জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জুলাই ১-৭
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | কলসীয় ১-৪
“পুরোনো ব্যক্তিত্বকে কাপড়ের মতো ত্যাগ করুন আর নতুন ব্যক্তিত্বকে পরিধান করুন”
প্রহরীদুর্গ ১১ ৩/১৫ ১০ অনু. ১২-১৩
জগতের নয় বরং ঈশ্বরের আত্মা লাভ করুন
আমার ব্যক্তিত্ব কোন ধরনের আত্মাকে প্রতিফলিত করে? (পড়ুন, কলসীয় ৩:৮-১০, ১৩.) জগতের আত্মা মাংসের কার্য সকল বৃদ্ধি করে। (গালা. ৫:১৯-২১) কোন ধরনের আত্মা আমাদের প্রভাবিত করে, সেটার আসল পরীক্ষা পরিস্থিতি যখন অনুকূলে থাকে, তখন নয় বরং সেই সময়ে আসে, যখন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে না, যেমন, কোনো খ্রিস্টান ভাই বা বোন যদি আমাদের উপেক্ষা করেন, অসন্তুষ্ট করেন অথবা এমনকী আমাদের বিরুদ্ধে পাপ করেন। এ ছাড়া, আমাদের ঘরে একান্তে এটা হয়তো প্রকাশ পেতে পারে যে, কোন ধরনের আত্মা আমাদের প্রভাবিত করছে। কিছুটা আত্মপরীক্ষা করা উচিত। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘গত ছয় মাসে, আমার ব্যক্তিত্ব কি আগের চেয়ে আরও বেশি খ্রিস্টতুল্য হয়ে উঠেছে, না কি আমি কথাবার্তা ও আচরণের ক্ষেত্রে আমার মন্দ অভ্যাসে ফিরে গিয়েছি?’
ঈশ্বরের আত্মা আমাদের “পুরাতন মনুষ্যকে” বা ব্যক্তিত্বকে “তাহার ক্রিয়াশুদ্ধ বস্ত্রবৎ ত্যাগ” করার এবং “নূতন মনুষ্যকে” বা ব্যক্তিত্বকে পরিধান করার জন্য সাহায্য করতে পারে। এই নতুন ব্যক্তিত্ব আমাদেরকে আরও প্রেমময় ও দয়ালু হতে সাহায্য করবে। আমরা স্বেচ্ছায় একে অন্যকে ক্ষমা করতে চাইব, এমনকী যদি আমাদের দোষ দেওয়ার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে বলেও মনে হয়। আমরা যদি মনে করি যে, আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে, তবুও আমরা আর “কটুকাটব্য, রোষ, ক্রোধ, কলহ, নিন্দা” সহকারে প্রতিক্রিয়া দেখাব না। এর পরিবর্তে, আমরা “করুণচিত্ত” হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা করব।—ইফি. ৪:৩১, ৩২.
প্রহরীদুর্গ ১৩ ৯/১৫ ২১ অনু. ১৮-১৯
আপনি কি রূপান্তরিত হয়েছেন?
আমরা যদি চাই যে, ঈশ্বরের বাক্য আমাদের মধ্যে প্রয়োজনীয় রূপান্তর করুক, তা হলে আমাদের কেবল নিয়মিতভাবে বাইবেল পাঠ করা এবং তা থেকে জানার চেয়ে আরও বেশি কিছু করতে হবে। অনেক লোক মাঝে মাঝে বাইবেল পড়ে থাকে আর এই কারণে বাইবেলের বিষয়বস্তুর সঙ্গে বেশ পরিচিত আছে। ক্ষেত্রের পরিচর্যায় এইরকম ব্যক্তিদের সঙ্গে হয়তো আপনার পরিচয় হয়েছে। কেউ কেউ এমনকী বাইবেলের বিভিন্ন বাক্যাংশ মুখস্থ বলতে পারে। কিন্তু, এটা হয়তো তাদের চিন্তাভাবনা ও জীবনধারার উপর খুব কমই প্রভাব ফেলে থাকে। কেন? একজন ব্যক্তি যদি চান যে, ঈশ্বরের বাক্য তার উপর প্রভাব ফেলুক এবং তাকে রূপান্তরিত করুক, তা হলে তাকে অবশ্যই ঈশ্বরের বাক্যকে হৃদয়ের গভীরে ঢুকতে দিতে হবে। তাই, আমরা যা শিখছি, তা নিয়ে চিন্তা করার জন্য আমাদের সময় করে নিতে হবে। নিজেদেরকে এই প্রশ্নগুলো জিজ্ঞেস করা উত্তম: ‘আমি কি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি যে, এটা কেবল এক ধর্মীয় শিক্ষার চেয়ে আরও বেশি কিছু? এটাই যে সত্য, সেই বিষয়ে আমি কি প্রমাণ পাইনি? অধিকন্তু, আমি যা-কিছু শিখছি, তা নিজের জীবনে কাজে লাগানোর বিভিন্ন উপায় কি আমি খুঁজে বের করতে পারি এবং সেগুলোকে কি শুধু অন্যদেরকে শিক্ষা দেওয়ার মতো কোনো বিষয় হিসেবে না দেখার চেষ্টা করি? আমি কি এইরকমটা অনুভব করি যে, যিহোবা ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে কথা বলছেন?’ এই ধরনের প্রশ্ন নিয়ে চিন্তা এবং ধ্যান করা, যিহোবার প্রতি আমাদের যে-অনুভূতি রয়েছে, তা গভীর করার জন্য সাহায্য করতে পারে। তাঁর প্রতি আমাদের প্রেম বৃদ্ধি পাবে। এভাবে আমাদের হৃদয় যদি অনুপ্রাণিত হয়, তা হলে আমরা ইতিবাচক পরিবর্তন করতে পারব।—হিতো. ৪:২৩; লূক ৬:৪৫.
নিয়মিতভাবে ঈশ্বরের বাক্য পাঠ এবং তা নিয়ে ধ্যান করা আমাদেরকে সেই বিষয় করে যেতে অনুপ্রাণিত করবে, যা হয়তো ইতিমধ্যেই আমরা কিছুটা করেছি: ‘তোমরা পুরাতন মনুষ্যকে তাহার ক্রিয়াশুদ্ধ বস্ত্রবৎ ত্যাগ করিয়াছ, এবং সেই নূতন মনুষ্যকে পরিধান করিয়াছ, যে তত্ত্বজ্ঞানের নিমিত্ত নূতনীকৃত হইতেছে।’ (কল. ৩:৯, ১০) হ্যাঁ, আমরা যদি ঈশ্বরের বাক্যের প্রকৃত অর্থ এবং প্রভাব উপলব্ধি করতে পারি, তা হলে আমরা ক্রমাগত সফল হব। আর এর ফলে যে-নতুন খ্রিস্টীয় ব্যক্তিত্ব গড়ে উঠবে, তা আমাদেরকে শয়তানের ধূর্ত চাতুরীর বিরুদ্ধে সুরক্ষা লাভ করতে সাহায্য করবে।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-২ ১৬৯ অনু. ৩-৫, ইংরেজি
ঈশ্বরের রাজ্য
‘আপন প্রেমভূমি পুত্ত্রের রাজ্য।’ যিশুর স্বর্গারোহণের দশ দিন পর, ৩৩ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চাশত্তমীর দিন, তিনি যখন তাঁর শিষ্যদের উপর পবিত্র আত্মা বর্ষণ করেছিলেন, তখন তাঁর শিষ্যরা এই প্রমাণ পেয়েছিলেন যে, তাঁকে “ঈশ্বরের দক্ষিণ হস্ত দ্বারা উচ্চীকৃত” করা হয়েছে। (প্রেরিত ১:৮, ৯; ২:১-৪, ২৯-৩৩) তাদের উপর পবিত্র আত্মা বর্ষণ করার মাধ্যমে তাদের ক্ষেত্রে ‘নূতন নিয়ম’ কার্যকর হয়েছিল আর তারা এক নতুন “পবিত্র জাতি” অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ইস্রায়েলের প্রধান অংশ হয়ে উঠেছিলেন।—ইব্রীয় ১২:২২-২৪; ১পিতর ২:৯, ১০; গালা ৬:১৬.
সেই সময়, খ্রিস্ট তাঁর পিতার ডান দিকে বসেছিলেন এবং তিনি ছিলেন এই মণ্ডলীর মস্তক। (ইফি ৫:২৩; ইব্রীয় ১:৩; ফিলি ২:৯-১১) শাস্ত্র দেখায় যে, ৩৩ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চাশত্তমীর দিন থেকে তাঁর শিষ্যদের নিয়ে এক আত্মিক রাজ্য স্থাপন করা হয়েছিল। প্রথম শতাব্দীতে প্রেরিত পৌল কলসীর খ্রিস্টানদের উদ্দেশে তার চিঠিতে এই কথাগুলো লেখার মাধ্যমে উল্লেখ করেছিলেন যে, যিশু খ্রিস্টের ইতিমধ্যে এক রাজ্য রয়েছে: “[ঈশ্বরই] আমাদিগকে অন্ধকারের কর্ত্তৃত্ব হইতে উদ্ধার করিয়া আপন প্রেমভূমি পুত্ত্রের রাজ্যে আনয়ন করিয়াছেন।”—কল ১:১৩; তুলনা করুন, প্রেরিত ১৭:৬, ৭.
খ্রিস্টাব্দের পঞ্চাশত্তমীর দিন থেকে খ্রিস্টের রাজ্য এক আত্মিক রাজ্য হিসেবে আত্মিক ইস্রায়েলের উপর অর্থাৎ সেই খ্রিস্টানদের উপর শাসন করছে, যারা ঈশ্বরের আত্মিক সন্তান হয়ে ওঠার জন্য ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে জন্ম লাভ করেছেন। (যোহন ৩:৩, ৫, ৬) যে-খ্রিস্টানরা পবিত্র আত্মার মাধ্যমে জন্ম লাভ করেছেন, তারা যখন তাদের স্বর্গীয় পুরস্কার লাভ করেন, তখন তারা আর খ্রিস্টের আত্মিক রাজ্যের পার্থিব প্রজা থাকবেন না বরং তারা স্বর্গে খ্রিস্টের সঙ্গে রাজা হবেন।—প্রকা ৫:৯, ১০.
গালাতীয়, ইফিষীয়, ফিলিপীয় এবং কলসীয়দের প্রতি লেখা চিঠির প্রধান বিষয়গুলো
২:৮—‘জগতের অক্ষরমালা’ কী, যেগুলোর বিরুদ্ধে পৌল সাবধান করেছেন? এগুলো হচ্ছে শয়তানের জগতের অক্ষরমালা—মৌলিক বিষয় ও নীতিগুলো, যেগুলো এটাকে গঠন করে, পরিচালনা দেয় অথবা উদ্দীপিত করে। (১ যোহন ২:১৬) এই বিষয়গুলোর অন্তর্ভুক্ত হল দর্শনবিদ্যা, বস্তুবাদিতা এবং এই জগতের মিথ্যা ধর্মগুলো।
জুলাই ৮-১৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ থিষলনীকীয় ১-৫
“তোমরা পরস্পরকে আশ্বাস দেও, এবং এক জন অন্যকে গাঁথিয়া তুল”
প্রহরীদুর্গ ১১ ৬/১৫ ২৬ অনু. ১২
‘যাঁহারা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করেন, তাঁহাদিগকে সম্মান করিও’
মণ্ডলী ‘পরিচালনা করিবার’ সঙ্গে কেবল শিক্ষা দেওয়ার চেয়ে আরও বেশি কিছু জড়িত। ১ তীমথিয় ৩:৪ পদেও একইরকম অভিব্যক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। পৌল বলেছিলেন যে, একজন অধ্যক্ষের এমন ব্যক্তি হওয়া উচিত, যিনি “আপন ঘরের শাসন [“পরিচালনা,” বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন] উত্তমরূপে করেন, এবং সম্পূর্ণ ধীরতা সহকারে সন্তানগণকে বশে রাখেন।” এখানে ‘পরিচালনা করা’ অভিব্যক্তিটার সঙ্গে স্পষ্টতই সন্তানদের কেবল শিক্ষা দেওয়ার বিষয়টাই নয় কিন্তু সেইসঙ্গে পরিবারে নেতৃত্ব দেওয়ার এবং ‘সন্তানগণকে বশে রাখিবার’ বিষয়টা জড়িত। হ্যাঁ, প্রাচীনরা সকলকে যিহোবার প্রতি বশীভূত থাকতে সাহায্য করার মাধ্যমে মণ্ডলীতে নেতৃত্ব দেয়।—১ তীম. ৩:৫.
প্রহরীদুর্গ ১১ ৬/১৫ ২৮ অনু. ১৯
‘যাঁহারা তোমাদের মধ্যে পরিশ্রম করেন, তাঁহাদিগকে সম্মান করিও’
আপনি যদি এমন কোনো উপহার লাভ করেন, যেটা বিশেষভাবে আপনার কথা মনে রেখেই তৈরি করা হয়েছে, তা হলে আপনি কী করবেন? আপনি কি সেটা ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার উপলব্ধি প্রকাশ করবেন? ‘মনুষ্যদিগের নানা বর’ বা দানরূপ মানুষরা হল ঠিক তা-ই, যা যিহোবা যিশু খ্রিস্টের মাধ্যমে আপনার জন্যই জুগিয়েছেন। একটা যে-উপায়ে আপনি এই উপহারের জন্য আপনার কৃতজ্ঞতা দেখাতে পারেন তা হল, প্রাচীনদের দ্বারা উপস্থাপিত বক্তৃতাগুলো গভীর মনোযোগ সহকারে শোনার ও তারা যে-বিষয়গুলো তুলে ধরে, সেগুলো কাজে লাগানোর চেষ্টা করার মাধ্যমে। এ ছাড়া, আপনি সভাগুলোতে অর্থপূর্ণ মন্তব্য করার মাধ্যমেও আপনার উপলব্ধি দেখাতে পারেন। সেই কাজে সমর্থন করুন, যে-কাজে প্রাচীনরা নেতৃত্ব দিচ্ছে যেমন, ক্ষেত্রের পরিচর্যা। কোনো প্রাচীনের কাছ থেকে প্রাপ্ত পরামর্শ শুনে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন, তা হলে তাকে সেই বিষয়টা বলুন না কেন? তা ছাড়া, প্রাচীনদের পরিবারের প্রতি আপনার উপলব্ধি দেখান না কেন? মনে রাখবেন যে, একজন প্রাচীন যাতে মণ্ডলীতে কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন, সেইজন্য তার পরিবার তার সঙ্গে সময় কাটানোর বিষয়টাকে বিসর্জন দিচ্ছে।
‘কার্য্যে ও সত্যে প্রেম করুন’
দুর্বল ব্যক্তিদের সাহায্য করুন। বাইবেল আমাদের ‘দুর্ব্বলদিগের সাহায্য করিবার, সকলের প্রতি দীর্ঘসহিষ্ণু হইবার’ আদেশ দেয়। এই আদেশ পরীক্ষা করতে পারে যে, আমাদের প্রেম প্রকৃত কিনা। (১ থিষল. ৫:১৪) অনেক ভাই-বোন, যারা একসময় বিশ্বাসে দুর্বল ছিল, তারা পরবর্তী সময় বিশ্বাসে বলবান হয়েছে। কিন্তু, অন্যদের ক্রমাগতভাবে আমাদের ধৈর্যপূর্ণ ও প্রেমময় সাহায্যের প্রয়োজন হয়। কীভাবে আমরা তাদের সাহায্য করতে পারি? আমরা বাইবেল ব্যবহার করে তাদের উৎসাহিত করতে পারি, আমাদের সঙ্গে প্রচার করার জন্য তাদের আমন্ত্রণ জানাতে পারি অথবা কেবল মন দিয়ে তাদের কথা শুনতে পারি। এ ছাড়া, আমাদের ভাই-বোনদের ‘বলবান’ অথবা ‘দুর্বল’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা উচিত নয়। এর পরিবর্তে, আমাদের উপলব্ধি করতে হবে যে, আমরা সবাই কোনো-না-কোনো দিক থেকে বলবান ও দুর্বল। এমনকী প্রেরিত পৌলও স্বীকার করেছিলেন যে, তার দুর্বলতা রয়েছে। (২ করি. ১২:৯, ১০) আমাদের সবারই একে অন্যের কাছ থেকে সাহায্য ও উৎসাহের প্রয়োজন রয়েছে।
যিশুর নম্রতা এবং কোমলতা অনুকরণ করুন
আমাদের কোমল কথাবার্তা। আমাদের কোমল অনুভূতি আমাদেরকে ‘ক্ষীণসাহসদিগকে সান্ত্বনা করিতে [‘বিষণ্ণদের প্রতি সান্ত্বনার বাক্য বলতে,’ NW]’ অনুপ্রাণিত করে। (১ থিষল. ৫:১৪) তাদেরকে উৎসাহিত করার জন্য আমরা কী বলতে পারি? আমরা তাদের বলতে পারি, তাদের সম্বন্ধে আমরা কতটা চিন্তা করি। আমরা তাদের প্রশংসা করতে এবং তাদের ইতিবাচক গুণ ও দক্ষতা খুঁজে বের করার জন্য সাহায্য করতে পারি। আমরা তাদের মনে করিয়ে দিতে পারি, যেহেতু যিহোবা তাদেরকে সত্য খুঁজে পেতে সাহায্য করেছেন, তাই তারা অবশ্যই তাঁর কাছে অত্যন্ত মূল্যবান। (যোহন ৬:৪৪) আমরা তাদের আশ্বাস দিতে পারি, যিহোবা তাঁর সেই দাসদের জন্য গভীরভাবে চিন্তা করেন, যারা ‘ভগ্নচিত্ত’ অথবা ‘চূর্ণমনা।’ (গীত. ৩৪:১৮) আমাদের কোমল কথাবার্তা সত্যিই সেই ব্যক্তিদের সতেজ করতে পারে, যাদের সান্ত্বনার প্রয়োজন।—হিতো. ১৬:২৪.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৮৬৩-৮৬৪, ইংরেজি
ব্যভিচার
ব্যভিচার হল এমন এক অপরাধ, যেটার জন্য একজন ব্যক্তিকে খ্রিস্টীয় মণ্ডলী থেকে বের করে দেওয়া (সমাজচ্যুত করা) হতে পারে। (১করি ৫:৯-১৩; ইব্রীয় ১২:১৫, ১৬) প্রেরিত ব্যাখ্যা করেছেন, একজন খ্রিস্টান যখন ব্যভিচার করেন, তখন তিনি জননেন্দ্রিয়গুলো বিকৃত উপায়ে ব্যবহার করার মাধ্যমে নিজের দেহের বিরুদ্ধে পাপ করেন। তার আধ্যাত্মিকতা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তিনি ঈশ্বরের মণ্ডলীকে কলুষিত করেন এবং নিজেকে মারাত্মক যৌনবাহিত রোগের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকির মুখে ফেলেন। (১করি ৬:১৮, ১৯) তিনি এভাবে নিজের খ্রিস্টান ভাইদের ঠকিয়ে থাকেন (১থিষল ৪:৩-৭) (১) তিনি মণ্ডলীতে অশুচিতা ও দুর্নাম নিয়ে আসেন (ইব্রীয় ১২:১৫, ১৬), (২) তিনি যার সঙ্গে ব্যভিচার করেন, তার শুদ্ধ নৈতিক মান থেকে তাকে বঞ্চিত করেন এবং সেই ব্যক্তি যদি অবিবাহিত হয়ে থাকেন, তা হলে তাকে বিবাহের পূর্বে শুদ্ধ থাকা থেকে বঞ্চিত করেন, (৩) নিজের পরিবারকে শুদ্ধ থাকার বিষয়ে এক নথি গড়ে তোলা থেকে বঞ্চিত করেন আর (৪) যার সঙ্গে ব্যভিচার করেন, তার বাবা-মা, স্বামী কিংবা বাগ্দত্তার বিরুদ্ধে অবিচার করেন। তিনি মানুষকে নন বরং ঈশ্বরকে অগ্রাহ্য করেন। মানুষের আইন ব্যভিচারকে নিন্দা করতেও পারে, আবার না-ও করতে পারে, কিন্তু ঈশ্বর তাকে তার পাপের শাস্তি দেবেন।—১থিষল ৪:৮.
প্রহরীদুর্গ ১৫ ৭/১৫ ১৮-১৯ অনু. ১৪-১৫
“তোমাদের মুক্তি সন্নিকট”!
মাগোগ দেশীয় গোগ ঈশ্বরের লোকেদের আক্রমণ করার পর কী ঘটবে? বাইবেল বলে, মনুষ্যপুত্র “দূতগণকে প্রেরণ করিয়া পৃথিবীর সীমা অবধি আকাশের সীমা পর্য্যন্ত চারি বায়ু হইতে তাঁহার মনোনীতদিগকে একত্র করিবেন।” (মার্ক ১৩:২৭; মথি ২৪:৩১) এই একত্রীকরণের বা সংগ্রহের কাজ অভিষিক্ত খ্রিস্টানদের প্রথম মনোনীত করার সময়কে নির্দেশ করে না। আর এটা পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিদের চূড়ান্ত মুদ্রাঙ্কনকেও নির্দেশ করে না। (মথি ১৩:৩৭, ৩৮) কারণ সেই মুদ্রাঙ্কন মহাক্লেশ শুরু হওয়ার ঠিক আগে ঘটবে। (প্রকা. ৭:১-৪) তা হলে, যিশুর উল্লেখিত এই সংগ্রহের কাজ কী? এটা হচ্ছে সেই সময়, যখন পৃথিবীতে বেঁচে থাকা অভিষিক্ত ব্যক্তিরা তাদের পুরস্কার লাভ করবেন এবং স্বর্গে যাবেন। (১ থিষল. ৪:১৫-১৭; প্রকা. ১৪:১) মাগোগ দেশীয় গোগ আক্রমণ শুরু করার কিছু সময় পর এই ঘটনা ঘটবে। (যিহি. ৩৮:১১) তারপর যিশুর বলা এই কথা পরিপূর্ণ হবে: “ধার্ম্মিকেরা আপনাদের পিতার রাজ্যে সূর্য্যের ন্যায় দেদীপ্যমান হইবে।”—মথি ১৩:৪৩.
এর অর্থ কি এই যে, অভিষিক্ত ব্যক্তিদের “সশরীরে উঠিয়ে নেওয়া” হবে? খ্রিস্টীয়জগতের অনেকে বিশ্বাস করে, খ্রিস্টানদের মাংসিক দেহে স্বর্গে উঠিয়ে নেওয়া হবে। তারা এটাও মনে করে, তারা যিশুকে আবারও সশরীরে পৃথিবীতে শাসন করার জন্য ফিরে আসতে দেখবে। কিন্তু, বাইবেল স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে, যিশু অদৃশ্যভাবে ফিরে আসবেন। এটি বলে: “মনুষ্যপুত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাইবে” এবং যিশু “আকাশীয় মেঘরথে” আসবেন। (মথি ২৪:৩০) বাইবেল এটাও বলে, “রক্ত মাংস ঈশ্বরের রাজ্যের অধিকারী হইতে পারে না।” তাই, যাদের স্বর্গে নিয়ে যাওয়া হবে, তাদের প্রথমে “রূপান্তরীকৃত” হতে হবে আর তা হবে “এক মুহূর্ত্তের মধ্যে, চক্ষুর পলকে, শেষ তূরীধ্বনিতে।” (পড়ুন, ১ করিন্থীয় ১৫:৫০-৫৩.) আমরা এই ঘটনা বর্ণনা করার জন্য এখানে “সশরীরে উঠিয়ে নেওয়া” শব্দগুলো ব্যবহার করিনি কারণ এটা খ্রিস্টীয়জগতের মিথ্যা শিক্ষার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে, পৃথিবীতে বেঁচে থাকা বিশ্বস্ত অভিষিক্ত ব্যক্তিদের মুহূর্তের মধ্যে সংগ্রহ করা হবে।
জুলাই ১৫-২১
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ২ থিষলনীকীয় ১-৩
“সেই অধর্মী প্রকাশ পায়”
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৯৭২-৯৭৩, ইংরেজি
ঈশ্বরীয় ভক্তি
যিহোবার ‘নিগূঢ়তত্ত্বের’ একেবারে বিপরীতে আরেকটা নিগূঢ়তত্ত্ব রয়েছে। এটা হল, “অধর্ম্মের নিগূঢ়তত্ত্ব।” এটা সত্য খ্রিস্টানদের কাছে একটা নিগূঢ়তত্ত্ব বা রহস্য ছিল কারণ প্রেরিত পৌলের দিনে সেই “পাপ-পুরুষ” তখনও সুনির্দিষ্টভাবে স্থাপিত হয়নি এবং সুস্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা যাবে এমন এক শ্রেণি হিসেবে গড়ে ওঠেনি। এমনকী সেই ‘পুরুষ’ গড়ে ওঠার পরও তার পরিচয় অধিকাংশ লোকের কাছে রহস্য থাকবে কারণ সে তার মন্দ কাজগুলো ঈশ্বরীয় ভক্তির ছদ্মবেশে ও সেটার নামে করে চলবে। আসলে, এটা হবে প্রকৃত ঈশ্বরীয় ভক্তি থেকে ধর্মভ্রষ্টতা। পৌল বলেছিলেন যে, “অধর্ম্মের নিগূঢ়তত্ত্ব” তার দিনে ইতিমধ্যেই কাজ করছিল কারণ খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে এক অধার্মিক প্রভাব ছিল, যেটা থেকে পরিশেষে ধর্মভ্রষ্ট শ্রেণি উৎপন্ন হবে। পরিশেষে, যিশু খ্রিস্ট তাঁর আগমনের প্রকাশের সময় সেই পাপ-পুরুষকে ধ্বংস করবেন। শয়তানের দ্বারা পরিচালিত এই ধর্মভ্রষ্ট ‘পুরুষ’ নিজেকে “‘ঈশ্বর’ নামে আখ্যাত এমন সকলের বা পূজ্য সমস্ত কিছুর” চেয়ে বড়ো করে তুলবে। (গ্রিক, সিবাস্মা) এভাবে ঈশ্বরের এই মহাবিরোধি শয়তানের হাতিয়ার হিসেবে খুবই প্রতারণামূলক হবে এবং যারা এর মতো কাজ করে থাকে, তাদের জন্য ধ্বংস নিয়ে আসবে। এই “পাপ-পুরুষ” খুবই সফল হবে কারণ এটার মন্দতা কপট ঈশ্বরীয় ভক্তির চাদরে ঢাকা থাকবে।—২থিষল ২:৩-১২; তুলনা করুন, মথি ৭:১৫, ২১-২৩.
অন্তর্দৃষ্টি-২ ২৪৫ অনু. ৭, ইংরেজি
মিথ্যা
যিহোবা ঈশ্বর ‘ভ্রান্তির কার্য্যসাধনকে’ এমন ব্যক্তিদের কাছে যাওয়ার অনুমতি দেন, যারা মিথ্যায় বিশ্বাস করতে চায়, “যাহাতে তাহারা” যিশু খ্রিস্ট সম্বন্ধীয় সুসমাচারের পরিবর্তে ‘সেই মিথ্যায় বিশ্বাস করে।’ (২থিষল ২:৯-১২) শত শত বছর আগে ইস্রায়েলীয় রাজা আহাবের প্রতি যা ঘটেছিল, সেটা এই নীতিকেই তুলে ধরে। মিথ্যা ভাববাদীরা আহাবকে এই আশ্বাস দিয়েছিল যে, রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি সফল হবেন কিন্তু যিহোবার ভাববাদী মীখায় বলেছিলেন যে, যুদ্ধের ফল হবে ধ্বংসাত্মক। মীখায়কে দেখানো এক দর্শনে যেমনটা প্রকাশ করা হয়েছিল, যিহোবা একজন আত্মিক প্রাণীকে আহাবের ভাববাদীদের মুখে “মিথ্যাবাদী আত্মা” হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন। এর অর্থ হল সেই আত্মিক প্রাণী তাদের উপর তার শক্তি ব্যবহার করেছিলেন, যাতে তারা সত্য নয় বরং তারা যা বলতে চেয়েছিল এবং আহাব তাদের কাছ থেকে যা শুনতে চেয়েছিলেন, তা-ই বলে। যদিও আহাবকে আগে থেকে সতর্ক করা হয়েছিল কিন্তু তিনি তাদের মিথ্যা কথার দ্বারা ভ্রান্ত হওয়া বেছে নিয়েছিলেন এবং ফল স্বরূপ, নিজের জীবন হারিয়েছিলেন।—১রাজা ২২:১-৩৮; ২বংশা ১৮.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৮৩৪ অনু. ৫, ইংরেজি
আগুন
পিতর লিখেছিলেন যে, “এই বর্ত্তমান কালের আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী অগ্নির নিমিত্ত সঞ্চিত রহিয়াছে।” এই পদের প্রসঙ্গ এবং অন্যান্য শাস্ত্রপদের আলোকে এটা স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে, এটা আক্ষরিক আগুন নয় বরং অনন্ত ধ্বংসকে চিত্রিত করছে। ঠিক যেমন নোহের দিনের জলপ্লাবন আক্ষরিক আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে নয় বরং কেবল ঈশ্বরভক্তিহীন লোকেদের ধ্বংস করেছিল, তেমনই যিশু খ্রিস্ট যখন তাঁর পরাক্রমী স্বর্গদূতদের সঙ্গে জ্বলন্ত অগ্নিবেষ্টনে প্রকাশিত হবেন, তখন কেবলমাত্র ঈশ্বরভক্তিহীন লোকেরা এবং তারা যে-মন্দ বিধিব্যবস্থার অংশ, সেটা চিরকালের জন্য ধ্বংস হবে।—২পিতর ৩:৫-৭, ১০-১৩; ২থিষল ১:৬-১০; তুলনা করুন, যিশা ৬৬:১৫, ১৬, ২২, ২৪.
অন্তর্দৃষ্টি-১ ১২০৬ অনু. ৪, ইংরেজি
অনুপ্রেরণা
“আত্মা [“আত্মিক প্রেরণা,” জুবিলী বাইবেল]”—সত্য ও মিথ্যা। গ্রিক শব্দ প্নেভ্মা (আত্মা) প্রেরিতদের কোনো কোনো লেখায় বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়েছে। উদাহরণ স্বরূপ, ২ থিষলনীকীয় ২:২ পদে প্রেরিত পৌল তার থিষলনীকীয় ভাইদের পরামর্শ দিয়েছেন, যেন তারা “কোন আত্মা দ্বারা, বা কোন বাক্য দ্বারা, অথবা, আমরা লিখিয়াছি মনে করিয়া কোন পত্র দ্বারা” মনের স্থিরতা থেকে বিচলিত কিংবা উদ্বিগ্ন না হয় আর এমনটা না ভাবে যে, “প্রভুর দিন উপস্থিত হইল।” এটা স্পষ্ট যে, পৌল প্নেভ্মা (আত্মা) শব্দটা ভাববিনিময়ের মাধ্যম, যেমন “বাক্য” অথবা “পত্র” অর্থে বুঝিয়েছেন। এই কারণে ল্যাংগের কমেন্ট্রি অন দ্যা হোলি স্ক্রিপচার্স (পৃষ্ঠা ১২৬) বই এই পদের বিষয়ে বলে: “এই শব্দ ব্যবহার করার মাধ্যমে প্রেরিত কোনো আত্মিক পরামর্শ, ভবিষ্যদ্বাণীর ভান করা হচ্ছে এমন কিছুকে, ভাববাদীর কথাকে ইঙ্গিত করেছেন।” (পি. শেফ কর্তৃক অনুবাদিত ও সম্পাদিত, ১৯৭৬) ভিনসেন্টের ওয়ার্ড স্টাডিস ইন দ্যা নিউ টেস্টামেন্ট বলে: “আত্মার দ্বারা। খ্রিস্টীয় সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন ব্যক্তির ভাববাণীমূলক কথার দ্বারা আত্মিক মাধ্যম থেকে প্রকাশিত বিষয় লাভ করার দাবি করা।” (১৯৫৭, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ৬৩) তাই, যদিও কোনো কোনো অনুবাদে প্নেভ্মা শব্দকে এই পদে এবং একইরকম জায়গাগুলোতে “আত্মা” হিসেবে অনুবাদ করে, তবে অন্যান্য অনুবাদে এই শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে: “আত্মার বার্তা” (AT), “ভবিষ্যদ্বাণী” (JB), “অনুপ্রেরণা” (D’Ostervald; Segond [French]), “অনুপ্রাণিত বাক্য” (NW)।
জুলাই ২২-২৮
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ তীমথিয় ১-৩
“উত্তম কাজের আকাঙ্ক্ষী হও”
আপনার কি আধ্যাত্মিক উন্নতি করা প্রয়োজন?
প্রথম তীমথিয় ৩:১ পদ পড়ুন। প্রেরিত পৌল সেই ভাইদের প্রশংসা করেছিলেন, যারা অধ্যক্ষপদের জন্য “আকাঙ্ক্ষী” ছিলেন। একজন ব্যক্তি যদি দূরের কোনো জিনিস ধরতে চান, তা হলে তাকে প্রচেষ্টা করতে এবং দরকার হলে হাত বাড়াতে হবে। এখন কল্পনা করুন, একজন ভাই পরিচারক দাস হওয়ার জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে চান। তিনি উপলব্ধি করেন, সত্য খ্রিস্টান হিসেবে বিভিন্ন গুণ দেখানোর ক্ষেত্রে তাকে আরও উন্নতি করার জন্য প্রচেষ্টা করতে হবে। এরপর তিনি যখন একজন পরিচারক দাস হিসেবে সেবা করতে শুরু করেন, তখন তিনি একজন অধ্যক্ষ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করার জন্য প্রচেষ্টা করতে থাকেন।
রাজ্যের পরিচর্যা ৯/৭৮ ৪ অনু. ৭, ইংরেজি
যারা ‘সুপ্রতিষ্ঠা লাভ করেন’
তাই, এটা বোঝা খুবই সহজ যে, কেন পৌল এই ব্যক্তিদের বিষয়ে বলেছিলেন, তারা “সুপ্রতিষ্ঠা . . . লাভ করেন।” এটা গির্জায় উচ্চপদ লাভ করার মতো একই বিষয় নয়, যেমনটা কেউ কেউ মনে করে থাকে। এর পরিবর্তে, যে-পরিচারক দাসেরা ‘উত্তমরূপে পরিচারকের কার্য্য করেন,’ তাদের এই নিশ্চয়তা রয়েছে যে, তারা যিহোবা ও যিশুর কাছ থেকে আশীর্বাদ লাভ করেন এবং তারা পুরো মণ্ডলীর কাছ থেকে সম্মান ও সমর্থন লাভ করেন। উপযুক্তভাবেই তারা “খ্রীষ্ট যীশু সম্বন্ধীয় বিশ্বাসে অতিশয় সাহস” লাভ করেন। যেহেতু তারা তাদের পদমর্যাদা অনুযায়ী কাজ করেন, তাই তাদের উত্তম সেবার জন্য তাদের প্রতি উপলব্ধি দেখানো হয়; তাদের দৃঢ়বিশ্বাস রয়েছে আর তারা সাহসের সঙ্গে এবং অপমানিত হওয়ার ভয় না পেয়ে তাদের বিশ্বাস সম্বন্ধে ঘোষণা করেন।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৯১৪-৯১৫, ইংরেজি
বংশাবলি
এই ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে অধ্যয়ন ও আলোচনা করা ছিল অর্থহীন আর পৌল যখন তীমথিয়কে চিঠি লিখেছিলেন, সেই সময় তা ছিল আরও বেশি অর্থহীন। কারো বংশধারা প্রমাণ করার জন্য বংশাবলির নথি রাখা আর আবশ্যক ছিল না কারণ ঈশ্বর তখন খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে যিহুদি ও পরজাতীয়দের মধ্যে কোনো প্রভেদ করেননি। (গালা ৩:২৮) আর বংশাবলির নথি থেকে এটা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছিল যে, খ্রিস্ট দায়ূদের বংশধারা থেকে এসেছেন। আর এই কথাগুলো লেখার কিছু সময়ের মধ্যেই যিরূশালেম ও সেইসঙ্গে যিহুদিদের সমস্ত নথি ধ্বংস হয়ে যাবে। ঈশ্বর সেগুলো সংরক্ষণ করেননি। তাই, পৌল এই বিষয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন যে, তীমথিয় ও মণ্ডলীর সদস্যরা যেন এমন ব্যক্তিগত বংশতালিকা নিয়ে গবেষণা করার এবং তর্কবিতর্ক করার কাজে সময় ব্যয় করে মূল বিষয় থেকে সরে না যায় কারণ এইরকম বিষয়গুলো খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোনো অবদান রাখবে না। খ্রিস্টই যে মশীহ, তা প্রমাণ করার জন্য বাইবেলে দেওয়া বংশাবলিই যথেষ্ট আর খ্রিস্টানদের জন্য এই বংশাবলিই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বাইবেলে লিপিবদ্ধ অন্যান্য বংশাবলি প্রমাণ করে যে, শাস্ত্র-এর নথি সঠিক এবং এগুলো স্পষ্টভাবে দেখায় যে, এটি প্রকৃতই এক ঐতিহাসিক বিবরণ।
যিহোবার নিকটবর্তী হোন ১২ অনু. ১৫
“এই দেখ, ইনিই আমাদের ঈশ্বর”
আরেকটা উপাধি, যা শুধু যিহোবার প্রতিই প্রযোজ্য তা হল, “যুগপর্য্যায়ের রাজা।” (১ তীমথিয় ১:১৭; প্রকাশিত বাক্য ১৫:৩, পাদটীকা) এর মানে কী? এটা আমাদের সীমিত মানসিক শক্তিতে বোঝা কঠিন কিন্তু যিহোবা অতীত ও ভবিষ্যৎ উভয় দিকেই অনন্তকালস্থায়ী। গীতসংহিতা ৯০:২ পদ বলে: “এমন কি, অনাদিকাল হইতে অনন্তকাল তুমিই ঈশ্বর।” অতএব যিহোবার কোনো শুরু নেই; তিনি সবসময়ই ছিলেন। তাঁকে উপযুক্তভাবেই বলা যায়, “অনেক দিনের বৃদ্ধ”—বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে কেউ বা কোনো কিছু অস্তিত্বে আসার আগেই তিনি অনন্তকালের জন্য অস্তিত্বে ছিলেন! (দানিয়েল ৭:৯, ১৩, ২২) সার্বভৌম প্রভু হিসেবে তাঁর অধিকার নিয়ে কে ন্যায়সংগতভাবে প্রশ্ন করতে পারে?
জুলাই ২৯–আগস্ট ৪
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | ১ তীমথিয় ৪-৬
“ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি বনাম ধনসম্পদ”
সন্তুষ্ট থাকার রহস্যটি শেখা
এক প্রধান কারণ যা পৌলের সুখী হওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছিল, তা হল তার সন্তুষ্টি বোধ। কিন্তু সন্তুষ্ট থাকার অর্থ কী? সহজ করে বলতে গেলে এর অর্থ হল, মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে পরিতৃপ্ত থাকা। এই সম্বন্ধে পৌল তার পরিচর্যার সঙ্গী তীমথিয়কে বলেছিলেন: “বাস্তবিকই ভক্তি [“ঈশ্বরীয় ভক্তি,” NW], সন্তোষযুক্ত হইলে, মহালাভের উপায়, কেননা আমরা জগতে কিছুই সঙ্গে আনি নাই, কিছুই সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইতেও পারি না; কিন্তু গ্রাসাচ্ছাদন পাইলে আমরা তাহাতেই সন্তুষ্ট থাকিব।”—১ তীমথিয় ৬:৬-৮.
লক্ষ করুন যে, পৌল সন্তুষ্ট থাকাকে ঈশ্বরীয় ভক্তির সঙ্গে সংযুক্ত করেছিলেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন যে, প্রকৃত সুখ আসে ঈশ্বরীয় ভক্তির মাধ্যমে, যেটা হল ঈশ্বরের প্রতি আমাদের সেবাকে প্রথম স্থানে রাখার মাধ্যমে, বস্তুগত সম্পদ বা ধনসম্পত্তির মাধ্যমে নয়। তিনি যাতে ঈশ্বরীয় ভক্তি অনুধাবন করে চলতে পারেন, সেজন্য “গ্রাসাচ্ছদন” ছিল একমাত্র উপায়। তাই, পৌলের কাছে সন্তুষ্ট থাকার রহস্যটি ছিল পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, যিহোবার উপর নির্ভর করা।
সজাগ হোন! ৬/০৭ ৬ অনু. ২, ইংরেজি
ধনী হওয়ার বাসনা—এটা যেভাবে আপনাকে প্রভাবিত করতে পারে
এটা ঠিক যে, বেশিরভাগ লোক ধনসম্পদের পিছনে ছুটতে গিয়ে মারা যায় না। কিন্তু, তারা ধনের পিছনে ছুটতে থাকার সময় জীবন যে কীভাবে কেটে যায়, তা তারা বুঝতেই পারে না। এ ছাড়া, কাজের চাপ কিংবা টাকাপয়সার বিষয়ে দুশ্চিন্তার কারণে তাদের যদি প্যানিক অ্যাটাক (উদ্বিগ্নতা), অনিদ্রা, ক্রমাগত মাথা ব্যথা কিংবা শরীরে আলসার হয়—যে-স্বাস্থ্যগত সমস্যাগুলো একজন ব্যক্তির আয়ুকে কমিয়ে দিতে পারে—তা হলে তাদের জীবন সুখের হয় না। আর একজন ব্যক্তি যদি একসময় তার জীবনের অগ্রাধিকারগুলো পরিবর্তন করার জন্য সতর্ক হয়েও ওঠেন, তারপরও হয়তো অনেক দেরি হয়ে যায়। তার বিবাহসাথি হয়তো তাকে আর বিশ্বাস করেন না, তার সন্তানরা হয়তো আবেগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং তার নিজের স্বাস্থ্য হয়তো ভেঙে পড়ে। কিছু কিছু ক্ষতি হয়তো পূরণ করা যেতে পারে কিন্তু এটার জন্য অনেক কাজ করতে হয়। এই ধরনের ব্যক্তিরা সত্যিই “অনেক যাতনারূপ কণ্টকে আপনারা আপনাদিগকে বিদ্ধ করিয়াছে।”—১ তীমথিয় ৬:১০.
সজাগ হোন! ১১/০৮ ৬ অনু. ৪-৬, ইংরেজি
ব্যক্তিগত সাফল্যের ছয়টা চাবিকাঠি
এই ধারাবাহিক প্রবন্ধগুলোর শুরুর প্রবন্ধে আমরা যেমন দেখেছি, যারা ধনসম্পদকে সাফল্য লাভ করার চাবিকাঠি ভেবে প্রাণপণে সেই ধনসম্পদের পিছনে ছোটে, তারা আসলে মরীচিকার পিছনে ছোটে। এর ফলে, তারা হতাশার পাশাপাশি অনেক দুঃখও ডেকে আনে। উদাহরণ স্বরূপ, প্রায়ই লোকেরা তীব্র আকাঙ্ক্ষা সহকারে ধনসম্পদের পিছনে ছুটতে গিয়ে তাদের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করে। অন্যদের রাতের ঘুম উড়ে যায়—হয় কাজের কারণে নতুবা উদ্বিগ্নতা ও দুশ্চিন্তার কারণে। “যে পরিশ্রম করে সে কম খাক বা বেশী খাক তার ঘুম ভাল হয়। কিন্তু ধনী লোকের প্রচুর ধন-সম্পদ তাকে ঘুমাতে দেয় না।”—উপদেশক ৫:১২, বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন।
টাকাপয়সা শুধুমাত্র এক নিষ্ঠুর প্রভু নয়, এটা এক প্রতারকও। যিশু খ্রিস্ট “ধনের মায়া” সম্বন্ধে বলেছিলেন। (মার্ক ৪:১৯) আরেকভাবে বললে, ধনসম্পদ সুখী করার প্রতিজ্ঞা করে ঠিকই, কিন্তু তা সুখ এনে দেয় না। ধনসম্পদ কেবল আরও বেশি পাওয়ার লোভ জাগিয়ে তোলে। “যে ব্যক্তি ধনরাশি ভালবাসে, সে ধনাগমে তৃপ্ত হয় না।”—উপদেশক ৫:১০.
সংক্ষেপে বললে, ধনাসক্তি সর্বনাশ ডেকে আনে এবং পরিশেষে হতাশা, বিরক্তি আর এমনকী অপরাধমূলক কাজকর্মের দিকে পরিচালিত করে। (হিতোপদেশ ২৮:২০) সুখ ও সাফল্যের সঙ্গে যে-বিষয়গুলো আরও বেশি জড়িত, সেগুলো হল, উদারতা, ক্ষমা করার মনোভাব, নৈতিক শুদ্ধতা, প্রেম ও আধ্যাত্মিকতা।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
‘ঈশ্বরের প্রেম’ অধ্যায় ২ অনু. ১৭
কীভাবে আপনি এক উত্তম বিবেক বজায় রাখতে পারেন?
প্রেরিত পিতর লিখেছিলেন: “সৎসংবেদ রক্ষা কর।” (১ পিতর ৩:১৬) যে-বিবেক যিহোবা ঈশ্বরের চোখে শুচি, তা এক চমৎকার আশীর্বাদ। এটা বর্তমানে বিদ্যমান অনেকের বিবেকের মতো নয়। পৌল সেই ব্যক্তিদের সম্বন্ধে বর্ণনা করেছিলেন, “যাহাদের নিজ সংবেদ তপ্ত লৌহের দাগের মত দাগযুক্ত হইয়াছে।” (১ তীমথিয় ৪:২) তপ্ত লৌহ মাংসকে দগ্ধ করে ফেলে এবং সেটাকে বিক্ষত করে দেয় ও অসংবেদনশীল করে তোলে। বস্তুতপক্ষে, অনেকের এমন বিবেক রয়েছে, যেটা মৃত—এতটাই বিক্ষত ও অসংবেদনশীল যে, এটা আর সতর্কবাণী জানায় না, প্রতিবাদ করে না অথবা অন্যায় কাজের জন্য লজ্জা ও অপরাধবোধ করে না। আজকে অনেকে তাদের অপরাধবোধকে খুশিমনে উপেক্ষা করে থাকে।
অন্তর্দৃষ্টি-২ ৭১৪ অনু. ১-২, ইংরেজি
জনসমক্ষে পাঠ করা
খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে। প্রথম শতাব্দীতে, অল্প লোকের কাছেই ব্যক্তিগতভাবে বাইবেলের গোটানো পুস্তকগুলো ছিল আর তাই জনসমক্ষে সেগুলো পাঠ করার প্রয়োজন ছিল। প্রেরিত পৌল আদেশ দিয়েছিলেন যেন তার চিঠিগুলো খ্রিস্টীয় মণ্ডলীতে জনসমক্ষে পাঠ করা হয় এবং অন্য মণ্ডলীগুলোর উদ্দেশে লেখা তার চিঠিগুলোর সঙ্গে এগুলো আদান-প্রদান করা হয়, যাতে সেই চিঠিগুলোও পাঠ করা যেতে পারে। (কল ৪:১৬; ১থিষল ৫:২৭) পৌল যুবকবয়সি খ্রিস্টান অধ্যক্ষ তীমথিয়কে পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন তিনি “পাঠ করিতে [‘বিশ্বাসীদের পবিত্র শাস্ত্র পড়ে শোনানোতে,’ বাংলা কমন ল্যাঙ্গুয়েজ ভারশন] এবং প্রবোধ ও শিক্ষা দিতে” নিবিষ্ট থাকেন।—১তীম ৪:১৩.
জনসমক্ষে পাঠ করার সময় সাবলীলভাবে পাঠ করা উচিত। (হবক্ ২:২) যেহেতু জনসমক্ষে পাঠ করার বিষয়টা অন্যের শিক্ষার জন্য করা হয়, তাই যিনি জনসমক্ষে পাঠ করছেন, তিনি যেন ভালোভাবে জানেন যে, তিনি কী পড়ছেন এবং স্পষ্টভাবে বোঝেন যে, লেখক আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন আর এর পাশাপাশি, তিনি যেন পড়ার সময় সতর্ক থাকেন, যাতে তিনি তার শ্রোতাদের কোনো ভুল ধারণা দিয়ে না ফেলেন। প্রকাশিত বাক্য ১:৩ পদ অনুযায়ী, যারা জোরে জোরে ভাববাণী পাঠ করে ও সেইসঙ্গে যারা সেই কথাগুলো শোনে এবং পালন করে, তারা ধন্য বা সুখী হবে।