জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জুন ৩-৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | গালাতীয় ৪-৬
“এক ‘রূপক’ ঘটনা, যেটা আমাদের জন্য অর্থ রাখে”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১০১৮ অনু. ২, ইংরেজি
হাগার
প্রেরিত পৌলের লেখা অনুসারে এক রূপক নাটকের মধ্যে হাগার ইস্রায়েল জাতিকে চিত্রিত করেন, যে-জাতি ব্যবস্থা চুক্তির মাধ্যমে যিহোবার সঙ্গে আবদ্ধ ছিল। এই ব্যবস্থা চুক্তি সীনয় পর্বতে প্রবর্তিত হয়েছিল আর এই চুক্তি “দাসত্বের জন্য প্রসবকারিণী” হয়েছিল। লোকেদের পাপপূর্ণ অবস্থার কারণে সেই জাতি চুক্তির শর্তাবলি মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছিল। এই চুক্তির অধীনে ইস্রায়েল জাতি স্বাধীন হয়নি বরং তারা এমন পাপী হিসেবে সাব্যস্ত হয়েছিল, যারা মৃত্যুর যোগ্য; তাই, তারা ছিল দাস। (যোহন ৮:৩৪; রোমীয় ৮:১-৩) পৌলের দিনের যিরূশালেম হল হাগার কারণ রাজধানী যিরূশালেম, যেটা জন্মগত ইস্রায়েলকে চিত্রিত করেছিল, সেটা তার সন্তান-সহ দাসত্বের অধীনে ছিল। তবে, পবিত্র আত্মায় জাত খ্রিস্টানরা “ঊর্দ্ধ্বস্থ যিরূশালেম” অর্থাৎ ঈশ্বরের রূপক স্ত্রীর সন্তান। স্বাধীনা সারার মতোই এই যিরূশালেম কখনোই দাসত্বের অধীনে ছিল না। কিন্তু, ঠিক যেমন ইস্হাক ইশ্মায়েলের কাছ থেকে তাড়না ভোগ করেছিলেন, তেমনই ‘ঊর্দ্ধ্বস্থ যিরূশালেমের’ সন্তানেরা, যারা পুত্রের মাধ্যমে স্বাধীন হয়েছিল, তারাও দাসত্বে থাকা যিরূশালেমের সন্তানদের হাতে তাড়না ভোগ করেছিল। তবে, হাগার ও তার ছেলেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যেটা এই ঘটনাকে চিত্রিত করেছিল যে, যিহোবা এক জাতি হিসেবে ইস্রায়েল জাতিকে ত্যাগ করেছেন।—গালা ৪:২১-৩১; এ ছাড়া, যোহন ৮:৩১-৪০ পদ দেখুন।
প্রহরীদুর্গ ১৪ ১০/১৫ ১০ অনু. ১১
রাজ্যের প্রতি অটল বিশ্বাস বজায় রাখুন
১১ অব্রাহামের সঙ্গে করা চুক্তির প্রতিজ্ঞাগুলো প্রথমে সেই সময়ে কার্যকর হয়েছিল, যখন অব্রাহামের বংশধরেরা প্রতিজ্ঞাত দেশ অধিকার করেছিল। কিন্তু, বাইবেল প্রকাশ করে, এই চুক্তি আরও মহৎ উপকার নিয়ে আসবে। (গালা. ৪:২২-২৫) প্রেরিত পৌল ব্যাখ্যা করেছিলেন, অব্রাহামের বংশের প্রধান বা মুখ্য অংশ হলেন যিশু খ্রিস্ট। আর এর গৌণ বা আরেকটা অংশ হল ১,৪৪,০০০ জন অভিষিক্ত খ্রিস্টান। (গালা. ৩:১৬, ২৯; প্রকা. ৫:৯, ১০; ১৪:১, ৪) এদনে করা প্রতিজ্ঞার নারী হল ঈশ্বরের সংগঠনের স্বর্গীয় অংশ। নারীকে “ঊর্দ্ধ্বস্থ যিরূশালেম” বলা হয় আর এটা অনুগত আত্মিক প্রাণীদের নিয়ে গঠিত। (গালা. ৪:২৬, ৩১) অব্রাহামের সঙ্গে করা চুক্তিতে যেমন প্রতিজ্ঞা করা হয়েছে, নারীর বংশ মানবজাতির জন্য স্থায়ী উপকার নিয়ে আসবে।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ০৯ অক্টোবর-ডিসেম্বর ১৩
আপনি কি জানতেন?
কেন যিশু প্রার্থনা করার সময় যিহোবাকে “আব্বা, পিতঃ” বলে সম্বোধন করেছিলেন?
অরামীয় শব্দ আব্বা হয় “পিতা” নতুবা “হে পিতা” বোঝাতে পারে। শাস্ত্রে যে-তিনটে জায়গায় এই অভিব্যক্তিটা পাওয়া যায়, সেগুলোর প্রত্যেকটাই হল প্রার্থনার অংশ এবং তা স্বর্গীয় পিতা যিহোবাকে নির্দেশ করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এই শব্দটার তাৎপর্য কী?
দি ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড বাইবেল এনসাইক্লোপিডিয়া বলে: “যিশুর সময়ে কথ্য ভাষায় আব্বা শব্দটা, মূলত বাবাদের সঙ্গে সন্তানদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এবং তাদের প্রতি সন্তানদের সম্মানের এক অভিব্যক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।” এটা ছিল আদর করে সম্বোধন করার এক উপায় এবং সেই শব্দগুলোর মধ্যে একটা, যেগুলো কোনো বাচ্চা প্রথম প্রথম বলতে শিখত। যিশু এই অভিব্যক্তিটা তাঁর পিতার কাছে বিশেষভাবে এক আন্তরিক অনুরোধ করার সময় ব্যবহার করেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে গেৎশিমানী বাগানে প্রার্থনা করার সময় যিশু যিহোবাকে “আব্বা, পিতঃ” শব্দগুলো বলে সম্বোধন করেছিলেন।—মার্ক ১৪:৩৬.
উপরে উল্লেখিত তথ্যগ্রন্থটা আরও বলে, “গ্রিক-রোমীয় সময়কালের যিহুদি সাহিত্যে ঈশ্বরকে সম্বোধন করার উপায় হিসেবে আব্বা শব্দটা একেবারেই অপ্রচলিত ছিল, নিঃসন্দেহে এর কারণ হল, এই বহুল প্রচলিত শব্দটার দ্বারা ঈশ্বরকে সম্বোধন করা অসম্মানজনক বলে মনে করা হতো।” কিন্তু, “যিশুর . . . প্রার্থনায় এই শব্দটার ব্যবহার হল ঈশ্বরের সঙ্গে অন্তরঙ্গতার বিষয়ে তাঁর অসাধারণ দাবির সত্যতার এক পরোক্ষ প্রমাণ।” শাস্ত্রের অন্য দু-জায়গায়—দুটোই প্রেরিত পৌলের লেখায়—উল্লেখিত “আব্বা” শব্দটা ইঙ্গিত করে যে, প্রথম শতাব্দীর খ্রিস্টানরাও তাদের প্রার্থনায় এটা ব্যবহার করত।—রোমীয় ৮:১৫; গালাতীয় ৪:৬.
প্রহরীদুর্গ ১০ ১১/১ ১৫, ইংরেজি
আপনি কি জানতেন?
পৌল যখন বলেছিলেন, তিনি তার দেহে “যীশুর দাহ-চিহ্ন সকল” বহন করছেন, তখন তিনি আসলে কী বোঝাতে চেয়েছিলেন?—গালাতীয় ৬:১৭.
▪ পৌলের কথাগুলো পড়ে তার প্রথম শতাব্দীর শ্রোতাদের মনে হয়তো বেশ কয়েকটা সম্ভাব্য চিত্র ভেসে উঠেছিল। উদাহরণ স্বরূপ, প্রাচীন সময়ে যুদ্ধবন্দিদের, মন্দিরের ডাকাতদের এবং পলাতক দাসদের দেহে চিহ্ন দেওয়ার জন্য প্রচণ্ড উত্তপ্ত লোহা ব্যবহার করা হতো। মানুষের দেহে যখন এভাবে চিহ্ন দেওয়া হতো, তখন সেটাকে অসম্মানজনক বলে মনে করা হতো।
তবে, দাহ-চিহ্নকে যে সবসময় খারাপ চোখে দেখা হতো, তা নয়। প্রাচীন সময়ের অনেকে তাদের দেহে এইরকম চিহ্ন দিত, যাতে তাদের দেখে বোঝা যায়, তারা কোনো নির্দিষ্ট জাতি বা ধর্মের লোক। উদাহরণ স্বরূপ, থিওলজিক্যাল ডিকশনারি অভ্ দ্যা নিউ টেস্টামেন্ট অনুসারে ‘সিরিয়ানরা তাদের কব্জি কিংবা গলায় দাহ-চিহ্ন দিয়ে নিজেদের হাদাদ ও আটারগাটিস দেবতাদের কাছে উৎসর্গ করত। ডায়োনাইসাসের ভক্তদের গায়ে আইভি লতার ছাপ দেওয়া হতো।’
বর্তমান দিনের অনেক মন্তব্যকারী মনে করেন, পৌল যখন একজন খ্রিস্টান মিশনারি হিসেবে কাজ করেছিলেন, তখন বিভিন্ন সময়ে তিনি যে-শারীরিক নির্যাতন ভোগ করেছিলেন, সেগুলোর দাগকে বুঝিয়েছিলেন। (২ করিন্থীয় ১১:২৩-২৭) তবে, পৌল হয়তো বুঝিয়েছিলেন যে, কোনো আক্ষরিক চিহ্ন নয় বরং তার জীবনধারা তাকে খ্রিস্টান হিসেবে শনাক্ত করেছিল।
জুন ১০-১৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ইফিষীয় ১-৩
“যিহোবার বিধান এবং এটার কাজ”
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৮৩৭ অনু. ৪, ইংরেজি
নিগূঢ়তত্ত্ব
মশীহ রাজ্য। পৌল তার চিঠিগুলোতে খ্রিস্ট সম্বন্ধীয় নিগূঢ়তত্ত্ব প্রকাশের বিষয়ে সম্পূর্ণ ধারণা তুলে ধরেন। ইফিষীয় ১:৯-১১ পদে তিনি ঈশ্বরের ইচ্ছার “নিগূঢ়তত্ত্ব” প্রকাশের বিষয়ে বলেছেন: “[এটা] তাঁহার সেই হিতসঙ্কল্প অনুসারে যাহা তিনি কালের পূর্ণতার বিধান লক্ষ্য করিয়া তাঁহাতে পূর্ব্বে সঙ্কল্প করিয়াছিলেন। তাহা এই, স্বর্গস্থ ও পৃথিবীস্থ সমস্তই খ্রীষ্টেই সংগ্রহ করা যাইবে, তাঁহাতেই করা যাইবে, যাঁহাতে আমরা ঈশ্বরের অধিকারস্বরূপও হইয়াছি। বাস্তবিক যিনি সকলই আপন ইচ্ছার মন্ত্রণানুসারে সাধন করেন, তাঁহার সঙ্কল্প অনুসারে আমরা পূর্ব্বে নিরূপিত হইয়াছিলাম।” এই ‘নিগূঢ়তত্ত্বের’ অন্তর্ভুক্ত হল এক সরকার, যেটা হল ঈশ্বরের মশীহ রাজ্য। পৌল যে-“স্বর্গস্থ” বিষয়গুলোর উল্লেখ করেছেন, সেগুলো স্বর্গীয় রাজ্যের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারীদের নির্দেশ করে, যারা খ্রিস্টের সঙ্গে শাসন করবেন। “পৃথিবীস্থ” বিষয়গুলো হবে সেই রাজ্যের পার্থিব প্রজারা। যিশু সেইসময় তাঁর শিষ্যদের কাছে এটা স্পষ্ট করেছিলেন যে, এই নিগূঢ়তত্ত্ব রাজ্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত, যখন তিনি তাদের বলেছিলেন: “ঈশ্বরের রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব তোমাদিগকে দত্ত হইয়াছে।”—মার্ক ৪:১১.
প্রহরীদুর্গ ১২ ৭/১৫ ২৭-২৮ অনু. ৩-৪
“একই সদাপ্রভু” তাঁর পরিবারকে একত্রিত করেন
৩ মোশি ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন: “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু একই সদাপ্রভু।” (দ্বিতীয়. ৬:৪) যিহোবার কাজ এবং উদ্দেশ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য রয়েছে। তাই, ‘কালের পূর্ণতায়’ ঈশ্বর এক “বিধান” কার্যকর করেন—অর্থাৎ তাঁর সমস্ত বুদ্ধিবিশিষ্ট প্রাণীদের সংগ্রহ বা একত্রিত করার ব্যবস্থা করেন। (পড়ুন, ইফিষীয় ১:৮-১০.) এই বিধান দুটো পর্যায়ে এর উদ্দেশ্য সাধন করবে। এর প্রথম পর্যায়, অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের মণ্ডলীকে তাদের আধ্যাত্মিক মস্তক হিসেবে যিশু খ্রিস্টের অধীনে স্বর্গীয় জীবনের জন্য প্রস্তুত করে। এই পর্যায় শুরু হয় ৩৩ খ্রিস্টাব্দে, যখন যিহোবা সেই ব্যক্তিদের একত্রিত করতে শুরু করেন, যারা স্বর্গে খ্রিস্টের সঙ্গে শাসন করবে। (প্রেরিত ২:১-৪) যেহেতু অভিষিক্ত ব্যক্তিদের খ্রিস্টের মুক্তির মূল্যরূপ বলিদানের ভিত্তিতে জীবনের জন্য ধার্মিক বলে গণ্য করা হয়েছে, তাই তারা সহজেই এই বিষয়টা স্বীকার করে যে, তাদের “ঈশ্বরের সন্তান” হিসেবে দত্তক নেওয়া হয়েছে।—রোমীয় ৩:২৩, ২৪; ৫:১; ৮:১৫-১৭.
৪ দ্বিতীয় পর্যায় সেই ব্যক্তিদের প্রস্তুত করে, যারা খ্রিস্টের মশীহ রাজ্যের অধীনে পরমদেশ পৃথিবীতে বাস করবে। এই দলের প্রথম অংশ “বিস্তর লোক” নিয়ে গঠিত। (প্রকা. ৭:৯, ১৩-১৭; ২১:১-৫) হাজার বছরের রাজত্বের সময়, তাদের সঙ্গে আরও কোটি কোটি পুনরুত্থিত ব্যক্তি যোগ দেবে। (প্রকা. ২০:১২, ১৩) এই পুনরুত্থান কীভাবে আমাদের একতাকে আরও বেশি করে প্রদর্শন করার সুযোগ দেবে, তা একটু কল্পনা করে দেখুন! হাজার বছরের শেষে “পৃথিবীস্থ সমস্তই” এক চূড়ান্ত পরীক্ষার মুখোমুখি হবে। যারা বিশ্বস্ত বলে প্রমাণিত হবে, তাদের “ঈশ্বরের” পার্থিব ‘সন্তান’ হিসেবে দত্তক নেওয়া হবে।—রোমীয় ৮:২১; প্রকা. ২০:৭, ৮.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
প্রহরীদুর্গ ১৩ ২/১৫ ২৮ অনু. ১৫
আপনার গৌরব ধরে রাখার ক্ষেত্রে কোনো কিছুকেই বাধা হতে দেবেন না
১৫ যিহোবার ইচ্ছা পালন করার ব্যাপারে আমাদের অধ্যবসায় অন্যদেরও গৌরব ধরে রাখতে সাহায্য করে। ইফিষের মণ্ডলীকে পৌল লিখেছিলেন: “আমার যাচ্ঞা এই, তোমাদের নিমিত্ত আমার যে সকল ক্লেশ হইতেছে, তাহাতে যেন নিরুৎসাহ না হও; সে সকল তোমাদের গৌরব।” (ইফি. ৩:১৩) কোন অর্থে পৌলের ক্লেশ ইফিষীয়দের জন্য “গৌরব” ছিল? বিভিন্ন পরীক্ষা সত্ত্বেও ক্রমাগত তাদের সেবা করার বিষয়ে পৌলের ইচ্ছুক মনোভাব ইফিষীয়দের এই বিষয়টা দেখিয়েছিল যে, খ্রিস্টান হিসেবে তারা যে-বিশেষ সুযোগগুলো উপভোগ করছিল, সেগুলো গুরুত্বপূর্ণ এবং নিঃসন্দেহে অতিশয় মূল্যবান। পৌল যদি ক্লেশের মধ্যে হাল ছেড়ে দিতেন, তা হলে সেটা কি এই বার্তা প্রদান করত না যে, যিহোবার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক, তাদের পরিচর্যা এবং তাদের বিশ্বাস মূল্যবান নয়? পৌলের ধৈর্য খ্রিস্ট ধর্মকে উচ্চীকৃত করেছিল এবং দেখিয়েছিল যে, শিষ্যত্বের জন্য যেকোনো ত্যাগস্বীকার উপযুক্ত।
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ২৯৯ অনু. ২১
‘খ্রীষ্টের প্রেম জানিতে সমর্থ হওয়া’
২১ যে-গ্রিক শব্দকে “জানিতে” হিসেবে অনুবাদ করা হয়েছে, সেটার অর্থ “ব্যাবহারিকভাবে, অভিজ্ঞতার মাধ্যমে” জানা। আমরা যখন যিশুর মতো প্রেম দেখাই—নিঃস্বার্থভাবে অন্যদের জন্য নিজেদের বিলিয়ে দিই, সমবেদনার সঙ্গে তাদের চাহিদাগুলোর প্রতি সাড়া দিই, হৃদয় থেকে তাদের ক্ষমা করি—তখন আমরা আসলেই তাঁর অনুভূতিগুলো বুঝতে পারি। এভাবে, আমরা অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ‘জ্ঞানাতীত যে খ্রীষ্টের প্রেম, তাহা জানিতে সমর্থ হই।’ আর আসুন আমরা যেন কখনোই ভুলে না যাই যে, যতই আমরা খ্রিস্টের মতো হব, ততই আমরা আমাদের প্রেমময় ঈশ্বর যিহোবার নিকটবর্তী হব, যাঁকে যিশু নিখুঁতভাবে অনুকরণ করেছিলেন।
জুন ১৭-২৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ইফিষীয় ৪-৬
“ঈশ্বরের সমগ্র যুদ্ধসজ্জা পরিধান করুন”
অল্পবয়সিরা, দিয়াবলের বিরুদ্ধে অটল থাকো
প্রেরিত পৌল খ্রিস্টানদের সৈনিকদের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। আমরা একটা যুদ্ধে অংশ নিচ্ছি আর আমাদের শত্রুরা হল বাস্তব ব্যক্তি! কিন্তু, আমাদের যুদ্ধ মানুষের বিরুদ্ধে নয় বরং শয়তান ও মন্দদূতদের বিরুদ্ধে। তারা হাজার হাজার বছর ধরে যুদ্ধ করছে আর তারা এই বিষয়ে খুবই পারদর্শী। তাই, এমনটা মনে হতে পারে যে, আমরা কোনোভাবেই এই যুদ্ধে জয়ী হতে পারব না, বিশেষভাবে যদি আমরা অল্পবয়সি হয়ে থাকি। অল্পবয়সিরা কি এই ধরনের শক্তিশালী শত্রুর বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারে? হ্যাঁ, তারা পারে আর তারা জয়ী হচ্ছে! কেন? কারণ তারা যিহোবার কাছ থেকে শক্তি লাভ করে। এ ছাড়া, সুপ্রশিক্ষিত সৈনিকদের মতো তারা ‘ঈশ্বরের সমগ্র যুদ্ধসজ্জা পরিধান করে,’ যাতে তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে।—পড়ুন, ইফিষীয় ৬:১০-১২.
প্রহরীদুর্গ ১৮.০৫ ২৮-২৯ অনু. ৪, ৭, ১০
অল্পবয়সিরা, দিয়াবলের বিরুদ্ধে অটল থাকো
৪ ঠিক একটা বেল্টের মতোই ঈশ্বরের বাক্য থেকে আমরা যে-সত্যগুলো শিখি, সেগুলো আমাদের বিভিন্ন মিথ্যা শিক্ষা থেকে সুরক্ষিত রাখে। (যোহন ৮:৩১, ৩২; ১ যোহন ৪:১) আর ঈশ্বরের বাক্য থেকে পাওয়া সত্যগুলোকে আমরা যত বেশি করে ভালোবাসতে শিখি, আমাদের পক্ষে ঈশ্বরের মান অনুযায়ী জীবনযাপন করা অর্থাৎ আমাদের “বুকপাটা” পরা তত বেশি সহজ হয়ে ওঠে। (গীত. ১১১:৭, ৮; ১ যোহন ৫:৩) এ ছাড়া, আমরা যত ভালোভাবে এই সত্যগুলো বুঝব, আমরা তত ভালোভাবে আমাদের শত্রুদের সামনে এই সত্যগুলোর বিষয়ে উত্তর দিতে বা সেগুলোর পক্ষসমর্থন করতে পারব।—১ পিতর ৩:১৫.
৭ যিহোবার ধার্মিক মানগুলোকে সেই বুকপাটার সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে, যেটা আমাদের রূপক হৃদয়কে সুরক্ষিত রাখে। (হিতো. ৪:২৩) একজন সৈনিক কখনোই লোহার বুকপাটার পরিবর্তে কোনো নরম ধাতুর বুকপাটা পরতেন না। একইভাবে, আমরা কখনোই যা সঠিক, সেই বিষয়ে যিহোবার মানের পরিবর্তে নিজেদের ধারণাগুলো অনুসরণ করব না। সত্যি বলতে কী, আমরা নিজেদের হৃদয়কে সুরক্ষিত রাখার জন্য যথেষ্ট বিজ্ঞ নই। (হিতো. ৩:৫, ৬) এই কারণে আমাদের অবশ্যই বার বার দেখতে হবে যে, আমাদের “বুকপাটা” আমাদের হৃদয়কে সুরক্ষিত রাখছে কি না।
১০ যেখানে রোমীয় সৈনিকদের জুতোগুলো তাদের যুদ্ধে সফল হতে সাহায্য করত, সেখানে আমাদের রূপক জুতোগুলো আমাদের ‘শান্তির সুসমাচার’ প্রচার করতে সাহায্য করে। (যিশা. ৫২:৭; রোমীয় ১০:১৫) তা সত্ত্বেও, কখনো কখনো প্রচার করার জন্য প্রচুর সাহসের প্রয়োজন হয়। ২০ বছর বয়সি ভাই রবার্টো বলেন: “আমি আমার সহপাঠীদের কাছে সাক্ষ্য দিতে ভয় পেতাম। মনে হয়, আমি লজ্জা পেতাম। এখন সেইসময়ের কথা চিন্তা করলে আমি বুঝতে পারি না যে, আমার লজ্জা পাওয়ার কী ছিল। এখন আমি আমার সমবয়সিদের কাছে সাক্ষ্য দিতে পেরে আনন্দিত।”
প্রহরীদুর্গ ১৮.০৫ ২৯-৩১ অনু. ১৩, ১৬, ২০
অল্পবয়সিরা, দিয়াবলের বিরুদ্ধে অটল থাকো
১৩ শয়তান তোমার দিকে কোন কোন “অগ্নিবাণ” বা আগুনের তীর ছুড়তে পারে? হতে পারে, সে যিহোবা সম্বন্ধে মিথ্যে কথা বলার মাধ্যমে তোমাকে আক্রমণ করে। শয়তান চায় যেন তুমি এমনটা মনে করো যে, যিহোবা তোমাকে ভালোবাসেন না এবং কেউ তোমার জন্য চিন্তা করে না। ১৯ বছর বয়সি বোন ইডা বলেন: “আমি প্রায়ই মনে করতাম যে, যিহোবা আমার চেয়ে অনেক দূরে রয়েছেন এবং তিনি আমার বন্ধু হতে চান না।” তিনি যখন এমনটা মনে করেন, তখন তিনি কী করেন? “সভাগুলো আমার বিশ্বাসকে প্রচুররূপে বাড়িয়ে তোলে। আগে আমি সভায় গিয়ে এই ভেবে কোনো মন্তব্য না করে চুপচাপ বসে থাকতাম যে, কেউই আমার কথা শুনতে আগ্রহী হবে না। কিন্তু, এখন আমি সভাগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিই এবং দুটো থেকে তিনটে উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি। এমনটা করা সহজ নয় কিন্তু আমি যখন তা করি, তখন আমার ভালো লাগে। আর ভাই-বোনেরা আমাকে অনেক উৎসাহ দেয়। আমি প্রতি বার সভার শেষে ফিরে আসার সময়ে অনুভব করি যে, যিহোবা আমাকে ভালোবাসেন।”
১৬ ঠিক যেমন একটা হেলমেট সৈনিকের মগজকে সুরক্ষিত রাখত, তেমনই আমাদের ‘পরিত্রাণের আশা’ আমাদের পরিণামদর্শিতা বা চিন্তা করার ক্ষমতাকে সুরক্ষিত রাখে। (১ থিষল. ৫:৮; হিতো. ৩:২১) আশা আমাদের সমস্যাগুলোর কারণে নিরুৎসাহিত হয়ে না গিয়ে বরং ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলোর উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত রাখতে সাহায্য করে। (গীত. ২৭:১, ১৪; প্রেরিত ২৪:১৫) কিন্তু আমরা যদি চাই যে, আমাদের আশা আমাদের সুরক্ষিত রাখুক, তা হলে সেটা আমাদের কাছে এক বাস্তব বিষয় হতে হবে। আমাদের নিজেদের “শিরস্ত্রাণ” বা হেলমেট হাতে করে নিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে অবশ্যই মাথায় পরতে হবে!
২০ প্রেরিত পৌল বলেছিলেন যে, ঈশ্বরের বাক্য হল একটা তলোয়ারের মতো। যিহোবা এটা আমাদের দিয়েছেন। কিন্তু, আমাদের বিশ্বাসের পক্ষসমর্থন করার অথবা আমাদের চিন্তাভাবনা রদবদল করার জন্য আমাদের অবশ্যই এটিকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা শিখতে হবে। (২ করি. ১০:৪, ৫; ২ তীম. ২:১৫) কীভাবে তুমি তোমার দক্ষতাগুলোকে আরও বাড়াতে পার? ২১ বছর বয়সি ভাই সেবাসটিয়ান বলেন: “আমি বাইবেল পড়ার সময়ে প্রতিটা অধ্যায় থেকে একটা করে শাস্ত্রপদ লিখে রাখি। আমি আমার প্রিয় শাস্ত্রপদগুলোর একটা তালিকা বানাচ্ছি।” এটা তাকে আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে যে, যিহোবা কীভাবে চিন্তা করেন। ভাই ড্যানিয়েল আরও বলেন: “আমি বাইবেল পড়ার সময়ে এমন শাস্ত্রপদগুলো বাছাই করি, যেগুলো সেই ব্যক্তিদের সাহায্য করতে পারে, যাদের সঙ্গে পরিচর্যায় আমার দেখা হয়। আমি লক্ষ করেছি, লোকেরা সেইসময় ভালো প্রতিক্রিয়া দেখায়, যখন তারা দেখে যে, বাইবেলের উপর তোমার গভীর বিশ্বাস রয়েছে এবং তুমি তাদের সাহায্য করার জন্য যথাসাধ্য করছ।”
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১১২৮ অনু. ৩, ইংরেজি
পবিত্রতা
পবিত্র আত্মা। যিহোবার সক্রিয় শক্তি বা আত্মা তাঁর নিয়ন্ত্রণে থাকে আর সেটা সবসময় তাঁর উদ্দেশ্য সম্পাদন করে। এটা শুচি, বিশুদ্ধ, পবিত্র এবং ঈশ্বর এটাকে কেবল ভালো কাজের জন্য ব্যবহার করেন। তাই, এটাকে বলা হয় ‘পবিত্র আত্মা’ এবং ‘পবিত্রতার আত্মা।’ (গীত ৫১:১১; লূক ১১:১৩; রোমীয় ১:৪; ইফি ১:১৩) পবিত্র আত্মা যখন একজন ব্যক্তির উপর কাজ করে, তখন সেটা তাকে পবিত্র বা শুচি কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। যেকোনো অশুচি কিংবা মন্দ অভ্যাসের ফলে পবিত্র আত্মার প্রতিরোধ করা হয় বা সেটাকে “দুঃখিত” করা হয়। (ইফি ৪:৩০) যদিও পবিত্র আত্মা কোনো ব্যক্তি নয়, কিন্তু এটা ঈশ্বরের পবিত্র ব্যক্তিত্বের প্রকাশ আর তাই এটা “দুঃখিত” হতে পারে। কোনো মন্দ কাজের অভ্যাস ‘আত্মাকে নির্ব্বাণ করিয়া’ দিতে পারে। (১থিষল ৫:১৯) যদি এইরকম অভ্যাস চালিয়ে যাওয়া হয়, তা হলে ঈশ্বরের পবিত্র আত্মা আসলে “শোকাকুল” হয় আর এর ফলে, ঈশ্বর হয়তো সেই বিদ্রোহী ব্যক্তির শত্রুতে পরিণত হতে পারেন। (যিশা ৬৩:১০) যে-ব্যক্তি পবিত্র আত্মাকে দুঃখিত করেন, তিনি হয়তো সেটার নিন্দা করার পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন, যে-পাপের বিষয়ে যিশু খ্রিস্ট বলেছিলেন, এই বর্তমান বিধিব্যবস্থায় কিংবা আসন্ন বিধিব্যবস্থায়, কখনোই সেই পাপের ক্ষমা করা হবে না।—মথি ১২:৩১, ৩২; মার্ক ৩:২৮-৩০; দেখুন, আত্মা।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১০০৬ অনু. ২, ইংরেজি
লোভ
কাজে প্রকাশ পায়। লোভ প্রকাশ্যে করা কোনো কাজের মাধ্যমে প্রকাশ পায়, যেটা একজন ব্যক্তির মন্দ ও অসংযত আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করে। বাইবেল লেখক যাকোব আমাদের বলেন যে, মন্দ আকাঙ্ক্ষা যখন গর্ভবতী হয়, তখন সেটা পাপের জন্ম দেয়। (যাকোব ১:১৪, ১৫) তাই, একজন লোভী ব্যক্তিকে তার কাজের মাধ্যমে শনাক্ত করা যেতে পারে। প্রেরিত পৌল বলেন, লোভী ব্যক্তি হওয়ার অর্থ প্রতিমাপূজক হওয়া। (ইফি ৫:৫) একজন লোভী ব্যক্তি তার লোভী আকাঙ্ক্ষার বশে যা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করেন, সেটাকে তিনি সৃষ্টিকর্তার সেবা ও উপাসনা করার চেয়েও অগ্রাধিকার দেওয়ার মাধ্যমে নিজের ঈশ্বর করে তোলেন।—রোমীয় ১:২৪, ২৫.
জুন ২৪-৩০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ফিলিপীয় ১-৪
“কোন বিষয়ে ভাবিত হইবেন না”
‘ঈশ্বরের শান্তি সমস্ত চিন্তার অতীত’
১০ কী আমাদের “কোন বিষয়ে ভাবিত” বা উদ্বিগ্ন না হয়ে বরং “ঈশ্বরের শান্তি” বজায় রাখার জন্য সাহায্য করতে পারে? ফিলিপীয়দের উদ্দেশে লেখা পৌলের কথাগুলো দেখায় যে, আমরা যখন কোনো সমস্যার কারণে দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকি, তখন সেটা কাটিয়ে ওঠার সমাধান হল প্রার্থনা। তাই, আমরা যখন উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি, তখন আমাদের দুশ্চিন্তার বিষয়গুলো নিয়ে প্রার্থনা করতে হবে। (পড়ুন, ১ পিতর ৫:৬, ৭.) আপনি যখন যিহোবার কাছে প্রার্থনা করেন, তখন এই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত থাকুন যে, তিনি আপনার জন্য চিন্তা করেন। সবসময় তাঁকে প্রতিটা আশীর্বাদের জন্য ধন্যবাদ জানান। আর কখনো ভুলে যাবেন না, যিহোবা “আমাদের সমস্ত যাচ্ঞার ও চিন্তার নিতান্ত অতিরিক্ত কর্ম্ম করিতে” পারেন।—ইফি. ৩:২০.
‘ঈশ্বরের শান্তি সমস্ত চিন্তার অতীত’
৭ ফিলিপীর ভাইয়েরা যখন তাদের উদ্দেশে লেখা পৌলের চিঠিটা পড়েছিল, তখন তারা কী নিয়ে চিন্তা করেছিল? তাদের মধ্যে বেশিরভাগই সম্ভবত স্মরণ করেছিল যে, পৌল ও সীলের প্রতি কী ঘটেছিল এবং যিহোবা কীভাবে অপ্রত্যাশিত উপায়ে তাদের সাহায্য করেছিলেন। পৌল এই চিঠির মাধ্যমে তাদের কোন শিক্ষা দিচ্ছিলেন? শিক্ষাটা হল: দুশ্চিন্তা করবেন না। প্রার্থনা করুন, তা করলে আপনি “সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি,” তা লাভ করবেন। এই অভিব্যক্তির অর্থ কী? কোনো কোনো বাইবেল অনুবাদ এটাকে এভাবে বলে, “আমাদের সমস্ত স্বপ্নের অতীত” অথবা “সমস্ত মানব পরিকল্পনার চেয়ে শ্রেষ্ঠ।” তাই, পৌল বলেছিলেন যে, আমরা যতটা কল্পনা করতে পারি, “ঈশ্বরের শান্তি” সেটার চেয়ে আরও অনেক চমৎকার। যদিও কখনো কখনো আমরা আমাদের সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে পারি না কিন্তু প্রভু যিহোবা তা পারেন। আর তিনি অপ্রত্যাশিত বিষয় ঘটাতে পারেন।—পড়ুন, ২ পিতর ২:৯.
‘ঈশ্বরের শান্তি সমস্ত চিন্তার অতীত’
১৬ আমরা যখন “সমস্ত চিন্তার অতীত যে ঈশ্বরের শান্তি,” তা লাভ করব, তখন কী হবে? বাইবেল বলে যে, এটা আমাদের হৃদয় ও মনকে “রক্ষা” করবে। (ফিলি. ৪:৭) “রক্ষা” শব্দটার জন্য মূল ভাষায় যে-শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, সেটা হল একটা সামরিক অভিব্যক্তি, যেটা একটা নগরকে সুরক্ষিত রাখার জন্য নিযুক্ত একদল সৈন্যকে নির্দেশ করে। এইরকম একটা দল ফিলিপী নগরে বসবাসরত লোকেদের রক্ষা করত। এর ফলে, রাতের বেলায় নগরের লোকেরা এটা জেনে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারত যে, তাদের নগর সুরক্ষিত রয়েছে। একইভাবে, আমাদের উপর যখন “ঈশ্বরের শান্তি” বিরাজ করে, তখন আমরা দুশ্চিন্তা করি না এবং আমাদের হৃদয় ও মন শান্ত থাকে। আমরা জানি যে, যিহোবা আমাদের জন্য চিন্তা করেন এবং তিনি চান যেন আমরা এক সুখী ও পরিতৃপ্তিদায়ক জীবন উপভোগ করি। (১ পিতর ৫:১০) আর এটা আমাদের সুরক্ষিত রাখে যেন আমরা উদ্বিগ্নতা অথবা হতাশার অনুভূতির দ্বারা কবলিত না হই।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
গালাতীয়, ইফিষীয়, ফিলিপীয় এবং কলসীয়দের প্রতি লেখা চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
১:২৩—পৌল কোন “দুইয়েতে” বা দুটো বিষয়ে সংকুচিত ছিলেন আর তার কোন বাসনা ছিল? পৌল যে-পরিস্থিতিগুলোর মধ্যে ছিলেন, সেগুলোর কারণে দুটো সম্ভাবনার দ্বারা তিনি সংকুচিত ছিলেন: জীবন অথবা মৃত্যু। (ফিলি. ১:২১) তিনি কী বাছাই করবেন, সেটা না বলে তিনি তার ইচ্ছা সম্বন্ধে জানান আর তা হল, “প্রস্থান করিয়া খ্রীষ্টের সঙ্গে থাকি।” (ফিলি. ৩:২০, ২১; ১ থিষল. ৪:১৬) খ্রিস্টের আগমন বা উপস্থিতির সময়ে এই বাসনা পরিপূর্ণ হয়েছিল, যখন তিনি সেই পুরস্কার লাভ করেছিলেন, যা যিহোবা তার জন্য প্রস্তুত করেছেন।—মথি ২৪:৩.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৫২৮ অনু. ৫, ইংরেজি
নৈবেদ্য
পেয় নৈবেদ্য। বিশেষ করে ইস্রায়েলীয়রা প্রতিজ্ঞাত দেশে বাস করতে শুরু করার পর, অন্যান্য বেশিরভাগ নৈবেদ্যের সঙ্গে সঙ্গে পেয় নৈবেদ্যও উৎসর্গ করা হতো। (গণনা ১৫:২, ৪খ, ৫, ৮-১০) এটার অন্তর্ভুক্ত ছিল দ্রাক্ষারস (‘মদিরা’) আর এটা বেদির উপর ঢেলে দেওয়া হতো। (গণনা ২৮:৭, ১৪; তুলনা করুন, যাত্রা ৩০:৯; গণনা ১৫:১০.) প্রেরিত পৌল ফিলিপীর খ্রিস্টানদের উদ্দেশে লিখেছিলেন: “তোমাদের বিশ্বাসের যজ্ঞে ও সেবায় যদি আমি পেয় নৈবেদ্যরূপে সেচিতও হই, তথাপি আনন্দ করিতেছি।” তিনি সহখ্রিস্টানদের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করার জন্য পেয় নৈবেদ্যের উদাহরণ ব্যবহার করেছিলেন। (ফিলি ২:১৭) তার মৃত্যুর কিছুসময় আগে তিনি তীমথিয়কে লিখেছিলেন: “এখন আমি পেয় নৈবেদ্যের ন্যায় ঢালা যাইতেছি, এবং আমার প্রস্থানের সময় উপস্থিত হইয়াছে।”—২তীম ৪:৬.