-
যিহোবার সাক্ষিরা কি সত্য খ্রিস্টান?চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
৩. যিহোবার সাক্ষিরা কীভাবে যিশুর মতো একে অপরের প্রতি প্রেম দেখায়?
যিশু তাঁর শিষ্যদের এতটাই ভালোবাসতেন যে, তিনি তাদের তাঁর পরিবারের মতো দেখতেন। (পড়ুন, মার্ক ৩:৩৫.) একইভাবে, যিহোবার সাক্ষিরা পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন, তারা একটা পরিবারের মতো এবং তাদের মধ্যে একতা রয়েছে আর তাই তারা একে অন্যকে ভাই-বোন বলে ডাকে। (ফিলীমন ১, ২) এ ছাড়া, তারা এই আজ্ঞার প্রতিও বাধ্যতা দেখায়: “সমগ্র ভ্রাতৃসমাজের প্রতি প্রেম দেখাও।” (১ পিতর ২:১৭) যিহোবার সাক্ষিরা বিভিন্ন উপায়ে একে অপরের প্রতি প্রেম দেখিয়ে থাকে যেমন, পৃথিবীর যেকোনো দেশে ভাই-বোনেরা যখন বিপদে পড়ে, তখন তারা সঙ্গেসঙ্গে তাদের সাহায্য করে।
-
-
বাপ্তিস্ম—এক গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য!চিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
৬. বাপ্তিস্ম নেওয়ার মাধ্যমে আপনি যিহোবার পরিবারের অংশ হয়ে উঠবেন
সারা পৃথিবীর যিহোবার সাক্ষিরা হল একটা পরিবারের মতো। তারা পৃথিবীর যেখানেই থাকুক না কেন এবং যে-পরিবেশেই বড়ো হয়ে উঠুক না কেন, তারা একই শিক্ষাগুলো মেনে চলে আর একই মান অনুযায়ী জীবনযাপন করে। একজন ব্যক্তি যখন বাপ্তিস্ম নেন, তখন তিনি এই পরিবারের অংশ হয়ে ওঠেন। গীতসংহিতা ২৫:১৪ এবং ১ পিতর ২:১৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
একজন ব্যক্তি যখন বাপ্তিস্ম নেন, তখন যিহোবার সঙ্গে এবং তাঁর লোকদের সঙ্গে সেই ব্যক্তির সম্পর্ক কেমন হয়?
-
-
মণ্ডলীতে একতা বজায় রাখুনচিরকাল জীবন উপভোগ করুন!—ঈশ্বরের কাছ থেকে শিখুন
-
-
মণ্ডলীতে খ্রিস্টীয় ভাই-বোনদের সঙ্গে থাকার সময়, আমরা ঠিক সেইরকম অনুভব করি, যেমনটা রাজা দায়ূদ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, “ইহা কেমন উত্তম ও কেমন মনোহর যে, ভ্রাতারা একসঙ্গে ঐক্যে বাস করে!” (গীতসংহিতা ১৩৩:১) আমাদের মধ্যে যে-একতা রয়েছে, সেটা আপনা-আপনি আসেনি। এটা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেকের ভূমিকা রয়েছে।
১. ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে কোন বিষয়টা দেখার মতো?
কল্পনা করুন, আপনি অন্য একটা দেশে গিয়েছেন এবং সেখানে মণ্ডলীর কোনো একটা সভায় যোগ দিয়েছেন। কিন্তু, আপনি তাদের ভাষা জানেন না। এরপরও, আপনার মনে হবে যে, সেই ভাই-বোনদের আপনি বহু বছর ধরে জানেন। কেন আপনার এইরকম মনে হবে? এর কারণ হল, আপনি ঈশ্বরের লোকদের মধ্যে রয়েছেন, যারা হৃদয় থেকে একে অন্যকে ভালোবাসে। এ ছাড়া, সমস্ত মণ্ডলীতে একই প্রকাশনা ব্যবহার করে বাইবেল অধ্যয়ন করা হয়। আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমরা ‘সকলেই সদাপ্রভুর নামে ডাকি ও একযোগে তাঁহার আরাধনা করি।’—সফনিয় ৩:৯.
২. মণ্ডলীতে একতা বজায় রাখার জন্য আমরা প্রত্যেকে কী করতে পারি?
বাইবেল বলে, “তোমরা একে অন্যকে হৃদয় থেকে গভীরভাবে ভালোবেসো।” (১ পিতর ১:২২) কীভাবে আমরা এই পরামর্শ কাজে লাগাতে পারি? আমরা ভাই-বোনদের খারাপ বিষয়গুলোর প্রতি মনোযোগ না দিয়ে, ভালো বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিতে পারি। সাধারণত আমরা এমন লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করতে চাই, যাদের পছন্দ-অপছন্দ আমাদের মতো। কিন্তু, আমরা সেই ব্যক্তিদেরও জানার চেষ্টা করতে পারি, যারা আমাদের চেয়ে একদম আলাদা। শুধু তা-ই নয়, আমাদের মনে যদি কোনো জাতি, ভাষা, অথবা সংস্কৃতির লোকদের প্রতি ভেদাভেদের মনোভাব থাকে, তা হলে আমরা তা মন থেকে মুছে ফেলার জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করতে পারি।—পড়ুন, ১ পিতর ২:১৭.a
৩. কোনো ভাই কিংবা বোনের সঙ্গে আমাদের যদি মনোমালিন্য হয়, তা হলে আমাদের কী করা উচিত?
আমাদের ভাই-বোনদের মধ্যে একতা রয়েছে, তবে আমরা কেউই নিখুঁত নই। কখনো কখনো আমরা এমন কিছু বলে ফেলি অথবা এমন কিছু করে ফেলি, যা ভাই-বোনদের খারাপ লাগে এবং তাদের অনেক দুঃখ দেয়। সেইজন্য ঈশ্বরের বাক্য আমাদের বলে, “পরস্পরকে পুরোপুরিভাবে ক্ষমা করো।“ এটি আমাদের এও বলে, “যিহোবা যেমন তোমাদের পুরোপুরিভাবে ক্ষমা করেছেন, তেমনই তোমরাও ক্ষমা করো।” (পড়ুন, কলসীয় ৩:১৩.) আমরা বার বার যিহোবাকে দুঃখ দিই, কিন্তু তারপরও তিনি আমাদের ক্ষমা করেন। সেইজন্য তিনি আশা করেন যে, আমরাও যেন আমাদের ভাই-বোনদের ক্ষমা করি। আপনার যদি মনে হয় আপনি কাউকে দুঃখ দিয়েছেন, তা হলে নিজে থেকে এগিয়ে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন এবং শান্তি স্থাপন করুন।—পড়ুন, মথি ৫:২৩, ২৪.b
গভীরভাবে গবেষণা করুন
মণ্ডলীতে শান্তি ও একতা বজায় রাখার জন্য আপনি কী করতে পারেন? আসুন তা জানি।
৪. ভেদাভেদের মনোভাব রাখবেন না, সবাইকে সমান চোখে দেখুন
আমরা প্রত্যেক ভাই-বোনকে ভালোবাসতে চাই, কিন্তু কিছু ভাই-বোন আমাদের চেয়ে এতটাই আলাদা হয় যে, তাদের নিজের মনে করা কঠিন হতে পারে। এইরকম পরিস্থিতিতে কোন বিষয়টা আমাদের সাহায্য করতে পারে? প্রেরিত ১০:৩৪, ৩৫ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
যিহোবা সমস্ত ধরনের ব্যক্তিকে গ্রহণ করেন এবং তাঁর সাক্ষি হওয়ার সুযোগ দেন। তা হলে, সেই ব্যক্তিদের প্রতি আপনার কেমন দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত, যারা আপনার চেয়ে একদম আলাদা?
আপনি যেখানে থাকেন, সেখানে কোন কোন জাতি, ভাষা, অথবা সংস্কৃতির লোকদের পছন্দ করা হয় না? কেন আপনার এই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি রাখা উচিত নয়?
২ করিন্থীয় ৬:১১-১৩ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কীভাবে আপনি সেই ভাই-বোনদের আরও বেশি করে ভালোবাসতে পারেন, যারা আপনার চেয়ে একদম আলাদা?
৫. হৃদয় থেকে ক্ষমা করুন এবং শান্তি স্থাপন করুন
যিহোবা কখনো কোনো ভুল করেন না, তাই তাঁর কখনো আমাদের কাছ থেকে ক্ষমা লাভ করারও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু, আমরা যখন ভুল করি, তখন তিনি হৃদয় থেকে আমাদের ক্ষমা করেন। যিশাইয় ৫৫:৭ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নগুলো নিয়ে আলোচনা করুন:
এই শাস্ত্রপদ অনুযায়ী, যিহোবা কীভাবে ক্ষমা করেন?
যিহোবা আপনাকে ক্ষমা করেন বলে কেন আপনি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ?
অন্যদের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখা কখন কঠিন হতে পারে?
আমরা যিহোবার মতো হতে চাই এবং ভাই-বোনদের সঙ্গে একতাবদ্ধভাবে থাকতে চাই। এটা করার জন্য আমাদের কী করতে হবে? হিতোপদেশ ১৯:১১ পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
কেউ যখন আমাদের বিরক্ত করে অথবা আঘাত দেয়, তখন আমরা কী করতে পারি?
কখনো কখনো আমরা অন্যদের আঘাত দিয়ে থাকি, তখন আমাদের কী করা উচিত? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
এই বোন শান্তি স্থাপন করার জন্য কী করেছিলেন?
৬. ভাই-বোনদের মধ্যে ভালো বিষয়গুলো খোঁজার চেষ্টা করুন
ভাই-বোনদের আমরা যখন ভালোভাবে জানার চেষ্টা করি, তখন আমরা তাদের মধ্যে ভালো বিষয়গুলো দেখার সঙ্গে সঙ্গে কিছু খারাপ বিষয়ও দেখতে পাই। কিন্তু, কীভাবে আমরা তাদের ভালো বিষয়গুলোর উপর মনোযোগ দিতে পারি? ভিডিওটা দেখুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
ভাই-বোনদের মধ্যে ভালো বিষয়গুলো দেখার জন্য কোন বিষয়টা আমাদের সাহায্য করতে পারে?
যিহোবা আমাদের মধ্যে ভালো বিষয়গুলো দেখেন। ২ বংশাবলি ১৬:৯ক পদ পড়ুন এবং এরপর এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা করুন:
যিহোবা আপনার মধ্যে ভালো বিষয়গুলো দেখেন, এটা জেনে আপনার কেমন লাগে?
কেউ কেউ বলে থাকে: “আমি যদি তাকে সঙ্গেসঙ্গে ক্ষমা করে দিই, তা হলে কীভাবে সে তার ভুলটা বুঝতে পারবে?”
অন্যদের ক্ষমা করার জন্য কেন আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকা উচিত?
সারাংশ
আমাদের প্রত্যেক ভাই-বোনকে ভালোবাসা উচিত এবং তাদের ক্ষমা করা উচিত। এটা করার মাধ্যমে আমরা মণ্ডলীতে একতা বজায় রাখতে পারব।
পুনরালোচনা
ভেদাভেদের মনোভাব না রাখার এবং সবাইকে সমান চোখে দেখার জন্য আপনি কী করতে পারেন?
কোনো ভাই কিংবা বোনের সঙ্গে আপনার যদি মনোমালিন্য হয়, তা হলে আপনি কী করতে পারেন?
কেন আপনি যিহোবার মতো অন্যদের ক্ষমা করতে চাইবেন?
আরও জানুন
যিশুর একটা দৃষ্টান্ত থেকে কীভাবে আমরা শিখতে পারি যে, আমরা যেন অন্যদের বিচার না করি? আসুন তা দেখি।
আমাদের যদি মনে হয়, আমরা কোনো ভুল করিনি, তারপরও কি আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত?
“অপরাধ স্বীকার শান্তি স্থাপনের এক চাবিকাঠি” (প্রহরীদুর্গ, নভেম্বর ১, ২০০২)
কীভাবে কিছু ব্যক্তি অন্যদের সঙ্গে পক্ষপাতহীনভাবে আচরণ করতে শিখেছে, আসুন তা দেখি।
আমরা যদি নিজেদের সমস্যাগুলো মিটমাট না করি, তা হলে মণ্ডলীর শান্তি নষ্ট হতে পারে। আমরা কী করতে পারি, যাতে এইরকম পরিস্থিতি না আসে? আসুন তা জানি।
“প্রেমপূর্ণ মনোভাব নিয়ে মতভেদ মীমাংসা করুন” (প্রহরীদুর্গ, মে, ২০১৬)
-