫:৪, ৫.
৫. (ক) যদিও বিয়ের গুরুগম্ভীর প্রতিশ্রুতি কারো কারো মধ্যে ভয় জাগিয়ে তোলে কিন্তু যারা বিয়ে করবে বলে স্থির করেছে, তাদের কেন ভয় পাওয়ার চেয়ে বরং সেটাকে উচ্চমূল্য দেওয়া উচিত? (খ) বিয়ের আগে একজন নারীর কী বিবেচনা করা উচিত?
৫ এক গুরুগম্ভীর প্রতিশ্রুতির ধারণাটা অনেকের মধ্যে ভয় জাগিয়ে তোলে। কিন্তু, আপনি যাকে বিয়ে করবেন বলে স্থির করেছেন, তাকে যদি সত্যিই ভালবাসেন, তাহলে সেই প্রতিশ্রুতিকে হয়তো এক বোঝা বলে মনে হবে না। এর পরিবর্তে, এটাকে সুরক্ষার এক উৎস হিসেবে দেখা হবে। বিয়েতে যে-প্রতিশ্রুতিবোধ জড়িত রয়েছে, তা এক দম্পতিকে ভাল ও মন্দ সময়ে একত্রে থাকতে এবং যা-ই ঘটুক না কেন, পরস্পরকে সমর্থন করতে পরিচালিত করবে। খ্রিস্টান প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন যে, প্রকৃত প্রেম “সকলই বহন করে” এবং “সকলই ধৈর্য্যপূর্ব্বক সহ্য করে।” (১ করিন্থীয় ১৩:৪, ৭) একজন নারীর জন্য বিবেচনা করার মতো আরেকটা বিষয় রয়েছে। বাইবেল বলে যে, তার স্বামী হবেন তার ‘মস্তক।’ (১ করিন্থীয় ১১:৩) একজন নারী যখন বিয়ে করেন, তখন তিনি আর তার বাবা-মায়ের অধীনে থাকেন না, তিনি তার স্বামীর অধীনে চলে আসেন। তাই, একজন অবিবাহিত নারীর নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে: “আমি কি এই পুরুষের ব্যবস্থার অধীনে আসতে ইচ্ছুক?” এই প্রশ্নটা বিবেচনা করার সময় হল বিয়ের আগে, বিয়ের পরে নয়।—রোমীয় ৭:৩.
৬. কেন অল্পবয়সে তাড়াহুড়ো করে বিয়ে না করা সর্বোত্তম?
৬ এই ধরনের এক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জীবনযাপন করার জন্য পরিপক্বতার প্রয়োজন। তাই, পৌল পরামর্শ দেন যে, খ্রিস্টানদের “সৌকুমার্য্য অতীত” না ‘হওয়া’ পর্যন্ত অর্থাৎ যখন যৌন অনুভূতি প্রবল থাকে এবং যা একজন ব্যক্তির বিচারবুদ্ধিকে বিকৃত করে দিতে পারে, সেই সময় পার না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না করা উত্তম। (১ করিন্থীয় ৭:৩৬) তরুণ-তরুণীরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত পরিবর্তিত হয়। যারা খুব কম বয়সে বিয়ে করেছে, তাদের মধ্যে অনেকেই দেখেছে যে, মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তাদের ও সেইসঙ্গে তাদের সাথিদের চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষা পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে। পরিসংখ্যান দেখায় যে, যে-কিশোর-কিশোরীরা বিয়ে করে, তারা সেই ব্যক্তিদের চেয়ে খুব সম্ভবত আরও বেশি অসুখী হয়ে থাকে এবং বিবাহবিচ্ছেদ করতে চায়, যারা একটু বেশি সময় অপেক্ষা করে। তাই, তাড়াহুড়ো করে বিয়ে করবেন না। একজন তরুণ ও অবিবাহিত প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে কিছু বছর পার করলে আপনি অনেক মূল্যবান অভিজ্ঞতা লাভ করবেন, যেগুলো আপনাকে আরও পরিপক্ব এবং একজন উপযুক্ত সাথি হওয়ার জন্য আরও যোগ্য করে তুলবে। এ ছাড়া, বিয়ের জন্য অপেক্ষা করা নিজেকে আরও ভালভাবে জানতে সাহায্য করবে—এক অপরিহার্য বিষয়, যদি আপনি আপনার বিয়েতে এক সফল সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান।
প্রথমে নিজেকে জানুন
৭. যারা বিয়ে করার পরিকল্পনা করছে, তাদের কেন প্রথমে নিজেদেরকে পরীক্ষা করা উচিত?
৭ আপনি কি সহজেই সেই গুণাবলির তালিকা তৈরি করতে পারেন, যেগুলো একজন সাথির থাকুক বলে আপনি চান? অধিকাংশ লোকই তা করতে পারে। কিন্তু, আপনার নিজের গুণাবলি সম্বন্ধে কী বলা যায়? আপনার এমন কোন কোন বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেগুলো এক সফল বিয়েতে অবদান রাখতে আপনাকে সাহায্য করবে? আপনি কোন ধরনের স্বামী বা স্ত্রী হবেন? উদাহরণস্বরূপ, আপনি কি সহজেই আপনার ভুলগুলো স্বীকার করেন এবং উপদেশ গ্রহণ করেন, নাকি আপনাকে সংশোধন করা হলে আপনি সবসময়ই অজুহাত দেখান? আপনি কি হাসিখুশি স্বভাবের ও আশাবাদী, নাকি আপনি বিষণ্ণ ও প্রায়ই অভিযোগ করে থাকেন? (হিতোপদেশ ৮:৩৩; ১৫:১৫) মনে রাখবেন যে, বিয়ে আপনার ব্যক্তিত্বকে পরিবর্তন করবে না। আপনি যদি অবিবাহিত অবস্থায় গর্বিত, অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ অথবা নিরাশাবাদী হয়ে থাকেন, তাহলে বিয়ে করলেও আপনি একই থাকবেন। যেহেতু অন্যেরা আমাদের যেভাবে দেখে থাকে, সেভাবে নিজেদের দেখা কঠিন, তাই বাবা অথবা মা কিংবা নির্ভরযোগ্য কোনো বন্ধুকে অকপট মন্তব্য করতে ও পরামর্শ দিতে বলুন না কেন? আপনি যদি সেই পরিবর্তনগুলো সম্বন্ধে জানেন, যেগুলো করা যেতে পারে, তাহলে বিয়ে করার পদক্ষেপ গ্রহণ করার আগে সেই বিষয়গুলোর ওপর কাজ করুন।
৮-১০. বাইবেল কোন পরামর্শ দেয়, যা একজন ব্যক্তিকে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হতে সাহায্য করবে?
৮ বাইবেল আমাদের উৎসাহ দেয় যেন আমরা ঈশ্বরের পবিত্র আত্মাকে আমাদের মধ্যে কাজ করতে দিই, এই ধরনের গুণ উৎপন্ন করতে দিই যেমন, “প্রেম, আনন্দ, শান্তি, দীর্ঘসহিষ্ণুতা, মাধুর্য্য, মঙ্গলভাব, বিশ্বস্ততা, মৃদুতা, ইন্দ্রিয়দমন।” এ ছাড়া এটি আমাদের বলে, ‘আপন আপন মনের ভাবে ক্রমশঃ নবীনীকৃত হও’ এবং “সেই নূতন মনুষ্যকে পরিধান কর, যাহা সত্যের ধার্ম্মিকতায় ও সাধুতায় ঈশ্বরের সাদৃশ্যে সৃষ্ট হইয়াছে।” (গালাতীয় ৫:২২, ২৩; ইফিষীয় ৪:২৩, ২৪) অবিবাহিত থাকাকালীন এই পরামর্শ প্রয়োগ করা ব্যাঙ্কে টাকা রাখার মতোই হবে—এমন কিছু, যা ভবিষ্যতে আপনি যখন বিয়ে করবেন, তখন অনেক মূল্যবান বলে প্রমাণিত হবে।
৯ উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি একজন নারী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার বাহ্যিক বেশভূষার চেয়ে বরং ‘হৃদয়ের গুপ্ত মনুষ্যের’ প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিতে শিখুন। (১ পিতর ৩:৩, ৪) সলজ্জভাব ও সুবুদ্ধি আপনাকে প্রজ্ঞা লাভ করতে সাহায্য করবে, যেটা হল “শোভার” প্রকৃত “মুকুট।” (হিতোপদেশ ৪:৯; ৩১:১০, ৩০; ১ তীমথিয় ২:৯, ১০) আপনি যদি একজন পুরুষ হয়ে থাকেন, তাহলে নারীদের সঙ্গে সদয় ও সম্মানজনক উপায়ে আচরণ করতে শিখুন। (১ তীমথিয় ৫:১, ২) বিভিন্ন সিদ্ধান্ত ও দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়টা শেখার সময় বিনয়ী এবং নম্র হতেও শিখুন। কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব একটা বিয়েতে সমস্যা নিয়ে আসবে।—হিতোপদেশ ২৯:২৩; মীখা ৬:৮; ইফিষীয় ৫:২৮, ২৯.
১০ যদিও এই ক্ষেত্রগুলোতে মনের নূতনীকরণ সহজ নয়, তবে এই বিষয়ের ওপর প্রত্যেক খ্রিস্টানেরই কাজ করা উচিত। আর এটা আপনাকে আরও উত্তম এক বিবাহসাথি হতে সাহায্য করবে।
একজন সাথির মধ্যে যে-বিষয়গুলো দেখতে হবে
১১, ১২. দুজন ব্যক্তি পরস্পরের জন্য উপযুক্ত কি না, তা হয়তো তারা কীভাবে বুঝতে পারে?
১১ আপনি যেখানে বাস করেন, সেখানে কি নিজের বিবাহসাথি নিজেই বাছাই করার প্রথা রয়েছে? যদি থাকে, তাহলে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে আপনার কাছে আকর্ষণীয় বলে মনে হলে আপনার কীভাবে এগোনো উচিত? প্রথমে নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আসলেই কি আমার বিয়ে করার উদ্দেশ্য রয়েছে?’ মিথ্যা প্রত্যাশা জাগিয়ে তুলে অন্য কারো আবেগ নিয়ে খেলা করা নিষ্ঠুর কাজ। (হিতোপদেশ ১৩:১২) এরপর নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমি কি বিয়ে করার মতো অবস্থানে রয়েছি?’ দুটো প্রশ্নের উত্তরই যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে আপনি পরবর্তী যে-পদক্ষেপগুলো নেবেন, তা স্থানীয় প্রথার ওপর ভিত্তি করে বিভিন্নরকম হবে। কোনো কোনো জায়গার প্রথা অনুযায়ী, আপনি কিছুসময় ধরে একজন ব্যক্তিকে পর্যবেক্ষণ করার পর হয়তো সেই ব্যক্তির কাছে যেতে পারেন এবং আরও ভালভাবে জানার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে পারেন। অন্যান্য প্রথা অনুযায়ী, আপনি হয়তো আপনার বাবা-মাকে জানাতে পারেন, যারা এরপর আপনি যে-ব্যক্তিকে পছন্দ করেন, তার বাবা-মায়ের কাছে যেতে পারে। যদি নেতিবাচক সাড়া পেয়ে থাকেন, তাহলে এমনভাবে জোরাজুরি করবেন না যে, তা আপত্তিজনক হয়ে ওঠে। মনে রাখবেন, অন্য ব্যক্তিরও সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। কিন্তু, যদি ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়, তাহলে আপনি হয়তো একত্রে গঠনমূলক কাজকর্মে সময় ব্যয় করার ব্যবস্থা করতে পারেন। এটা আপনাকে দেখার সুযোগ করে দেবে যে, সেই ব্যক্তিকে বিয়ে করা বিজ্ঞতার কাজ হবে কি না। এই পর্যায়ে এসে আপনার কী লক্ষ করা উচিত?
১২ সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য দুটো বাদ্যযন্ত্র, হতে পারে পিয়ানো ও গিটারের কথা কল্পনা করুন। সেগুলোকে যদি সঠিক সুরে বাজানো হয়, তাহলে যেকোনো একটা বাদ্যযন্ত্রই চমৎকার একক সুর তুলতে পারে। কিন্তু, এই দুটো বাদ্যযন্ত্র যদি একসঙ্গে বাজানো হয়, তাহলে? তখন সেগুলোকে পরস্পরের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বাজাতে হবে। আপনার এবং এক ভাবী সাথির বেলায়ও একই বিষয় প্রযোজ্য। আপনারা দুজনেই হয়তো আলাদা আলাদাভাবে আপনাদের ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলোর “সুর” মেলানোর জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেছেন। কিন্তু, এখন প্রশ্ন হল: আপনারা কি পরস্পরের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ? অন্য কথায়, আপনারা কি পরস্পরের জন্য উপযুক্ত?
১৩. আপনার বিশ্বাসে বিশ্বাসী নয় এমন কারো সঙ্গে বিবাহপূর্ব মেলামেশা করা কেন খুবই মূর্খতাপূর্ণ কাজ?
১৩ আপনাদের দুজনেরই একই বিশ্বাস ও নীতি থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “তোমরা অবিশ্বাসীদের সহিত অসমভাবে যোঁয়ালিতে বদ্ধ হইও না।” (২ করিন্থীয় ৬:১৪; ১ করিন্থীয় ৭:৩৯) ঈশ্বরের ওপর আপনার মতো একইরকম বিশ্বাস নেই এমন কাউকে বিয়ে করা হলে, খুব সম্ভবত চরম অমিল দেখা দেবে। অন্যদিকে, যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি দুজনের একইরকম ভক্তি হল একতার সবচেয়ে দৃঢ়ভিত্তি। যিহোবা চান আপনি যেন সুখী হন এবং আপনি যাকে বিয়ে করবেন, তার সঙ্গে যথাসম্ভব ঘনিষ্ঠবন্ধন উপভোগ করেন। তিনি চান আপনারা যেন প্রেমের ত্রিগুণ সূত্রের দ্বারা তাঁর ও পরস্পরের সঙ্গে আবদ্ধ থাকেন।—উপদেশক ৪:১২.
১৪, ১৫. শুধুমাত্র একই বিশ্বাসে বিশ্বাসী হওয়াই কি বিয়েতে একতা বজায় রাখার একমাত্র দিক? ব্যাখ্যা করুন।
১৪ যদিও একসঙ্গে ঈশ্বরকে উপাসনা করা একতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক কিন্তু এর সঙ্গে আরও কিছু যুক্ত রয়েছে। পরস্পরের সঙ্গে মিল রেখে চলার জন্য আপনার ও আপনার ভাবী সাথির একই লক্ষ্য থাকা উচিত। আপনাদের লক্ষ্যগুলো কী? উদাহরণস্বরূপ, সন্তান থাকার বিষয়ে আপনারা দুজনে কেমন বোধ করেন? আপনাদের জীবনে কোন বিষয়গুলো প্রথমে রয়েছে?a (মথি ৬:৩৩) এক সত্যিকারের সফল বিয়েতে দম্পতিরা সাধারণত উত্তম বন্ধু হয় এবং পরস্পরের সাহচর্য উপভোগ করে থাকে। (হিতোপদেশ ১৭:১৭) এর জন্য তাদের আগ্রহগুলোতে মিল থাকতে হবে। যখন আগ্রহ এক না হয়, তখন এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব বজায় রাখা কঠিন—আর বিয়েকে টিকিয়ে রাখা আরও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে, আপনার ভাবী সাথি যদি একটা নির্দিষ্ট কাজ যেমন, পায়ে হেঁটে দীর্ঘভ্রমণ করতে পছন্দ করেন কিন্তু আপনি না করেন, তাহলে এর অর্থ কি এই যে, আপনাদের দুজনের বিয়ে করা উচিত নয়? ঠিক তা নয়। আপনাদের হয়তো অন্যান্য বিষয়ে, হতে পারে আরও গুরুত্বপূর্ণ আগ্রহগুলোতে মিল রয়েছে। অধিকন্তু, আপনি হয়তো গঠনমূলক কাজকর্মে অংশগ্রহণ করার দ্বারা আপনার ভাবী সাথিকে “সুখ” প্রদান করতে পারেন কারণ অন্যজন সেগুলো করে আনন্দ পায়।—প্রেরিত [শিষ্যচরিত] ২০:৩৫, বাংলা জুবিলী বাইবেল।
১৫ বস্তুতপক্ষে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পরস্পরের উপযুক্ত হওয়া আপনারা দুজনে কতটা অভিন্ন, সেটার দ্বারা নয় বরং আপনারা কতটুকু মানিয়ে নিতে পারেন, সেটার দ্বারা নির্ধারিত হয়। “আমরা কি সমস্ত বিষয়ে একমত?” এটা জিজ্ঞেস করার পরিবর্তে আরও কিছু ভাল প্রশ্ন হতে পারে: “আমরা যখন দ্বিমত পোষণ করি, তখন কী হয়? আমরা কি শান্তভাবে, পরস্পরের প্রতি সম্মান ও মর্যাদা বজায় রেখে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি? নাকি আলোচনা প্রায়ই খারাপের দিকে গিয়ে চরম বিতণ্ডায় মোড় নেয়?” (ইফিষীয় ৪:২৯, ৩১) আপনি যদি বিয়ে করতে চান, তাহলে এমন যেকারো সম্বন্ধে সতর্ক হোন, যিনি গর্বিত, একগুঁয়ে, কখনো আপোশ করতে রাজি নন অথবা যিনি সবসময় দাবি করেন এবং তার নিজের মতো করার জন্য পরিকল্পনা করে থাকেন।
আগেই জানুন
১৬, ১৭. একজন পুরুষ অথবা নারী যখন একজন ভাবী বিবাহসাথি সম্বন্ধে বিবেচনা করেন, তখন তিনি কোন বিষয়গুলো দেখতে পারেন?
১৬ খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে যাদেরকে আস্থা সহকারে দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাদের ‘অগ্রে পরীক্ষা করা হয়।’ (১ তীমথিয় ৩:১০) আপনিও এই নীতি কাজে লাগাতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন নারী হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারেন, “এই পুরুষের কোন ধরনের সুনাম রয়েছে? তার বন্ধু কারা? তিনি কি ইন্দ্রিয়দমন দেখিয়ে থাকেন? বয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি কেমন আচরণ করেন? তিনি কোন ধরনের পরিবার থেকে এসেছেন? পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তিনি কেমন আচরণ করেন? টাকাপয়সার প্রতি তার মনোভাব কেমন? তিনি কি মদ্যজাতীয় পানীয়ের অপব্যবহার করেন? তিনি কি রগচটা স্বভাবের, এমনকি হিংস্র? মণ্ডলীতে তার কোন কোন দায়িত্ব রয়েছে এবং সেগুলোকে তিনি কীভাবে পরিচালনা করেন? আমি কি তাকে ‘শ্রদ্ধা’ করতে পারব?”—লেবীয় পুস্তক ১৯:৩২; হিতোপদেশ ২২:২৯; ৩১:২৩; ইফিষীয় [এফেসীয়] ৫:৩-৫, ৩৩, বাংলা জুবিলী বাইবেল; ১ তীমথিয় ৫:৮; ৬:১০; তীত ২:৬, ৭.
১৭ একজন পুরুষ হয়তো জিজ্ঞেস করতে পারেন, “এই নারী কি ঈশ্বরের প্রতি প্রেম ও সম্মান দেখান? তিনি কি ঘরবাড়ির যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে দক্ষ? তার পরিবার আমাদের কাছ থেকে কী আশা করবে? তিনি কি বিজ্ঞ, পরিশ্রমী এবং মিতব্যয়ী? তিনি কোন বিষয়ে কথা বলেন? তিনি কি অকৃত্রিমভাবে অন্যদের মঙ্গলের বিষয়ে চিন্তা করেন, নাকি তিনি আত্মকেন্দ্রিক ও পরচর্চাকারী? তিনি কি নির্ভরযোগ্য? তিনি কি মস্তকপদের প্রতি বশীভূত হতে ইচ্ছুক, নাকি তিনি একগুঁয়ে, এমনকি হতে পারে বিদ্রোহী?”—হিতোপদেশ ৩১:১০-৩১; লূক ৬:৪৫; ইফিষীয় ৫:২২, ২৩; ১ তীমথিয় ৫:১৩; ১ পিতর ৪:১৫.
১৮. বিবাহপূর্ব মেলামেশার সময় যদি ছোটোখাটো দুর্বলতা দেখা যায়, তাহলে কী বিবেচনা করা উচিত?
১৮ ভুলে যাবেন না যে, আপনি আদমের এক অসিদ্ধ বংশধরের সঙ্গে আচরণ করছেন, কোনো রোমান্টিক উপন্যাসের আদর্শবান নায়ক কিংবা নায়িকার সঙ্গে নয়। প্রত্যেকেরই ভুলত্রুটি রয়েছে এবং সেগুলোর কিছু কিছু উপেক্ষা করতে হবে—আপনার ও আপনার ভাবী সাথি উভয়েরই। (রোমীয় ৩:২৩; যাকোব ৩:২) অধিকন্তু, কোনো দুর্বলতা দেখা গেলে তা আধ্যাত্মিকভাবে গড়ে ওঠার সুযোগ করে দিতে পারে। ধরুন, বিবাহপূর্ব মেলামেশার সময় আপনাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়েছে। বিবেচনা করুন: এমনকি যে-লোকেরা পরস্পরকে ভালবাসে ও সম্মান করে, তারাও মাঝে মাঝে দ্বিমত পোষণ করে। (তুলনা করুন, আদিপুস্তক ৩০:২; প্রেরিত ১৫:৩৯.) এমনটা কি হতে পারে যে, আপনাদের দুজনেরই কেবল আরেকটু বেশি “আপন আত্মা দমন” করার এবং কীভাবে বিষয়গুলো আরও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যায়, তা শেখা প্রয়োজন? (হিতোপদেশ ২৫:২৮) আপনার ভাবী সাথি কি উন্নতি করার আকাঙ্ক্ষা দেখায়? আপনি কি দেখান? আপনি কি কম আবেগপ্রবণ ও কম স্পর্শকাতর হতে শিখতে পারেন? (উপদেশক ৭:৯) সমস্যাগুলোর সমাধান করতে শেখা এমন এক অকপট ভাববিনিময়ের আদর্শ স্থাপন করতে পারে, যা আপনারা দুজন যদি বিয়ে করেন, তাহলে অপরিহার্য।—কলসীয় ৩:১৩.
১৯. বিবাহপূর্ব মেলামেশার সময় যদি গুরুতর সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে কী করা বিজ্ঞতার কাজ হবে?
১৯ তবে, আপনি যদি এমন বিষয়গুলো লক্ষ করেন, যেগুলো আপনাকে গভীরভাবে যন্ত্রণা দেয়, তাহলে কী? এই ধরনের সন্দেহ সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত। আপনি যত রোমান্টিক আগ্রহই বোধ করুন না কেন অথবা বিয়ে করার জন্য আপনি যত উদ্গ্রীবই হোন না কেন, গুরুতর ত্রুটি উপেক্ষা করবেন না। (হিতোপদেশ ২২:৩; উপদেশক ২:১৪) আপনার যদি এমন কারো সঙ্গে সম্পর্ক থাকে, যার সম্বন্ধে আপনার গুরুতর আপত্তি রয়েছে, তাহলে সেই সম্পর্ক শেষ করে দেওয়া এবং সেই ব্যক্তির সঙ্গে এক স্থায়ী প্রতিশ্রুতি করা থেকে বিরত থাকা বিজ্ঞতার কাজ।
আপনার বিবাহপূর্ব মেলামেশাকে সম্মানজনক রাখুন
২০. বিবাহপূর্ব মেলামেশা করছে এমন এক যুগল কীভাবে তাদের নৈতিক আচরণ নিন্দার ঊর্ধ্বে রাখতে পারে?
২০ কীভাবে আপনি আপনার বিবাহপূর্ব মেলামেশাকে সম্মানজনক রাখতে পারেন? প্রথমে নিশ্চিত হয়ে নিন যে, আপনার নৈতিক আচরণ নিন্দার ঊর্ধ্বে। আপনি যেখানে বাস করেন, সেখানে কি হাত ধরা, চুমু দেওয়া অথবা জড়িয়ে ধরাকে অবিবাহিত যুগলদের জন্য উপযুক্ত আচরণ বলে বিবেচনা করা হয়? এমনকি অনুরাগের এই অভিব্যক্তিগুলো যদি অনুমোদিত হয়েও থাকে, তবুও সেগুলোকে কেবল সেই সময়েই অনুমোদন করা উচিত, যখন সম্পর্ক এতদূর পর্যন্ত পৌঁছায় যে, নিশ্চিতভাবেই বিয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে। সতর্ক থাকুন যেন অনুরাগ প্রকাশ অশুদ্ধ আচরণ বা এমনকি ব্যভিচারের দিকে মোড় না নেয়। (ইফিষীয় ৪:১৮, ১৯; তুলনা করুন, পরমগীত ১:২; ২:৬; ৮:৫, ৯, ১০.) হৃদয় প্রবঞ্চক বলে আপনাদের দুজনের পক্ষেই অন্য লোকেদের থেকে আলাদা হয়ে কোনো ঘরে, অ্যাপার্টমেন্টে, পার্কিং করা গাড়িতে অথবা এমন যেকোনো জায়গায় থাকা এড়িয়ে চলা বিজ্ঞতার কাজ হবে, যে-জায়গাগুলো অনুপযুক্ত আচরণের সুযোগ করে দেবে। (যিরমিয় ১৭:৯) আপনার বিবাহপূর্ব মেলামেশাকে নৈতিকভাবে শুদ্ধ রাখা এই স্পষ্ট প্রমাণ দেয় যে, আপনার ইন্দ্রিয়দমন রয়েছে এবং আপনি নিজের আকাঙ্ক্ষার চেয়ে বরং অন্যজনের মঙ্গলের প্রতি নিঃস্বার্থ বিবেচনা দেখিয়ে থাকেন। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এক শুদ্ধ বিবাহপূর্ব মেলামেশা ঈশ্বরকে খুশি করবে, যিনি তাঁর দাসদের অশুচিতা ও ব্যভিচার পরিহার করতে আদেশ দেন।—গালাতীয় ৫:১৯-২১.
২১. বিবাহপূর্ব মেলামেশাকে সম্মানজনক রাখার জন্য হয়তো কোন অকপট ভাববিনিময় করার প্রয়োজন হতে পারে?
২১ দ্বিতীয়ত, এক সম্মানজনক বিবাহপূর্ব মেলামেশা অকপট ভাববিনিময়কেও অন্তর্ভুক্ত করে। আপনার বিবাহপূর্ব মেলামেশা বিয়ের দিকে এগোতে থাকলে কিছু বিষয় খোলাখুলিভাবে আলোচনা করতে হবে। আপনারা কোথায় থাকবেন? আপনারা দুজনেই কি চাকরি করবেন? আপনারা কি সন্তান চান? এ ছাড়া, হয়তো কারো অতীতের এমন বিষয়গুলো প্রকাশ করা উপযুক্ত, যেগুলো হয়তো বিয়েতে প্রভাব ফেলতে পারে। এগুলোর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে, বড় বড় ঋণ অথবা বাধ্যবাধকতা কিংবা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় যেমন, কোনো গুরুতর রোগ বা অবস্থা। যেহেতু এইচআইভি (যে-ভাইরাসের কারণে এইডস হয়) আক্রান্ত অনেক ব্যক্তির লক্ষণগুলো সঙ্গেসঙ্গে দেখা যায় না, তাই কোনো ব্যক্তি বা যত্নশীল বাবা-মায়ের পক্ষে সেই ব্যক্তিকে এইডস-এর ব্লাড টেস্ট করার জন্য অনুরোধ করা ভুল হবে না, যিনি অতীতে বাছবিচারহীনভাবে যৌনসম্পর্কে রত ছিলেন অথবা যিনি শিরার মধ্যে দিয়ে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতেন। টেস্টের ফলাফল যদি পজিটিভ হয়, তাহলে আক্রান্ত ব্যক্তির তার ভাবী সাথিকে সেই সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দেওয়া উচিত নয়, যদি কিনা অপর সাথী তখন তা শেষ করে দিতে চান। আসলে, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জীবনধারায় রত ছিলেন এমন যেকোনো ব্যক্তির নিজে থেকেই বিবাহপূর্ব মেলামেশা করার আগে এইডস-এর ব্লাড টেস্ট করানো উচিত।
বিয়ের দিনকে ছাড়িয়ে আরও কিছু দেখা
২২, ২৩. (ক) বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় কীভাবে ভারসাম্য হারিয়ে যেতে পারে? (খ) বিয়ের অনুষ্ঠান ও বিয়ে সম্বন্ধে বিবেচনা করার সময় আমাদের কোন ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা উচিত?
২২ বিয়ের আগের শেষ কয়েকটা মাস আপনারা দুজনেই সম্ভবত বিয়ের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করার জন্য অনেক ব্যস্ত থাকবেন। সংযমী হওয়ার মাধ্যমে আপনারা চাপ অনেকটা কমাতে পারেন। এক জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ে হয়তো আত্মীয়স্বজন ও সমাজের লোকেদের সন্তুষ্ট করতে পারে, কিন্তু এটা হয়তো নববিবাহিত দম্পতি এবং তাদের পরিবারকে শারীরিক দিক দিয়ে অবসন্ন ও অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নিঃশেষ করে দিতে পারে। স্থানীয় প্রথাগুলোর কিছুটা মেনে চলা যুক্তিযুক্ত কিন্তু সেগুলো অনুকরণ করা ও হয়তো প্রতিযোগিতামূলকভাবে অনুসরণ করা, সেই উপলক্ষের অর্থকে ম্লান করে দিতে পারে এবং আপনার সেই আনন্দ হারিয়ে যেতে পারে, যা আপনার থাকা উচিত। যদিও অন্যদের অনুভূতি বিবেচনা করতে হবে কিন্তু বিবাহভোজে কী করা হবে, সেই বিষয়ে সমস্ত দায়দায়িত্ব মূলত বরের।—যোহন ২:৯.
২৩ মনে রাখবেন যে, আপনার বিয়ের অনুষ্ঠান কেবল একদিনের জন্য কিন্তু আপনার বিয়ে চিরজীবনের জন্য স্থায়ী। বিয়ে করার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত অনুষ্ঠানের প্রতি অতিরিক্ত মনোযোগ দেওয়া এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে, নির্দেশনার জন্য যিহোবা ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করুন এবং বিবাহিত জীবনের জন্য আগে থেকেই পরিকল্পনা করুন। তাহলেই আপনি এক সফল বিয়ের জন্য ভালভাবে প্রস্তুতি নিতে পারবেন।
a এমনকি খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে এমন কিছু ব্যক্তি থাকতে পারে, যারা বলতে গেলে আধ্যাত্মিকভাবে শিথিল অবস্থায় রয়েছে। ঈশ্বরের এক পূর্ণহৃদয়ের দাস হওয়ার পরিবর্তে তারা হয়তো জগতের মনোভাব ও আচরণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে।—যোহন ১৭:১৬; যাকোব ৪:৪.