অধ্যায় তিন
এক স্থায়ী বিবাহের দুটো চাবিকাঠি
১, ২. (ক) বিয়ে কতদিন স্থায়ী হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছিল? (খ) কীভাবে তা সম্ভব?
ঈশ্বর যখন প্রথম পুরুষ ও নারীকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন, তখন এমন কোনো ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি যে, সেই বন্ধন কেবল ক্ষণস্থায়ী হবে। আদম ও হবার সারাজীবন একত্রে থাকার কথা ছিল। (আদিপুস্তক ২:২৪) এক সম্মানজনক বিয়ের জন্য ঈশ্বরের মান হল একজন পুরুষ ও একজন নারীকে একতাবদ্ধ করা। শুধুমাত্র একজন বা উভয় সাথির গুরুতর যৌন অনৈতিকতাই পুনরায় বিয়ে করার সম্ভাবনা সহকারে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য শাস্ত্রীয় ভিত্তি জোগায়।—মথি ৫:৩২.
২ দুজন ব্যক্তির পক্ষে কি চিরকাল একত্রে সুখেশান্তিতে বাস করা সম্ভব? হ্যাঁ সম্ভব আর বাইবেল অতীব গুরুত্বপূর্ণ দুটো বিষয় অথবা চাবিকাঠি সম্বন্ধে প্রকাশ করে, যেগুলো এটাকে সম্ভবপর করতে সাহায্য করে। স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই যদি এগুলো ব্যবহার করে, তাহলে তারা তাদের জন্য সুখ এবং অনেক আশীর্বাদের দ্বার খুলে দেবে। সেই চাবিকাঠিগুলো কী?
প্রথম চাবিকাঠি
৩. বিবাহসাথিদের কোন তিন ধরনের প্রেম গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা উচিত?
৩ প্রথম চাবিকাঠি হল প্রেম। তবে আগ্রহজনক যে, বাইবেলে বিভিন্ন ধরনের প্রেমের বিষয়ে বলা হয়েছে। একটা হল কারো জন্য আন্তরিক ও ব্যক্তিগত স্নেহ, এমন এক ধরনের প্রেম, যা ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মধ্যে থাকে। (যোহন ১১:৩) আরেকটা হল এমন প্রেম, যা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে গড়ে ওঠে। (রোমীয় ১২:১০) তৃতীয় ধরনটা হল রোমান্টিক প্রেম, যা বিপরীত লিঙ্গের এক সদস্যের প্রতি একজন ব্যক্তির থাকতে পারে। (হিতোপদেশ ৫:১৫-২০) অবশ্যই, স্বামী ও স্ত্রীকে এগুলোর সবই গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা উচিত। কিন্তু, চতুর্থ আরেক ধরনের প্রেম রয়েছে, যা অন্যগুলোর চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
৪. চতুর্থ ধরনের প্রেম কী?
৪ খ্রিস্টান গ্রিক শাস্ত্রের মূল ভাষায় এই চতুর্থ ধরনের প্রেমের জন্য আগাপে শব্দটি রয়েছে। এই শব্দটি ১ যোহন ৪:৮ পদে ব্যবহার করা হয়েছে, যেখানে আমাদের বলা হয়েছে: “ঈশ্বর প্রেম।” বস্তুতপক্ষে, “আমরা প্রেম করি, কারণ [ঈশ্বর] প্রথমে আমাদিগকে প্রেম করিয়াছেন।” (১ যোহন ৪:১৯) একজন খ্রিস্টান প্রথমে যিহোবা ঈশ্বরের প্রতি ও পরে সহমানবদের প্রতি এই ধরনের প্রেম গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে। (মার্ক ১২:২৯-৩১) আগাপে শব্দটি ইফিষীয় ৫:২ পদেও ব্যবহৃত হয়েছে, যেটি বলে: “প্রেমে চল, যেমন খ্রীষ্টও তোমাদিগকে প্রেম করিলেন এবং আমাদের জন্য . . . আপনাকে উৎসর্গ করিলেন।” যিশু বলেছিলেন যে, এই ধরনের প্রেম তাঁর সত্য অনুসারীদের শনাক্ত করবে: “তোমরা যদি আপনাদের মধ্যে পরস্পর প্রেম [আগাপে] রাখ, তবে তাহাতেই সকলে জানিবে যে, তোমরা আমার শিষ্য।” (যোহন ১৩:৩৫) এ ছাড়া, ১ করিন্থীয় ১৩:১৩ পদেও আগাপে শব্দটির ব্যবহার লক্ষ করুন: “বিশ্বাস, প্রত্যাশা, প্রেম এই তিনটী আছে, আর ইহাদের মধ্যে প্রেমই [আগাপে] শ্রেষ্ঠ।”
৫, ৬. (ক) কেন বিশ্বাস ও প্রত্যাশার চেয়ে প্রেম শ্রেষ্ঠ? (খ) কিছু কারণ কী, যেগুলোর জন্য প্রেম একটা বিয়েকে স্থায়ী রাখতে সাহায্য করবে?
৫ কী এই আগাপে প্রেমকে বিশ্বাস ও প্রত্যাশার চেয়ে শ্রেষ্ঠ করে তুলেছে? এটি ঈশ্বরের বাক্যে প্রাপ্ত নীতির—সঠিক নীতির—দ্বারা পরিচালিত। (গীতসংহিতা ১১৯:১০৫) এটা হল অন্যদের প্রতি ঈশ্বরের দৃষ্টিতে যা সঠিক ও মঙ্গলময়, তা করার জন্য নিঃস্বার্থ চিন্তা, তা সেটা গ্রহণকারী ব্যক্তি এর যোগ্য বলে মনে হোক বা না-ই হোক। এই ধরনের প্রেম বিবাহসাথিদের বাইবেলের এই নীতি অনুসরণ করতে সমর্থ করে: “পরস্পর সহনশীল হও, এবং যদি কাহাকেও দোষ দিবার কারণ থাকে, তবে পরস্পর ক্ষমা কর; প্রভু [“যিহোবা,” NW] যেমন তোমাদিগকে ক্ষমা করিয়াছেন, তোমরাও তেমনি কর।” (কলসীয় ৩:১৩) প্রেমময় বিবাহিত দম্পতিদের মধ্যে “পরস্পর একাগ্রভাবে প্রেম [আগাপে]” রয়েছে এবং তারা তা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে “কেননা ‘প্রেম পাপরাশি আচ্ছাদন করে।’” (১ পিতর ৪:৮) লক্ষ করুন যে, প্রেম ভুলত্রুটিকে আচ্ছাদন করে। এটা সেগুলোকে দূর করে দেয় না, যেহেতু কোনো অসিদ্ধ মানুষই ভুলত্রুটি থেকে মুক্ত হতে পারে না।—গীতসংহিতা ১৩০:৩, ৪; যাকোব ৩:২.
৬ কোনো বিবাহিত দম্পতি যখন ঈশ্বর ও পরস্পরের প্রতি এই ধরনের প্রেম গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করে, তখন তাদের বিয়ে স্থায়ী হবে এবং তারা সুখী হবে কারণ “প্রেম কখনও শেষ হয় না।” (১ করিন্থীয় ১৩:৮) প্রেম হল “সিদ্ধির যোগবন্ধন।” (কলসীয় ৩:১৪) আপনি যদি বিবাহিত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি ও আপনার সাথি কীভাবে এই ধরনের প্রেম গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করতে পারেন? একসঙ্গে ঈশ্বরের বাক্য পড়ুন ও তা নিয়ে কথা বলুন। যিশুর প্রেমের উদাহরণ নিয়ে অধ্যয়ন করুন এবং তাঁকে অনুকরণ করার, তাঁর মতো চিন্তা ও কাজ করার চেষ্টা করুন। অধিকন্তু, খ্রিস্টীয় সভাগুলোতে যোগ দিন, যেখানে ঈশ্বরের বাক্য সম্বন্ধে শিক্ষা দেওয়া হয়। আর এই উৎকৃষ্ট প্রেম, যা হল ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার একটি ফল, সেটিকে বৃদ্ধি করার জন্য সাহায্য পেতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করুন।—হিতোপদেশ ৩:৫, ৬; যোহন ১৭:৩; গালাতীয় ৫:২২; ইব্রীয় ১০:২৪, ২৫.
দ্বিতীয় চাবিকাঠি
৭. সম্মান কী আর বিয়েতে কাদের সম্মান দেখানো উচিত?
৭ বিবাহিত দুজন ব্যক্তি যদি সত্যিই পরস্পরকে ভালবাসে, তাহলে পরস্পরের প্রতি তাদের সম্মান থাকবে আর এক সুখী বিবাহের জন্য সম্মান হল দ্বিতীয় চাবিকাঠি। সম্মানকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, “অন্যদের প্রতি বিবেচনা দেখানো, তাদেরকে সমাদর করা।” ঈশ্বরের বাক্য স্বামী ও স্ত্রীসহ সমস্ত খ্রিস্টানকে পরামর্শ দেয়: “সমাদরে এক জন অন্যকে শ্রেষ্ঠ জ্ঞান কর।” (রোমীয় ১২:১০) প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন: “হে স্বামিগণ, স্ত্রীলোক অপেক্ষাকৃত দুর্ব্বল পাত্র বলিয়া [তোমাদের স্ত্রীদের] সহিত জ্ঞানপূর্ব্বক বাস কর, তাহাদিগকে . . . সমাদর কর।” (১ পিতর ৩:৭) স্ত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেন তারা “স্বামীকে ভয় [“শ্রদ্ধা,” বাংলা জুবিলী বাইবেল] করে।” (ইফিষীয় [এফেষীয়] ৫:৩৩) আপনি যদি কাউকে সমাদর করতে চান, তাহলে আপনি সেই ব্যক্তির প্রতি সদয় হয়ে থাকেন, তার মর্যাদা ও প্রকাশিত দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সম্মান দেখান এবং আপনার কাছে করা যেকোনো যুক্তিযুক্ত অনুরোধ পরিপূর্ণ করতে তৈরি থাকেন।
৮-১০. কিছু উপায় কী, যার ফলে সম্মান এক বিবাহবন্ধনকে স্থায়ী ও সুখী রাখতে সাহায্য করবে?
৮ যারা সুখী বিয়ে উপভোগ করতে চায়, তারা ‘প্রত্যেক জন আপনার বিষয়ে নয়, কিন্তু [তাহাদের সাথিদের] বিষয়েও লক্ষ্য রাখিবার’ মাধ্যমে তাদের সাথিদের প্রতি সম্মান দেখায়। (ফিলিপীয় ২:৪) তারা কেবল নিজের মঙ্গলই বিবেচনা করে না—যা কিনা স্বার্থপরের মতো কাজ হবে। বরং, তারা তাদের সাথিদের জন্য কোনটা সর্বোত্তম, সেটাও বিবেচনা করে। বস্তুতপক্ষে, তারা সেটাকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।
৯ সম্মান বিবাহসাথিদের তাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে অমিল থাকার বিষয়টা স্বীকার করতে সাহায্য করবে। এটা আশা করা যুক্তিযুক্ত নয় যে, সমস্ত বিষয়ে দুজন ব্যক্তির একইরকম দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে। স্বামীর কাছে হয়তো যে-বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ, তা স্ত্রীর কাছে ততটা গুরুত্বপূর্ণ না-ও হতে পারে আর স্ত্রী হয়তো যে-বিষয়টা পছন্দ করেন, স্বামী তা পছন্দ না-ও করতে পারেন। কিন্তু, প্রত্যেকেরই অন্যের দৃষ্টিভঙ্গি ও বাছাইগুলোকে সম্মান করা উচিত, যতক্ষণ পর্যন্ত তা যিহোবার আইন এবং নীতিগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। (১ পিতর ২:১৬; তুলনা করুন, ফিলীমন ১৪.) অধিকন্তু, জনসমক্ষে অথবা একান্তে যেখানেই হোক না কেন, কাউকে ছোটো করে এমন মন্তব্য অথবা রসিকতা না করার মাধ্যমে প্রত্যেকের উচিত অন্যের মর্যাদাকে সম্মান করা।
১০ হ্যাঁ, ঈশ্বর ও পরস্পরের প্রতি প্রেম এবং পারস্পরিক সম্মান হল সফল বিয়ের দুটো চাবিকাঠি। সেগুলো কীভাবে বিবাহিত জীবনের আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যেতে পারে?
খ্রিস্টতুল্য মস্তকপদ
১১. শাস্ত্র অনুযায়ী একটা বিবাহে মস্তক কে?
১১ বাইবেল আমাদের বলে যে, পুরুষকে এমন বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে, যা তাকে পরিবারের সফল মস্তক করে তুলবে। তাই, একজন পুরুষ তার স্ত্রী ও সন্তানদের আধ্যাত্মিক এবং দৈহিক মঙ্গলের জন্য যিহোবার কাছে দায়ী থাকবেন। তাকে ভারসাম্যপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিতে হবে, যা যিহোবার ইচ্ছা ও ঈশ্বরীয় আচরণের উত্তম উদাহরণকে প্রতিফলিত করবে। “নারীগণ, তোমরা যেমন প্রভুর, তেমনি নিজ নিজ স্বামীর বশীভূতা হও। কেননা স্বামী স্ত্রীর মস্তক, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীর মস্তক।” (ইফিষীয় ৫:২২, ২৩) কিন্তু, বাইবেল বলে যে, স্বামীরও একজন মস্তক আছেন, যিনি তার ওপর কর্তৃত্ব করে থাকেন। প্রেরিত পৌল লিখেছিলেন: “আমার ইচ্ছা এই, যেন তোমরা জান যে, প্রত্যেক পুরুষের মস্তকস্বরূপ খ্রীষ্ট, এবং স্ত্রীর মস্তকস্বরূপ পুরুষ, আর খ্রীষ্টের মস্তকস্বরূপ ঈশ্বর।” (১ করিন্থীয় ১১:৩) একজন বিজ্ঞ স্বামী শেখেন যে, তার নিজ মস্তক খ্রিস্ট যিশুকে অনুকরণ করে কীভাবে মস্তকপদ ব্যবহার করা যায়।
১২. বশ্যতা দেখানো ও মস্তকপদ ব্যবহার করা, উভয় ক্ষেত্রেই যিশু কোন উত্তম উদাহরণ স্থাপন করেছিলেন?
১২ যিশুরও একজন মস্তক আছেন আর তিনি হলেন যিহোবা এবং যিশু তাঁর প্রতি সঠিকভাবে বশীভূত। যিশু বলেছিলেন: “আমি আপনার ইচ্ছা পূর্ণ করিতে চেষ্টা করি না, কিন্তু আমার প্রেরণকর্ত্তার ইচ্ছা পূর্ণ করিতে চেষ্টা করি।” (যোহন ৫:৩০) কতই না চমৎকার এক উদাহরণ! যিশু হলেন “সমুদয় সৃষ্টির প্রথমজাত।” (কলসীয় ১:১৫) তিনি মশীহ হয়ে উঠেছিলেন। তিনি অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের মণ্ডলীর মস্তক এবং সমস্ত দূতদের ঊর্ধ্বে ঈশ্বরের রাজ্যের মনোনীত রাজা হতে যাচ্ছিলেন। (ফিলিপীয় ২:৯-১১; ইব্রীয় ১:৪) এইরকম উচ্চতর অবস্থান ও উচ্চপদ থাকা সত্ত্বেও, মানুষ হিসেবে যিশু রূঢ়, অনমনীয় অথবা অত্যধিক দাবি করেন এমন ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি স্বৈরাচারী ছিলেন না, সবসময় তাঁর শিষ্যদের মনে করিয়ে দিতেন না যে, তাদেরকে তাঁর বাধ্য হতে হবে। যিশু ছিলেন প্রেমময় এবং সমবেদনাময় আর তা বিশেষ করে নিপীড়িত ব্যক্তিদের প্রতি। তিনি বলেছিলেন: “হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সকল, আমার নিকটে আইস, আমি তোমাদিগকে বিশ্রাম দিব। আমার যোঁয়ালি আপনাদের উপরে তুলিয়া লও, এবং আমার কাছে শিক্ষা কর, কেননা আমি মৃদুশীল ও নম্রচিত্ত; তাহাতে তোমরা আপন আপন প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাইবে। কারণ আমার যোঁয়ালি সহজ ও আমার ভার লঘু।” (মথি ১১:২৮-৩০) তাঁর সঙ্গী হওয়া পরমানন্দের এক বিষয় ছিল।
১৩, ১৪. কীভাবে একজন প্রেমময় স্বামী যিশুকে অনুকরণ করে তার মস্তকপদকে ব্যবহার করবেন?
১৩ যে-স্বামী এক সুখী পারিবারিক জীবন চান, তার যিশুর উত্তম বৈশিষ্ট্যগুলো বিবেচনা করা উচিত। একজন উত্তম স্বামী রূঢ় এবং স্বৈরাচারী নন, তার স্ত্রীকে শাসানোর জন্য তার মস্তকপদকে ভুলভাবে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করেন না। বরং তিনি তাকে ভালবাসেন ও সম্মান করেন। যিশু যদি “নম্রচিত্ত” হয়ে থাকেন, তাহলে একজন স্বামীর তা হওয়ার আরও বেশি কারণ রয়েছে, যেহেতু যিশুর বৈসাদৃশ্যে তিনি ভুল করে থাকেন। তিনি যখন তা করেন, তখন তিনি চান যেন তার স্ত্রী তাকে বোঝেন। তাই, নম্র স্বামী তার ভুলগুলো স্বীকার করেন এমনকি যদিও এই কথাগুলো বলা কঠিন হতে পারে যে, “আমি দুঃখিত; তোমার কথাই ঠিক ছিল।” গর্বিত ও একগুঁয়ে স্বামীর চেয়ে বরং একজন বিনয়ী এবং নম্র স্বামীর মস্তকপদকে সম্মান করা একজন স্ত্রীর পক্ষে আরও বেশি সহজ হবে। অন্যদিকে, সম্মান দেখিয়ে থাকেন এমন একজন স্ত্রী যখন ভুল করেন, তখন সেই স্ত্রীও ক্ষমা চান।
১৪ ঈশ্বর স্ত্রীকে বিভিন্ন চমৎকার বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন, যেগুলোকে তিনি এক সুখী বিবাহে অবদান রাখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। একজন বিজ্ঞ স্বামী তা উপলব্ধি করবেন এবং তাকে দমন করবেন না। অনেক নারী অধিক সমবেদনাময় ও সংবেদনশীল হয়ে থাকে, যে-গুণগুলো একটা পরিবারের যত্ন নেওয়ার এবং মানবসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন। সাধারণত নারীরা ঘরকে এমন এক মনোরম স্থানে পরিণত করার ক্ষেত্রে খুবই সুদক্ষ, যেখানে বাস করা যায়। হিতোপদেশ ৩১ অধ্যায়ে বর্ণিত ‘গুণবতী স্ত্রীর’ অনেক অপূর্ব গুণ ও চমৎকার কর্মদক্ষতা রয়েছে আর তার পরিবার সেগুলো থেকে পূর্ণ উপকার লাভ করে থাকে। কেন? কারণ তার স্বামীর হৃদয় তার ওপর “নির্ভর করে।”—হিতোপদেশ ৩১:১০, ১১.
১৫. কীভাবে একজন স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি খ্রিস্টতুল্য প্রেম ও সম্মান দেখাতে পারেন?
১৫ কিছু সংস্কৃতিতে, স্বামীর কর্তৃত্বের ওপর অতিরিক্ত জোর দেওয়া হয়, যার ফলে এমনকি তাকে প্রশ্ন করাও অসম্মানজনক হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। তিনি হয়তো তার স্ত্রীর সঙ্গে প্রায় দাসীর মতো ব্যবহার করে থাকেন। এভাবে মস্তকপদকে ভুলভাবে ব্যবহার করা হলে কেবল স্ত্রীর সঙ্গেই নয় কিন্তু ঈশ্বরের সঙ্গেও সম্পর্ক খারাপ হয়ে পড়ে। (তুলনা করুন, ১ যোহন ৪:২০, ২১.) অন্যদিকে, কিছু স্বামী নেতৃত্ব নিতে অবহেলা করে, তাদের স্ত্রীকে ঘর নিয়ন্ত্রণ করতে দেয়। যে-স্বামী সঠিকভাবে খ্রিস্টের প্রতি বশীভূত, তিনি তার স্ত্রীকে স্বীয়স্বার্থে ব্যবহার করেন না অথবা তার মর্যাদা কেড়ে নেন না। এর পরিবর্তে, তিনি যিশুর আত্মত্যাগমূলক প্রেমকে অনুকরণ করেন এবং পৌলের এই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করেন: “স্বামীরা, তোমরা আপন আপন স্ত্রীকে সেইরূপ প্রেম কর, যেমন খ্রীষ্টও মণ্ডলীকে প্রেম করিলেন, আর তাহার নিমিত্ত আপনাকে প্রদান করিলেন।” (ইফিষীয় ৫:২৫) খ্রিস্ট যিশু তাঁর অনুসারীদের এতটাই ভালবেসেছিলেন যে, তিনি তাদের জন্য মৃত্যুবরণ করেছিলেন। একজন উত্তম স্বামী সেই নিঃস্বার্থ মনোভাব অনুকরণ করার চেষ্টা করবেন, তার স্ত্রীর কাছে অতিরিক্ত দাবি করার পরিবর্তে তার মঙ্গল কামনা করবেন। একজন স্বামী যখন খ্রিস্টের বশীভূত হন এবং খ্রিস্টতুল্য প্রেম ও সম্মান প্রদর্শন করেন, তখন তার স্ত্রী তার প্রতি বশীভূত হতে অনুপ্রাণিত হবেন।—ইফিষীয় ৫:২৮, ২৯, ৩৩.
স্ত্রীর বশ্যতা
১৬. স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে একজন স্ত্রীর কোন গুণাবলি প্রদর্শন করা উচিত?
১৬ আদমকে সৃষ্টি করার কিছুকাল পর, “সদাপ্রভু ঈশ্বর কহিলেন, মনুষ্যের একাকী থাকা ভাল নয়, আমি তাহার জন্য তাহার অনুরূপ [“পরিপূরক,” NW] সহকারিণী নির্ম্মাণ করি।” (আদিপুস্তক ২:১৮) ঈশ্বর হবাকে “পরিপূরক” হিসেবে সৃষ্টি করেছিলেন, প্রতিযোগী হিসেবে নয়। বিয়ে এমন একটা জাহাজের মতো ছিল না, যেখানে দুজন প্রতিযোগী নাবিক রয়েছে। স্বামীকে প্রেমময় মস্তকপদ ব্যবহার করতে হতো আর স্ত্রীকে প্রেম, সম্মান ও স্বেচ্ছায় বশ্যতা প্রকাশ করতে হতো।
১৭, ১৮. কিছু উপায় কী, যেগুলোর মাধ্যমে একজন স্ত্রী তার স্বামীর প্রকৃত সহকারিণী হতে পারেন?
১৭ কিন্তু, একজন উত্তম স্ত্রী কেবল বশীভূত হওয়ার চেয়ে আরও বেশি কিছু করেন। স্বামী যে-সিদ্ধান্তগুলো নেন, সেগুলোকে সমর্থন করার দ্বারা তিনি এক প্রকৃত সহকারিণী হওয়ার চেষ্টা করেন। অবশ্য, তিনি যখন সিদ্ধান্তগুলোর সঙ্গে একমত হন, তখন তা সহজ হয়ে ওঠে। কিন্তু, এমনকি যখন তিনি একমত না-ও হন, তখনও তার সক্রিয় সমর্থন তার স্বামীর সিদ্ধান্তকে আরও সফল ফলাফল অর্জন করতে সাহায্য করতে পারে।
১৮ একজন স্ত্রী তার স্বামীকে অন্যান্য উপায়েও একজন উত্তম মস্তক হতে সাহায্য করতে পারেন। তার সমালোচনা করার অথবা স্বামী কখনো তাকে সন্তুষ্ট করতে পারবেন না এইরকম মনে করতে পরিচালিত করার পরিবর্তে, তিনি নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে স্বামীর প্রচেষ্টার জন্য নিজের উপলব্ধি প্রকাশ করতে পারেন। তার স্বামীর সঙ্গে ইতিবাচক উপায়ে আচরণ করার সময় তার মনে রাখা উচিত যে, ‘মৃদু ও প্রশান্ত আত্মা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে বহুমূল্য,’ কেবল তার স্বামীর দৃষ্টিতেই নয়। (১ পিতর ৩:৩, ৪; কলসীয় ৩:১২) স্বামী যদি বিশ্বাসী না হন, তাহলে? তিনি বিশ্বাসী হোন বা না-ই হোন, শাস্ত্র স্ত্রীদের উৎসাহিত করে যেন তারা “পতিপ্রিয়া, সন্তানপ্রিয়া, সংযতা, সতী, গৃহকার্য্যে ব্যাপৃতা, সুশীলা, ও আপন আপন স্বামীর বশীভূতা হয়, এইরূপে যেন ঈশ্বরের বাক্য নিন্দিত না হয়।” (তীত ২:৪, ৫) যদি বিবেকের বিষয়গুলো আসে, তাহলে একজন অবিশ্বাসী স্বামী হয়তো তার স্ত্রীর অবস্থানকে আরও বেশি সম্মান করবেন, যদি সেগুলোকে “মৃদুতা ও ভয় [“শ্রদ্ধার সঙ্গে,” বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন]” উপস্থাপন করা হয়। কিছু অবিশ্বাসী স্বামী “যখন . . . [তাহাদের] সভয় [“সম্মানজনক,” বাংলা ইজি-টু-রিড ভারসন] বিশুদ্ধ আচার ব্যবহার স্বচক্ষে দেখিতে পায়, তখন বাক্য বিহীনে আপন আপন ভার্য্যার আচার ব্যবহার দ্বারা তাহাদিগকে লাভ করা হয়।”—১ পিতর ৩:১, ২, ১৫; ১ করিন্থীয় ৭:১৩-১৬.
১৯. একজন স্বামী যদি তার স্ত্রীকে ঈশ্বরের আইন লঙ্ঘন করতে বলেন, তাহলে কী বলা যায়?
১৯ একজন স্বামী যদি স্ত্রীকে এমন কিছু করতে বলেন, যা ঈশ্বর নিষেধ করেছেন, তাহলে? যদি এইরকমটা হয়, তাহলে স্ত্রীকে মনে রাখতে হবে যে, ঈশ্বর হলেন তার সর্বোচ্চ শাসক। কর্তৃপক্ষ যখন ঈশ্বরের আইন অমান্য করার জন্য প্রেরিতদের আদেশ দিয়েছিল, তখন তারা যা করেছিল, সেই উদাহরণটা স্ত্রী বিবেচনা করতে পারেন। প্রেরিত ৫:২৯ পদ বলে: “পিতর ও অন্য প্রেরিতগণ উত্তর করিলেন, মনুষ্যদের অপেক্ষা বরং ঈশ্বরের আজ্ঞা পালন করিতে হইবে।”
উত্তম ভাববিনিময়
২০. অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটা ক্ষেত্র কী, যেখানে প্রেম ও সম্মান অপরিহার্য?
২০ বিয়ের আরেকটা ক্ষেত্রে প্রেম ও সম্মান অপরিহার্য আর তা হল ভাববিনিময়। একজন প্রেমময় স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে কাজকর্ম, সমস্যা, বিভিন্ন বিষয়ে স্ত্রীর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কথা বলবেন। স্ত্রীর এগুলোর প্রয়োজন রয়েছে। যে-স্বামী তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য সময় করে নেন এবং স্ত্রী যা বলেন, তা প্রকৃতই শোনেন, তিনি স্ত্রীর প্রতি ভালবাসা ও সম্মান দেখান। (যাকোব ১:১৯) কিছু স্ত্রী অভিযোগ করে যে, তাদের স্বামীরা তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য খুব কম সময় ব্যয় করে। তা সত্যিই দুঃখজনক। এটা ঠিক যে, এই ব্যস্ত সময়ে স্বামীকে হয়তো বাড়ির বাইরে দীর্ঘসময় কাজ করতে হয় আর অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে কিছু স্ত্রীকে হয়তো চাকরিও করতে হয়। কিন্তু, বিবাহিত দম্পতিদের পরস্পরের জন্য সময় আলাদা করে রাখতে হবে। নতুবা তারা পরস্পরের কাছ থেকে স্বাধীন হয়ে পড়বে। আর এটা গুরুতর সমস্যা নিয়ে আসতে পারে, যদি তারা বৈবাহিক ব্যবস্থার বাইরে সহানুভূতিশীল সম্পর্ক খুঁজতে বাধ্য হয়।
২১. কীভাবে সঠিক কথাবার্তা একটা বিয়েকে সুখী রাখতে সাহায্য করবে?
২১ স্বামী ও স্ত্রী যেভাবে ভাববিনিময় করে, তা গুরুত্বপূর্ণ। “মনোহর বাক্য . . . প্রাণের পক্ষে মধুর, অস্থির পক্ষে স্বাস্থ্যকর।” (হিতোপদেশ ১৬:২৪) একজন সাথি বিশ্বাসী হোন বা না-ই হোন, বাইবেলের এই পরামর্শ প্রযোজ্য: “তোমাদের বাক্য সর্ব্বদা অনুগ্রহ সহযুক্ত হউক, লবণে আস্বাদযুক্ত হউক” অর্থাৎ শোভনীয় হোক। (কলসীয় ৪:৬) যখন কারো একটা দিন খারাপ কাটে, তখন সাথির কাছ থেকে কিছু সদয় ও সহানুভূতিপূর্ণ কথাবার্তা অনেক উত্তম কিছু করতে পারে। “উপযুক্ত সময়ে কথিত বাক্য রৌপ্যের ডালিতে সুবর্ণ নাগরঙ্গ ফলের তুল্য।” (হিতোপদেশ ২৫:১১) গলার আওয়াজ ও শব্দ বাছাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, বিরক্তি এবং আদেশের সুরে একজন হয়তো অন্যজনকে বলতে পারে: “দরজাটা বন্ধ করো!” কিন্তু, সেই কথাগুলো কতই না “লবণে আস্বাদযুক্ত” হবে, যদি তা শান্ত ও বোধগম্য উপায়ে এভাবে বলা হয়, “দয়া করে তুমি কি দরজাটা একটু বন্ধ করবে?”
২২. উত্তম ভাববিনিময় বজায় রাখার জন্য দম্পতিদের কোন মনোভাব প্রয়োজন?
২২ উত্তম ভাববিনিময় বৃদ্ধি পায়, যখন সেখানে শান্তভাবে বলা কথাবার্তা, সদয় চাহনি ও অঙ্গভঙ্গি, সদয়ভাব, বোধগম্যতা এবং কোমলতা থাকে। উত্তম ভাববিনিময় বজায় রাখার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করলে স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই তাদের চাহিদাগুলো জানাতে স্বচ্ছন্দ বোধ করবে এবং হতাশা বা চাপের সময়গুলোতে তারা একে অন্যের কাছে সান্ত্বনা ও সাহায্যের উৎস হতে পারবে। “বিষণ্ণদের প্রতি সান্ত্বনার বাক্য বলো,” ঈশ্বরের বাক্য জোরালো পরামর্শ দেয়। (১ থিষলনীকীয় ৫:১৪, NW) এমন সময়ও আসবে যখন স্বামী অথবা স্ত্রী মনমরা থাকতে পারে। তখন তারা ‘সান্ত্বনার বাক্য বলতে’ পারে, পরস্পরকে গেঁথে তুলতে পারে।—রোমীয় ১৫:২.
২৩, ২৪. যখন কোনো মতপার্থক্য দেখা দেয়, তখন প্রেম ও সম্মান কীভাবে সাহায্য করবে? একটা উদাহরণ দিন।
২৩ যে-বিবাহসাথিরা প্রেম ও সম্মান প্রকাশ করে, তারা প্রতিটা মতপার্থক্যকে একটা বিরাট সমস্যা হিসেবে দেখবে না। তারা কঠোর প্রচেষ্টা করবে, যাতে পরস্পরের সঙ্গে “কটুব্যবহার” না করা হয়। (কলসীয় ৩:১৯) উভয়েরই মনে রাখা উচিত যে, “কোমল উত্তর ক্রোধ নিবারণ করে।” (হিতোপদেশ ১৫:১) যিনি মন খুলে কথা বলেন, তাকে ছোটো বা দোষারোপ না করার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। এর পরিবর্তে, এই ধরনের অভিব্যক্তিকে অন্যজনের দৃষ্টিভঙ্গি সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করার এক সুযোগ হিসেবে দেখুন। দুজনে মিলে মতপার্থক্যগুলোকে দূর করার এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ উপসংহারে আসতে চেষ্টা করুন।
২৪ সেই সময়ের কথা মনে করে দেখুন, যখন সারা তার স্বামী অব্রাহামকে একটা নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান সম্বন্ধে সুপারিশ করেছিলেন আর সেটা অব্রাহামের অনুভূতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। কিন্তু, ঈশ্বর অব্রাহামকে বলেছিলেন: “তাহার সেই কথা শুন।” (আদিপুস্তক ২১:৯-১২) অব্রাহাম তা শুনেছিলেন এবং আশীর্বাদ লাভ করেছিলেন। একইভাবে, স্ত্রী যদি তার স্বামীর মনে যা আছে, তার চেয়ে ভিন্ন কিছু সুপারিশ করেন, তাহলে স্বামীর তা অন্ততপক্ষে শোনা উচিত। একইসময়ে, স্ত্রী কথাবার্তায় নেতৃত্ব দেবেন না বরং তার উচিত স্বামীর কী বলার আছে, তা শোনা। (হিতোপদেশ ২৫:২৪) স্বামী বা স্ত্রী যে-ই হোন না কেন, সবসময় তার নিজের ইচ্ছেমতো করার জন্য জোরাজুরি করলে, সেটা হবে প্রেমহীন ও অসম্মানজনক কাজ।
২৫. কীভাবে উত্তম ভাববিনিময় বিবাহিত জীবনের অন্তরঙ্গ দিকগুলোতে সুখের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে?
২৫ এ ছাড়া, কোনো দম্পতির যৌনসম্পর্কের বিষয়েও উত্তম ভাববিনিময় গুরুত্বপূর্ণ। স্বার্থপরতা এবং ইন্দ্রিয়দমনের অভাব বিয়ের সবচেয়ে অন্তরঙ্গ এই সম্পর্ককে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। খোলাখুলি ভাববিনিময় ও সেইসঙ্গে ধৈর্য অপরিহার্য। যখন প্রত্যেকে নিঃস্বার্থভাবে অন্যজনের মঙ্গলের কথা চিন্তা করে, তখন যৌনতা খুব কমই গুরুতর সমস্যা হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে এবং অন্যান্য বিষয়ে “কেহই স্বার্থ চেষ্টা না করুক, বরং প্রত্যেক জন পরের মঙ্গল চেষ্টা করুক।”—১ করিন্থীয় ৭:৩-৫; ১০:২৪.
২৬. যদিও প্রতিটা বিয়েতে উত্থান-পতন রয়েছে কিন্তু কীভাবে ঈশ্বরের বাক্য শোনা বিবাহিত দম্পতিদের সুখ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে?
২৬ ঈশ্বরের বাক্য কতই না উত্তম পরামর্শ প্রদান করে! এটা ঠিক যে, প্রতিটা বিয়েতে উত্থান-পতন রয়েছে। কিন্তু, যুগলরা যখন যিহোবার চিন্তাভাবনা মেনে নেয়, যেমনটা বাইবেলে প্রকাশ করা আছে এবং নীতির ওপর ভিত্তি করা প্রেম ও সম্মানের ওপর নির্ভর করে তাদের সম্পর্ক গড়ে তোলে, তখন তারা নিশ্চিত থাকতে পারে যে, তাদের বিয়ে স্থায়ী এবং সুখী হবে। এভাবে তারা শুধু পরস্পরকেই সম্মান করবে না কিন্তু সেইসঙ্গে বিয়ের উদ্যোক্তা যিহোবা ঈশ্বরকেও সম্মান করবে।