জীবন ও পরিচর্যা সভার জন্য অধ্যয়ন পুস্তিকা-র রেফারেন্স
জুলাই ৩-৯
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিহিষ্কেল ১১-১৪
“আপনার কি এক মাংসময় হৃদয় রয়েছে?”
(যিহিষ্কেল ১১:১৭, ১৮) অতএব তুমি বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমি জাতিগণের মধ্য হইতে তোমাদিগকে সংগ্রহ করিব, ও তোমরা যে সকল দেশে ছিন্নভিন্ন হইয়াছ, সেই সকল দেশ হইতে একত্র করিব, এবং ইস্রায়েল-দেশ তোমাদিগকে দিব। তাহারা সে দেশে যাইবে, তথাকার সমস্ত জঘন্য পদার্থ ও তথাকার সমস্ত ঘৃণার্হ বস্তু তথা হইতে দূর করিবে।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
সাধারণ কাল পূর্ব ৬১২ সালে একটা দর্শন যিহিষ্কেলকে যিরূশালেমে নিয়ে যায়। ঈশ্বরের মন্দিরে তিনি কত ঘৃণ্য বিষয়গুলোই না ঘটতে দেখেন! ধর্মভ্রষ্টদের প্রতি তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করতে যিহোবা যখন (“ছয় জন পুরুষ” দ্বারা চিত্রিত) তাঁর দণ্ড প্রদানকারী বাহিনীকে পাঠান, তখন যারা “কপালে চিহ্ন” পেয়েছে, কেবলমাত্র তারাই রক্ষা পাবে। (যিহিষ্কেল ৯:২-৬) কিন্তু, প্রথমে “প্রজ্বলিত অঙ্গার”—ধ্বংস সম্বন্ধে ঈশ্বরের জ্বলন্ত বার্তা—নগরের ওপর নিক্ষেপ করতে হবে। (যিহিষ্কেল ১০:২) যদিও ‘সদাপ্রভু দুষ্টদের কার্য্যের ফল তাহাদেরই মস্তকে বর্ত্তাইবেন,’ কিন্তু তিনি ইস্রায়েলের ছিন্নভিন্ন লোকেদের পুনরায় সংগ্রহ করার প্রতিজ্ঞা করেন।—যিহিষ্কেল ১১:১৭-২১.
(যিহিষ্কেল ১১:১৯) আমি তাহাদিগকে একই হৃদয় দান করিব, ও তোমাদের অন্তরে এক নূতন আত্মা স্থাপন করিব; আর তাহাদের মাংস হইতে প্রস্তরময় হৃদয় দূর করিব, তাহাদিগকে মাংসময় হৃদয় দিব,
আপনি কীভাবে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন?
৯ আমরাও যিশুর মতো উত্তম সিদ্ধান্ত নিতে পারব, যদি আমরা নির্দেশনার জন্য যিহোবার উপর নির্ভর করি। বাইবেল বলে: “তুমি সমস্ত চিত্তে সদাপ্রভুতে বিশ্বাস কর; তোমার নিজ বিবেচনায় নির্ভর করিও না; তোমার সমস্ত পথে তাঁহাকে স্বীকার কর; তাহাতে তিনি তোমার পথ সকল সরল করিবেন। আপনার দৃষ্টিতে জ্ঞানবান হইও না; সদাপ্রভুকে ভয় কর, মন্দ হইতে দূরে যাও।” (হিতো. ৩:৫-৭) আমরা যখন বাইবেল অধ্যয়ন করি এবং যিহোবার চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে জানতে পারি, তখন নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে আমরা কী করব বলে তিনি চান, সেটা আমরা বুঝতে পারব। আর যিহোবার চিন্তাভাবনা সম্বন্ধে আমরা যত বেশি জানব, যিহোবাকে খুশি করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া আমাদের জন্য ততই সহজ হবে। এভাবে আমরা যিহোবার নির্দেশনার প্রতি আরও বেশি সাড়া দিতে পারব।—গীত. ১১৯:১১, ১২.
(যিহিষ্কেল ১১:২০) যেন তাহারা আমার বিধিপথে চলে, এবং আমার শাসন সকল মান্য করে, ও পালন করে; আর তাহারা আমার প্রজা হইবে, এবং আমি তাহাদের ঈশ্বর হইব।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিহিষ্কেল ১২:২৬-২৮) আবার সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ২৭ হে মনুষ্য-সন্তান, দেখ, ইস্রায়েল-কুল বলে, ঐ ব্যক্তি যে দর্শন পায়, সে অনেক বিলম্বের কথা; সে দূরবর্ত্তী কালের বিষয়ে ভাববাণী বলিতেছে। ২৮ এই জন্য তুমি তাহাদিগকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমার সমস্ত বাক্য সফল হইতে আর বিলম্ব হইবে না; আমি যে বাক্য বলিব, তাহা সফল হইবে; ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
১২:২৬-২৮. এমনকী যারা তার বার্তাকে উপহাস করেছিল, তাদের কাছেও যিহিষ্কেলকে বলতে হয়েছিল: “[সদাপ্রভুর] সমস্ত বাক্য সফল হইতে আর বিলম্ব হইবে না।” যিহোবা এই বিধিব্যবস্থার উপর ধ্বংস নিয়ে আসার আগে তাঁর প্রতি অন্যদের আস্থা রাখতে সাহায্য করার জন্য আমাদের অবশ্যই যথাসাধ্য করতে হবে।
(যিহিষ্কেল ১৪:১৩, ১৪) হে মনুষ্য-সন্তান, কোন দেশ সত্যলঙ্ঘন দ্বারা আমার বিরুদ্ধে পাপ করিলে যখন আমি তাহার বিরুদ্ধে আপন হস্ত বিস্তার করি, তাহার অন্নরূপ যষ্টি ভাঙ্গিয়া ফেলি, ও তাহার মধ্যে দুর্ভিক্ষ প্রেরণ করিয়া তথাকার মনুষ্য ও পশু উচ্ছিন্ন করি; ১৪ তখন তাহার মধ্যে যদি নোহ, দানিয়েল ও ইয়োব, এই তিন ব্যক্তি থাকে, তবে তাহারা আপন আপন ধার্ম্মিকতায় আপন আপন প্রাণমাত্র রক্ষা করিবে, ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন।
যিহোবার ব্যবস্থা থেকে পূর্ণরূপে উপকার লাভ করুন
১৩ উদাহরণ স্বরূপ, যিহিষ্কেল ১৪:১৩, ১৪ পদ বলে: “কোন দেশ সত্যলঙ্ঘন দ্বারা আমার বিরুদ্ধে পাপ করিলে যখন আমি তাহার বিরুদ্ধে আপন হস্ত বিস্তার করি, তাহার অন্নরূপ যষ্টি ভাঙ্গিয়া ফেলি, ও তাহার মধ্যে দুর্ভিক্ষ প্রেরণ করিয়া তথাকার মনুষ্য ও পশু উচ্ছিন্ন করি; তখন তাহার মধ্যে যদি নোহ, দানিয়েল ও ইয়োব, এই তিন ব্যক্তি থাকে, তবে তাহারা আপন আপন ধার্ম্মিকতায় আপন আপন প্রাণমাত্র রক্ষা করিবে, ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন।” আমরা যদি একটু গবেষণা করি, তা হলে আমরা জানতে পারি, যিহিষ্কেল খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ৬১২ বছর আগে এই কথাগুলো লিখেছিলেন। নোহ ও ইয়োব যদিও এই বিবরণ লেখার শত শত বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছিলেন, কিন্তু যিহোবা তখনও তাদের বিশ্বস্ততা মনে রেখেছেন। তবে দানিয়েল এই বিবরণ লেখার সময় বেঁচে ছিলেন। যিহোবা যখন দানিয়েলকে নোহ ও ইয়োবের মতো ধার্মিক ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন, তখন খুব সম্ভবত দানিয়েলের বয়স ২০ বছর। এখান থেকে আমরা কী শিখতে পারি? যিহোবা তাঁর সমস্ত বিশ্বস্ত দাসের কাজ লক্ষ করেন ও তাদের মূল্যবান বলে মনে করেন আর তাদের মধ্যে অল্পবয়সিরাও রয়েছে।—গীত. ১৪৮:১২-১৪.
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
১৪:১২-২৩. পরিত্রাণ লাভ করা আমাদের নিজেদের ব্যক্তিগত দায়িত্ব। আমাদের পক্ষে কেউই তা করতে পারে না।—রোমীয় ১৪:১২.
বাইবেল পাঠ
(যিহিষ্কেল ১২:১-১০) পরে সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ২ হে মনুষ্য-সন্তান তুমি বিদ্রোহী-কুলের মধ্যে বাস করিতেছ; দেখিবার চক্ষু থাকিলেও তাহারা দেখে না, শুনিবার কর্ণ থাকিলেও শুনে না, কেননা তাহারা বিদ্রোহী-কুল। ৩ অতএব, হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি আপনার জন্য নির্ব্বাসার্থক জিনিষপত্র প্রস্তুত কর, দিনের বেলা তাহাদের সাক্ষাতে নির্ব্বাসার্থে প্রস্থান কর, ও নির্ব্বাসার্থে তাহাদের সাক্ষাতে স্বস্থান হইতে অন্য স্থানে যাও; হয় ত তাহারা বুঝিতে পারিবে যে, তাহারা বিদ্রোহী-কুল। ৪ তুমি দিনের বেলা তাহাদের সাক্ষাতে নির্ব্বাসার্থক জিনিষপত্রের ন্যায় তোমার জিনিষপত্র বাহির করিবে; লোকে যেমন নির্ব্বাসার্থে প্রস্থান করে, তেমনি সন্ধ্যাকালে তাহাদের সাক্ষাতে প্রস্থান করিবে। ৫ তুমি তাহাদের সাক্ষাতে ভিত্তিতে গর্ত্ত করিয়া তাহা দিয়া সেই জিনিষপত্র বাহির করিও। ৬ তাহাদের সাক্ষাতে তাহা স্কন্ধে তুলিয়া অন্ধকার সময়ে লইয়া যাইবে; তোমার মুখ আচ্ছাদন করিবে, যেন ভূমি দেখিতে না পাও; কেননা আমি তোমাকে ইস্রায়েল-কুলের জন্য চিহ্নস্বরূপ করিয়া রাখিয়াছি। ৭ তখন আমি সেই আজ্ঞানুসারে কার্য্য করিলাম; নির্ব্বাসার্থক জিনিষপত্রের ন্যায় আমার জিনিষপত্র দিনের বেলা বাহির করিলাম, পরে সন্ধ্যাকালে স্বহস্তে ভিত্তিতে গর্ত্ত করিলাম, অন্ধকার সময়ে তাহা আপন স্কন্ধে তুলিয়া তাহাদের সাক্ষাতে সকলই লইয়া গেলাম। ৮ পরে প্রাতঃকালে সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ৯ হে মনুষ্য-সন্তান, ইস্রায়েল-কুল—সেই বিদ্রোহী-কুল—কি তোমাকে বলে নাই, ‘তুমি কি করিতেছ?’ ১০ তাহাদিগকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, এই ভারবাণী দ্বারা যিরূশালেমস্থ নরপতিকে ও উহারা যাহার মধ্যবর্ত্তী, সেই সমস্ত ইস্রায়েল-কুলকে বুঝায়।
জুলাই ১০-১৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিহিষ্কেল ১৫-১৭
“আপনি কি আপনার প্রতিজ্ঞাগুলো রাখেন?”
(যিহিষ্কেল ১৭:১-৪) পরে সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল; ২ হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি ইস্রায়েল-কুলের কাছে নিগূঢ় বাক্য ও উপমা উত্থাপন কর। ৩ তুমি বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, এক প্রকাণ্ড ঈগল পক্ষী ছিল; তাহার পক্ষ বৃহৎ ও পালখ সকল দীর্ঘ ও চিত্রবিচিত্র লোমে পরিপূর্ণ; ঐ পক্ষী লিবানোনে আসিয়া এরস বৃক্ষের উচ্চতম শাখা লইয়া গেল; ৪ সে তাহার পল্লবের অগ্রভাগ কাটিয়া বাণিজ্যের দেশে লইয়া গিয়া বণিকদের এক নগরে রাখিল।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
১৭:১-২৪—দুটো প্রকাণ্ড ঈগল কারা, কীভাবে এরস বৃক্ষের পল্লবের অগ্রভাগ কাটা হয় এবং যিহোবার দ্বারা রোপিত “অতি কোমল একটী ডাল” কে? দুটো ঈগল, বাবিল ও মিশরের শাসকদের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রথম ঈগল এরস বৃক্ষের উচ্চতম শাখায় অর্থাৎ দায়ূদের রাজবংশীয় সরকারের শাসকের কাছে আসে। এই ঈগলটি যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের জায়গায় সিদিকিয়কে স্থলাভিষিক্ত করার মাধ্যমে পল্লবের অগ্রভাগ কেটে নেয়। আনুগত্যপূর্ণ এক শপথ নেওয়া সত্ত্বেও, সিদিকিয় অন্য ঈগল মিশরের শাসকের কাছে সাহায্য খোঁজেন কিন্তু কোনো লাভ হয় না। তাকে বন্দি করা হবে এবং বাবিলে মৃত্যুবরণ করতে হবে। এ ছাড়া, যিহোবা “অতি কোমল একটী ডাল” ভেঙে নেন, যেটা হল মশীহ রাজা। এটাকে “উচ্চ ও উন্নত পর্ব্বতে” অর্থাৎ স্বর্গীয় সিয়োন পর্বতের ওপরে রোপণ করা হয়, যেখানে তিনি “বিশাল এরস বৃক্ষ,” পৃথিবীর জন্য এক প্রকৃত আশীর্বাদ হয়ে উঠবেন।—প্রকাশিত বাক্য ১৪:১.
(যিহিষ্কেল ১৭:৭) কিন্তু বৃহৎ পক্ষ ও অনেক লোমবিশিষ্ট আর এক প্রকাণ্ড ঈগল ছিল, আর দেখ, ঐ দ্রাক্ষালতা জলে সেচিত হইবার জন্য আপনার রোপণস্থান কেয়ারী হইতে তাহার দিকে মূল বক্র করিয়া আপন শাখা বিস্তার করিল।
(যিহিষ্কেল ১৭:১৫) কিন্তু সে তাহার বিদ্রোহী হইয়া অশ্ব ও অনেক সৈন্য পাইবার জন্য মিসরে দূত পাঠাইয়া দিল। সে কি কৃতকার্য্য হইবে? এমন কার্য্য যে করে, সে কি রক্ষা পাইবে? সে ত নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে, তবু কি নিস্তার পাইবে?
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
১৭:১-২৪—দুটো প্রকাণ্ড ঈগল কারা, কীভাবে এরস বৃক্ষের পল্লবের অগ্রভাগ কাটা হয় এবং যিহোবার দ্বারা রোপিত “অতি কোমল একটী ডাল” কে? দুটো ঈগল, বাবিল ও মিশরের শাসকদের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রথম ঈগল এরস বৃক্ষের উচ্চতম শাখায় অর্থাৎ দায়ূদের রাজবংশীয় সরকারের শাসকের কাছে আসে। এই ঈগলটি যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের জায়গায় সিদিকিয়কে স্থলাভিষিক্ত করার মাধ্যমে পল্লবের অগ্রভাগ কেটে নেয়। আনুগত্যপূর্ণ এক শপথ নেওয়া সত্ত্বেও, সিদিকিয় অন্য ঈগল মিশরের শাসকের কাছে সাহায্য খোঁজেন কিন্তু কোনো লাভ হয় না। তাকে বন্দি করা হবে এবং বাবিলে মৃত্যুবরণ করতে হবে। এ ছাড়া, যিহোবা “অতি কোমল একটী ডাল” ভেঙে নেন, যেটা হল মশীহ রাজা। এটাকে “উচ্চ ও উন্নত পর্ব্বতে” অর্থাৎ স্বর্গীয় সিয়োন পর্বতের ওপরে রোপণ করা হয়, যেখানে তিনি “বিশাল এরস বৃক্ষ,” পৃথিবীর জন্য এক প্রকৃত আশীর্বাদ হয়ে উঠবেন।—প্রকাশিত বাক্য ১৪:১.
(যিহিষ্কেল ১৭:১৮, ১৯) সে ত শপথ অবজ্ঞা করিয়া নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে; হাঁ, দেখ, হাত যোড় করিবার পরেও সে এই সকল কার্য্য করিয়াছে, সে রক্ষা পাইবে না। ১৯ অতএব প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমার জীবনের দিব্য, সে আমার শপথ অবজ্ঞা করিয়াছে, আমার নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে, অতএব আমি ইহার ফল তাহার মস্তকে বর্ত্তাইব।
প্রহরীদুর্গ ১২ ১০/১৫ ৩০ অনু. ১১
আপনাদের হ্যাঁ, হ্যাঁ হোক
১১ কেন যিহোবা উপরের উদাহরণগুলো আমাদের জন্য তাঁর বাক্যে লিপিবদ্ধ করেছেন? আর আমাদের হ্যাঁ, হ্যাঁ হওয়ার বিষয়টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ? বাইবেল স্পষ্টভাবে আমাদেরকে সাবধান করে, যে-ব্যক্তি “নিয়ম-ভঙ্গকারী,” তিনি সেই ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত, যারা “মৃত্যুর যোগ্য।” (রোমীয় ১:৩১, ৩২) মিশরের ফরৌণ, যিহূদার রাজা সিদিকিয় এবং অননিয় ও সাফীরা বাইবেলে উল্লেখিত সেই ব্যক্তিদের মন্দ উদাহরণের অন্তর্ভুক্ত, যাদের হ্যাঁ, হ্যাঁ হয়নি। তাদের সকলেরই মন্দ পরিণতি হয়েছিল এবং তারা আমাদের জন্য এক সাবধানবাণীমূলক উদাহরণ।—যাত্রা. ৯:২৭, ২৮, ৩৪, ৩৫; যিহি. ১৭:১৩-১৫, ১৯, ২০; প্রেরিত ৫:১-১০.
প্রহরীদুর্গ ৮৮ ৯/১৫ ১৭ অনু. ৮, ইংরেজি
যিহোবা কোষ থেকে তাঁর খড়্গ বের করেন!
৮ এরপর, বাবিল ও মিশরের শাসকদের প্রকাণ্ড ঈগলের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল। প্রথম ঈগল রাজা যিহোয়াখীনকে সরিয়ে তার জায়গায় সিদিকিয়কে স্থলাভিষিক্ত করার মাধ্যমে এরস বৃক্ষের উচ্চতম শাখা কেটে ফেলেছিল। যদিও সিদিকিয় নবূখদ্নিৎসরের প্রতি আনুগত্যের শপথ নিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সেটা ভেঙে ফেলেছিলেন, মিশর অর্থাৎ আরেকটা প্রকাণ্ড ঈগলের কাছে সামরিক সাহায্য চেয়েছিলেন। সিদিকিয় যদি শপথ করার সময় যিহোবার নাম ব্যবহার করে থাকেন, তা হলে সেই শপথ ভেঙে ফেলা যিহোবার উপর দুর্নাম নিয়ে এসেছিল। ঈশ্বরের দুর্নাম নিয়ে আসার এই ঘটনা যেন আমাদের কথা না রাখার প্রবণতা থেকে দূরে রাখে। সত্যিই, যিহোবার সাক্ষি হিসেবে ঐশিক নাম বহন করার বিশেষ সুযোগ আমাদের রয়েছে!—যিহিষ্কেল ১৭:১-২১.
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিহিষ্কেল ১৬:৬০) তথাপি তোমার যৌবনকালে তোমার সহিত আমার যে নিয়ম ছিল, তাহা আমি স্মরণ করিব, এবং তোমার পক্ষে চিরস্থায়ী এক নিয়ম স্থির করিব।
প্রহরীদুর্গ ৮৮ ৯/১৫ ১৭ অনু. ৭, ইংরেজি
যিহোবা কোষ থেকে তাঁর খড়্গ বের করেন!
৭ অবিশ্বস্ত অধিবাসীদের কারণে যিহূদাকে এক বুনো লতার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল, যা কোনো উত্তম ফল দেয় না আর তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলার যোগ্য। (যিহিষ্কেল ১৫:১-৮) এ ছাড়া, তাকে পিতৃহীন সন্তান বা অনাথ শিশুর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছিল, যাকে ঈশ্বর মিশরের হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন ও যৌবনকাল পর্যন্ত যত্ন করে লালন করেছিলেন। যিহোবা তাঁকে স্ত্রী হিসেবে তাঁর কাছে রেখেছিলেন কিন্তু সে মিথ্যা দেবতাদের কাছে ফিরে গিয়েছিল আর আধ্যাত্মিক ব্যভিচারের কারণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যারা বিশ্বস্ত ছিল, তাদের সঙ্গে ঈশ্বর ‘এক চীরস্থায়ী চুক্তি করেছিলেন’—আত্মিক ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে নতুন চুক্তি।—যিহিষ্কেল ১৬:১-৬৩; যিরমিয় ৩১:৩১-৩৪; গালাতীয় ৬:১৬.
(যিহিষ্কেল ১৭:২২, ২৩) প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমিই এরস বৃক্ষের উচ্চতম শাখার একটী কলম লইয়া রোপণ করিব, তাহার ডাল সকলের অগ্র হইতে অতি কোমল একটী ডাল ভাঙ্গিয়া লইয়া উচ্চ ও উন্নত পর্ব্বতে রোপণ করিব; ২৩ ইস্রায়েলের উচ্চতার পর্ব্বতে তাহা রোপণ করিব; তাহাতে তাহা বহুশাখাযুক্ত ও ফলবান হইয়া বিশাল এরস বৃক্ষ হইয়া উঠিবে; তাহার তলে সর্ব্বজাতীয় সকল পক্ষী বাসা করিবে, তাহার শাখার ছায়াতেই বাসা করিবে।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
১৭:১-২৪—দুটো প্রকাণ্ড ঈগল কারা, কীভাবে এরস বৃক্ষের পল্লবের অগ্রভাগ কাটা হয় এবং যিহোবার দ্বারা রোপিত “অতি কোমল একটী ডাল” কে? দুটো ঈগল, বাবিল ও মিশরের শাসকদের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রথম ঈগল এরস বৃক্ষের উচ্চতম শাখায় অর্থাৎ দায়ূদের রাজবংশীয় সরকারের শাসকের কাছে আসে।এই ঈগলটি যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের জায়গায় সিদিকিয়কে স্থলাভিষিক্ত করার মাধ্যমে পল্লবের অগ্রভাগ কেটে নেয়। আনুগত্যপূর্ণ এক শপথ নেওয়া সত্ত্বেও, সিদিকিয় অন্য ঈগল মিশরের শাসকের কাছে সাহায্য খোঁজেন কিন্তু কোনো লাভ হয় না। তাকে বন্দি করা হবে এবং বাবিলে মৃত্যুবরণ করতে হবে। এ ছাড়া, যিহোবা “অতি কোমল একটী ডাল” ভেঙে নেন, যেটা হল মশীহ রাজা। এটাকে “উচ্চ ও উন্নত পর্ব্বতে” অর্থাৎ স্বর্গীয় সিয়োন পর্বতের ওপরে রোপণ করা হয়, যেখানে তিনি “বিশাল এরস বৃক্ষ,” পৃথিবীর জন্য এক প্রকৃত আশীর্বাদ হয়ে উঠবেন।—প্রকাশিত বাক্য ১৪:১.
বাইবেল পাঠ
(যিহিষ্কেল ১৬:২৮-৪২) আরও তুমি তৃপ্ত না হওয়াতে অশূরীয়দের সহিত বেশ্যাক্রিয়া করিয়াছ; কিন্তু তাহাদের সহিত ব্যভিচার করিলেও তৃপ্ত হও নাই। ২৯ আর তুমি বাণিজ্যের দেশ কল্দিয়া পর্য্যন্ত আপন ব্যভিচার বৃদ্ধি করিয়াছ, কিন্তু ইহাতেও তৃপ্ত হইলে না। ৩০ প্রভু সদাপ্রভু কহেন, তোমার হৃদয় কেমন দুর্ব্বল! তুমি ত এই সমস্ত করিয়াছ, ইহা উদ্ধত বেশ্যার কার্য্য; ৩১ তুমি প্রত্যেক পথের মস্তকে তোমার টিকরস্থান নির্ম্মাণ করিয়াছ, প্রত্যেক চকে তোমার টিকরস্থান প্রস্তুত করিয়াছ; ইহাতে তুমি বেশ্যাবৎ হও নাই; তুমি ত পণ অবজ্ঞা করিয়াছ। ৩২ ব্যভিচারিণী স্ত্রী! তুমি আপন স্বামীর পরিবর্ত্তে জারগণকে গ্রহণ করিয়া থাক। ৩৩ লোকে বেশ্যামাত্রকেই মুদ্রা দেয়, কিন্তু তুমি আপনার প্রেমিকমাত্রকেই উপহার দিয়াছ, এবং তোমার বেশ্যাবৃত্তিক্রমে তাহারা যেন সর্ব্বদিক্ হইতে তোমার কাছে আইসে, এই জন্য তাহাদিগকে উৎকোচ দিয়াছ। ৩৪ ইহাতে অন্যান্য স্ত্রী হইতে তোমার বেশ্যাবৃত্তি বিপরীত; বস্তুতঃ লোকেরা ব্যভিচারার্থে তোমার পশ্চাদগামী হয় না, আর তুমি কিছু পণ না লইয়া পণ দিয়া থাক, ইহাতেই তোমার কাণ্ড বিপরীত। ৩৫ অতএব, হে বেশ্যা, সদাপ্রভুর বাক্য শুন; ৩৬ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমার তাম্র ঢালিয়া দেওয়া হইয়াছে, এবং তোমার প্রেমিকগণের সহিত তোমার ব্যভিচার হেতু তোমার উলঙ্গতা অনাবৃত হইয়াছে, সে জন্য, এবং তোমার সমস্ত ঘৃণার্হ পুত্তলির জন্য, আর তুমি তাহাদিগকে যে রক্ত দিয়াছ, তোমার সন্তানগণের সেই রক্তের জন্য, ৩৭ দেখ, আমি তোমার সেই সমস্ত প্রেমিককে একত্র করিব, যাহাদের সঙ্গে তুমি রমণ করিয়াছ, এবং যাহাদিগকে তুমি প্রেম করিয়াছ, ও যাহাদিগকে দ্বেষ করিয়াছ; তোমার বিরুদ্ধে চারিদিক্ হইতে তাহাদিগকে একত্র করিব, পরে তাহাদের সম্মুখে তোমার উলঙ্গতা অনাবৃত করিব, তাহাতে তাহারা তোমার সমস্ত উলঙ্গতা দেখিবে। ৩৮ আর সতীধর্ম্মভ্রষ্টা ও রক্তপাতকারিণী স্ত্রীলোকদিগের বিচারের ন্যায় আমি তোমার বিচার করিব, এবং ক্রোধের ও অন্তর্জ্বালার রক্ত তোমার উপরে উপস্থিত করিব। ৩৯ আর আমি তাহাদের হস্তে তোমাকে সমর্পণ করিব, তাহাতে তাহারা তোমার উচ্চস্থান ভাঙ্গিয়া ফেলিবে, তোমার উচ্চস্থান সকল উৎপাটন করিবে, তোমাকে বিবস্ত্রা করিবে, এবং তোমার চারু আভরণ সকল হরণ করিবে; তাহারা তোমাকে বিবস্ত্রা ও উলঙ্গিনী করিয়া রাখিবে। ৪০ আর তাহারা তোমার বিরুদ্ধে সমাজ আনিবে, প্রস্তরাঘাতে তোমাকে বধ করিবে, ও আপন আপন খড়্গ দ্বারা বিদ্ধ করিবে; ৪১ এবং তোমার গৃহ সকল আগুনে পোড়াইয়া দিবে, ও অনেক স্ত্রীলোকের সাক্ষাতে তোমাকে বিচারসিদ্ধ দণ্ড দিবে; এইরূপে আমি তোমার ব্যভিচার ক্রিয়া ক্ষান্ত করাইব, তুমি আর পণ দিবে না। ৪২ আমি তোমার প্রতি আপন ক্রোধ চরিতার্থ করিয়া শান্ত হইব, তাহাতে তোমার উপর হইতে আমার অন্তর্জ্বালা যাইবে, আমি ক্ষান্ত হইব, আর অসন্তুষ্ট হইব না।
জুলাই ১৭-২৩
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিহিষ্কেল ১৮-২০
“যিহোবা যখন ক্ষমা করেন, তখন তিনি কি তা ভুলে যান?”
(যিহিষ্কেল ১৮:১৯, ২০) কিন্তু তোমরা বলিতেছ, ‘সেই পুত্ত্র কেন পিতার অপরাধ বহন করে না?’ সেই পুত্ত্র ত ন্যায় ও ধর্ম্মাচরণ করিয়াছে, এবং আমার বিধি সকল রক্ষা করিয়াছে, সে সকল পালন করিয়াছে; সে অবশ্য বাঁচিবে। ২০ যে প্রাণী পাপ করে, সেই মরিবে; পিতার অপরাধ পুত্ত্র বহন করিবে না, ও পুত্রের অপরাধ পিতা বহন করিবে না; ধার্ম্মিকের ধার্ম্মিকতা তাহার উপরে বর্ত্তিবে, ও দুষ্টের দুষ্টতা তাহার উপরে বর্ত্তিবে।
প্রহরীদুর্গ ১২ ৭/১ ১৮ অনু. ২, ইংরেজি
ঈশ্বর যখন ক্ষমা করেন, তখন তিনি কি তা ভুলে যান?
যিহোবা ভাববাদী যিহিষ্কেলকে মুখপাত্র হিসেবে ব্যবহার করে অবিশ্বস্ত যিহূদা ও যিরূশালেমের বিরুদ্ধে বিচারাজ্ঞা ঘোষণা করেছিলেন। জাতি হিসেবে তারা সকলে যিহোবাকে উপাসনা করা পরিত্যাগ করেছিল এবং দেশ দৌরাত্ম্যে পরিপূর্ণ করেছিল। যিহোবা বাবিলের দ্বারা যিরূশালেমের ধ্বংসের বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু বিচার করার সময়েও যিহোবা এক আশার বার্তা জানিয়েছিলেন। প্রত্যেকের বাছাই করার সুযোগ ছিল; প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ কাজের পরিণতির জন্য দায়ী ছিল।—১৯, ২০ পদ।
(যিহিষ্কেল ১৮:২১, ২২) অধিকন্তু দুষ্ট লোক যদি আপনার কৃত সমস্ত পাপ হইতে ফিরে, ও আমার বিধি সকল পালন করে, এবং ন্যায় ও ধর্ম্মাচরণ করে, তবে সে অবশ্য বাঁচিবে; সে মরিবে না। ২২ তাহার পূর্ব্বকৃত কোন অধর্ম্ম তাহার বলিয়া স্মরণে আনা যাইবে না; সে যে ধর্ম্মাচরণ করিয়াছে, তাহাতে বাঁচিবে।
প্রহরীদুর্গ ১২ ৭/১ ১৮ অনু. ৩-৭, ইংরেজি
ঈশ্বর যখন ক্ষমা করেন, তখন তিনি কি তা ভুলে যান?
কেউ যদি মন্দ কাজ ত্যাগ করে ভালো কাজ করা শুরু করে, তা হলে? যিহোবা বলেছিলেন: “অধিকন্তু দুষ্ট লোক যদি আপনার কৃত সমস্ত পাপ হইতে ফিরে, ও আমার বিধি সকল পালন করে, এবং ন্যায় ও ধর্ম্মাচরণ করে, তবে সে অবশ্য বাঁচিবে; সে মরিবে না।” (২১ পদ) হ্যাঁ, যিহোবা “ক্ষমাবান” আর তিনি সেই পাপী ব্যক্তিকে ক্ষমা করেন, যে মন্দ পথ ত্যাগ করে প্রকৃত অনুতাপ দেখায়।—গীতসংহিতা ৮৬:৫.
সেই ব্যক্তি ইতিমধ্যে যে-পাপগুলো করেছিলেন, সেগুলো সম্বন্ধে কী বলা যায়? “তাহার পূর্ব্বকৃত কোন অধর্ম্ম তাহার বলিয়া স্মরণে আনা যাইবে না,” যিহোবা বলেছিলেন। (২২ পদ) লক্ষ করুন, বলা হয়েছে যিনি অনুতপ্ত হয়েছিলেন, তার পাপ “তাহার বলিয়া স্মরণে আনা যাইবে না।” কেন এটা তাৎপর্যপূর্ণ?
বাইবেলে যে-ইব্রীয় শব্দ থেকে “স্মরণে” শব্দটা অনুবাদ করা হয়েছে, সেটার অর্থ শুধু পূর্বের বিষয় মনে করার চেয়ে আরও বেশি কিছুকে বোঝায়। এই শব্দ সম্বন্ধে একটা তথ্যগ্রন্থ বলে: “প্রায়ই এটা কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ধারণা প্রদান করে কিংবা ক্রিয়া পদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয়ে ব্যবহৃত হয়।” “স্মরণে আনা” কথার অর্থ “পদক্ষেপ নেওয়াকে” বোঝাতে পারে। তাই, যিহোবা যখন একজন অনুতপ্ত পাপীকে বলেন, তার পাপ “তাহার বলিয়া স্মরণে আনা যাইবে না,” তখন তিনি আসলে বলেন, তিনি সেইসমস্ত পাপের কারণে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন না অর্থাৎ তিনি তাকে অভিযুক্ত করবেন না কিংবা শাস্তি দেবেন না।
যিহিষ্কেল ১৮: ২১, ২২ পদ ঈশ্বর কত দূর পর্যন্ত ক্ষমা করেন, সেটার এক হৃদয়স্পর্শী চিত্র তুলে ধরে। যিহোবা যখন আমাদের পাপ ক্ষমা করে দেন, তখন তিনি ভবিষ্যতে কখনো আমাদের বিরুদ্ধে এই পাপগুলো ধরে রাখবেন না। এর পরিবর্তে, তিনি অনুতপ্ত ব্যক্তির সমস্ত পাপ তাঁর পিছনে ফেলে দেন। (যিশাইয় ৩৮:১৭) এটা এমন যেন তিনি সেই সমস্ত পাপের নথি মুছে ফেলেন।—প্রেরিত ৩:১৯.
অসিদ্ধ মানুষ হিসেবে, ঈশ্বরের করুণা আমাদের প্রয়োজন। আসলে, আমরা বার বার পাপ করি। (রোমীয় ৩:২৩) কিন্তু যিহোবা চান যেন আমরা জানি, আমরা যদি প্রকৃত অনুতাপ দেখাই, তা হলে তিনি ক্ষমা করতে ইচ্ছুক। আর তিনি যখন ক্ষমা করে, তখন তিনি ভুলে যান—অর্থাৎ, তিনি পরবর্তী সময়ে আমাদের দোষ ধরার জন্য কিংবা শাস্তি দেওয়ার জন্য সেই পাপ পুনরায় স্মরণে আনবেন না। এটা কতই-না সান্ত্বনাদায়ক! ঈশ্বরের করুণা কি আপনাকে তাঁর আরও নিকটবর্তী হতে প্রেরণা দেয়?
(যিহিষ্কেল ১৮:২৩) দুষ্ট লোকের মরণে কি আমার কিছু সন্তোষ আছে? ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন; বরং সে আপন কুপথ হইতে ফিরিয়া বাঁচে, ইহাতে কি আমার সন্তোষ হয় না?
(যিহিষ্কেল ১৮:৩২) কারণ যে মরে, তাহার মরণে আমার কিছু সন্তোষ নাই, ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন; অতএব তোমরা মন ফিরাইয়া বাঁচ।
প্রহরীদুর্গ ০৮ ৪/১ ৮ অনু. ৪, ইংরেজি
আরমাগিদোন—সমস্ত যুদ্ধ শেষ করার জন্য ঈশ্বরের যুদ্ধ
ঈশ্বর যেহেতু নিজেই বিচারকর্তা, তাই আমরা নিশ্চিত থাকতে পারি, যেকোনো পরিস্থিতিতেই দুষ্টদের বিরুদ্ধে করা বিচার সঠিক হবে। “সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্ত্তা কি ন্যায়বিচার করিবেন না?” অব্রাহাম জিজ্ঞেস করেছিলেন। এই প্রশ্নের উত্তরে অব্রাহাম শিখতে পেরেছিলেন, যিহোবা সবসময় সঠিক বিষয়টা করেন! (আদিপুস্তক ১৮:২৫) এ ছাড়া, বাইবেল আমাদের আশ্বস্ত করে, যিহোবা দুষ্টদের ধ্বংস করে আনন্দিত হন না; তিনি কেবল শেষ উপায় হিসেবে দুষ্ট ব্যক্তিদের ধ্বংস করেন।—যিহিষ্কেল ১৮:৩২; ২ পিতর ৩:৯.
প্রহরীদুর্গ ০৬ ১২/১ ২৭ অনু. ১১
আমাদের প্রতিবেশীকে ভালোবাসা বলতে যা বোঝায়
১১ যারা ঈশ্বরকে সেবা করে না, তাদের প্রতি প্রেম দেখানোর ক্ষেত্রে স্বয়ং যিহোবাকে অনুকরণ করার চেয়ে উত্তম উপায় আর নেই। যদিও তিনি দুষ্টতাপ্রিয় নন কিন্তু তিনি তাদেরকে তাদের মন্দ পথ থেকে ফিরে আসার এবং অনন্তজীবন লাভ করার সুযোগ দিয়ে তাদের সকলের প্রতি প্রেমপূর্ণ-দয়া দেখান। (যিহিষ্কেল ১৮:২৩) যিহোবার “বাসনা” হল “সকলে যেন মনপরিবর্ত্তন পর্য্যন্ত পঁহুছিতে পায়।” (২ পিতর ৩:৯) তাঁর ইচ্ছা এই যেন “সমুদয় মনুষ্য পরিত্রাণ পায়, ও সত্যের তত্ত্বজ্ঞান পর্য্যন্ত পঁহুছিতে পারে।” (১ তীমথিয় ২:৪) এই কারণে যিশু তাঁর অনুসারীদের প্রচার করার ও শিক্ষা দেওয়ার এবং ‘সমুদয় জাতিকে শিষ্য করিবার’ দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন। (মথি ২৮:১৯, ২০) এই কাজে আমাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে আমরা ঈশ্বর ও প্রতিবেশী, হ্যাঁ সেইসঙ্গে আমাদের শত্রুদের প্রতিও প্রেম দেখাই!
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিহিষ্কেল ১৮:২৯) কিন্তু ইস্রায়েল-কুল বলিতেছে, প্রভুর পথ সরল নয়। হে ইস্রায়েল-কুল, আমার পথ কি সরল নয়? তোমাদের পথ কি অসরল নয়?
কখনো “সদাপ্রভুর উপরে রুষ্ট” হবেন না
৯ আমরা সমস্ত ঘটনা জানি না। সমস্ত ঘটনা না জানায়, যিহিষ্কেলের দিনের ইস্রায়েলীয়রা মনে করেছিল যে, যিহোবার পথ “সরল নয়।” (যিহি. ১৮:২৯) বিষয়টা এমন ছিল, যেন তারা নিজেদেরকে ঈশ্বরের বিচারক বলে মনে করছে, ন্যায়বিচারের নিজস্ব মানকে যিহোবার মানের ঊর্ধ্বে রেখে এবং বিভিন্ন ঘটনা সম্বন্ধে নিজেদের সীমিত বোধগম্যতার ওপর ভিত্তি করে তাঁর বিচার করছে। কখনো কখনো আমরা যখন বাইবেলের কোনো বিবরণ অথবা আমাদের জীবনে যেভাবে ঘটনাগুলো ঘটে, সেই সম্বন্ধে পুরোপুরি না বুঝি, তখন আমরা কি হৃদয়ে এইরকম চিন্তা করি যে, যিহোবার পথ অন্যায্য অর্থাৎ “সরল নয়”?—ইয়োব ৩৫:২.
(যিহিষ্কেল ২০:৪৯) তখন আমি কহিলাম, হাঁ প্রভু সদাপ্রভু, তাহারা আমার বিষয়ে বলে, ঐ ব্যক্তি কি উপমাবাদী নয়?
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
২০:১, ৪৯. ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গের প্রতিক্রিয়া দেখায় যে, যিহিষ্কেল যা বলেছিলেন সেই বিষয়ে তারা সন্দেহপ্রবণ ছিল। ঐশিক সতর্কবাণীর প্রতি আমরা যেন কখনো সন্দেহপ্রবণ মনোভাব গড়ে না তুলি।
বাইবেল পাঠ
(যিহিষ্কেল ২০:১-১২) সপ্তম বৎসরের পঞ্চম মাসে, মাসের দশম দিনে ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গের মধ্যে কয়েক জন পুরুষ সদাপ্রভুর কাছে অন্বেষণ করিবার জন্য আসিয়া আমার সম্মুখে বসিল। ২ তখন সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ৩ হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গের সহিত আলাপ করিয়া তাহাদিগকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তোমরা কি আমার কাছে অন্বেষণ করিতে আসিয়াছ? প্রভু সদাপ্রভু কহেন, আমার জীবনের দিব্য, আমি তোমাদিগকে আমার কাছে অন্বেষণ করিতে দিব না। ৪ হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি কি তাহাদের বিচার করিবে? তুমি কি তাহাদের বিচার করিবে? তবে তাহাদের পিতৃপুরুষদের ঘৃণার্হ ক্রিয়া সকল তাহাদিগকে জ্ঞাত কর; ৫ আর তাহাদিগকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমি যে দিন ইস্রায়েলকে মনোনীত করিয়াছিলাম, যাকোবের কুলজাত বংশের পক্ষে হস্ত উত্তোলন করিয়াছিলাম, মিসর দেশে তাহাদের কাছে আপনার পরিচয় দিয়াছিলাম, যখন তাহাদের পক্ষে হস্ত উত্তোলন করিয়া বলিয়াছিলাম, আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; ৬ সেই দিন তাহাদের পক্ষে হস্ত উত্তোলন করিয়া [বলিয়াছিলাম] যে, আমি তাহাদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিব, এবং তাহাদের জন্য যে দেশ অনুসন্ধান করিয়াছি, সর্ব্ব দেশের ভূষণস্বরূপ সেই দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশে লইয়া যাইব; ৭ আর আমি তাহাদিগকে বলিয়াছিলাম, তোমরা প্রত্যেক জন আপন আপন নয়নরঞ্জন ঘৃণার্হ বস্তু সকল দূর কর, এবং মিসরের পুত্তলিগণ দ্বারা আপনাদিগকে অশুচি করিও না; আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু। ৮ কিন্তু তাহারা আমার বিরুদ্ধাচারী হইল, আমার কথা শুনিতে অসম্মত হইল, আপন আপন নয়নরঞ্জন ঘৃণার্হ বস্তু সকল দূর করিল না, এবং মিসরের পুত্তলিগণকেও ছাড়িল না; তাহাতে আমি বলিলাম, আমি তাহাদের উপরে আমার কোপ ঢালিব, মিসর দেশের মধ্যে তাহাদিগেতে আমার ক্রোধ সাধন করিব। ৯ কিন্তু আমি আপন নামের অনুরোধে কার্য্য করিলাম; যেন আমার নাম সেই জাতিগণের সাক্ষাতে অপবিত্রীকৃত না হয়, যাহাদের মধ্যে তাহারা বাস করিতেছিল, ও যাহাদের সাক্ষাতে আমি তাহাদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া আনাতে আপনার পরিচয় দিয়াছিলাম। ১০ পরে আমি তাহাদিগকে মিসর দেশ হইতে বাহির করিয়া প্রান্তরে আনিলাম। ১১ আর আমি তাহাদিগকে আমার বিধিকলাপ দিলাম, ও আমার শাসনকলাপ জ্ঞাত করিলাম, যাহা পালন করিলে তদ্দ্বারা মনুষ্য বাঁচে। ১২ আর আমিই যে তাহাদের পবিত্রকারী সদাপ্রভু, ইহা জানাইবার জন্য আমার ও তাহাদের মধ্যে চিহ্নস্বরূপে আমার বিশ্রামদিন সকলও তাহাদিগকে দিলাম।
জুলাই ২৪-৩০
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিহিষ্কেল ২১-২৩
“রাজপদ সেই ব্যক্তির, যার অধিকার আছে”
(যিহিষ্কেল ২১:২৫) আর হে আহত দুষ্ট ইস্রায়েল-নরপতি, অন্তক অপরাধের সময়ে তোমার দিন উপস্থিত হইল।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
সাধারণ কাল পূর্ব ৬১১ সালে, বন্দিত্বের সপ্তম বছরে ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গ “সদাপ্রভুর কাছে অন্বেষণ করিবার জন্য” যিহিষ্কেলের কাছে আসে। তারা ইস্রায়েলের বিদ্রোহের এক দীর্ঘ ইতিহাস ও এই সতর্কবাণী শোনে যে, তাদের বিরুদ্ধে ‘সদাপ্রভু খড়্গ বাহির করিবেন।’ (যিহিষ্কেল ২০:১; ২১:৩) ইস্রায়েলের নরপতি বা প্রধানের (সিদিকিয়ের) উদ্দেশে যিহোবা বলেন: “উষ্ণীষ অপসারণ কর ও রাজমুকুট দূর কর; যাহা আছে, তাহা আর থাকিবে না; যাহা খর্ব্ব তাহা উচ্চ হউক, ও যাহা উচ্চ তাহা খর্ব্ব হউক। আমি বিপর্য্যয়, বিপর্য্যয়, বিপর্য্যয় করিব; যাহা আছে, তাহাও থাকিবে না, যাবৎ [যিশু খ্রিস্ট] না আইসেন, যাঁহার অধিকার; আমি তাঁহাকে দিব।”—যিহিষ্কেল ২১:২৬, ২৭.
(যিহিষ্কেল ২১:২৬) প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, উষ্ণীষ অপসারণ কর ও রাজমুকুট দূর কর; যাহা আছে, তাহা আর থাকিবে না; যাহা খর্ব্ব তাহা উচ্চ হউক, ও যাহা উচ্চ তাহা খর্ব্ব হউক।
তারা মশীহের অপেক্ষায় ছিল
৬ মশীহ ইস্রায়েলের যিহূদা বংশে জন্মগ্রহণ করবেন। কুলপতি যাকোব মৃত্যুশয্যায় তার ছেলেদের আশীর্বাদ করার সময় এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “যিহূদা হইতে রাজদণ্ড যাইবে না, তাহার চরণযুগলের মধ্য হইতে বিচারদণ্ড যাইবে না, যে পর্য্যন্ত শীলো না আইসেন; জাতিগণ তাঁহারই আজ্ঞাবহতা স্বীকার করিবে।” (আদি. ৪৯:১০) এই কথাগুলোকে অতীতের অনেক যিহুদি পণ্ডিত ব্যক্তি মশীহের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত করেছেন। যিহূদার রাজা দায়ূদের শাসনকাল থেকে শুরু করে রাজদণ্ড (রাজকীয় সার্বভৌমত্ব) এবং বিচারদণ্ড (আদেশ করার ক্ষমতা) যিহূদা বংশের কাছেই ছিল। তাই, এই ভবিষ্যদ্বাণী দেখায় যে, যার শাসন করার অধিকার রয়েছে, তিনি যিহূদা বংশ থেকে আসবেন। পৃথিবীতে যিহূদা বংশের প্রথম রাজা ছিলেন রাজা দায়ূদ আর শেষ রাজা ছিলেন রাজা সিদিকিয়। কিন্তু, যাকোবের ভবিষ্যদ্বাণী সিদিকিয়ের পরে আরেকজন রাজা সম্বন্ধে জানিয়েছিল। সেই রাজা অনন্তকালীন রাজা হবেন। তাঁকে শীলো বলা হবে, যার অর্থ “যাঁহার অধিকার আছে, তিনি।” ঈশ্বর সিদিকিয়কে বলেছিলেন যে, সেই রাজারই বৈধ অধিকার রয়েছে। (যিহি. ২১:২৬, ২৭) যিশুর জন্মের আগে গাব্রিয়েল দূত মরিয়মকে বলেছিলেন: “প্রভু ঈশ্বর তাঁহার পিতা দায়ূদের সিংহাসন তাঁহাকে দিবেন; তিনি যাকোব-কুলের উপরে যুগে যুগে রাজত্ব করিবেন, ও তাঁহার রাজ্যের শেষ হইবে না।” (লূক ১:৩২, ৩৩) নিশ্চিতভাবেই, শীলো হলেন যিশু খ্রিস্ট, যিনি যিহূদা ও দায়ূদের একজন বংশধর ছিলেন।—মথি ১:১-৩, ৬; লূক ৩:২৩, ৩১-৩৪.
(যিহিষ্কেল ২১:২৭) আমি বিপর্য্যয়, বিপর্য্যয়, বিপর্য্যয় করিব; যাহা আছে, তাহাও থাকিবে না, যাবৎ তিনি না আইসেন, যাঁহার অধিকার; আমি তাঁহাকে দিব।
প্রহরীদুর্গ ১৪ ১০/১৫ ১০ অনু. ১৪
রাজ্যের প্রতি অটল বিশ্বাস বজায় রাখুন
১৪ যিহোবা প্রাচীন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের কাছে একটা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। সেই প্রতিজ্ঞাকে বলা হয়, দায়ূদের সঙ্গে করা চুক্তি। (পড়ুন, ২ শমূয়েল ৭:১২, ১৬.) যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, দায়ূদের একজন বংশধর মশীহ হবেন। (লূক ১:৩০-৩৩) এভাবে যিহোবা মশীহের বংশধারা সম্বন্ধে আরও সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়েছিলেন। যিহোবা বলেছিলেন, দায়ূদের এই বংশধরের মশীহ রাজ্যের রাজা হওয়ার “অধিকার” থাকবে। (যিহি. ২১:২৫-২৭) দায়ূদের রাজত্ব চিরকাল থাকবে কারণ দায়ূদের বংশধর যিশু ‘চিরকাল থাকিবেন, তাহার সিংহাসন সূর্য্যের ন্যায় হইবে।’ (গীত. ৮৯:৩৪-৩৭) তাই আমরা এই আস্থা রাখতে পারি, মশীহের শাসন কখনো কলুষিত হবে না এবং এই শাসনের উপকার চিরকাল স্থায়ী হবে!
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিহিষ্কেল ২১:৩) তুমি ইস্রায়েল-দেশকে বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ; আমি কোষ হইতে আপন খড়্গ বাহির করিয়া তোমার মধ্য হইতে ধার্ম্মিক ও দুষ্টকে উচ্ছিন্ন করিব।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
২১:৩—সেই “খড়্গ” কী, যা যিহোবা এর কোষ বা খাপ থেকে বের করেন? যিরূশালেম ও যিহূদার ওপর তাঁর বিচার আনার জন্য যিহোবা যে-খড়্গ ব্যবহার করেন তা হল, বাবিলীয় রাজা নবূখদ্নিৎসর ও তার সেনাবাহিনী। এ ছাড়া, এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে ঈশ্বরের সংগঠনের স্বর্গীয় অংশ, যা পরাক্রমী আত্মিক প্রাণীদের নিয়ে গঠিত।
(যিহিষ্কেল ২৩:৪৯) আর লোকেরা তোমাদের কুকর্ম্মের বোঝা তোমাদের উপরে রাখিবে, এবং তোমরা আপনাদের পুত্তলিগণ-সম্বন্ধীয় পাপ সকল বহন করিবে; তাহাতে তোমরা জানিবে যে, আমিই প্রভু সদাপ্রভু।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
২৩:৫-৪৯. রাজনৈতিক মিত্রতা গড়ে তোলা ইস্রায়েল ও যিহূদাকে তাদের মিত্রবাহিনীর মিথ্যা উপাসনাকে গ্রহণ করে নিতে চালিত করেছিল। আমরা যেন সেই ধরনের জাগতিক বন্ধন গড়ে তোলার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকি, যা আমাদের বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দিতে পারে।—যাকোব ৪:৪.
বাইবেল পাঠ
(যিহিষ্কেল ২১:১-১৩) আর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ২ হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি যিরূশালেমের দিকে আপন মুখ রাখ, পবিত্র স্থানের দিকে বাক্য বর্ষণ কর, ও ইস্রায়েল-দেশের বিরুদ্ধে ভাববাণী বল। ৩ তুমি ইস্রায়েল-দেশকে বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ; আমি কোষ হইতে আপন খড়্গ বাহির করিয়া তোমার মধ্য হইতে ধার্ম্মিক ও দুষ্টকে উচ্ছিন্ন করিব। ৪ আমি যখন তোমার মধ্য হইতে ধার্ম্মিক ও দুষ্ট লোককে উচ্ছিন্ন করিব, তখন আমার খড়্গ কোষ হইতে বাহির হইয়া দক্ষিণ অবধি উত্তর পর্য্যন্ত সমস্ত প্রাণীর বিরুদ্ধে যাইবে; ৫ তাহাতে সমস্ত প্রাণী জানিবে যে, আমি সদাপ্রভু কোষ হইতে আপন খড়্গ বাহির করিয়াছি, তাহা আর ফিরিবে না। ৬ আর হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ কর; কটিদেশ ভাঙ্গিয়া মনস্তাপপূর্ব্বক তাহাদের সাক্ষাতে দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ কর। ৭ আর, যখন তাহারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করিবে, ‘কেন দীর্ঘনিঃশ্বাস ত্যাগ করিতেছ?’ তখন বলিও বার্ত্তার নিমিত্ত, কেননা তাহা আসিতেছে; তৎকালে প্রত্যেক হৃদয় গলিয়া যাইবে, প্রত্যেক হস্ত দুর্ব্বল হইবে, প্রত্যেক মন নিস্তেজ হইবে, ও প্রত্যেক জানু জলের মত হইয়া পড়িবে; দেখ, তাহা আসিতেছে, তাহা সফলও হইবে, ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন। ৮ আর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ৯ হে মনুষ্য-সন্তান, ভাববাণী বল, সদাপ্রভু এই কথা কহেন; তুমি বল, খড়্গ খড়্গ উহা শাণিত ও মাজ্জিত করা হইয়াছে। ১০ উহা শাণিত করা হইয়াছে, যেন সংহার করে; মার্জ্জিত করা হইয়াছে, যেন বিদ্যুতের ন্যায় হয়; তবে আমরা কি আমোদ করিব? আমার পুত্রের রাজদণ্ড প্রত্যেক কাষ্ঠকে তুচ্ছ করে। ১১ তাহা মার্জ্জিত হইবার জন্য দেওয়া হইয়াছে, যেন হাত দিয়া ধরা যায়; খড়্গ শাণিত ও মার্জ্জিত করা হইয়াছে, যেন হন্তার হস্তে দেওয়া হয়। ১২ হে মনুষ্য-সন্তান, ক্রন্দন ও হাহাকার কর, কেননা উহা আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে, উহা ইস্রায়েলের সমস্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে উপস্থিত হইয়াছে; তাহারা আমার প্রজাদের সহিত খড়্গে সমর্পিত হইয়াছে; অতএব তুমি আপন ঊরুদেশে আঘাত কর। ১৩ কারণ পরীক্ষা করা গিয়াছে; সেই তুচ্ছ রাজদণ্ড যদি আর না থাকে, তাহাতে কি? ইহা প্রভু সদাপ্রভু বলেন।
জুলাই ৩১–আগস্ট ৬
ঈশ্বরের বাক্যের গুপ্তধন | যিহিষ্কেল ২৪-২৭
“সোরের বিরুদ্ধে বলা ভবিষ্যদ্বাণী যিহোবার বাক্যের প্রতি আমাদের আস্থাকে শক্তিশালী করে”
(যিহিষ্কেল ২৬:৩, ৪) এই জন্য প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, হে সোর, দেখ, আমি তোমার বিপক্ষ; সমুদ্র যেমন তরঙ্গ উঠায়, তেমনি তোমার বিপক্ষে আমি অনেক জাতিকে উঠাইব। ৪ তাহারা সোরের প্রাচীর বিনষ্ট করিবে, তাহার উচ্চগৃহ সকল ভাঙ্গিয়া ফেলিবে; এবং আমি সেই নগরের ধূলি তাহা হইতে চাঁচিয়া ফেলিব, ও তাহাকে শুষ্ক পাষাণ করিব।
প্রত্যেক শাস্ত্রলিপি ১৩৩, অনু. ৪, ইংরেজি
বাইবেলের বই নং ২৬—যিহিষ্কেল
৪ প্রতিবেশী জাতিগুলো যেমন সোর, মিশর ও ইদোমের বিরুদ্ধে যিহিষ্কেলের ভবিষ্যদ্বাণীর নাটকীয় পরিপূর্ণতা এই বইয়ের নির্ভরযোগ্যতা সম্বন্ধে আরও প্রমাণ দেয়। উদাহরণ স্বরূপ, যিহিষ্কেল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, সোর ধ্বংস হবে। নবূখদ্নিৎসর ১৩ বছর অবরোধ করার পর সেই নগর যখন দখল করেছিলেন, তখন সেটা আংশিকভাবে পরিপূর্ণ হয়েছিল। (যিহিষ্কেল ২৬:২-২১) এই সংঘর্ষের ফলে সোর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায়নি। কিন্তু, যিহোবার বিচার ছিল এটাকে পুরোপুরি ধ্বংস হতে হবে। তিনি যিহিষ্কেলের মাধ্যমে এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: “আমি সেই নগরের ধূলি তাহা হইতে চাঁচিয়া ফেলিব, ও তাহাকে শুষ্ক পাষাণ করিব . . . তাহারা তোমার প্রস্তর, কাষ্ঠ ও ধূলি জলমধ্যে নিক্ষেপ করিবে।” (২৬:৪, ১২) এই সমস্ত কিছু ২৫০ বছরেরও বেশি সময় পর পরিপূর্ণ হয়েছিল, যখন মহান আলেকজান্ডার সোরের দ্বীপ নগরের বিরুদ্ধে এসেছিলেন। আলেকজান্ডারের সৈন্যরা মূল নগরের সমস্ত ধ্বংসস্তূপ তুলে নিয়ে সমুদ্রে ফেলে দিয়েছিল আর এভাবে সমুদ্রের উপর দিয়ে দ্বীপে যাওয়ার জন্য আধ মাইল [৮০০ মিটার] দীর্ঘ রাস্তা তৈরি করেছিল। এরপর, ৩৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে তারা এক কঠিন অবরোধ তৈরি করেছিল ও ১৫০ ফুট [৪৬ মিটার] উঁচু দেয়াল ডিঙিয়ে সেই নগর দখল করেছিল। হাজার হাজার লোককে হত্যা করা হয়েছিল এবং আরও বেশি লোককে দাসত্বে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। যিহিষ্কেলও আগে থেকে বুঝতে পেরেছিলেন, সোর “শুষ্ক পাষাণ . . . জাল বিস্তার করিবার স্থান হইবে।” (২৬:১৪) যিহিষ্কেলের ভবিষ্যদ্বাণীর পরিপূর্ণতা স্বরূপ, প্রতিজ্ঞাত দেশের অন্য পাশে থাকা দুষ্ট ইদোমীয়রাও সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। (২৫:১২, ১৩; ৩৫:২-৯) আর, যিরূশালেমের ধ্বংস ও ইস্রায়েলীয়দের পুনর্স্থাপন সম্বন্ধে যিহিষ্কেলের ভবিষ্যদ্বাণীও সঠিক বলে প্রমাণিত হয়েছিল।—১৭:১২-২১; ৩৬:৭-১৪.
(যিহিষ্কেল ২৬:৭-১১) কারণ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, দেখ, আমি উত্তরদিক্ হইতে অশ্ব, রথ ও অশ্বারোহিগণের এবং জনসমাজের ও অনেক সৈন্যের সহিত রাজাধিরাজ বাবিল-রাজ নবূখদ্রিৎসরকে আনাইয়া সোরে উপস্থিত করিব। ৮ সে জনপদে অবস্থিতা তোমার কন্যাদিগকে খড়্গাঘাতে বধ করিবে, তোমার বিরুদ্ধে গড় গাঁথিবে, তোমার বিরুদ্ধে জাঙ্গাল বাঁধিবে, ও তোমার বিরুদ্ধে ঢাল উত্তোলন করিবে। ৯ আর সে তোমার প্রাচীরে দুর্গভেদক যন্ত্র স্থাপন করিবে, ও আপন তীক্ষ্ণ অস্ত্র দ্বারা তোমার উচ্চগৃহ সকল ভাঙ্গিয়া ফেলিবে। ১০ তাহার অশ্বগণের বাহুল্য প্রযুক্ত তাহাদের ধূলি তোমাকে আচ্ছাদন করিবে; সে যখন ভগ্নপ্রাচীর নগরে প্রবেশের ন্যায় তোমার দ্বার সকলের ভিতরে যাইবে, তখন অশ্বারোহীদের, চক্রের ও রথের শব্দে তোমার প্রাচীর কাঁপিবে। ১১ সে আপন অশ্বগণের খুরে তোমার সমস্ত পথ দলিত করিবে, খড়্গ দ্বারা তোমার প্রজাদিগকে বধ করিবে, ও তোমার পরাক্রমসূচক স্তম্ভ সকল ভূমিসাৎ হইবে।
সৃষ্টি ২১৬ অনু. ৩, ইংরেজি
বাইবেল—এটা কি সত্যিই ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত?
৩ সোর ছিল ফৈনীকীয়ার একটা প্রধান সমুদ্রবন্দর আর সে তার দক্ষিণে থাকা প্রতিবেশী, প্রাচীন ইস্রায়েলের সঙ্গে প্রতারণাপূর্ণ আচরণ করেছিল, যারা যিহোবার উপাসনা করত। যিহিষ্কেল নামে একজন ভাববাদীর মাধ্যমে যিহোবা সোরের পুরোপুরি ধ্বংস সম্বন্ধে ২৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। যিহোবা ঘোষণা করেছিলেন: “তোমার বিপক্ষে আমি অনেক জাতিকে উঠাইব। তাহারা সোরের প্রাচীর বিনষ্ট করিবে, তাহার উচ্চগৃহ সকল ভাঙ্গিয়া ফেলিবে; এবং আমি সেই নগরের ধূলি তাহা হইতে চাঁচিয়া ফেলিব, ও তাহাকে শুষ্ক পাষাণ করিব। সে সমুদ্রের মধ্যে জাল বিস্তার করিবার স্থান হইবে।” এ ছাড়া, যিহিষ্কেল আগে থেকেই সেই প্রথম জাতি ও নেতার নাম উল্লেখ করেছিলেন, যারা সোর আক্রমণ করবে: “দেখ, আমি . . . বাবিল-রাজ নবূখদ্রিৎসরকে আনাইয়া সোরে উপস্থিত করিব।”—যিহিষ্কেল ২৬:৩-৫, ৭.
(যিহিষ্কেল ২৬:৪) তাহারা সোরের প্রাচীর বিনষ্ট করিবে, তাহার উচ্চগৃহ সকল ভাঙ্গিয়া ফেলিবে; এবং আমি সেই নগরের ধূলি তাহা হইতে চাঁচিয়া ফেলিব, ও তাহাকে শুষ্ক পাষাণ করিব।
(যিহিষ্কেল ২৬:১২) উহারা তোমার সম্পত্তি লুট করিবে, তোমার বাণিজ্যদ্রব্য হরণ করিবে, তোমার প্রাচীর ভাঙ্গিয়া ফেলিবে, ও তোমার মনোরম্য গৃহ সকল ধ্বংস করিবে; এবং তাহারা তোমার প্রস্তর, কাষ্ঠ ও ধূলি জলমধ্যে নিক্ষেপ করিবে।
অন্তর্দৃষ্টি-১ ৭০, ইংরেজি
আলেকজান্ডার
এশিয়া মাইনরে দুটো নিশ্চিত জয় লাভ করার পর (প্রথমটা ছিল গ্রেনিকস নদীর তীরে; দ্বিতীয়টা ছিল উপত্যকা দিয়ে বের হওয়ার পথে, যেখানে এক বিশাল পারসিক সৈন্যবাহিনী, আনুমানিক পাঁচ লক্ষ সৈন্য পুরোপুরি পরাজিত হয়েছিল) পালিয়ে যাওয়া পারসিকদের পিছনে পিছনে যাওয়ার পরিবর্তে, আলেকজান্ডার সোরের দ্বীপের প্রতি মনোযোগ দিয়েছিলেন। শত শত বছর আগে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, সোরের প্রাচীর, দুর্গ, ঘর ও এমনকী ধুলো সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হবে। (যিহি ২৬:৪, ১২) তাই, তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কয়েক বছর পূর্বে নবূখদ্নিৎসরের দ্বারা ধ্বংস হওয়া সোর নগরের মূল ভূখন্ডের ধ্বংসাবশেষ ব্যবহার করে, আলেকজান্ডার সোরের দ্বীপ পর্যন্ত আধ মাইল (৮০০ মিটার) দীর্ঘ একটা পথ তৈরি করেছিলেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩৩২ সালের জুলাই মাসে, নৌবাহিনীর আক্রমণ ও যুদ্ধাস্ত্র ব্যবহার করে সমুদ্রের সেই গর্বিত সম্রাজ্ঞীকে ধ্বংস করা হয়েছিল।
আধ্যাত্মিক রত্ন খুঁজে বের করুন
(যিহিষ্কেল ২৪:৬) অতএব প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, ধিক্ সেই রক্তপূর্ণা পুরীকে, সেই হাঁড়ীকে, যাহার মধ্যে কলঙ্ক আছে, ও যাহার কলঙ্ক তাহার মধ্য হইতে বাহির হয় নাই! তুমি খণ্ড খণ্ড করিয়া তাহার সমুদয় বাহির কর, তাহার বিষয়ে গুলিবাঁট করা হয় নাই।
(যিহিষ্কেল ২৪:১২) সে পরিশ্রমে ক্লান্ত হইয়াছে, তথাপি তাহার বিষম কলঙ্ক তাহার মধ্য হইতে নির্গত হয় না, তাহার কলঙ্ক অগ্নিসাৎ হউক।
যিহিষ্কেল বইয়ের প্রথম বিভাগের প্রধান বিষয়গুলো
২৪:৬-১৪—হাঁড়ির কলঙ্ক কী চিত্রিত করে? অবরুদ্ধ যিরূশালেমকে হাঁড়ির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। এর কলঙ্ক নগরের নৈতিক অশ্লীলতাকে—এটি যে-অশুচিতা, কুকর্ম ও রক্তপাতের জন্য দায়ী সেগুলোকে—চিত্রিত করে। এর অশুচিতা এতটাই ব্যাপক যে, শূন্য হাঁড়ি অঙ্গারের ওপর স্থাপন এবং এটাকে অনেক উত্তপ্ত করলেও সেই কলঙ্ক দূর করা যায় না।
(যিহিষ্কেল ২৪:১৬, ১৭) হে মনুষ্য-সন্তান, দেখ, আমি আঘাত দ্বারা তোমার নয়নের প্রীতিপাত্রকে তোমা হইতে হরণ করিব; তথাপি তুমি বিলাপ কি রোদন করিবে না, এবং তোমার অশ্রুপাতও হইবে না। ১৭ দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়, নীরব হও, মৃতের জন্য বিলাপ করিও না; তুমি মস্তকে শিরোভূষণ বাঁধ, ও পায়ে পাদুকা দেও; তুমি ওষ্ঠাধর আচ্ছাদন করিও না, ও লোকদের [প্রেরিত] রুটী খাইও না।
প্রহরীদুর্গ ৮৮ ৯/১৫ ২১ অনু. ২৪, ইংরেজি
যিহোবা কোষ থেকে তাঁর খড়্গ বের করেন!
২৪ এরপর, যিহিষ্কেলকে এক অসাধারণ উপায়ে কাজ করতে হয়েছিল। (যিহিষ্কেল ২৪:১৫-১৮ পদ পড়ুন।) স্ত্রী মারা যাওয়ার পর কেন ভাববাদী শোক প্রকাশ করেননি? এটা দেখানোর জন্য যে, যিরূশালেম, এর অধিবাসী এবং মন্দির ধ্বংস হওয়ার পর যিহুদিরা কতটা অবাক হবে। যিহিষ্কেল ইতিমধ্যে এই ঘটনাগুলোর বিষয়ে বহু বার বলেছেন আর যিরূশালেমের পতন হওয়ার খবর তার কাছে না আসা পর্যন্ত তিনি আর ঈশ্বরের বার্তা জানাবেন না। একইভাবে, খ্রিস্টীয় জগৎ ও এর কপট উপাসকরা তাদের ধ্বংসের সময়ে অবাক হয়ে যাবে। আর “মহাক্লেশ” শুরু হওয়ার পর, অভিষিক্ত ব্যক্তিরা খ্রিস্টীয় জগৎ ও এর কপট উপাসকদের শেষ সম্বন্ধে ইতিমধ্যে যা বলেছেন, সেটাই যথেষ্ট বলে প্রমাণিত হবে। (মথি ২৪:২১) কিন্তু ঈশ্বরের “খড়্গ” যখন খ্রিস্টীয় জগতের উপর আসবে, তখন এই হতবাক হয়ে পরা কপট উপাসকরা ও অন্যেরা “জানিবে যে, তিনিই সদাপ্রভু।”—যিহিষ্কেল ২৪:১৯-২৭.
বাইবেল পাঠ
(যিহিষ্কেল ২৫:১-১১) আর সদাপ্রভুর এই বাক্য আমার নিকটে উপস্থিত হইল, ২ হে মনুষ্য-সন্তান, তুমি অম্মোন-সন্তানদের দিকে মুখ রাখ, ও তাহাদের বিরুদ্ধে ভাববাণী বল। ৩ তুমি অম্মোন-সন্তানদিগকে বল, তোমরা প্রভু সদাপ্রভুর বাক্য শুন। প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি আমার ধর্ম্মধাম অপবিত্রীকৃত দেখিয়া তাহার বিষয়ে, ইস্রায়েল-ভূমি ধ্বংসিত দেখিয়া তাহার বিষয়ে, এবং যিহূদা-কুল বন্দি হইয়া যাত্রা করিয়াছে দেখিয়া তাহার বিষয়ে, বলিয়াছ, ‘বাহবা, বাহবা’; ৪ এই জন্য দেখ, আমি তোমাকে অধিকাররূপে পূর্ব্বদেশের লোকদের হস্তে সমর্পণ করিব, তাহারা তোমার মধ্যে আপন আপন শিবির স্থাপন করিবে, ও তোমার মধ্যে আপন আপন তাম্বু ফেলিবে; তাহারাই তোমার ফল ভক্ষণ করিবে, ও তোমার দুগ্ধ পান করিবে। ৫ আর আমি রব্বাকে উষ্ট্রের বাথান ও অম্মোন-সন্তানদের [দেশকে] মেষাদি পালের শয়ন-স্থান করিব; তাহাতে তোমরা জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু। ৬ কেননা প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, তুমি ইস্রায়েল-দেশের বিরুদ্ধে হাততালি দিয়াছ, পদাঘাত করিয়াছ ও প্রাণের সহিত সম্পূর্ণ অবজ্ঞাভাবে আনন্দ করিয়াছ। ৭ এই জন্য দেখ, আমি তোমার বিরুদ্ধে নিজ হস্ত বিস্তার করিয়াছি, জাতিগণের লুটদ্রব্যরূপে তোমাকে সমর্পণ করিব, জাতিগণের মধ্য হইতে তোমাকে কাটিয়া ফেলিব, দেশসমূহের মধ্য হইতে তোমাকে উচ্ছিন্ন করিব; আমি তোমাকে লুপ্ত করিব, তাহাতে তুমি জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু। ৮ প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, মোয়াব ও সেয়ীর কহিতেছে, দেখ, যিহূদা-কুল, অন্য সকল জাতির তুল্য। ৯ এই জন্য দেখ, আমি মোয়াবের স্কন্ধ নগরসমূহের দিকে খুলিয়া দিব, অর্থাৎ চতুর্দ্দিক্স্থ তাহার সকল নগরে, বিশেষতঃ দেশের ভূষণ বৈৎ-যিশীমোতে, বাল্মিয়োনে ও কিরিয়াথয়িমে, ১০ অম্মোন-সন্তানদের বিরুদ্ধে পূর্ব্বদেশের লোকদের জন্য পথ প্রস্তুত করিয়া দেশ অধিকারার্থে দিব, এইরূপে জাতিগণের মধ্যে অম্মোন-সন্তানেরা আর স্মৃতিপথে আসিবে না। ১১ আর আমি মোয়াবকে বিচারসিদ্ধ দণ্ড দিব, তাহাতে তাহারা জানিবে যে, আমিই সদাপ্রভু।